শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার দক্ষিণ ডুবলদিয়া কাজী কান্দি এলাকায় ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় প্রায় ৫০ একর জমি তলিয়ে গেছে। এতে লাউ, করলা, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাত দিন পরেও জমির পানি নামছে না, যার ফলে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা প্রশাসনের কাছে খালটি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন, নাহলে তাদের আর্থিক ক্ষতি হবে প্রায় ২ কোটি টাকা। জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
কৃষকরা জানান, জমির পানি শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের একটি কালভার্টের নিচ দিয়ে খাল হয়ে নদীতে অপসারণ হতো। কিন্তু গত তিন বছর ধরে ওই কালভার্টের পশ্চিম পাশে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের জমি ভরাটের কারণে পানি নামার খালটি বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে কৃষকরা এ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তাদের দাবি, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে খালটি পুনরুদ্ধার করা হোক, না হলে তারা সবজি চাষ করতে না পেরে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
কৃষক লিয়াকত কাজী বলেন, ‘তিন বছর আগে এই জমিতে আমরা সব মৌসুমেই ফসল ফলাতে সক্ষম হয়েছিলাম। কালভার্টের নিচ দিয়ে জমে থাকা পানি নদীতে চলে যেত। কিন্তু প্রভাবশালীরা গত কয়েক বছর ধরে জমিতে বালু ভরাট করে খালটি দখল করে নিয়েছে। বর্ষা মৌসুম এলেই আমাদের ফসলি জমিতে জমে থাকা পানি নামার কোনো জায়গা থাকে না। ফলে জমে থাকা পানির কারণে আমাদের উৎপাদিত ফসল সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বারবার বলার পরও প্রভাবশালী ও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর ফলে প্রতি বছরই আমরা ক্ষতির মুখে পড়ছি।’
স্থানীয়রা বলেন, ‘একটি কালভার্টের নিচ দিয়ে পানি যাবে ও ওপরে গাড়ি চলাচল করবে- এটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কিছু প্রভাবশালী কালভার্টের পশ্চিম পাশের মুখ বন্ধ করে জমি দখল করে নিয়েছে। আমাদের দাবি, খালটি পুনরুদ্ধার করা হোক, অন্যথায় কালভার্টটি ভেঙে সড়ক নির্মাণ করা হোক। কালভার্ট যদি কার্যকর না হয়, তবে এ কালভার্টের কোনো প্রয়োজন নেই।’
কৃষকদের তথ্যমতে, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে জাজিরা উপজেলার দুই শতাধিক কৃষকের সবজি ফলনে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা।
জাজিরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘ভরাট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। কৃষকরা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছে। আমরা এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং সেখানে বড় একটি জমির ফসল জলাবদ্ধতার কারণে নষ্ট হচ্ছে। তবে আমরা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে খালটি পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’