ঢাকা ২৭ মাঘ ১৪৩১, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ মাঘ ১৪৩১

মেহেরপুরে কমছে সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংখ্যা

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৩ এএম
মেহেরপুরে কমছে সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংখ্যা
মেহেরপুর

মেহেরপুরে দিন দিন কমছে সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংখ্যা। চর্চার অভাব, অর্থনৈতিক দৈন্যের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের অনাগ্রহকেই এর জন্য দায়ী করছেন সংস্কৃতিপ্রেমীরা। আগের তুলনায় মঞ্চ অনুষ্ঠানের পরিমাণ কমে যাওয়ায় শিল্পীরাও সময় কাটাচ্ছেন ঘরে বসে। জাতিকে বাঁচাতে সংস্কৃতি চর্চা বাড়ানোর দাবি সংশ্লিষ্টদের।

একসময় গান-বাজনা, নাটক, যাত্রা কিংবা সাহিত্যচর্চা ছিল জেলার প্রতিটি প্রান্তে। নানা সংগঠনের মাধ্যমে নিজেদের প্রতিভা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতেন কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা। কিন্তু প্রতিনিয়তই কমছে সংস্কৃতিচর্চা। নেই আগের মতো প্রতিযোগিতাও। এমন অবস্থায় অঙ্কুরেই হারিয়ে যাচ্ছেন অনেক শিল্পী। সঠিক মূল্যায়নের অভাব, আর্থিক দৈন্য এবং ক্যারিয়ার সৃষ্টি না হওয়াকেই দুষছেন তারা। শিল্পীরা বলছেন, এসব কারণে তৈরি হচ্ছে না নতুন শিল্পী। 

সংগঠনগুলোর পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি তাদের। পরবর্তী প্রজন্মকে সংস্কৃতি চর্চায় আগ্রহী করতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। 

জেলা সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার মূল দায়িত্ব জেলা শিল্পকলা একাডেমির। প্রতিষ্ঠানটিকে শিল্পকলা চর্চায় পদক্ষেপ নিতে তেমন একটা দেখা যায় না। অভিযোগ রয়েছে, সংস্কৃতি চর্চার চেয়ে কমিটির নেতারা রাজনীতি নিয়েই বেশি আগ্রহী থাকেন। তবে জেলা প্রশাসন দাবি করছে, শিল্পকলা একাডেমির মাধ্যমে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ২০২১ সালের তথ্যমতে, মেহেরপুর জেলায় ৬১টি সাংস্কৃতিক সংগঠন কাজ করছে।

এ বিষয়ে কবি মেহের আমজাদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিভিন্ন স্থানে সংস্কৃতি চর্চার লক্ষ্যে আগে নানা আয়োজন লক্ষ করা যেত। কিন্তু এখন সে চর্চা নেই বললেই চলে। সংস্কৃতি চর্চা না বাড়াতে পারলে জাতি ধ্বংসের দিকে যাবে।’ 

জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যান্ড শিল্পী আফসারুল হক সুমন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগের চেয়ে শিল্পীদের মূল্যায়ন কমেছে। সরকারিভাবে নানা উদ্যোগও তেমন একটা চোখে পড়ে না। শিল্পীদের অর্থনৈতিক দৈন্য বেড়েছে। ফলে অনেকেই এখন শিল্পচর্চা থেকে বিরত থাকছেন।’

অভিভাবক ফজলুল হক মন্টু খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার সন্তানকে সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে সংযুক্ত করতে চাই। কিন্তু বারবার পিছিয়ে যাচ্ছি। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বেহাল দশা দেখে আমরাও আগ্রহী হচ্ছি না। সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে সংগঠক, শিল্পকলা এবং সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’ 

সংস্কৃতির সংগঠকরা বলছেন, নতুন করে সংগঠক তৈরি না হওয়ার ফলে অনেক সংগঠনই খেই হারিয়েছে চলার পথে। মেহেরপুরে শতাধিক সংগঠনের স্থানে এখন হাতে গোনা দু-চারটি সংগঠন কাজ করছে। এসব অনুষ্ঠান আয়োজনে সরকারকে অর্থনৈতিক বরাদ্দ দেওয়া উচিত বলেও জানান তারা। 

