ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

চুয়েটের ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৬ পিএম
চুয়েটের ১১ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) র‍্যাগিং করার দায়ে ১১ জন শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। 

বহিষ্কৃতরা সবাই পুরকৌশল বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস ডিসিপ্লিন কমিটির ২৭৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। 

কমিটির সদস্যসচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ২৩তম ব্যাচের (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চুয়েটের প্রধান গেটের বাইরে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে তাদের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা ৬ মাস আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবেন না। তবে তারা চাইলে ১৫ দিনের মধ্যে একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবর আপিল করতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘র‍্যাগিংয়ের দায়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের শুনানি শেষে এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে।’

সালমান/

রাবিতে কোরআন পোড়ানোর ৭ দিনেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৯ পিএম
রাবিতে কোরআন পোড়ানোর ৭ দিনেও জমা হয়নি তদন্ত প্রতিবেদন
ছবি : খবরের কাগজ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ৫টি আবাসিক হলে রাতের আঁধারে কোরআন শরিফ পুড়িয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) লোগো পদ্মফুল এঁকে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে ওইদিন (১২ জানুয়ারি) ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সাত কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কিন্তু ৭ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন খান।

তিনি বলেন, 'আমরা কাজ করে যাচ্ছি। উপাচার্যের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, আমরা শীঘ্রই প্রতিবেদন জমা দেব। আমাদের এখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আছেন, তাদের সহযোগিতায় আমরা প্রকৃত আসামিদের শনাক্ত করতে পারব।

প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা হয়নি। এটা যেহেতু একটা স্পর্শকাতর বিষয়, তাই একটু সময় লাগবে। তবে প্রশাসন থেকে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ে সেটা সম্ভব হবে না।

গত ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল, মতিহার হল, মাদার বখ্শ হল ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলে কোরআন শরিফ পুড়িয়ে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। ওইদিন শহিদ জিয়াউর রহমান হলের দেয়ালে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) লোগো পদ্মফুলের ছবিও এঁকে রেখে যায় তারা। এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তা ছাড়া পরের দিন শহিদ মিনার মুক্তমঞ্চে কোরআন তেলাওয়াত করে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। ঘটনার দিন শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সঙ্গে এক জরুরি সভায় ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। এর পর ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন ও ৭ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।

এস আই সুমন/জোবাইদা/

শৈত্যোৎসব ও পিঠাপুলি মেলায় মেতেছেন রাবির শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৫ পিএম
শৈত্যোৎসব ও পিঠাপুলি মেলায় মেতেছেন রাবির শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

থালায় থরে থরে সাজানো গোল ও রঙিন ফুলাকৃতির জিনিস। দেখতে ফুলের মতো মনে হলেও সেগুলো আসলে ফুল নয়, বাহারি রকমের পিঠা। অপর পাশ থেকে কানে ভেসে আসছে মন মাতানো গ্রামবাংলার গানের সুর। ছিল নাগরদোলাসহ শিশু বিনোদনের বিভিন্ন উপকরণও, বলছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাউলিয়ানার উদ্যোগে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী শীতকে বরণ করে নেওয়ার জন্য শৈত্যোৎসব ও পিঠাপুলি মেলার কথা।

মাঠের চারপাশ ঘিরে বসেছে পিঠাপুলির দোকান। এতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাঙালির সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে থাকা হরেক রকম পিঠার স্টল দিয়েছেন। ভোজনরসিক বাঙালির শীতের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আসে খেজুরের রস এবং পিঠা। আর পিঠার সঙ্গে যদি থাকে বাংলার ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালি গান তাহলে তো আনন্দের ফোয়ারা ছুটতে থাকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে এমনই চিত্র দেখা গেল।

শীতের আমেজে গরম পিঠার সঙ্গে হৃদয়ে উত্তেজনার বারুদ ছড়ানো গান- সবমিলিয়ে এক অন্যরকম আমেজ তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাসে। অগ্রহায়ণের শেষ এবং পৌষের শুরুর সময়টায় শীতের আমেজ শুরু হয়। পিঠা সাধারণত গ্রামবাংলার ঐতিহ্য হলেও শহরে এর ছোঁয়া লেগেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি নিজস্ব উদ্যোগে পিঠার স্টল থেকে উপার্জনের পন্থাও খুঁজে পাচ্ছেন।

