
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিড়াল তাড়ানোর অভিযান সম্পর্কিত এক বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, হলের ছাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) হলের বিড়াল তাড়ানোর অভিযান চলবে। এ ব্যাপারে সব ছাত্রীর সহযোগিতা কামনা করছি।
এর বিজ্ঞপ্তির সমালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপ সাস্টিয়ান ভয়েসে ফাইজা বিহা নামে এক ফেসবুক আইডি থেকে বিড়ালগুলোকে বস্তায় ভরে ফেলে দেবে এ রকম একটা চেটের স্ক্রিনশট দিয়ে লেখেন, একটা তাজা প্রাণকে বস্তায় ভরে ফালায় দেবে এইটাকে একটা ভার্সিটির স্টুডেন্ট হয়ে কীভাবে সাপোর্ট করতে পারেন? কতটা ইনহিউম্যান হলে এই কাজ করা যায়??
'সবাই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি, তাদেরও বাঁচার অধিকার আছে, সব হিসাব ওপরওয়ালা রাখেন!!!'
এই কমেন্টেও তৈরি হয়েছে পক্ষ-বিপক্ষ। 'তানজিম আক্তার কমেন্ট করেন, কে এই রকম অভিযোগ তুলছে? আর কিসের সহযোগিতা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমাদের নিন্দা জানানো উচিত। বিড়াল মানুষের আশপাশেরই প্রাণী।'
তামজিদ হোসাইন লেখেন, 'বিড়াল নিয়ে অভিযোগ দিলো আর অভিযান শুরু করে দিলো। আর আবাসিক হলের এত এত সমস্যার অভিযোগ দেয় ওইগুলা কি সমস্যা না? পারে খালি নিরীহ কুকুর বিড়ালের সাথেই? এত স্পাইনলেস কীভাবে হয় কর্তৃপক্ষ।'
'বিড়াল নিয়ে আসলে কি সমস্যা? অভিযোগ কি?'
'ফারজানা আনিকা নামে একজন লেখেন, এটা কোন ধরনের ফালতু কাজ? ওদের কী দোষ? এটা কোন ধরনের অমানুষিক আচরণ? যাদের রুমে সমস্যা তারা নিজেদের রুমের খেয়াল রাখতে পারেন না। এটা কি বিড়ালের দোষ? আমরা থাকি না হলে? আমাদের রুমের সামনে কি বিড়াল আসে না? রুমের দরজা হা করে রাখবেন আর ওরা ঢুকলেই সমস্যা? এই অভিযোগগুলো করে কারা?'
হল কর্তৃপক্ষের নেওয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কমেন্ট করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। হাফসা খাতুন জুই লেখেন, 'আচ্ছা বস্তায় ভরে ফেলে দেবে মানে হলো এদের তো গাড়ির সিটে বসায় নেওয়া যাবে না। কারণ এরা বসবে না, বস্তায় ভরে নিয়ে অন্য জায়গায় রেখে আসবে, তখন কিন্তু বস্তাটা খুলে এদের বের করে দেবে, আজীবনের জন্য বস্তার মুখ বেঁধে রাখবে না। নরমালি এভাবেই এদের স্থানান্তরিত করা হয়।'
একটা পোস্ট করেছে, 'সেই পোস্টে একদম সিনিয়র জুনিয়র কোনো হিতাহিতজ্ঞান না রেখে সবাই যে পরিমাণ আদবের পরিচয় দিচ্ছে খুবই বাজে লাগছে কমেন্ট সেকশন।'
মুমতাহীনা মোস্তফা লেখেন, 'বিড়ালগুলো যখন বিভিন্ন রুমের সামনে হিসু করে, রুমে ঢুকে হাগু করে; খাবার খেয়ে রুম নষ্ট করে; তখন কি আপনি গিয়ে সেসব পরিষ্কার করে দিয়ে আসেন? হলের বিড়ালগুলো অসম্ভব আনহাইজেনিক। ডাস্টবিন থেকে শুরু করে ড্রেন পর্যন্ত এদের বিচরণ।'
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাবিহা আফরিন খবরের কাগজকে জানান, 'মেয়েদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা হল থেকে বিড়াল সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু বিড়ালগুলো কীভাবে সরানো হবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।'
ইসফাক আলী/জোবাইদা/