অরণি থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা নিশান সাবের খবরের কাগজকে বলেন, ‘সংগঠনগুলো ঝিমিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ শিল্পকলার রাজনীতি। বিভিন্ন সময় প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে শিল্পকলার কমিটি গঠন করায় মূল সংগঠকদের কাজের প্রতি অনীহা বেড়েছে। সংস্কৃতি বাঁচাতে সাংস্কৃতিক ক্লাবগুলোকে বাঁচাতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিল্পকলার ভূমিকা সব থেকে বেশি।’ 

ভৈরব সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আকাশ সংস্কৃতির প্রভাব থেকে বর্তমান প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। শিল্পীদের আর্থিক সংকট নিরসনে সরকারি সহযোগিতা আরও বাড়ানো দরকার।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির একটি নির্বাচিত কমিটি ছিল। কিন্তু গত বছর তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়নি। জেলা শিল্পকলার বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) 

সাজ্জাদ হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘একাডেমির পাশাপাশি সংগঠনগুলোর মাধ্যমে সংস্কৃতি চর্চা বাড়ানোর নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। শিল্পকলাকেন্দ্রিক সরকারি নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

শিল্পী নাজমুন নাহার রহমানের ‘ক্যানভাসে বিমূর্ত নারী মন’ একক প্রদর্শনী

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৫ পিএম
শিল্পী নাজমুন নাহার রহমানের ‘ক্যানভাসে বিমূর্ত নারী মন’ একক প্রদর্শনী
শিল্পী নাজমুন নাহার রহমান অ্যাক্রেলিক ও মনোপ্রিন্টের ক্যানভাসে চিত্রিত করেছেন শহুরে নারীর মন৷ ছবি: খবরের কাগজ

শিল্পী নাজমুন নাহার রহমান অ্যাক্রেলিক ও মনোপ্রিন্টের ক্যানভাসে চিত্রিত করেছেন শহুরে নারীর মন৷ নগরনাব্যের নতুন অধ্যায়ে কাঠামোবদ্ধ নগর জীবনে একজন নারী তার প্রকৃতিকে আবিস্কার করেন। প্রকৃতির সঙ্গে নারীর অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র ধরা দেয় আলোছায়ার বিচিত্র খেয়ালে৷ কখনো সুরেলা পাখি, কখনো শহরতলি ছুঁয়ে যাওয়া ছোট্ট নদী কিংবা শহর শেষে খোলা প্রান্তর; শহুরে নারী বিমুগ্ধ হন প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গে৷

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির সফিউদ্দিন শিল্পালয়ে শুরু হয়েছে তার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী 'প্রবাহমান দৃষ্টিভঙ্গি।' 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার খবরের কাগজকে বলেন, এ প্রদর্শনীর আয়োজন নিয়ে গত দুই বছর থেকে ভাবছিলাম৷ এর আগে ভারত, জাপান, ফ্রান্স, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্রে দলীয় প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলাম৷ এবার ভাবলাম, একক প্রদর্শনী করা যাক৷

'প্রবাহমান দৃষ্টিভঙ্গি' প্রদর্শনী নিয়ে শিল্পী বলেন, আমার বেড়ে উঠার সবটুকু এই শহরে৷ গ্রামের খুব স্মৃতি নেই৷ এ শহরে এত দিন ধরে আছি৷ এখানেই আমার মাতৃত্বের শুরু৷ তাই এ শহরে আমার দেখা জীবনটাকে রঙিন ক্যানভাসে চিত্রিত করতে চেষ্টা করেছি৷

নাজমুন নাহার ২০টি ছবি অ্যাক্রেলিকের ক্যানভাসে ও চারটি ছবি মনোপ্রিন্টের ক্যানভাসে এঁকেছেন৷ কিউবিজম ও ইমপ্রেশেনিলিজম- এ দুই ফর্মে তিনি এঁকেছেন 'উইমেন উইথ চিলড্রেন', 'উইমেন উইথ ফ্লাওয়ার', 'ফ্রিডম অব উইমেন', 'লকড ড্রিমস', বিহাইন্ড দ্য মাইন্ডস',  'লাভ ফর আরবানস' ছবিগুলো৷

