ঢাকা ১ চৈত্র ১৪৩১, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
English

ছায়ানটের নৃত্য উৎসব শুরু

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৬ পিএম
ছায়ানটের নৃত্য উৎসব শুরু
ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে নৃত্য উৎসবে নৃত্য করেছেন শিল্পীরা। ছবি: সংগৃহীত

ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরি, ওড়িশি নৃত্যের প্রথিতযশা শিল্পীদের অংশগ্রহণে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হয়েছে দুই দিনের নৃত্য উৎসব। উৎসবের প্রথম দিন সাজানো হয়েছিল একক ও সম্মেলক পরিবেশনায়।

নৃত্য উৎসবের প্রথম দিনের প্রথম পর্বে মঞ্চে আসেন মণিপুরি নৃত্যশিল্পীরা। শুরুতে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলকভাবে পরিবেশন করেন মণিপুরি নৃত্য ‘রাধানর্তন’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান তামান্না রহমান পরিবেশন করেন ‘রাধারূপ বর্ণন’। ফারহানা আহমেদ পরিবেশন করেন ‘লাস্য তাণ্ডব’। ছায়ানটের শিক্ষক সুদেষ্ণা স্বয়ংপ্রভা তাথৈ পরিবেশন করেন ‘ননী চুরি’। 

ভরতনাট্যমে নওগাঁ থেকে আসা শিল্পী লাবীবা আলম রায়তা পরিবেশন করেন ‘কীর্তানাম’, প্রান্তিক দেব পরিবেশন করেন ‘রুদ্র তাণ্ডব’। 

জুয়েইরিয়াহ মৌলি পরিবেশন করেন ‘দেবী স্তুতি’। পরে ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মেলকভাবে পরিবেশন করেন ‘তিল্লানা’। ওড়িশি নৃত্যে আফিয়া ইবনাত হালিম পরিবেশন করেন ‘অভিনয়’। নৃত্যদল নৃত্যছন্দ পরিবেশন করে ‘হংসধ্বনিপল্লবী’।  নৃত্যাঞ্চল পরিবেশন করে ‘তারানা’। পরে কত্থকে এস এম হাসান ইশতিয়াক ইমরান তাল ধামারে পরিবেশন করেন ‘ছন্দ প্রসঙ্গ’। মুনমুন আহমেদ তাল ধামারে পরিবেশন করেন ‘শিব বন্দনা’। হাসান ইশতিয়াক ইমরানের কাথাকিয়া দ্য সেন্টার অব আর্টস-এর শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘তারানা’। 

শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ছায়ানট মিলনায়তনে শুরু হবে নৃত্য উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। এদিন মণিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন সুইটি দাশ, সামিনা হোসেন প্রেমা ও সিলেটের একাডেমি ফর মণিপুরি কালচার অ্যান্ড আর্টস। ভরতনাট্যম পরিবেশন করবেন অমিত চৌধুরী ও তার দল কায়াশ্রম; দলীয় পরিবেশনায় থাকবে আনিসুল ইসলাম হিরুর দল সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার। ভরতনাট্যমে একক পরিবেশনায় থাকবেন বৃষ্টি বেপারী। 

শনিবার সন্ধ্যায় ওড়িশি নৃত্য পরিবেশন করেন চট্টগ্রামে প্রমা অবন্তী ও ঢাকার মো. জসিম উদ্দীন। কত্থক পরিবেশনায় থাকবেন মাসুম হুসাইন; রেওয়াজ পারফরমারস স্কুল; কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়; সুদেষ্ণা সাহা ও সমৃদ্ধা শামস ঐন্দ্রী।

নানা আয়োজনে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
নানা আয়োজনে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ছবি : খবরের কাগজ

ফরিদপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টায় কবি কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় শহরের অম্বিকাপুরে কবির কবরে ফুলেল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক ও জসিম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, কবিপুত্র খুরশিদ আনোয়ারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

পরে জেলা প্রশাসন ও জসিম ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু বিশ্বাস। 

কবি কে স্মরণীয় করে ধরে রাখতে তার গল্প, কবিতা, উপন্যাস চর্চার তাগিদ দেন ও কবির রুহের মাগফিরাত কামনায় করেন। 

উল্লেখ্য পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ সালের পহেলা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য তার লেখনীর মধ্য দিয়ে নগর সভায় নিয়ে আসেন। কবর কবিতাসহ নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার অন্যতম নিদর্শন।

সঞ্জিব দাস/জোবাইদা/

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ এএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৫ এএম
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীন

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৪ মার্চ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মারা যান। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরতলির কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কবির পিতা আনছার উদ্দীন ও মা আমেনা খাতুন।

কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিকের পাঠ শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে এসএসসি, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। পরে তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি।

