ঢাকা ২২ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

অপ্রচলিত উদ্ভিদই পুষ্টিতে ভরপুর

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০০ পিএম
অপ্রচলিত উদ্ভিদই পুষ্টিতে ভরপুর

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাঠপর্যায়ের কৃষি নিয়ে কাজ করেন এমন গবেষকের সন্ধান করলে সবার আগে যার নাম আসবে তিনি হলেন- ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির। তিনি গবেষণা করেছেন শিমুল আলু, চুকুর, অড়হরসহ নানাবিধ উদ্ভিদ নিয়ে এবং মাঠপর্যায়ে সেগুলোকে ব্যবহার উপযোগীও করে তুলেছেন।শিমুল আলু বা কাসাভা, রোজেল বা চুকুর, অড়হরসহ বিভিন্ন উদ্ভিদ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করেছেন ড. ছোলায়মান। এসব উদ্ভিদ থেকে তিনি উন্নতমানের খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করেছেন। চিপস, চপ, কেক, পাকোড়া, পুডিংসহ নানাবিধ মুখরোচক খাদ্য এসব উদ্ভিদ থেকে তৈরি করেছেন তিনি। মূলত মাঠ কৃষির উন্নয়নের লক্ষ্যেই গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। প্রচলিত উদ্ভিদ নিয়ে অধ্যাপক ছোলায়মানের কার্যক্রম সম্পর্কে লিখেছেন বাকৃবির শিক্ষার্থী মো. আশিকুজ্জামান।

শিমুল আলু বা কাসাভা
শিমুল আলু বা কাসাভা প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে রুটি, তেলের পিঠা, হালুয়া, পাকোড়া, চিপস, চপ, কেকসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরি করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। কাসাভা হলো গাছের শিকড়জাত এক ধরনের আলু। অনেকের কাছে এটা শিমুল আলু বা কাঠ আলু হিসেবেও পরিচিত। কাসাভা শর্করাজাতীয় খাবারের অন্যতম উৎস। এই কাসাভা সহজে এবং কম খরচেই চাষাবাদ করা সম্ভব। কম উর্বর আবাদি জমিতেও এর চাষাবাদ করা যায়। যার ফলস্বরূপ চাল ও আলুর ওপর নির্ভরশীলতাও অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

কাসাভা সিদ্ধ করে, পুড়িয়ে, এমনকি গোলআলুর মতো তরকারির সঙ্গে রান্না করেও খাওয়া যায়। কাসাভার আটা গমের আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি, পরোটা, কেক তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। কেক, চপ, পাকোড়া, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো কাসাভার চিপস তৈরি করে প্রদর্শনী করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। এ ছাড়া গো-খাদ্য হিসেবেও কাসাভার ব্যবহার সম্ভব।

গবেষক আরও জানান, খাদ্যের চেয়ে শিল্পে কাসাভার ব্যবহার বেশি। বিশেষ করে বস্ত্র ও ওষুধশিল্পের জন্য কাসাভা গুরুত্বপূর্ণ। গ্লুকোজের অন্যতম উৎস এই কাসাভা। কাসাভার স্টার্চকে এক ধরনের জীবাণুর মাধ্যমে গ্লুকোজে রূপান্তর করা হয়। কাসাভাতে গ্লুটেইন নামক প্রোটিন রয়েছে, যা আঠালো হয়ে থাকে।

রোজেল বা চুকুর
একটি সম্ভাবনাময় গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ হলো রোজেল। আঞ্চলিক ভাষায় যেটি চুকাই বা চুকুর নামে পরিচিত। রোজেল পৃথিবীব্যাপী পুষ্টিগুণ, স্বাদ ও ঘ্রাণের জন্য বিখ্যাত হলেও বাংলাদেশে এর চাহিদা নেই বললেই চলে। অপরিচিত ও অপ্রচলিত এ রকম একটি উদ্ভিদের ফুলের বৃতি প্রক্রিয়াজাত করে জ্যাম, জেলি, পুডিং, চাটনি, আচার, চকলেট, চা ও জুসসহ বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য ও পানীয় উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন ড. ছোলায়মান।