বাংলাদেশে বিভিন্ন এলাকার গ্রামবাংলায় যেসব পিঠাপুলির প্রচলন রয়েছে- সেগুলো নিয়ে স্টলগুলো সাজানো হয়েছে। স্টলে পাওয়া যাচ্ছে চিতই, দুধচিতই, দুধপুলি, পাটিসাপটা, ধুপি পিঠা, নকশি পিঠা, পাকোয়ান পিঠা, তেল পিঠা, ঝাল পিঠাসহ প্রায় শতাধিক রকমের পিঠা।

এর মধ্যে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উপভোগ করছে ভাপা পিঠা। মাঝখানে ঝোলাগুড় এবং নারকেল থাকায় খেতে মজা বেশি। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় দাম একটু বেশিই বলে মত শিক্ষার্থীদের। পিঠা খেতে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আমীরুল মুমিনীন জানান, পিঠার দাম স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবে অনেকদিন পর ক্যাম্পাসে একটা আনন্দের আমেজ বিরাজ করছে। পিঠা খেতে খেতে মন মাতানো গান শুনছি। এমন পরিবেশ ক্যাম্পাসে এর আগে পাইনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১১ জন শিক্ষার্থী মিলে শ্বশুরবাড়ি নামক পিঠার স্টল দিয়েছেন। এই স্টলে দুধের নাড়ু, নারকেলের নাড়ু, ক্ষীর পুলি, মোমোস, গোলাপ ফুল, মুগ পাক্কান ও আন্তাসাসহ প্রায় ১২ রকমের পিঠা রয়েছে। কথা হয় স্টলের এক দোকানি সানজিদার সঙ্গে।

তিনি জানান, ক্যাম্পাস ও আশপাশের শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সন্ধ্যার মধ্যেই সব পিঠা শেষ হয়ে গেছে। আর স্টলটা আমরা শখ করে দিয়েছি। তাই আনন্দটাও দ্বিগুণ হয়েছে। তবে দাম বৃদ্ধির অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, বর্তমানে পিঠার কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি এবং পিঠার গুণগত মান ঠিক রাখতে নির্ভেজাল কাঁচামাল ব্যবহারের ফলে দামটা একটু বেশি হয়ে যায়, এটা আমরাও বুঝি। তবে আমরা চাই আমাদের সহপাঠীরা যেন নির্ভেজাল এবং পিঠার আসল স্বাদটা উপভোগ করতে পারে।

শুধু পিঠাপুলিই নয়, সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। সেখানে থাকে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন পরিবেশনা। সঙ্গে ছিল কাওয়ালি সন্ধ্যাও। প্রথম দিনের গান পরিবেশনার জন্য ছিলেন বিখ্যাত ভাওয়াইয়া গানের দল ‘বাহে’, ব্যান্ড অন্বেসর, মাইম, অর্ণব, লালন কন্যা মিম। দ্বিতীয় দিনের জন্য কারসা ফোক ব্যান্ড, গানপোকা ও কাউয়ালি সন্ধ্যা। তৃতীয় দিনে মঞ্চ মাতিয়েছেন ক্যাম্পাস বাউলিয়ানা, দীপ্ত অ্যান্ড দুর্জয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন পরিবেশনায় অংশ নিয়েছেন।

জাতিগতভাবে বাঙালির খাদ্যতালিকায় পিঠার ইতিহাস বহু প্রাচীন। বাংলা ভাষায় লেখা কৃত্তিবাসী রামায়ণ, চৈতন্য চরিতামৃত ইত্যাদি কাব্য ইত্যাদির সূত্র ধরে জানা যায়, আনুমানিক ৫০০ বছর আগেও বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতিতে পিঠার জনপ্রিয়তার উল্লেখ পাওয়া যায়। বিশাল উপমহাদেশে বসবাস করা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে পিঠা যে জনপ্রিয় খাবার, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। প্রাচীন বাংলায় মিষ্টান্ন হিসেবে পিঠার জনপ্রিয়তাই সম্ভবত বেশি ছিল। সেই সময় থেকেই বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্যে পিঠাপুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। পিঠাপুলি আমাদের লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই প্রকাশ। আমাদের হাজারো সমস্যা সত্ত্বেও গ্রামবাংলায় এসব পিঠা-পার্বণের আনন্দ-উদ্দীপনা এখনো মুছে যায়নি। পিঠা-পার্বণের এ আনন্দ ও ঐতিহ্য যুগ যুগ টিকে থাকুক প্রতিটি বাঙালির অন্তরে।

হাসান

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নিয়ে শিক্ষার্থীরা কতটুকু সন্তুষ্ট?