কবি জসীমউদ্‌দীন ১৯৭৬ সালে ইউনেসকো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি এবং ১৯৭৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। কবির অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘এক পয়সার বাঁশি’, ‘রাখালী’, ‘বালুচর’ প্রভৃতি।

রমজানে লালন স্মরণোৎসব হবে ১ দিন, থাকছে না মেলা

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৪২ এএম
আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:২০ এএম
রমজানে লালন স্মরণোৎসব হবে ১ দিন, থাকছে না মেলা
লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে জেলা প্রশাসক লালনের মাজার পরিদর্শন করেন। ছবি:খবরের কাগজ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেউড়িয়া আখড়াবাড়িতে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব। প্রতিবছর দোলপূর্ণিমা তিথিতে মরমি সাধক লালন শাহ ভক্তদের সঙ্গে আখড়াবাড়িতে এই স্মরণোৎসব উদ্‌যাপন করতেন। তবে এবার পবিত্র রমজানের কারণে উৎসবের সময়সূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এবার এক দিনেই শেষ হবে এই স্মরণোৎসব এবং মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাখা হয়নি।

লালন একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটায় কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির হলরুমে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এ ছাড়া সন্ধ্যা ও রাতে বাউল, ভক্ত, ফকিরদের জন্য ‘বাল্যসেবা’ প্রদান করা হবে। আগামীকাল (১৪ মার্চ) দুপুরে খেলাফতধারী বাউল ফকিররা নিজস্ব উদ্যোগে ‘পূর্ণসেবা’ নেবেন।

এবারের স্মরণোৎসবের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না রাখা। রমজান উপলক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার কারণে বাউল সাধুদের আগমনও তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে।

বাউল সাধক ফকির হৃদয় সাঁই জানিয়েছেন, আখড়াবাড়িতে বিকেলে সাধুসঙ্গ শুরু হবে, যা পরের দিন দুপুরে শেষ হবে। তিনি জানান, সাধু-বাউলরা তাদের আচার-অনুষ্ঠান অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে সাধুসঙ্গ করবেন।

লালনের মাজারে থাকা খোদা বক্স ফকির জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা গুরুকার্যে বসবেন এবং ভোরে সাহরির পূর্বে বাল্যসেবার কাজ সম্পন্ন করবেন। এর পর দুপুরে কেউ চাইলে নিজেদের কাফেলার মাধ্যমে ‘পুণ্যসেবা’ নিতে পারবেন।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানিয়েছেন, স্মরণোৎসবের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‌্যাব এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

এবারের স্মরণোৎসবে লালন শাহের দর্শন ও তার মানবতার বাণী পুনরায় প্রমাণিত হবে এবং এতে যোগ দেবেন শুধু আচার-অনুষ্ঠান ও সাধুসঙ্গের জন্য আগত ভক্তরা।

মিলন/তাওফিক/ 

‘২৬ বছরেও বিচার করতে না পারা রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা’

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
‘২৬ বছরেও বিচার করতে না পারা রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা’
যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্মেলনে বোমা হামলার ২৬ বছর উপলক্ষে স্মরণসভায় বক্তারা। ছবি: খবরের কাগজ

‘দেশে বেশ কিছু ঘটনার বিচার হলেও যশোরের উদীচী হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। বিচার করতে না পারা রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা। সেই দুর্বলতার সুযোগেই মৌলবাদী গোষ্ঠী তাদের বিস্তার ঘটিয়েছে। ২৬ বছর ধরে বিচারহীনতার আবর্তে আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। শুরুতেই যদি উদীচী ট্র্যাজেডির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উন্মোচন করা যেত, তাহলে পরবর্তী ঘটনা হয়তো ঘটত না।’ 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে ‘এসো প্রতিবাদী, এসো সংগ্রামী, বলো হত্যাকারীর ফাঁসি চাই’ স্লোগানে যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্মেলনে বোমা হামলার ২৬ বছর উপলক্ষে স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। স্মরণসভাটির আয়োজন করে যশোর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

সংগঠনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় স্মৃতিচারণ করেন ওই বোমা হামলায় এক পা হারানো সুকান্ত দাস। ঘটনার সময় তিনি স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এখন তার বয়স ৪৫ বছর। সুকান্ত দাস বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। পরবর্তী সময়ে সেই আওয়ামী লীগ আরও চারবার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু এত বছরেও হত্যাকাণ্ডের বিচার হলো না। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কথা বলি। সেই স্বাধীনতার পক্ষের বুলি দিয়ে যারা বছরের পর বছর ক্ষমতায়; তারা বিচার করতে পারেনি। শুধু আওয়ামী লীগ সরকার নয়; সরকারের পর সরকার যায়, কোনো সরকারই বিচার করতে পারেনি। যেকোনো সরকারই সদিচ্ছা দেখালে উদীচী ট্র্যাজেডির বিচার হতো।’

