
বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঝিনাইদহের ফুলচাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। ফুলের চাষ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। চাষিদের আশা, এসব দিবস ঘিরে অন্তত শতকোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে। এরই মধ্যে মাঠে শোভা পাচ্ছে রংবেরঙের ফুল।
ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে জারবেরা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, লিলিয়াম, টিউলিপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, জিপসিসহ বিভিন্ন ফুলের জাত। এবারের মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ফুলের উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেশি। চাষিরা এখন ফুলের পরিচর্যায় মনোযোগী, যাতে ফুলগুলো ভালোবাসা দিবস, বসন্ত উৎসব ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাজারে বিক্রির উপযোগী থাকে।
ফুলচাষি টিপু সুলতান বলেন, ‘ভালোবাসা দিবসে রজনীগন্ধা ও গোলাপ, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে গাঁদা ফুল বেশি বিক্রি হয়। ফুলের মান ধরে রাখতে পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে নিয়মিত কীটনাশক ব্যবহার করছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফুলের উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে। দামও দিন দিন বাড়ছে।’
ফুলচাষি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর দুই বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ৮ লাখ টাকা। আশা করছি, ৩০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারব।’ আর রেজাউল ইসলাম তার দেড় বিঘা জমিতে লাল, সাদা, কমলা, হলুদ এবং গোলাপি রঙের গোলাপ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভালোবাসা দিবসের জন্য এই রঙের ফুলের কদর বেশি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের উৎপাদন অনেক বেশি হয়েছে।’ ঝিনাইদহের ফুলচাষিরা বিশ্বাস করছেন, এবারের ফুলের মৌসুম তাদের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।
ঝিনাইদহ জেলা ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জমির উদ্দিন বলেন, ‘সারা বছর ফুল বিক্রি কম হলেও এই তিন উৎসবের সময় ব্যবসা ভালো হয়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফুলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে। এসব উৎসবের মাধ্যমে আমরা অন্তত শতকোটি টাকার ফুল বিক্রি করতে পারব।’ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, ‘ঝিনাইদহের ফুলচাষিরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফুলের চাহিদা মেটাচ্ছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় এই বছর ফুলের উৎপাদন বেশি হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের তুলনায় এবার বেশি টাকা আয় করবেন চাষিরা।’