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান নিয়ে শিক্ষার্থীরা কতটুকু সন্তুষ্ট?
ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমরা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক দিক থেকেই পিছিয়ে আছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো শিক্ষা। ফলস্বরূপ প্রতি বছরই উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের দেশ ছাড়ার হিড়িক যেন বেড়েই চলেছে। কেউ কেউ উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েই বিদেশে পাড়ি জমান, কেউ আবার স্নাতক শেষ করে। উচ্চশিক্ষার জন্য আমাদের দেশে অনেক পাবলিক, প্রাইভেট ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলেও বাংলাদেশে বর্তমানে শিক্ষার যে মান সেটা কি শিক্ষার্থীদের কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণে যথার্থ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই-বা কতটুকু সন্তুষ্ট? সেটা নিয়েই শিক্ষার্থীদের মতামত তুলে ধরেছেন মাহমুদ শাকিল।

মো. রেদওয়ান কবির অনিক

ক্রিমিনোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও শিক্ষক নিয়ে নিজের অজান্তেই শিক্ষার্থীদের মানসপটে যে প্রত্যাশার আবির্ভাব হয় সেখানে কুঠারাঘাত পড়ে তখনই যখন প্রাপ্তির সঙ্গে তার ঢের অমিল পরিলক্ষিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষকরাই ক্ষমতার মোহে স্বীয় অন্ধত্ব ধারণ করে তাদের ক্লাস লেকচার, প্রয়োজনীয় স্টাডি ম্যাটেরিয়ালস, কনটেম্পোরারি বিষয়ের সঙ্গে মিল রেখে সিলেবাস আপডেট বা রিসার্চে আগ্রহ হারিয়ে তাদের বেশির ভাগ সময়ই ব্যয় করেন শিক্ষক রাজনীতির পেছনে। কেননা প্রোডাক্টিভ একাডেমিক চর্চার চেয়ে এই নির্ধারকটিই তাদের বেশি এগিয়ে রাখে পেশাগত জীবনে মোহনীয় ধাপটিতে পৌঁছাতে। একদিকে আবাসিক, একাডেমিক অবকাঠামোগত সংকট অন্যদিকে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে কিছু প্রভাবশালী শিক্ষকদের নতুন নতুন বিভাগ প্রতিষ্ঠার হিড়িক এই সমস্যায় বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। শিক্ষকদের এই অদূরদর্শী চিন্তাভাবনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক রেপুটেশন দিন দিন তলানিতে নিয়ে যাচ্ছে।

মো.কামরুজ্জামান মিঠু

লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা নানা সমস্যায় জর্জরিত। শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ল্যাব সুবিধা এবং আধুনিক প্রযুক্তির অভাব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করছে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা এবং দক্ষতা উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল এবং সুযোগ নেই, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণার প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলন-সংগ্রামের প্রভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এ ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, কর্মমুখী শিক্ষা ও কর্মজীবন নির্দেশিকার অভাব রয়েছে। এসব সমস্যার ফলে শিক্ষার্থীরা পেশাগত জীবনে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাচ্ছে। একটি কার্যকর ও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য গবেষণা, স্কিল ডেভেলপমেন্ট এবং বাস্তবমুখী শিক্ষার সুযোগ বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