অধ্যাপক ছোলায়মান বলেন, মূলত রোজেলের বৃতিই প্রধান কার্যকর উপাদান। রোজেল ফুলের মাংসল বৃতি সরাসরি খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। বৃতির উজ্জ্বল লাল রঙ জৈব খাবার রঙ হিসেবেও ব্যবহার করা সম্ভব। বৃতি থেকে জ্যাম, জেলি, চা, আচার, চাটনি, জুসসহ বিভিন্ন পানীয় প্রস্তুত করা সম্ভব। রোজেলের বীজ যখন পরিপক্ব হয়, তখন তা আমিষ ও চর্বিতে পরিপূর্ণ থাকে বিধায় এটা প্রক্রিয়াজাত করে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। অন্যদিকে রোজেলের পাতাও ঔষধিগুণে পরিপূর্ণ। তা ছাড়া বৃতির উজ্জ্বল রঙই প্রমাণ করে দেয়, এটা পুষ্টিগুণে ভরপুর। রোজেলের বৃতিতে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন, ক্যারোটিনয়েডসহ গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এই বৃতি থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্য খেলে ও পানীয় পান করলে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পাওয়াসহ নানা রোগ থেকে মুক্তি মিলবে।

এ ছাড়া অধ্যাপক যোগ করেন, একটি রোজেল গাছ থেকে আধা কেজি থেকে দেড় কেজি পরিপক্ব কাঁচা ফল পাওয়া যায়। একটি পরিবারের চা, জ্যাম, জুস, আচার ইত্যাদির চাহিদা মেটাতে চার থেকে পাঁচটি গাছই যথেষ্ট।

অড়হর
অড়হর নিয়েও গবেষণা করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। অড়হর ডাল দেশে তেমন একটা প্রচলিত না হলেও, অড়হর গাছের বীজ প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কাবাবসহ মুখরোচক সাতটি খাদ্য তৈরি করা সম্ভব বলে তার গবেষণালব্ধ জ্ঞানের ভিত্তিতে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, শুকনো বীজের অড়হর দিয়ে রুটি, পুরি, শিঙাড়া এবং সেদ্ধ কাঁচা বীজের পেস্ট দিয়ে হালুয়া, কাবাব তৈরি করা সম্ভব। এ ছাড়া বীজ ভাজা ও কাঁচা বীজ সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে অড়হর।

অড়হর ডালের পেস্ট আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি করেছেন অধ্যাপক ছোলায়মান। এটি ভাতের বিকল্প হিসেবে চালের ওপর চাপ কমাবে বলেও জানান এই গবেষক। ভাতের চেয়ে কার্বোহাইড্রেট অনেকাংশে কম থাকায় এটা মানুষের ওজন নিয়ন্ত্রণে অধিক কার্যকর। স্বল্প খরচে ডালের চাহিদা পূরণে অড়হর গাছ ভূমিকা রাখবে। তরকারিতে মটরশুঁটির বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে এই অড়হর ডাল। এ ছাড়া অড়হর বীজ নানা ধরনের রোগবালাই থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ফকিরের শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে। বর্তমানে তিনি রঙিন চাল নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

 কলি

 

লিডিং ইউনিভার্সিটিতে পর্যটন মেলার উদ্বোধন

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩২ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৮ পিএম
লিডিং ইউনিভার্সিটিতে পর্যটন মেলার উদ্বোধন
লিডিং ইউনিভার্সিটিতে পর্যটন মেলার উদ্বোধন করেন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রাগীব আলী। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটের পর্যটনশিল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে বিশ্ব পর্যটকদের আকৃষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রাগীব আলী। তিনি বলেছেন, ‘সিলেটে রয়েছে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা। এ শিল্প একটি দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখে তাই গুরুত্বপূর্ণ এ সেক্টরে আমাদের মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন সিলেটে পর্যটন শিল্পের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্ব পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হবে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও ভালো যোগাযোগ ব‍্যবস্থা গড়ে তুললে এ শিল্প আরও প্রসারিত হবে।’

রবিবার (৬ আক্টোবর) লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিস্ট ক্লাব চতুর্থবারের মতো আয়োজন করা ‘পর্যটন মেলা-২০২৪’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. সৈয়দ রাগীব আলী এ কথা বলেছেন। দুদিনব‍্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে লিডিং ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় অ্যাকাডেমিক ভবন মিলনায়তনে।

টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম‍্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল হাই। অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির ব‍্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বশির আহমেদ ভুঁইয়া, কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডিন ড. মো. রেজাউল করিম, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মফিজুল ইসলাম, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ এবং মো. জাকির হোসেন, ট্রাস্টি বোর্ডের সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. লুৎফর রহমান, পরিচালক অর্থ ও হিসাব মোহাম্মদ কবির আহমেদ, ব‍্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ শাহানশাহ মোল্লা, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, ট‍্যুরিস্ট ক্লাবের উপদেষ্টা মো. আব্দুল হালিম, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং ট‍্যুরিস্ট ক্লাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় অফার ও বিশেষ ডিসকাউন্ট নিয়ে এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে  ট্রাভেলার্স অব গ্রেটার সিলেট, সিলেট টি ল্যান্ড ট‍্যুরিজম, নেকস্ট ট্রাভেলর্স, গালিভার এক্সপ্রেস, মুসাফির ট্রাভেল্স সিলেট, টনি খান হোটেল ম‍্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট, গ্রাসরোটস ট‍্যুরিজম, ট্রি-টপ অ্যাডভেঞ্চার ফার্ম সিলেট, সিটি এভিয়েশন অ্যাকাডেমি সিলেট ও ট্রাভেল সিলেট। 

লিডিং ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ দপ্তর জানিয়েছে, চতুর্থবারের মতো আয়োজন করা পর্যটন মেলার পৃষ্ঠপোষকতায় খান অটোস, ড্রিম অ্যাসোসিয়েট এবং এইচ বি এভিয়েশন। পর্যটন সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরাসরি সেবা গ্রহণের মাধ‍্যমে মেলায় অংশগ্রহণকারীদের জন‍্য রয়েছে পর্যটন অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ।

ছাত্র রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে: জবি উপাচার্য

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৪ পিএম
ছাত্র রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে: জবি উপাচার্য
ছবি: খবরের কাগজ

ছাত্র রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। 

রবিবার (৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।

ছাত্র রাজনীতি বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি না থাকলে শিক্ষার্থীরা কীভাবে গণতন্ত্রের চর্চা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি পক্ষে আমি কিন্তু রাজনীতির যে কাঠামো সেখানে পরিবর্তন দরকার।’

অনুষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ২৮টি দাবি উত্থাপন করা হয়। বিভিন্ন দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অতিদ্রুত সময়ে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি, অবন্তিকা হত্যাকাণ্ডের বিচার, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধ। 

দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের সময়সীমা একনেকে বর্ধীত করা হয়েছে। আমরা খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছি বিষয়টা। সেখানে মাটি ফেলার পর প্রাথমিক পর্যায়ে অস্থায়ীভাবে বিন্ডিং তৈরি করে থাকার ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’

তিনি আরও বলেন, 'যেগুলো তৎক্ষণাৎ সমাধান করা যায় সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফাইরুজ অবন্তিকা হত্যাকণ্ডে আমাদের আইনানুগভাবে যেতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা এ কে এম রিফাত হাসান, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দীন।

মুজাহিদ/এমএ/ 

 

সিভাসুতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম
সিভাসুতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। 

রবিবার (৬ অক্টোবর) সকাল দশটা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা হলে হলে তালা লাগিয়ে দেয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় সব কার্যক্রম। আন্দোলনের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। এ সময় আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দ্রুত জরুরি মিটিংয়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিভাসু শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য পদে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নিয়োগ না দেওয়ারও দাবি জানান। দাবি মেনে না নিলে প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ এবং রাস্তা অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

এর আগে এক দফা দাবিতে গত ৫ দিন ধরে টানা আন্দোলন করে আসছে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেন তারা। এর আগে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

গত ১৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্য নিয়োগের আবেদন জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন সিভাসু শিক্ষার্থীরা। সেই দাবি নিয়ে শনিবার (৫ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন,  শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সমর্থন দিয়ে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের স্নাতকের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দালালির সঙ্গে যুক্ত কেউ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক (ভিসি) হয়ে যেন আসতে না পারে। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিদিন নানাভাবে নানা জায়গায় আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি। কেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসবে? যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে ২৯ বছর আগে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখানে কীভাবে বাইরে থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইন্টার্নি প্রোগ্রাম বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে, আমাদের প্রবলেম বেইজড লার্নিংগুলো, শিক্ষকদের উদ্ভাবনীগুলো অন্য বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে, সেখানে বাইরের অপশক্তি আমাদের ওপর প্রভাব খাটাতে চায়।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষককে আমাদের ভিসি হিসেবে মানবো না। আবার অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ সিভাসুর ভিসি হওয়ার পাঁয়তারা করলে তাকেও মানবো না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দিতে হবে আমাদেরই শিক্ষকদের মধ্য থেকে। আগের ভিসিরা কেবল রুটিন ওয়ার্ক করেই বিদায় নিয়েছেন, উল্লেখযোগ্য কাজ করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।’