নাজমুন নাহার বলেন, উনিশ শতকের শুরু থেকে মডার্ন আর্টের শুরু৷ তখন চিত্রকলায় আধুনিকতা ফুটিয়ে তুলতে শিল্পীরা কিউবিজমের চর্চা শুরু করেন৷ সমসাময়িক ঘটনাবলী ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলতে তখন এ ফর্মের আশ্রয় নিয়েছি আমি৷

নাজমুন নাহারের এই প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বারক আলভী ও শান্ত মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক৷

শিল্প সমালোচক জাহিদ মুস্তাফা বলেন, লোকনকশার নানা জ্যামিতিক গড়নের প্রতি নাজমুন নাহারের ঝোঁক লক্ষ্য করা গেছে। চিত্রপটে রং প্রয়োগেও লোকশিল্পীর পছন্দসই বর্ণলেপনেই তার অধিক আস্থা। এ প্রদর্শনীর কাজগুলো লোকজ অঙ্কনরীতিতে তিনি এঁকেছেন নারী অবয়ব, মা ও শিশুর ফর্ম, পাখ-পাখালি, মাছ, কুলসহ ফুলগাছ প্রভৃতি। আদিযুগের শিল্পরূপের সঙ্গে তার কাজের অন্তমিলও পাওয়া যায়। দৃশ্যমান শিল্পের সঙ্গে বসবাসের মধ্য দিয়ে একপ্রকার আত্মকথন তার কোনো কোনো কাজে প্রতিভাত হয়েছে। আবার প্রকৃতির ছন্দকে তিনি নকশার বুননে তুলে এনেছেন বর্ণিল রূপে। এক্ষেত্রে তার নকশাপ্রধান কাজগুলো সিন্দময় রৈখিক ও পরিচ্ছন্ন।

আগামী বুধবার পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত  উন্মুক্ত থাকবে প্রদর্শনী৷

জয়ন্ত সাহা/এমএ 

দেব-দেবীর বন্দনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ছায়ানটের নৃত্য উৎসব

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৮ পিএম
দেব-দেবীর বন্দনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ছায়ানটের নৃত্য উৎসব
ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানী ধানমন্ডির ছায়ানট মিলনায়তনে আয়োজিত দুই দিনের নৃত্য উৎসবের সমাপনী আসর ছিল আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। এ দিন ভরতনাট্যম, কত্থক ও মণিপুরি নৃত্যের মধ্য দিয়ে হিন্দু পুরাণের দেব-দেবীদের মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়। শাস্ত্রীয় নৃত্যের এমনই এক মনোমুগ্ধকর সন্ধ্যা কেটেছে শনিবার। 

এর আগে ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে গতকাল শুক্রবার ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হয় এই নৃত্য উৎসব।

শুরুতে মণিপুরি নৃত্যে তেওড়া তালে ‘গণেশ বন্দনা’ পরিবেশন করেন শিল্পী সুইটি দাস চৌধুরী। মণিপুরি নৃত্যে সামিনা হোসেন প্রেমা পরিবেশন করেন শ্রীকৃষ্ণ ও রাধার প্রতি ভক্তের অচলা ভক্তি। শুক ও সারি নামে দুই তোতা পাখির বাগ্যুদ্ধে মহাভারতের দুই চরিত্রের রূপ ও মাহাত্ম্য বর্ণিত হয় এই নৃত্য প্রযোজনায়। 

এ ছাড়া তানচাপ, মেনকূপ ও তিনতালে মণিপুরি নৃত্যে ‘দশাবতার’ পরিবেশন করেন সিলেটের একাডেমি ফর মণিপুরি কালচার অ্যান্ড আর্টসের শিল্পীরা। এ নৃত্য প্রযোজনায় ভগবান শ্রীবিষ্ণুর মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়। 