উদীচী যশোর সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু বলেন, ‘উদীচী প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই একটি অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। আর তাই উদীচীর ওপরই নেমে এসেছিল বোমা হামলা। শুধু উদীচী নয়, এর পরবর্তী সময়ে একে একে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, ধর্মীয় উপাসনালয়, আদালত, সিনেমা হলসহ সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার মতো নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড চালায় মৌলবাদী অপশক্তি।’ এ মামলার সব ধরনের দুর্বলতা কাটিয়ে অবিলম্বে শিল্পী-কর্মীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

স্মরণসভায় বক্তব্য দেন উদীচী যশোর সংসদের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অশোক রায়, আজিজুল হক মনি, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সহসভাপতি খন্দকার রজিবুল ইসলাম টিলন।

এর আগে সকালে টাউন হল ময়দানে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিল্পী-কর্মীদের স্মৃতিতে নির্মিত বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় উদীচী যশোর সংসদ, জেলা জাসদ, সিপিবি যশোর, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবর্তন যশোর, মুন্সী রইস উদ্দিন সংগীত একাডেমি, চারুপীঠ যশোর, উদীচী যশোর সরকারি এমএম কলেজ, অক্ষর শিশু শিক্ষালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল মাঠে স্মৃতিস্তম্ভে মশাল প্রজ্বালন করা হয়। 

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল মাঠে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিনে দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটে মঞ্চের নিচে রেখে দেওয়া দুর্বৃত্তদের বোমার। এতে প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন দেড় শতাধিক শিল্পী-কর্মী ও সংস্কৃতিমনা মানুষ।

 

নারী দিবসে ৩ মহীয়সীকে সম্মাননা দেবে ছায়ানট কলকাতা

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
নারী দিবসে ৩ মহীয়সীকে সম্মাননা দেবে ছায়ানট কলকাতা
রূপশ্রী ভট্টাচার্য্য, র‌্যাচেল ফেল ম্যাকডরম্যাট এবং মনোয়ারা খাতুন (বাঁ থেকে)

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে তিন মহীয়সীকে সম্মাননা দেবে ছায়ানট কলকাতা। তারা হলেন- রূপশ্রী ভট্টাচার্য্য, র‌্যাচেল ফেল ম্যাকডরম্যাট এবং মনোয়ারা খাতুন। 

এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উইসডম্‌ ট্রি ক্যাফেতে ‘জাগো নারী জাগো বহ্নিশিখা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সংগঠনটি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ‘পুবের কলম’ পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ড. শেখ মকবুল ইসলাম ও শুভজিৎ পাকড়াশী। 

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করবেন তন্ময় রায়চৌধুরী এবং পরিকল্পনা ও পরিচালনায় রয়েছেন সোমঋতা মল্লিক।

অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করবেন দেবযানী বিশ্বাস, ইন্দ্রাণী লাহিড়ী, সুকন্যা রায়, তিস্তা দে, সৃজিতা ঘোষ, রাজশ্রী বসু, অনিন্দিতা ঘোষ, শর্মিলা পাল, টুটুন দাস, প্রাযুক্তা চক্রবর্তী, আর্যদ্যুতি ঘোষ, অর্ঘ্যদ্যুতি ঘোষ, সোহালিয়া সিং, দেবলীনা চৌধুরী, রাজ্যশ্রী দাস এবং মৌমিতা ঘোষ। দলীয় পরিবেশনায় থাকবে বৈখরী।

যাদের সম্মাননা দেওয়া হবে তাদের সংক্ষিপ্ত জীবনী-

রূপশ্রী ভট্টাচার্য্য

রূপশ্রী ভট্টাচার্য্যের তালিম শুরু হয় কণ্ঠসংগীতে তাঁর বাবা দুর্গাচরণ ভট্টাচার্য্যের কাছে। সংগীতের পরিবেশে বেড়ে উঠা রূপশ্রী এরপর শিক্ষাগ্রহণ করেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদূষী শিপ্রাবোসের কাছে। ১৯৯৬ সালে তিনি পদ্মভূষণ পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে আইটিসি সংগীত রিসার্চ একাডেমির স্কলার হিসেবে পথচলা শুরু করেন। 

পাশাপাশি তিনি ধ্রুপদ এবং ধামারের তালিম গ্রহণ করেন ফাল্গুনী মিত্রের কাছে। পরবর্তী সময়ে তিনি একজন সুচিন্তিত এবং সুদক্ষ সহযোগী হারমোনিয়াম বাদক হিসেবে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে যোগ দেন এবং ২০০২ সাল থেকে আইটিসি সংগীত রিসার্চ একাডেমির সঙ্গে যুক্ত আছেন। 