আনিকা তানজিম

ইংরেজি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদালয়।

বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মানের ক্ষেত্রে সংশয় দেখা যাচ্ছে। র‍্যাংকিংয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে দেশে এবং বিশ্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখা যাচ্ছে না। এর পেছনে অন্যতম একটা কারণ গবেষণা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা। স্কুল-কলেজে যেই সার্বিক তত্ত্বাবধানে পড়াশোনার একটা পরিবেশ থাকে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বিমুখ হয়ে পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়াশোনার দৃশ্যটি কম দেখতে পাওয়া যায়। তবে বেশ কিছু ইতিবাচক দিক ও ইদানীং দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমগুলো দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সংগঠন গড়ে উঠছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন গড়ে উঠবে। শিক্ষকদের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে গবেষণামূলক কাজে আরও মনোনিবেশ করলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটবে বলে আশা করা যায়।

আব্দুল্লাহ আল নোমান

রসায়ন ডিসিপ্লিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানদণ্ড প্রশ্নে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই মনঃক্ষুণ্ন অনেকক্ষেত্রে হতাশ। প্রথমত, অনেক কোর্স বা টপিক পড়ানো হয় যার সঠিক প্রয়োগ সম্পর্কে সবাই অবগত নন, অনেকক্ষেত্রে তার প্রয়োগবিধি খুঁজে পাওয়া দুরূহ। আউটপুট ভিত্তিক এবং যথাযথ প্রয়োগ সম্পন্ন কোর্স বা টপিক নির্ধারণ এবং সুযোগ থাকলে ল্যাবে হাতে-কলমে শেখানো জরুরি।

দ্বিতীয়ত, শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পড়ানোর দক্ষতা যাচাইপূর্বক নিয়োগ সম্পন্ন করা উচিত। একজন প্রথম বা সেকেন্ড হওয়া শিক্ষার্থী সব সময় ভালো শিক্ষক হতে পারবেন এমন কোনো যৌক্তিকতা নেই। যার ভুক্তভোগী পরবর্তী শিক্ষার্থী এবং এটা প্রায় সব ডিসিপ্লিনের একটি নিয়মিত ঘটনা। অনেকক্ষেত্রেই যেসব টপিকের উৎস হিসেবে বই বা নেটে ঠিকমতো রেফারেন্স নেই সেগুলোই অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রেজেন্টেশন হিসেবে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, যার যৌক্তিকতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা সন্দিহান।

সামিয়া রহমান অনি

ইংরেজি বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষার মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই। শিক্ষাব্যবস্থায় দক্ষতা উন্নয়নের পরিবর্তে ভর্তি প্রতিযোগিতা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে, যা প্রকৃত শিক্ষার চেয়ে সার্টিফিকেট অর্জনের দিকেই মনোযোগ বাড়াচ্ছে। শিক্ষকদের ঘাটতি থাকায় শিক্ষার্থীরা মানসম্মত পাঠদান ও পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা পাচ্ছে না। দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই শিক্ষা নিশ্চিত করতে গবেষণা ও দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার অভাব প্রকট। আধুনিক চাকরির বাজারের সঙ্গে কোর্স কারিকুলাম সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, ফলে শিক্ষার্থীরা বাস্তব দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিকল্পিত শিক্ষানীতি, দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির উদ্যোগ প্রয়োজন। শিক্ষা খাতে বাজেট বৃদ্ধি ও প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ব্যর্থ হবে। এজন্য শিক্ষায় উদ্ভাবনী পদ্ধতির সংযোজন অপরিহার্য।

জান্নাতুল ফেরদৌস মৌ

কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

গবেষণা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিক পর্যায়ে কিছু ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করছে, যা ইতিবাচক দিক। তবে শিক্ষার্থীদের রয়েছে লাইব্রেরি, ল্যাবে সময় দেওয়ার প্রতি অনীহা। কিছু অল্প সংখ্যক শিক্ষার্থীদের এসব বিষয়ে আগ্রহ থাকলেও বেশির ভাগ শিক্ষার্থী কিছু গৎবাঁধা পড়াশোনা করে কোনো রকমে একটা ডিগ্রি নিতে চায়। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুণগত মানের গবেষণার সুযোগের অভাব, গবেষণা থেকে অন্য সরকারি চাকরিগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া, শিক্ষকদের সহযোগিতার অভাব, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দেওয়া। ফলে বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব তালিকায়ও অনেক পিছিয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান উন্নত করতে গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে, প্রযুক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি এবং শিক্ষা আধুনিকায়ন জরুরি। পাশাপাশি শিক্ষকদের সহযোগিতা ও ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের উন্নয়ন শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে জরুরি।

