ঢাকা ২ চৈত্র ১৪৩১, রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫
English

সময় প্রকাশনের ৩৫ বছর ১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০৩ পিএম
১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনা
১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনায় অংশ নেন দেশের বরেণ্য ঔপন্যাসিক, কথাসাহিত্যিক, কবি, রম্য ও কল্পবিজ্ঞান লেখকরা

গল্প, কবিতা, ভ্রমণকাহিনি, কল্পবিজ্ঞান, অনুবাদসহ বাংলা সাহিত্যের সব শাখার সৃজনশীল গ্রন্থ প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে সময় প্রকাশন। প্রকাশনা শিল্পে তাদের পথচলার ৩৫ বছর পূর্তি হলো ১১ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার)। এই মাহেন্দ্রক্ষণটি উদযাপন করতে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এক প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে এসেছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। 

সময় প্রকাশনের ৩৫ বছর পূর্তিতে ১০টি সংকলিত গ্রন্থের প্রকাশনায় অংশ নেন দেশের বরেণ্য ঔপন্যাসিক, কথাসাহিত্যিক, কবি, রম্য ও কল্পবিজ্ঞান লেখকরা। সাহিত্যের এই মুখর আয়োজনটি চলে সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী। 

সময় প্রকাশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অণুগল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন শাহনাজ রানু, কিশোর গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন কাইজার চৌধুরী, কিশোর ছড়া-কবিতা সংকলন সম্পাদনা করেছেন আমীরুল ইসলাম, রম্যগল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন সুমন্ত আসলাম, অণুকাব্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন হাসান হাফিজ, ভ্রমণগদ্য সংকলন সম্পাদনা করেছেন ইফতেখারুল ইসলাম, গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন মোহিত কামাল, স্কুলজীবনের প্রিয় স্মৃতি সংকলন সম্পাদনা করেছেন নিশাত সুলতানা, কল্পবিজ্ঞান-অনুবাদ গল্প সংকলন সম্পাদনা করেছেন দীপু মাহমুদ, সময়ের প্রেম-প্রেমপত্র/ব্যর্থ প্রেমের সংকলন সম্পাদনা করেছেন আবু রায়হান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কাইজার চৌধুরী, সুমন্ত আসলাম, ইফতেখারুল ইসলাম, মোহিত কামাল, দীপু মাহমুদ, আবু রায়হান।

অনুষ্ঠানে প্রকাশক ফরিদ আহমেদের সঞ্চালনা ও ইফতেখারুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপস্থিত সম্পাদকরা নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি সংকলনে যাদের লেখা ঠাঁই পেয়েছে, তাদের হাতে বইয়ের একটি করে কপি তুলে দেওয়া হয়। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল। তিনি তরুণ লেখকদের হাতে কিশোর ছড়া ও কবিতা সংকলনের কপি তুলে দেন। 

আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক খবরের কাগজের সম্পাদক মোস্তফা কামাল

প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘এমন আয়োজন আমাদের শিল্প-সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করছে, শক্তিশালী করছে। এটা হতে থাকুক। নানা রকমের আইডিয়া উঠে আসছে ক্রমাগতভাবে।’ 

অনুষ্ঠানে আসা লেখকদের উদ্দেশে কথাসাহিত্যিক কাইজার চৌধুরী বলেন, ‘তরুণরা প্রাচীনকালের লেখকদের গল্প পড়বে, আগামীকালের লেখকদেরও গল্পও তারা পড়বে। এই গল্প পড়তে পড়তে তারা ভালো মানুষ হয়ে যাবে। আজকে যারা কচিকাঁচার মেলা করছে, খেলাঘর করছে, তারা পরবর্তী সময়ে কখনো চাঁদাবাজ হবে না, মাদক পাচারকারী হবে না। তারা ভালো মানুষ হবে। সেই ভালো মানুষ গড়ার অস্ত্র আছে আপনাদের কাছে। আপনাদের গল্প, কবিতা, ছড়াই সেই অস্ত্র।’ 

দীপু মাহমুদ বলেন, ‘আমি সায়েন্স ফিকশন গল্প লিখতে কেন উৎসাহিত হই সেটি বলি। সায়েন্স ফিকশনে লেখক একটি যুক্তি দেন, তার বিপরীতে পাঠকও একটি পাল্টা যুক্তি হাজির করেন। এই পাল্টাপাল্টি যুক্তি আমার কাছে একটি দুর্দান্ত অবস্থা বলে মনে হয়েছে।’

সভাপতির বক্তব্যে ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, ‘এই ১০টা বইয়ের সংকলন যেখানে রাখা হবে সেই জায়গাটা আলোকিত হয়ে উঠবে।’

আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বর। ছবি: সংগৃহীত

দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও লেখক আরজ আলী মাতুব্বরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালে আজকের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 

বরিশাল শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ছোট্ট গ্রাম লামচর। এই গ্রামেরই এক গরিব কৃষক পরিবারে ১৯০০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে অভাব-অনটনের কারণে স্কুল ছেড়ে দিতে হলেও পরবর্তী জীবনে আরজ আলী মাতুব্বর স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন।