বিভিন্ন সময় তিনি দেশে-বিদেশে বহু খ্যাতনামা কণ্ঠসংগীত শিল্পীদের সঙ্গত করেছেন। ২০০৬ সালে ভবনীপুর সংগীত সম্মিলনীতে একক বাদনের মধ্য দিয়ে তাঁর পথচলা শুরু হয়।

আশা করা যায়, একক হারমোনিয়াম বাদনের ক্ষেত্রে তাঁর এই অবদান বিভিন্ন সংগীত সম্মেলনে একক হারমোনিয়াম বাদনের উপস্থাপনাকে তার হারিয়ে যাওয়া গৌরব ফিরিয়ে দেবে। তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য একক উপস্থাপনা সল্টলেক কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, সপ্তসুর, বালিগঞ্জ মৈত্রী মিউজিক সার্কেল, আইটিসি সংগীত রিসার্চ একাডেমির সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান, দক্ষিণী সংগীত সম্মেলন, বেহালা কালচারাল ফেস্টিভ্যাল, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসংগীত একাডেমি এবং ঝুলনবাড়ি মিউজিক ফেস্টিভ্যাল।  

২০১৩ সালে বিহান মিউজিক থেকে তার অ্যালবাম লিলটিং রিডস্ প্রকাশিত হয়। হিন্দি সংবাদপত্র ‘সন্মার্গ’ থেকে তাঁকে অপরাজিতা সম্মান দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে এমন এক বিদুষীকে সম্মান জানাতে পেরে ছায়ানট গর্বিত ও আনন্দিত। তাঁর দীর্ঘ সুরেলা জীবন কামনা করছে ছায়ানট। 

র‌্যাচেল ফেল ম্যাকডরম্যাট

র‌্যাচেল ফেল ম্যাকডরম্যাট হলেন এশীয় ও মধ্যপ্রাচ্য সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এবং তিনি দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।

তিনি ১৯৮১ সালে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়া থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া ১৯৮৪ সালে হার্ভার্ড ডিভাইনিটি স্কুল থেকে ধর্মতত্ত্বের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ১৯৯৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

তাঁর গবেষণার আগ্রহ মূলত বঙ্গ (পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশ), বিশেষত হিন্দু দেব-দেবীকেন্দ্রিক ধর্মীয় ঐতিহ্য নিয়ে। তিনি এই অঞ্চলের ধর্মীয় ঐতিহ্য নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করেছেন।

বর্তমানে তিনি ভারত ও বাংলাদেশের ‘বিদ্রোহী কবি’ ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ওপর একটি গবেষণা প্রকল্পে নিযুক্ত আছেন।

র‌্যাচেল ফেল ম্যাকডরম্যাট তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যয়নেও নিজেকে সম্পৃক্ত করছেন। এ ছাড়া তিনি এ বিষয়ের ওপর কিছু কোর্স পড়ান, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ধারণাগুলো বিভিন্ন সংস্কৃতিতে কীভাবে বিকশিত হয়েছে তা অনুসন্ধান করে থাকেন।

মনোয়ারা খাতুন

বাড়ি পূর্ব বর্ধমান। কৃষিজীবী পরিবারের কন্যা, গৃহবধূ। তিনি সমাজসেবিকা, কবিতা, প্রবন্ধ, ছোট গল্পের লেখিকা। তাঁর পছন্দ বাঙালি মুসলিম সমাজসম্পর্কিত বিষয়। প্রাচীন মুসলিম নারীদের গীতিপদ্য বা গীতিকবিতা নিয়ে ‘মুসলিম বিয়ের গান’ বা গীত অন্দরমহল থেকে সংগ্রহ করে, সেই সম্পর্কে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখে আসছেন দীর্ঘকাল। অন্দরমহল বাসিনীদের জীবনগাথা সম্বলিত ‘মুসলিম বিয়ের গান’ গুলো বাহির মহলে, ডকুমেন্টারিতে, লোকসংস্কৃতির প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি দীর্ঘ সংগ্রাম চালিয়েছেন। ভালোবাসেন বিয়ের সংগীত শোনাতে এবং এ বিষয়ে অন্যদের অবগত করতে চেষ্টা করেন। 

১৯৯৩ সালে তাঁর বই ‘মুসলিম বিয়ের গান’ প্রকাশিত হয়। ২০২১ সালে হরফ প্রকাশনী থেকে ‘মুসলিম বিয়ের গানে বাঙালি মুসলিম সমাজ’ প্রকাশিত হয়।

সালমান/