জেম ইয়াছিন অরিন

আইন বিভাগ, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পুথিগত জ্ঞান অর্জনের জায়গা নয়, বরং সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং বাস্তবজীবনের দক্ষতা গড়ে তোলার একটি কেন্দ্র হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান নিয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তুষ্টি দেখায়। এর প্রধান কারণগুলো হলো সৃজনশীলতার অভাব, যুগোপযোগী শিক্ষাক্রমের ঘাটতি, অপর্যাপ্ত গবেষণা সুবিধা এবং দুর্বল পরিকাঠামো। অনেক সময় প্রশাসনিক জটিলতা ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব শিক্ষার্থীদের শেখার পরিবেশ ব্যাহত করে। এ ছাড়া ক্যারিয়ার উপযোগী প্রশিক্ষণের অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

শিক্ষার মানোন্নয়নে শুধু প্রশাসনের নয়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি ও বিশ্বব্যাপী চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষার পদ্ধতিকে আধুনিক করা প্রয়োজন। সৃজনশীল ও ব্যবহারিক শিক্ষায় জোর দিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী দক্ষতা বৃদ্ধি করা উচিত। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে অনলাইন রিসোর্স ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রসার শিক্ষার মান আরও উন্নত করতে পারে।

হুমায়রা তিথি

সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ইডেন মহিলা কলেজ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের একেকটি বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এত বেশি যে, শিক্ষকের পক্ষে সবার প্রতি সমান গুরুত্ব দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এর পাশাপাশি, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার না হওয়া, আধুনিক ল্যাব ও ডিজিটাল ক্লাসরুমের অভাব শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষণা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব এবং যথাযথ দিকনির্দেশনার অভাবে শিক্ষার্থীরা পুথিগত জ্ঞান থেকে বাস্তবসম্মত জ্ঞানের দিকে অগ্রসর হতে পারছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদেরও নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। আবাসিক হলগুলোর নিরাপত্তা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মানসম্মত খাবারের অভাব শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পাঠদান বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়টি, যা শিক্ষার পরিবেশকে আরও খারাপ করে তোলে। এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্য ও ক্যারিয়ার গাইডেন্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো উপেক্ষিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও মানসিক স্থিতিশীলতার অভাবে ভুগছে। যদিও কিছু জায়গায় উন্নতির প্রচেষ্টা চলছে, তবে শিক্ষার সামগ্রিক মান উন্নত করতে আরও পরিকল্পিত ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

হাসান

জবি শিক্ষার্থী তাকরিমকে হত্যার হুমকি

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৯ পিএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২২ পিএম
জবি শিক্ষার্থী তাকরিমকে হত্যার হুমকি
তাকরিম আহমেদ। ছবি : খবরের কাগজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) থিয়েটার বিভাগের শিক্ষার্থী তাকরিম আহমেদকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন তিনি।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে তাকরিম লেখেন, "একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে আমাকে থ্রেট দেওয়া হয়েছে। উড়ায়ে দিবে বলল!"

জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, আমি জগনাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগেরর শিক্ষার্থী। জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আন্দোলনের সূত্র ধরে ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনে যাই। আন্দোলনে স্লোগানরত অবস্থায় আমার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গত ১৭ জানুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে আমি আমার ক্যাম্পাসে থাকা অবস্থায় অপরিচিত মোবাইল নাম্বার থেকে কল দিয়ে অশ্লীল গালিগালাজ এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তাকরিম বলেন, আমাকে মোবাইল ফোনকলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম কেউ হয়তো মজা করছে। আমি প্রাথমিকভাবে ফোনটা কেটে দেই। তার পর আবার কল দিয়ে গালি দিয়ে বলে বেশি বাড়াবাড়ি করছিস, তোকে কিন্তু উড়িয়ে দিবো।