সূর্য দেবতার মাহাত্ম্য বর্ণনায় ভরতনাট্যম ‘সূর্য কৌতূভাম’ পরিবেশন করেন অমিত চৌধুরী। রাগ বৃন্দাবনী ও তাল আদিতে নির্মিত এ নৃত্যে শিল্পী সূর্য দেবতার নানা ভূমিকা ফুটিয়ে তোলেন। তাল রূপক ও রাগ সাভেরীতে নৃত্য দল সৃষ্টি কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা পরিবেশন করেন ভরতনাট্যম ‘জাতিস্বরম’। 

নৃত্য পরিচালনা করেন আনিসুল ইসলাম হিরু। পরে অমিত চৌধুরীর দল ‘কায়াশ্রম’-এর শিল্পীরাও ভরতনাট্যমে সম্মেলক পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। 

আদি শঙ্করাচার্যের কাব্যিক স্তোত্র ‘রাজরাজেশ্বরী অষ্টকম’ পরিবেশন করেন বৃষ্টি ব্যাপারী। ‘দেবী স্তুতি’ শিরোনামের এ নৃত্য প্রযোজনায় দেবী কালী, পার্বতী ও সরস্বতীর ঐশ্বরিক গুণাবলি বর্ণনা করেন শিল্পী। রাগ রাগমালিকা ও তাল আদিতে নির্মিত ছিল এ নৃত্য। এ প্রযোজনায় মানবজীবনের অন্তর্নিহিত দ্বিধা ও সংকট দূর করতে স্রষ্টার সান্নিধ্য লাভের কথাও বলা হয়। 

তা ছাড়া তাল ত্রিতালে মো. মাসুম হুসাইন শুদ্ধ কত্থক, নৃত্যের নানা আঙ্গিক-চলন, ঠাট, উঠান, আমাদ, পরন আমাদ, লড়ি উপস্থাপনায় মুগ্ধ করেন দর্শকদের। 

জয়ন্ত সাহা/মাহফুজ

 

 

ছায়ানটের নৃত্য উৎসব শুরু

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
ছায়ানটের নৃত্য উৎসব শুরু
ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে নৃত্য উৎসবে নৃত্য করেছেন শিল্পীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হয়েছে দুই দিনের নৃত্য উৎসব। উৎসবের প্রথম দিন সাজানো হয়েছিল একক ও সম্মেলক পরিবেশনায়।

নৃত্য উৎসবের প্রথম দিনের প্রথম পর্বে মঞ্চে আসেন মণিপুরি নৃত্যশিল্পীরা। শুরুতে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলকভাবে পরিবেশন করেন মণিপুরি নৃত্য ‘রাধানর্তন’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান তামান্না রহমান পরিবেশন করেন ‘রাধারূপ বর্ণন’। ফারহানা আহমেদ পরিবেশন করেন ‘লাস্য তাণ্ডব’। ছায়ানটের শিক্ষক সুদেষ্ণা স্বয়ংপ্রভা তাথৈ পরিবেশন করেন ‘ননী চুরি’। 

ভরতনাট্যমে নওগাঁ থেকে আসা শিল্পী লাবীবা আলম রায়তা পরিবেশন করেন ‘কীর্তানাম’, প্রান্তিক দেব পরিবেশন করেন ‘রুদ্র তাণ্ডব’। 

জুয়েইরিয়াহ মৌলি পরিবেশন করেন ‘দেবী স্তুতি’। পরে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলকভাবে পরিবেশন করেন ‘তিল্লানা’। ওড়িশি নৃত্যে আফিয়া ইবনাত হালিম পরিবেশন করেন ‘অভিনয়’। নৃত্যদল নৃত্যছন্দ পরিবেশন করে ‘হংসধ্বনিপল্লবী’।  নৃত্যাঞ্চল পরিবেশন করে ‘তারানা’। পরে কত্থকে এস এম হাসান ইশতিয়াক ইমরান তাল ধামারে পরিবেশন করেন ‘ছন্দ প্রসঙ্গ’। মুনমুন আহমেদ তাল ধামারে পরিবেশন করেন ‘শিব বন্দনা’। হাসান ইশতিয়াক ইমরানের কাথাকিয়া দ্য সেন্টার অব আর্টস-এর শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘তারানা’। 

শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হবে নৃত্য উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। এদিন মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন সুইটি দাশ, সামিনা হোসেন প্রেমা ও সিলেটের একাডেমি ফর মণিপুরি কালচার অ্যান্ড আর্টস। ভরতনাট্যম পরিবেশন করবেন অমিত চৌধুরী ও তার দল কায়াশ্রম; দলীয় পরিবেশনায় থাকবে আনিসুল ইসলাম হিরুর দল সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার। ভরতনাট্যমে একক পরিবেশনায় থাকবেন বৃষ্টি বেপারী। 

শনিবার সন্ধ্যায় ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করেন চট্টগ্রামে প্রমা অবন্তী ও ঢাকার মো. জসিম উদ্দীন। কত্থক পরিবেশনায় থাকবেন মাসুম হুসাইন; রেওয়াজ পারফরমারস স্কুল; কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়; সুদেষ্ণা সাহা ও সমৃদ্ধা শামস ঐন্দ্রী।

উদীচীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলন শুরু

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০১ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩২ পিএম
উদীচীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলন শুরু
ছবি: খবরের কাগজ

শত ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে সমতার মন্ত্রে লড়াই অব্যাহত রাখার প্রত্যয় নিয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হলো বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা সত্যেন সেনের ঘনিষ্ঠ সহচর, প্রবীণ কৃষক নেতা লীনা চক্রবর্তী।

তিন দিনব্যাপী উদীচীর এবারের জাতীয় সম্মেলনের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘আমরা তো লড়ছি সমতার মন্ত্রে, থামব না কখনোই শত ষড়যন্ত্রে’। উদীচীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনের শুরুতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সম্মেলনের উদ্বোধক লীনা চক্রবর্তী। সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান। এরপর নেতারা ও অতিথিরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ঢাক-ঢোল-কাঁশি বাদনের সঙ্গে আনন্দে উদ্বেলিত হন সারা দেশ থেকে আসা উদীচীর হাজারও শিল্পী-কর্মী। এরপর একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন লীনা চক্রবর্তী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাফিউর রাব্বি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম।

আলোচনার পর উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের শিল্পীদের উদ্বোধনী পরিবেশনা গীতি-নাট্যালেখ্য ‘প্রতারিত চিরকাল’ দিয়ে শুরু হয় প্রথম দিনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। গীতি-নাট্যালেখ্যটি গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম।

এবারের জাতীয় সম্মেলনের ‘সম্মেলন সংগীত’ পরিবেশন করেন শাওন কুমার রায়। প্রথম দিনের পরিবেশনায় আরও ছিল বিভিন্ন বিভাগ থেকে উদীচীর সেরা জেলাগুলোর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ দিন সমবেত গণসংগীত পরিবেশন করে উদীচী মাদারীপুর ও চট্টগ্রাম জেলা সংসদ। গীতিআলেখ্য পরিবেশন করে উদীচী নারায়ণগঞ্জ জেলা সংসদ। উদীচী দিনাজপুর জেলা সংসদের শিল্পীরা পরিবেশন করেন নৃত্যনাট্য ‘নকশীকাঁথার মাঠ’। ছিল সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের দলীয় পরিবেশনা। এ ছাড়া একক সংগীত পরিবেশন করেন মায়েশা সুলতানা ঊর্বি এবং একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সুপ্রভা সেবতী। 

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনি আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে শুরু হবে সম্মেলনের সাংগঠনিক বা কাউন্সিল অধিবেশন। দিনব্যাপী নানা সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার পর সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পর্ব। 

আগামী শনিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে সম্মেলনের তৃতীয় ও সমাপনী দিনের কার্যক্রম। সারা দিন নানা সাংগঠনিক পর্ব শেষে পরবর্তী দুই বছরের জন্য নতুন কেন্দ্রীয় সংসদ গঠনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে উদীচীর ২৩তম জাতীয় সম্মেলন।

মাহফুজ

 

কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর ৯ গ্রন্থ প্রকাশিত

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫০ পিএম
কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর ৯ গ্রন্থ প্রকাশিত
কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠান

৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় উদার আকাশ প্রকাশনীর ৯টি গ্রন্থ বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এই গ্রন্থগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়।

এর মধ্যে ‘মোস্তাক হোসেন : জীবন ও ঐতিহ্য’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও সাহিত্যিক উজ্জ্বল সিনহা। 

বুধবার বইমেলার নারায়ণ সান্যাল সভাঘরে কবি সুবোধ সরকার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. গৌতম পাল, সাবেক মন্ত্রী ও কলামিস্ট পূর্ণেন্দু বসু, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রাবন্ধিক ড. মইনুল হাসান, কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন, রফিকুল ইসলাম, সুধাংশুশেখর দে প্রমুখের উপস্থিতিতে বইগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। 

এ দিন সন্ধ্যায় ছায়ানটের (কলকাতা) সভাপতি সোম‍ঋতা মল্লিক ও তার সংস্থার শিল্পীরা কাজী নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক সংগীতের মধ্য দিয়ে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন।

অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা কবিতা ‘প্রশ্ন’ ও ‘দুষ্টু’ আবৃত্তি করেন রাইসা নুর। 

যেসব গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়, সেগুলো হলো কলামিস্ট ও অধ্যাপক ড. অর্ণব সাহার প্রবন্ধ সংকলন ‘রাজনৈতিক কলাম: কর্তৃত্ববাদ বনাম আজকের ভারত’, সামশুল আলমের গল্প সংকলন ‘রূপের বাতি’, আলমগীর রাহমানের কাব্যগ্রন্থ ‘ফেক প্রোফাইলের বাগান বাড়ি’, বৃন্দাবন দাসের কাব্যগ্রন্থ ‘সত্যি সত্যি’, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আফসার আলির প্রবন্ধ সংকলন ‘আমার সমাজ’, অধ্যাপক ড. সা’আদুল ইসলামের প্রবন্ধ সংকলন ‘জাতির বিবেক অন্নদাশঙ্কর’৷

এ দিন ‘উদার আকাশ আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা বিশেষ সংখ্যা’ উদ্বোধন করেন কবি সুবোধ সরকার ও অধ্যাপক ড. গৌতম পাল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন লেখক-সম্পাদক-প্রকাশক ও গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে, সমাজকর্মী কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন, ছায়ানটের কর্ণধার সোমঋতা মল্লিক, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, রফিকুল ইসলাম, ডা. মো. আবেদ আলি, আকরাম খান, আলাউদ্দিন খান, সামিমা মল্লিক, আসিফ ইকবাল, সীমন্ত বসু, উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ফারুক আহমেদ, পত্রিকার সহ-সম্পাদক মৌসুমী বিশ্বাস ও রাইসা নুর।

এ দিন আল-আমিন মেমোরিয়াল মাইনরিটি কলেজের অধ্যক্ষ ড. নুরুল হককে সম্মাননা দেওয়া হয়। উপস্থিত বিশিষ্টজনরা উদার আকাশ প্রকাশনীর প্রশংসা করেন। প্রকাশক ফারুক আহমেদের বইমুখী কাজকর্মে সন্তোষ প্রকাশ করে সবাইকে বই কেনা ও বই পড়ার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি উদার আকাশ প্রকাশনের গ্রন্থগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বইমেলায় হাতে-গোনা তরুণ প্রকাশকদের মধ্যে বর্তমানে অন্যতম হয়ে উঠেছেন ফারুক আহমেদ। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত উদার আকাশ পত্রিকাটিও সাহিত্যজগতে বিপুল সাড়া ফেলেছে। প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সব গ্রন্থ পাওয়া যাচ্ছে বইমেলার ৫৯৫ নম্বর স্টলে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কবি সুবোধ সরকার, অধ্যাপক ড. গৌতম পাল, লেখক পূর্ণেন্দু বসু, অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, সমাজকর্মী কাজী মুহাম্মদ ইয়াসীন, সুধাংশুশেখর দে প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রকাশক ফারুক আহমেদ ও অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মইনুল হাসান।

সালমান/