নিজের চেষ্টায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখায় পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও আরজ আলী মাতুব্বর অতিথি শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিয়েছেন ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বাধীনভাবে দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্ম বিষয়ে মত প্রকাশ করে আজীবন কুসংস্কার এবং গোঁড়ামির বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। এ জন্য সমাজের এক শ্রেণির মানুষ, এমনকি অনেক সময় রাষ্ট্রীয় বাহিনীরও চক্ষুশূল হয়েছেন তিনি। 

প্রথাবিরোধী এই লেখককে অনেক বাধা পেরিয়ে নিজের বই প্রকাশ করতে হয়েছে। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম বই ‘সত্যের সন্ধানে’ প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার উল্লেখযোগ্য চারটি গ্রন্থ হচ্ছে: ‘সত্যের সন্ধানে’ (১৯৭৩), ‘সৃষ্টির রহস্য’ (১৯৭৭), ‘অনুমান’ (১৯৮৩) ও ‘স্মরণিকা’ (১৯৮২)। মৃত্যুর কিছুকাল পরে প্রকাশিত হয় আরেকটি বই ‘মুক্তমন’ (১৯৮৮)।

তার বেশ কিছু লেখা ‘আরজ আলী মাতুব্বর রচনাবলী’ নামে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। 

আরজ আলী মাতুব্বর বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেহদানের অঙ্গীকার করে যান।

নানা আয়োজনে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৫৪ পিএম
নানা আয়োজনে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ছবি : খবরের কাগজ

ফরিদপুরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টায় কবি কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। 

এ সময় শহরের অম্বিকাপুরে কবির কবরে ফুলেল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক ও জসিম ফাউন্ডেশনের সভাপতি মো. কামরুল হাসান মোল্লা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, কবিপুত্র খুরশিদ আনোয়ারসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

পরে জেলা প্রশাসন ও জসিম ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিন্টু বিশ্বাস। 

কবি কে স্মরণীয় করে ধরে রাখতে তার গল্প, কবিতা, উপন্যাস চর্চার তাগিদ দেন ও কবির রুহের মাগফিরাত কামনায় করেন। 

উল্লেখ্য পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ১৯০৩ সালের পহেলা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য তার লেখনীর মধ্য দিয়ে নগর সভায় নিয়ে আসেন। কবর কবিতাসহ নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার অন্যতম নিদর্শন।

সঞ্জিব দাস/জোবাইদা/

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৪ এএম
আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২৫ এএম
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীন

পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৪ মার্চ। ১৯৭৬ সালের এই দিনে তিনি মারা যান। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরতলির কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। কবির পিতা আনছার উদ্দীন ও মা আমেনা খাতুন।

কবির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফরিদপুর শহরের হিতৈষী স্কুলে। সেখানে প্রাথমিকের পাঠ শেষ করে তিনি ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯২১ সালে এসএসসি, ১৯২৪ সালে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে এইচএসসি এবং একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। পরে তিনি ১৯৩১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। ১৯৬১ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি।

কবি জসীমউদ্‌দীন ১৯৭৬ সালে ইউনেসকো পুরস্কার, ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি এবং ১৯৭৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। কবির অমর সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘এক পয়সার বাঁশি’, ‘রাখালী’, ‘বালুচর’ প্রভৃতি।

রমজানে লালন স্মরণোৎসব হবে ১ দিন, থাকছে না মেলা

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৪২ এএম
আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:২০ এএম
রমজানে লালন স্মরণোৎসব হবে ১ দিন, থাকছে না মেলা
লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে জেলা প্রশাসক লালনের মাজার পরিদর্শন করেন। ছবি:খবরের কাগজ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেউড়িয়া আখড়াবাড়িতে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে লালন স্মরণোৎসব। প্রতিবছর দোলপূর্ণিমা তিথিতে মরমি সাধক লালন শাহ ভক্তদের সঙ্গে আখড়াবাড়িতে এই স্মরণোৎসব উদ্‌যাপন করতেন। তবে এবার পবিত্র রমজানের কারণে উৎসবের সময়সূচি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এবার এক দিনেই শেষ হবে এই স্মরণোৎসব এবং মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রাখা হয়নি।

লালন একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটায় কুষ্টিয়ার লালন একাডেমির হলরুমে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এ ছাড়া সন্ধ্যা ও রাতে বাউল, ভক্ত, ফকিরদের জন্য ‘বাল্যসেবা’ প্রদান করা হবে। আগামীকাল (১৪ মার্চ) দুপুরে খেলাফতধারী বাউল ফকিররা নিজস্ব উদ্যোগে ‘পূর্ণসেবা’ নেবেন।

এবারের স্মরণোৎসবের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হলো দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন না রাখা। রমজান উপলক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার কারণে বাউল সাধুদের আগমনও তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে।

