ঢাকা ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সোমবার যেমন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৯ পিএম
আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:১২ পিএম
সোমবার যেমন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
উপাচার্যের বাসভবনে দুর্বৃত্তকারীদের হামলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সোমবার (৫ আগস্ট) সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকরা কারফিউ ভঙ্গ করে সমাবেশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

এর পরপরই আন্দোলনকারীরা ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনে ঢাবিতে প্রবেশ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত সরকারের পদত্যাগের ১ দফা দাবিতে আন্দোলনকারীদের একটি মিছিল শহিদ মিনারে চলে আসে। সেখানে তারা দীর্ঘক্ষণ অবস্থান নেন এবং সরকার পতনের নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

শহিদ মিনারে পুলিশের গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ: এদিকে মিনিট ৩০ যেতে না যেতে শহিদ মিনার এলাকায় পুলিশ কারফিউ উপেক্ষা করে জড়ো হওয়া লোকজনকে সরিয়ে দিতে গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। মুহূর্তেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এতে এক পথচারী গুলিবিদ্ধসহ আহত হন অন্তত ১০ জন। এ ছাড়া দুজনকে আটকও করা হয় বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে শাহবাগ থানা থেকে ৬-৭টি সাঁজোয়া যানসহ একদল পুলিশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে শহিদ মিনারের দিকে যায়। এ সময় শহিদ মিনারে জড়ো হওয়া লোকজনকে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন তারা। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। তবে এ ঘটনায় পুলিশের কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

আবার জড়ো হন আন্দোলনকারীরা: এরপরই বেলা বাড়ার পর বিচ্ছিন্ন আন্দোলনকারীরা শাহবাগ, সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা আড়াইটার পর শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার পর উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো শাহবাগ এলাকা।

উপাচার্যের বাসভবনে দুর্বৃত্তকারীদের হামলা: ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের বাসার প্রধান ফটক টপকিয়ে ভেতরে হামলার  অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে প্রধান ফটক ভেঙে হাজারও আন্দোলনকারীরা তার বাসায় ঢুকে পড়েন। এ সময় বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। এ ছাড়া বাড়ির ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। এ বিষয়ে ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে উৎসুক জনতার সেলফি: এদিকে বেলা আড়াইটার পরপরই আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি উৎসুক জনতারও ঢল নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। নীলক্ষেত মোড়, শাহবাগ থানা, বাংলামোটরে সেনাদের সাজোয়া যান সহকারে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ সময় উৎসুক জনতাকে তাদের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল সেলফি তুলতে এবং বুকে জড়িয়ে ধরতেও দেখা যায়।

শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়া উদ্বাস্তু জীবন

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ এএম
শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়া উদ্বাস্তু জীবন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক। খবরের কাগজ

‘প্রতিদিন রাত হলেই ভাবতে হয় আজকে রাতটা কোথায় কাটাব? কীভাবে কাটাব? পড়াশোনার চিন্তা বাদ দিয়ে এখন থাকা-খাওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে। অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিসিএসের প্রিপারেশনও নিচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম এ বছরের মধ্যেই স্নাতক শেষ করে ফেলতে পারব। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে গত জুলাই এবং আগস্ট মিলিয়ে আমাদের দুবার হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। যার ফলে পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’

এভাবেই পড়াশোনা ও বাসস্থান নিয়ে নিজের অনিশ্চয়তার কথা জানাচ্ছিলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী। গত ২৬ আগস্ট ছাত্রদের তিনটি আবাসিক হলের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরদিন খবরের কাগজে ‘ছাত্রলীগের দোসর’ চিহ্নিত করতে হল ছাড়া শিক্ষার্থীরা, শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে কীভাবে স্থানীয়দের দেওয়া আলটিমেটামের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হয় তার বর্ণনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে এসব শিক্ষার্থীদের এক রকম যাযাবরের মতো জীবনযাপন করতে হচ্ছে। উদ্বাস্তুর মতো বন্ধু অথবা সিনিয়রের মেসে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে শুধুমাত্র রাত্রি যাপনের জন্য। দেশের বন্যা পরিস্থিতি, দূরবর্তী স্থানে যাতায়াত ভোগান্তি এবং টিউশন টিকিয়ে রাখার আশায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের সিলেটেই অবস্থান করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনির মাধ্যমে পরিবারকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। সিলেট থেকে এখন বাসায় চলে গেলে টিউশনিগুলো চলে যাবে। সারা দিন টিউশনি শেষে রাতে কোথায় থাকব বা কী খাব এটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় খুললেই পরীক্ষা, কিন্তু ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় আমার মতো অনেকেই হয়তো শারীরিক দুর্বলতা বা মানসিক আশান্তিতে ভুগবে।’ 