এদিকে এই পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সকাল সাড়ে ১০টায় জরুরি সভা ডাকেন সিভাসুর দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামাল। 

উপাচার্যের সভাপতিত্বে তার অফিসকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অনুষদীয় ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ), প্রক্টরসহ সিনিয়র শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান পরিস্থিতি এবং ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য কৃষি গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার স্বার্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠতম অধ্যাপকদের মধ্য থেকেই নতুন উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে অভিমত ব্যক্ত করেন শিক্ষকরা। তারা আশা করছেন সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।

সাদিয়া নাহার/

নবরূপে বাকৃবি

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
নবরূপে বাকৃবি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বৃষ্টিমুখর একটি দিন। ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েকদিনের দমবন্ধ করা গরম থেকে যেন এক নিমিষেই স্বস্তি নিয়ে এসেছে একটানা ঝুম বৃষ্টি। কবির ভাষাতেই, আমার পুরো শহরজুড়ে আজ বৃষ্টি নেমে এসেছে, নবযৌবনের সতেজতায় ছেয়ে গেছে রুক্ষ প্রকৃতি। একরাশ সতেজতা নিয়ে গত বুধবার দুপুর ১২টা থেকে হঠাৎই ঝুম বৃষ্টি নেমে এল। ক্লাসের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখছে প্রকৃতি আর বৃষ্টির মাখামাখি। প্রতিটি ফোঁটা যেন প্রকৃতির বুকে ভালোবাসার ছোঁয়া এঁকে দিচ্ছে। প্রকৃতিকন্যাখ্যাত ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বৃষ্টিমুখর একটি দিনের কথা লিখেছেন মো. আশিকুজ্জামান

১ হাজার ২৩০ একরের সবুজের মহাসমারোহে ঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাকৃবি বৃষ্টিতে সত্যিই এক মোহনীয় রূপ ধারণ করে। জব্বারের মোড়, টিএসসি, নদের পার, বোটানিক্যাল গার্ডেন, সোহরাওয়ার্দী হলের মাঠ, লাভ রোড, লন্ডন ব্রিজ, কেআর মার্কেট, বৈশাখী চত্বর, কৃষিবিদ চত্বরসহ সমগ্র ক্যাম্পাসেই যেন এক নতুন ধরনের সজীবতা ফিরে আসে। কেআর মার্কেট বা জব্বারের মোড়ের আওয়ালের দোকানে এক কাপ চায়ের সঙ্গে বিনামূল্যে বৃষ্টি বিলাস, একটি মাত্র ছাতার নিচে দলবেঁধে বন্ধুদের হেঁটে যাওয়া, ছাত্রদের হলের মাঠে বা কৃষিবিদ চত্বরে ফুটবলে মেতে ওঠা, কেআর মার্কেটের ভূতের গলির তিন ভাজাপোড়া খাওয়া কিংবা প্রেমিক যুগলের বৃষ্টি বিলাস- সবমিলিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে রোমাঞ্চকর এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়।

আবার, বৃষ্টির দিনে সম্পূর্ণ আবাসিক বাকৃবির হলে হলে চলে রুমমেটদের নিয়ে খিচুড়ি রান্নার মহা উৎসব। ভুনা খিচুড়ির গন্ধে ম-ম করে পুরো হল। হঠাৎ আবার কোনো ছেলের কাছে উত্তরপাড়া থেকে আসে প্রেমিকার খিচুড়ি পার্সেল। এ নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কয়েক দফা হাসাহাসি ও খুনসুটি চলতে থাকে। প্রেমিকার হাতের রান্না একা খাওয়ার সুযোগ নেই। বন্ধুদের নিয়েই তো এখন একটা পরিবার। ভাগাভাগি করে খাওয়া চলে দারুণ মজাদার উত্তরপাড়ার মজাদার খাবারের পার্সেলগুলো। দক্ষিণপাড়া থেকেও যে প্রেমিকার কাছে খিচুড়ি পার্সেল যায় না ব্যাপারটা একবারে অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু সেই খিচুড়ি নিয়েও বান্ধবীদের মাঝে মধ্যে ভাগাভাগি চলে নাকি লেখক তা বলতে পারবে না। কারণ লেখক দক্ষিণপাড়া নিবাসী।