বাউল সাধক ফকির হৃদয় সাঁই জানিয়েছেন, আখড়াবাড়িতে বিকেলে সাধুসঙ্গ শুরু হবে, যা পরের দিন দুপুরে শেষ হবে। তিনি জানান, সাধু-বাউলরা তাদের আচার-অনুষ্ঠান অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে সাধুসঙ্গ করবেন।

লালনের মাজারে থাকা খোদা বক্স ফকির জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা গুরুকার্যে বসবেন এবং ভোরে সাহরির পূর্বে বাল্যসেবার কাজ সম্পন্ন করবেন। এর পর দুপুরে কেউ চাইলে নিজেদের কাফেলার মাধ্যমে ‘পুণ্যসেবা’ নিতে পারবেন।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান জানিয়েছেন, স্মরণোৎসবের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, র‌্যাব এবং গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

এবারের স্মরণোৎসবে লালন শাহের দর্শন ও তার মানবতার বাণী পুনরায় প্রমাণিত হবে এবং এতে যোগ দেবেন শুধু আচার-অনুষ্ঠান ও সাধুসঙ্গের জন্য আগত ভক্তরা।

মিলন/তাওফিক/ 

‘২৬ বছরেও বিচার করতে না পারা রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা’

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৬ পিএম
‘২৬ বছরেও বিচার করতে না পারা রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা’
যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্মেলনে বোমা হামলার ২৬ বছর উপলক্ষে স্মরণসভায় বক্তারা। ছবি: খবরের কাগজ

‘দেশে বেশ কিছু ঘটনার বিচার হলেও যশোরের উদীচী হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। বিচার করতে না পারা রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা। সেই দুর্বলতার সুযোগেই মৌলবাদী গোষ্ঠী তাদের বিস্তার ঘটিয়েছে। ২৬ বছর ধরে বিচারহীনতার আবর্তে আমরা ঘুরপাক খাচ্ছি। শুরুতেই যদি উদীচী ট্র্যাজেডির সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উন্মোচন করা যেত, তাহলে পরবর্তী ঘটনা হয়তো ঘটত না।’ 

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে ‘এসো প্রতিবাদী, এসো সংগ্রামী, বলো হত্যাকারীর ফাঁসি চাই’ স্লোগানে যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সম্মেলনে বোমা হামলার ২৬ বছর উপলক্ষে স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। স্মরণসভাটির আয়োজন করে যশোর উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

সংগঠনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় স্মৃতিচারণ করেন ওই বোমা হামলায় এক পা হারানো সুকান্ত দাস। ঘটনার সময় তিনি স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এখন তার বয়স ৪৫ বছর। সুকান্ত দাস বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। পরবর্তী সময়ে সেই আওয়ামী লীগ আরও চারবার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু এত বছরেও হত্যাকাণ্ডের বিচার হলো না। আমরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কথা বলি। সেই স্বাধীনতার পক্ষের বুলি দিয়ে যারা বছরের পর বছর ক্ষমতায়; তারা বিচার করতে পারেনি। শুধু আওয়ামী লীগ সরকার নয়; সরকারের পর সরকার যায়, কোনো সরকারই বিচার করতে পারেনি। যেকোনো সরকারই সদিচ্ছা দেখালে উদীচী ট্র্যাজেডির বিচার হতো।’

উদীচী যশোর সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু বলেন, ‘উদীচী প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই একটি অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। আর তাই উদীচীর ওপরই নেমে এসেছিল বোমা হামলা। শুধু উদীচী নয়, এর পরবর্তী সময়ে একে একে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, ধর্মীয় উপাসনালয়, আদালত, সিনেমা হলসহ সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার মতো নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড চালায় মৌলবাদী অপশক্তি।’ এ মামলার সব ধরনের দুর্বলতা কাটিয়ে অবিলম্বে শিল্পী-কর্মীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

স্মরণসভায় বক্তব্য দেন উদীচী যশোর সংসদের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অশোক রায়, আজিজুল হক মনি, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সহসভাপতি খন্দকার রজিবুল ইসলাম টিলন।

এর আগে সকালে টাউন হল ময়দানে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিল্পী-কর্মীদের স্মৃতিতে নির্মিত বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় উদীচী যশোর সংসদ, জেলা জাসদ, সিপিবি যশোর, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবর্তন যশোর, মুন্সী রইস উদ্দিন সংগীত একাডেমি, চারুপীঠ যশোর, উদীচী যশোর সরকারি এমএম কলেজ, অক্ষর শিশু শিক্ষালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। সন্ধ্যায় যশোর টাউন হল মাঠে স্মৃতিস্তম্ভে মশাল প্রজ্বালন করা হয়। 

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোর টাউন হল মাঠে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিনে দুই দফা বিস্ফোরণ ঘটে মঞ্চের নিচে রেখে দেওয়া দুর্বৃত্তদের বোমার। এতে প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন দেড় শতাধিক শিল্পী-কর্মী ও সংস্কৃতিমনা মানুষ।