ছাত্ররা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ বিভাগেই সেমিস্টার ফাইনাল চলমান ছিল। অনেকের পরীক্ষার সময়সূচি দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন বিভাগ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় খোলামাত্রই পরীক্ষা শুরু হবে। এ পরিস্থিতিতে একদিকে খাবারের সমস্যা অন্যদিকে থাকার জায়গা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। হল থেকে বের করে দেওয়ার পর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ছাত্রদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি ভবনের চারটি রুম খুলে দেওয়া হয়। দুই বেডের একেকটা রুমে ৬ থেকে ৭ জন করে থাকতে হচ্ছে। প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী থেকে অতিথি ভবনে ২০ থেকে ২৫ জনের জায়গা মিলেছে। অন্য শিক্ষার্থীরা যাযাবরের মতো বাস করছেন।

এদিকে গত ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হাসনাতকে সদস্যসচিব করে আবাসিক হলগুলোর সিট বরাদ্দের উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির কাজ সিট বরাদ্দের জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা প্রণয়ন এবং প্রাথমিক এই নীতিমালা বাস্তবায়ন।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হাসনাত বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে হলের সিট বণ্টনের নীতিমালা প্রণয়ন করার বিষয়ে একমত হয়েছি। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়ার জন্য আমরা একটা ফরম দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা শিগগিরই একটা নীতিমালা প্রস্তাব করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মাধ্যমে পরবর্তীতে তা বাস্তবায়িত হবে। আমরা আশা করছি ছাত্ররা ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।’

প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে শাবিপ্রবির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে। গত ২৬ মে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি দেওয়া হয়। ছুটি শেষে ২৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা থাকলেও বন্যার কারণে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তারপর শিক্ষকদের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলন, পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে এখনো বন্ধ আছে শাবিপ্রবির শিক্ষা কার্যক্রম।

ইবির শিক্ষার্থীরা চান ক্লিন ইমেজের ভিসি

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০০ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০০ এএম
ইবির শিক্ষার্থীরা চান ক্লিন ইমেজের ভিসি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্নীতিমুক্ত, ক্লিন ইমেজ ও সংস্কারমনা ভিসি নিয়োগের দাবিতে মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রধান ফটকের সামনে এসে মিলিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমরা যে ১৩ জন উপাচার্য পেয়েছি তারা কোনো না কোনোভাবে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এতে দেখা যায় তারা অনিয়ম-দুর্নীতির মহা সুযোগ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্কিত করেছেন। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত ভিসির পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা এমন ভিসি চাই না যার অডিও ফাঁস হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে, রাতে মেয়েদের হলের সামনে গিয়ে মাতলামি করে, দিনে সুশীল সেজে রাতে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কোনো শিক্ষককে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবে। আমরা নিরপেক্ষ, সংস্কারমনা, শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগের জোরালো দাবি জানাই।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমরা আগে দেখেছি, ভিসি নিয়োগের পর তারা বাণিজ্যিক ক্যাম্পাস উপহার দিয়েছিল। ক্যাম্পাস বাণিজ্যের কোনো কারখানা নয়, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান চর্চার জায়গা। আমরা এমন একজন ভিসি চাই যিনি হবেন শিক্ষার্থীবান্ধব। শিক্ষার্থীদের হৃৎস্পন্দন বুঝে তিনি কাজ করবেন। কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যার ন্যূনতম কোনো যোগসূত্র থাকবে না। যিনি হবেন ক্লিন ইমেজের অধিকারী এবং সর্বমহলে স্বীকৃত।

এখনো স্থবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ এএম
এখনো স্থবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

সরকার পরিবর্তনের প্রায় দেড় মাস পরেও স্থবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্ব এবং এরপর শিক্ষকদের পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে সব মিলিয়ে প্রায় ৬ মাস ধরেই বন্ধ আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