তিনি আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো ধরনের ন্যায্য আন্দোলনে সব সময় ছিলাম। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের আন্দোলনেও যুক্ত থেকেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে। অধিকার আদায়ের প্রশ্নে যেহেতু কাউকে ছাড় দেওয়া হয় না, সেহেতু অধিকার রক্ষাকারীদের প্রতিই আঙুল উঠাতে হয়। সে জন্যই স্লোগান দিয়েছি। আমার যেখানে থাকা-খাওয়ার চিন্তা করতে হয়, সেখানে অধিকার আদায় করতে দেখেশুনে কিংবা বিবেচনা করে কোনো স্লোগান দেওয়া বা আন্দোলন তো করা যায় না। ক্ষমতায় যারা থাকে, তাদের দিকেই আঙুল উঁচু করতে হয়। সাধারণ আন্দোলনকারী হিসেবে আমিও তাই করেছি। 

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ডিউটি অফিসার আবদুল আল ফাহাদ বলেন, আমরা জিডি নিয়েছি। পরবর্তী স্টেপ নেবেন তদন্ত কর্মকর্তা। 

তাকরিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত এবং ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিলেন। সর্বশেষ, শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিতে রাজপথে স্লোগানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

মুজাহিদ বিল্লাহ/জোবাইদা/

হতাশ শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবির সমাবর্তন নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৪ এএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম
শাবিপ্রবির সমাবর্তন নিয়ে অনিশ্চয়তা
ছবি : খবরের কাগজ

প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন থাকে স্নাতক শেষ করার পর সমাবর্তনের মাধ্যমে তাদের সার্টিফিকেট নেওয়ার। শিক্ষার্থীদের কাছে এটা একটা আবেগঘন মুহূর্ত। কিন্তু শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীরা তিনবার সমাবর্তন পেয়েছেন।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি সর্বশেষ তৃতীয় সমাবর্তন হয়েছিল। এর পাঁচ বছর পর আগামী ২৬ জানুয়ারি শাবিপ্রবি চতুর্থবারের সমাবর্তন হওয়ার কথা। গত বছরের ৮ জুলাই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সমাবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তবে জুলাই বিপ্লবের পটপরিবর্তনের প্রভাব পড়ে শাবিপ্রবিতেও। গত ১৮ সেপ্টেম্বর শাবিপ্রবির নতুন উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চোধুরী। তার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ অন্যান্য কার্যক্রম সচল হলেও সমাবর্তন নিয়ে কোনো পদক্ষেপ বা প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না। আদৌ সমাবর্তন হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে সমাবর্তনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সুমিত কর্মকারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত বছর জানতে পেরেছিলাম যে এ বছর আমাদের সমাবর্তন হবে। বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। কারণ আমরা দেখেছি, সিনিয়রদের সমাবর্তন পেতে কতটা দেরি হয়েছিল। তবে আন্দোলনের পর নতুন প্রশাসনের কাছে আশা ছিল যে তারা নতুনভাবে আমাদের সমাবর্তনের ব্যাপারে জানাবে। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো কথাই জানতে পারছি না। বিষয়টা আমাদের জন্য উদ্বেগের। আমরা আশা করি, প্রশাসন আমাদের খুব দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত জানাবে। যাতে আমাদের যেসব সিনিয়র দেশের বাইরে থেকে আসতে চান, তারাও যেন আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে পারেন। এ ব্যাপারে দ্রুত নতুন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

চাকরির খোঁজে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইফরাতুল হাসান রাহিম। তিনি বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের জন্য সমাবর্তন একটি মিলনমেলার মতো। চলতি মাসে সমাবর্তন হওয়ার কথা জেনে আমরা অনেক আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে কোনো উদ্যোগ না দেখে হতাশ হচ্ছি।’

বর্তমানে জীবিকার তাগিদে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন শরীফ। তিনি বলেন, ‘আমি সমাবর্তনের জন্য জানুয়ারিতে ছুটি নিয়ে রেখেছি। কিন্তু সমাবর্তন নিয়ে বর্তমানে কোনো তৎপরতা দেখছি না। এ নিয়ে আমরা হতাশ।’
 
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগত কারণে গত ১ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটিতে আছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চোধুরী। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। 

সমাবর্তনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম খবরের কাগজকে বলেন, সমাবর্তনের ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে। শিগগিরই পরিবর্তিত তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।
 
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় সমাবর্তন এবং ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।