ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় কৃষকরা বর্তমানে রোপা আমনের চারা সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে রোপা আমনের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা আগের বছরের তুলনায় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
উপজেলার সবচেয়ে বড় দুটি হাট- মধুখালী সদর ও কামারখালী হাট, চারা বিক্রির জন্য সুপরিচিত হলেও বর্তমানে কৃষকদের ভিড় তেমন দেখা যাচ্ছে না। গত শনিবার মধুখালী হাটে কৃষকরা এক আঁটি চারা কিনেছেন ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। প্রতি আঁটি চারার জন্য ২০ টাকা খাজনা দিয়েছেন। বাজারে চারা বিক্রেতা জামিরুল শেখ বলেন, ‘চারা আমদানি এই মৌসুমে ব্যাপক হলেও ক্রেতা সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। বৃষ্টির অভাবে পাট কাটার কাজ দেরিতে সম্পন্ন হওয়ায়, অনেক চাষি এখনো জমিতে পাট রেখে ধীরে ধীরে চারা রোপণ করছেন।’
মধুখালী হাটের ইজারা সংগ্রহকারী মো. ইউসুফ ফকির বলেন, ‘এ মৌসুমে চারা আমদানি ব্যাপক হলেও ক্রেতার অভাব রয়েছে। তবে যারা চারা নিয়ে আসছেন, ওই চারাগুলো খুব ভালো মানের।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহাবুব ইলাহী জানিয়েছেন, রোপা আমনের বিভিন্ন জাতের চারা- যেমন বিরি-৮৭, ৩৭, ৭৫, বিনা-৭, আটাশ ইত্যাদি- সাধারণত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত রোপণ করা হয়। তবে চলতি বছর বৃষ্টির অভাবে চারা লাগানোর কাজ দেরিতে শুরু হয়েছে। চলতি মাসের সেপ্টেম্বর (ভাদ্র মাস) পর্যন্ত রোপা আমনের চারা রোপণ করা সম্ভব হবে। এবারের জন্য উপজেলার ৮ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি গত বছরের ৮ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমির চেয়ে কিছুটা বেশি।
কৃষকদের মধ্যে ক্রেতা উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে ওই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেকে বীজতলা তৈরি করেছেন, যার ফলে এবার চারা বেশি আসার পরও ক্রেতা কম। তবে আশাবাদী, মৌসুমের শেষের দিকে ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। মধুখালী উপজেলায় কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে এই মৌসুমে চাষিদের সহায়তার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যাতে করে তাদের উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং কৃষি খাতকে আরও উন্নত করা যায়।’