সরকার পরিবর্তনের পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান, হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টর পদত্যাগ করেন। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক-প্রশাসনিক এবং শৃঙ্খলার কাজে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত চলমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রমসহ সব প্রশাসনিক এবং আর্থিক দায়িত্ব পালন করার দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মুজিবুর রহমান মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এই বিষয় রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে চলমান সব কাজ তিনি দেখবেন। চলমান গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, বেতন-ভাতা, সরকারি গবেষণার অগ্রগতি, সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট স্বাক্ষরসহ যাবতীয় কাজ ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান করতে পারবেন।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পদে থাকা অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের ৪ জুলাই। এরপর থেকে শূন্যই আছে পদটি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিভিন্ন কাজেও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে বলে জানা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক দায়িত্বে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির। তিনিও ৫ আগস্টের পর থেকে ১৪ দিন অফিসে আসেননি। এতে মোট ১৩টি পরীক্ষার ফল জমে যায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে। তবে পদত্যাগের আগে সেগুলোতে স্বাক্ষর করে যাওয়ার পর আরও চারটি বিভাগের পরীক্ষার ফল জমা হয়েছে দপ্তরে। এ মুহূর্তে ফলগুলো চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার কেউই নেই। এ ছাড়া প্রশ্ন মডারেশন, গেস্ট টিচার নিয়োগসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছে দপ্তরটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের (বর্তমান বিজয় ২৪ হল) আবাসিক শিক্ষার্থী ওবাদুল্লাহ হক বলেন, ‘দেশের এমন পরিস্থিতিতে হলে কোনো প্রশাসন না থাকলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী থাকবে? আমরা হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ওই সময় কার কাছে সমাধানের জন্য যাব? ক্যাম্পাসে প্রক্টরিয়াল বডি নেই। নেই ভিসি কিংবা প্রো-ভিসি। এর মধ্যে আবার আমাদের হলের প্রভোস্টও নেই। আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘উপ-উপাচার্য অফিসে না এসেও কয়েকটি ফলে স্বাক্ষর করে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু এরপরেও বিভিন্ন বিভাগের ৪টি পরীক্ষার ফল স্বাক্ষরের জন্য আটকে আছে। তবে প্রশাসন না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি আবাসিক হলের মধ্যে তিনটি হলের প্রভোস্টপদ শূন্য।

রাজনীতি নিষিদ্ধ না হলে ক্লাসে ফিরবেন না ঢাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
রাজনীতি নিষিদ্ধ না হলে ক্লাসে ফিরবেন না ঢাবি শিক্ষার্থীরা
ঢাবিতে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন একদল সাধারণ শিক্ষার্থী। ছবি : খবরের কাগজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তাদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল সাধারণ শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা না হলে ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা। 

সমাবেশে অংশ নেওয়া বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী নাফিউর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাস থেকে সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ চাই। ঢাবি শিক্ষার্থীরা এখন আরও শক্তিশালী হয়েছেন। আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করে নেব। আমরা কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম আর হতে দেব না। ক্যাম্পাসে যদি কেউ দলীয় রাজনীতি করতে আসেন, হলগুলো যদি আর কেউ দখল করতে চান, তাদের হাসিনার মতোই পালাতে হবে। কেউ ক্যাম্পাস দখলের ষড়যন্ত্র করলে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করবেন।’

উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে দুই দফা দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। আমাদের প্রথম দাবি, ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে সব ধরনের দলীয় ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং দ্বিতীয় দফা অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দিতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সানজানা ইতি বলেন, ‘আমরা জুলাই গণ-অভুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ লাভ করেছি। কিন্তু আমাদের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা এখনো আসেনি। ক্যাম্পাসে এখনো দলীয় রাজনীতি পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে দলীয় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি বন্ধ করে ছাত্র সংসদ চালু করা হোক।’

সমাবেশ জানানো হয় হয়, আগামীকাল শনিবার বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক কর্মসূচির পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে তা জানানো হবে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ না করা হলে ২২ তারিখে ক্লাসে ফিরতে চান না তারা।

এর আগে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর থেকে মিছিল শুরু করে হলপাড়া, ভিসি চত্বর, টিএসসি, শহিদ মিনার, দোয়েল চত্বর হয়ে আবারও টিএসসিতে যান।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ক্যাম্পাস পলিটিক্স, নো মোর নো মোর’; ‘দলীয় রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘হলে হলে খবর দে, লেজুড়বৃত্তি ছাত্ররাজনীতির কবর দে’; ‘ছাত্র সংসদ চালু করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

 

চবির নতুন উপাচার্য হচ্ছেন অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ পিএম
চবির নতুন উপাচার্য হচ্ছেন অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন উপাচার্য হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন চবির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র তার উপাচার্য  নিয়োগের চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

আগামী রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে জানা যায়। 

জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া বলেন, ‘উপাচার্য চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি সিভির সঙ্গে ছবি না দেওয়ায় তিনি আমার কাছে ছবি চেয়েছেন। আরও কিছু ইনফরমেশন চেয়েছেন। প্রজ্ঞাপন জারি হলে জানা যাবে।’

এর আগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে গত ১২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ প্রশাসন সব পর্যায়ের কর্তারা পদত্যাগ করেন। দীর্ঘ এক মাস ধরে এসব পদ শূন্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় অচল হয়ে রয়েছে। আবাসিক হল বন্ধ থাকা ও উপাচার্য ছাড়া কোনো কাজই সঠিকভাবে করতে পারায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

প্রায় আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে তীব্র সেশনজটের আশঙ্কায় দ্রুত উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

মাহফুজ শুভ্র/অমিয়/