কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে জানানো সাপেক্ষে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল, গেল দুইদিন আগে। এবার সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সহযোগিতায় ১৭ জন শিক্ষার্থীকে থানা থেকে থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাজধানী ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৭ জন শিক্ষার্থীকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছেন তারা।
থানা থেকে থেকে ছাড়িয়ে আনা ১৭ শিক্ষার্থীরা হলেন- দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মুক্তার আহমেদ, রুকু খাতুন; শিল্পকলা বিভাগের ইমরান সাদমান, ইশরাক তৈমুর, ইমরান মিয়া; বাংলা বিভাগের মোসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ; কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের আবিদ হাসান, আরবি বিভাগের আবিদ হাসান রাফি; ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের নাজমুল হাসান শান্ত, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের মাসুম বিল্লাহ, ব্যাংকিং বিভাগের খাইরুল আজিম, ব্যবসায় প্রশাসন ইনিস্টিউটের (আইবিএ) রুবায়েত ফেরদৌস রনিন, ওএসএল বিভাগের রাশেদ খান আবিদ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাদমান আব্দুল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মোস্তাক তাহমিদ, মার্কেটিং বিভাগের আরমান খান এবং ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী এম এ তামিম।
এদিকে একদিনের মাথায় শিক্ষার্থীরা যেন হয়রানির শিকার হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহকারী প্রক্টরের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাবির কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে সহকারী প্রক্টর ড. মো. হাসান ফারুক (মোবাইল নম্বর: ০১৭৬৮৮৮৪৪২৮) এবং ছাত্রীদের সহকারী প্রক্টর ড. ফারজানা আহমেদের (মোবাইল নম্বর: ০১৭১১৫৭৬৩৮৯) সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। বলা হচ্ছে নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা খবর পাওয়া মাত্রই সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা করছি। চেষ্টার কোন অংশে কমতি রাখিনি। উপাচার্য নিজেও বিভিন্ন থানায় এবং পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন। হাসপাতালে গিয়েছেন, আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া আহত ৮০-এর অধিক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্য অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা কোর্টে চলে গেছে তাদের আইনি সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। ১৭ জনকে ছাড়িয়ে আনার পাশাপাশি আটকে থাকা এবং হয়রানির শিকার হওয়াদের নিরাপদ করার চেষ্টা করছি।’
এর আগে গত সোমবার (২৯ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও আইন-শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নানা সংবাদ গণমাধ্যমে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানায়। সেই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে তাকে প্রক্টর অফিসকে অবহিত সাপেক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতা প্রদান করার বিষয়টি আশ্বস্ত করা হয়।
আরিফ জাওয়াদ/এমএ/