এই বৃষ্টি বিলাস নিয়ে প্রেমিক যুগল ছাড়াও হাজারো শিক্ষার্থীর হাজারো রকম অনুভূতি রয়েছে। তাদের মধ্যে থেকেই না হয় কয়েকজনের অনুভূতি জেনে নেওয়া যাক।
বাকৃবির শিক্ষার্থী সন্দীপ সাহা বলেন, ক্লাস-পরীক্ষার চাপে অনেকটা যান্ত্রিক জীবন কাটাতে হয়। তাই বৃষ্টির দিন পেলে খুবই ভালো লাগে। যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন আমার ভেতরে একটা আনন্দের অনুভূতি কাজ করে। এ ছাড়া আমাদের ক্যাম্পাসে গাছপালার পরিমাণও বেশ ভালো। হল থেকে বেরিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরতে, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা দিতে খুবই ভালো লাগে। বৃষ্টির মধ্যে টং দোকানের চা খাওয়ার অনুভূতিটা তো আরও অসাধারণ।

বাকৃবির আরেক শিক্ষার্থী রিসালাত আলিফ বলেন, ক্যাম্পাসে বৃষ্টির দিনগুলো সবারই প্রিয়। বৃষ্টির দিনে ভিজে কেউবা মেতে ওঠে আড্ডা-গানে, কেউবা বেরিয়ে পড়েন প্রিয়জনের সঙ্গে রিকশা ভ্রমণে। বৃষ্টি বিলাসে ক্যাম্পাসের মাধুর্য আরও বেড়ে যায়। ক্যাম্পাসের চায়ের দোকানে ভিড় জমে যায় বৃষ্টিবিলাসী চাপ্রেমীদের। এমন দিন বাকৃবিতে বারবার ফিরে আসুক।

 কলি

আইআইইউসিতে ব্লাডব্যাগের ক্যাম্পেইন

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম
আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৪ পিএম
আইআইইউসিতে ব্লাডব্যাগের ক্যাম্পেইন
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস উপলক্ষে ফার্মা ক্লাব আইআইইউসি ও ব্লাডব্যাগের যৌথ উদ্যোগে ব্লাড গ্রুপিং ও ডাটা কালেকশন ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে উৎসবমুখর পরিবেশে এই ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ রক্তের গ্রুপ এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে ব্লাডব্যাগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ১২৯ জন শিক্ষার্থী এই ক্যাম্পেইনে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়েছে। এই ক্যাম্পেইনে প্রায় এক হাজার জনের বেশি শিক্ষার্থী ব্লাডব্যাগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ক্যাম্পেইনে ব্লাডব্যাগের পক্ষ থেকে ছিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রিজওয়ানুল হক, রিজিওনাল ডেলিগেট কো-অর্ডিনেটর মুজাহিদুল ইসলাম এবং অন্য স্বেচ্ছাসেবকরা। উল্লেখ্য, রিজওয়ানুল হক ব্লাডব্যাগের একজন প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমানে আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।

ব্লাডব্যাগ ইতোমধ্যে বিভিন্ন অনলাইন ক্যাম্পেইন করলেও ক্যাম্পাসভিত্তিক ক্যাম্পেইনেও যুক্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হবে ব্লাডব্যাগ। অলাভজনক সংস্থা ব্লাডব্যাগ রক্তদানে একটি নিরাপদ ইকোসিস্টেম তৈরিতে কাজ করছে। সে উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাম্পেইনে রক্তদাতাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ক্যাম্পেইন আয়োজন করছে, যাতে ব্লাডব্যাগে আসা রক্তগ্রহীতার আবেদনে দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়। রক্তদানের মতো মহৎ কাজের সাথি হতে ব্লাডব্যাগের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে। প্লে স্টোর থেকে ব্লাডব্যাগের অ্যাপ ডাউনলোড করে কিংবা ব্লাডব্যাগের চ্যাটবটে রক্তদাতার তথ্য দিয়ে।

 কলি