ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পৃথিবীর সুন্দর কিছু নারী ভাস্কর্য

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:০১ পিএম
পৃথিবীর সুন্দর কিছু নারী ভাস্কর্য
(বাঁ থেকে) লেডি জাস্টিস, পিয়েতা, সাভানা বার্ড গার্ল ও ভেনাস ডি মিলো

বহু শতাব্দী ধরে শিল্পীরা আমাদের উপহার দিয়েছেন নান্দনিক সব শিল্পকর্ম। নানান মাধ্যমে সেসব শিল্পকর্মের জন্ম দেন তারা। ভাস্কর্য তার মধ্যে অন্যতম। গুণী শিল্পীরা খুব জীবন্ত, প্রাণবন্ত আর রহস্যময় করে ফুটিয়ে তোলেন একেকটি ভাস্কর্য। ভাস্করদের হাতে পৃথিবীজুড়ে গড়ে উঠেছে অনেক নারী ভাস্কর্য। তেমনই কিছু ভাস্কর্য সম্পর্কে লিখেছেন মোহনা জাহ্নবী

সাভানা বার্ড গার্ল

১৯৩৬ সালে ভাস্কর সিলভিয়া শ জুডসন ‘বার্ড গার্ল’ নামে পরিচিত এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ের লেক ফরেস্ট এলাকায় এর অবস্থান। ১৯৩৮ সালে শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটে গার্ল উইথ বোলস হিসেবে এই ভাস্কর্যের প্রদর্শনি হয়। ১৯৬৭ সালে তার একটি বইয়ে ভাস্কর্যটিকে ‘বার্ড গার্ল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ১৯৯৪ সালে ‘মিডনাইট ইন দ্য গার্ডেন অব গুড অ্যান্ড ইভিল’ উপন্যাসের প্রচ্ছদে স্থান করে নেওয়ার পর খুবই আলোচিত ও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্রোঞ্জে গড়া প্রায় সাড়ে চার ফুট আকৃতির এই ভাস্কর্য।

ভেনাস ডি মিলো

ভাস্কর্যটি খ্রিষ্টপূর্ব আনুমানিক ১০০ বা ১৩০ শতকের সময়ের। ধারণা করা হয়, গ্রিক পুরাণে বর্ণিত ভালোবাসার দেবী আফ্রোদিতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই ভাস্কর্যে। মার্বেল দিয়ে নির্মিত এই ভাস্কর্যটির আকৃতি ২০৩ সেন্টিমিটার। এর হাতের কিছুটা অংশ হারিয়ে গেছে। ১৮২০ সালে জোরগস কেন্ট্রটাস নামক ব্যক্তি মিলো দ্বীপের ধ্বংসস্তূপে মূর্তিটি খুঁজে পান। পরে অষ্টাদশ লুইকে উপহার দেওয়া হলে তিনি ১৮২১ সালে ফ্রান্সের  ল্যুভর মিউজিয়ামে মূর্তিটি দান করেন।  


পিয়েতা

পিয়েতা ভাস্কর্যে ফুটে উঠেছে একমাত্র পুত্র যিশুকে কোলে নেওয়া কুমারী মা মেরির অবয়ব। জগদ্বিখ্যাত ভাস্কর মাইকেলেঞ্জেলো এই ভাস্কর্যটি যখন তৈরি করেন, তখন তার বয়স ২০-এর কোঠায় এবং তিনি জনপ্রিয়ও ছিলেন না। পরে ভাস্কর্যটি পৃথিবীজুড়ে জনপ্রিয়তা পায়। পঞ্চদশ শতাব্দীর একেবারে শেষে তৈরি এই ভাস্কর্যটি। বর্তমানে রোমে ভ্যাটিকান সিটির সেইন্ট পিটারস ব্যাসিলিকা শহরের একটি গির্জায় রক্ষিত। এই একই বিষয়ের ওপর তৈরি শিল্পীর একাধিক শিল্পকর্ম রয়েছে। তবে এটিই প্রথম এবং এটি এমন একটি বিরল ভাস্কর্য, যার ওপর শিল্পীর নিজ স্বাক্ষর রক্ষিত আছে।


লেডি জাস্টিস

লেডি জাস্টিসের ভাস্কর্য পৃথিবী বিখ্যাত এবং বহুল ব্যবহৃত। এই ভাস্কর্যের কারিগর হিসেবে নির্দিষ্ট কোনো শিল্পীকে কৃতিত্ব দেওয়ার সুযোগ নেই। সর্বপ্রথম কে এমন ভাস্কর্য তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন, তা জানা যায় না। পৃথিবীর অনেক দেশের আদালত প্রাঙ্গণে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ভিন্ন উপাদানে তৈরি এই ভাস্কর্যটির দেখা মেলে, যা দর্শনার্থীদের খুব মুগ্ধ করে। দেশ এবং গড়নের ভিন্নতার কারণে ‘স্কেলস অব জাস্টিস’, ‘ব্লাইন্ড জাস্টিস’ বা আরও কিছু নামকরণ থাকলেও এটি ‘লেডি জাস্টিস’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত।

জাহ্নবী

‘বাংলাদেশিরা এতটা ঐক্যবদ্ধ তা এই প্রথম অনুভব করলাম’

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পিএম
‘বাংলাদেশিরা এতটা ঐক্যবদ্ধ তা এই প্রথম অনুভব করলাম’
হোসনে আরা প্রাপ্তি, সামিয়া আক্তার ও সুমাইয়া সাইনা

দেশে যে দুর্যোগই হোক না কেন, পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সবসময় সেসব দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এবার স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হলো বাংলাদেশ। এই আকস্মিক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে সবাই যেন এক নতুন বাংলাদেশকে দেখতে পেল। নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধ সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একতার যে অনন্য সেতুবন্ধন তৈরি করেছে, তা মুগ্ধ করেছে সর্বস্তরের মানুষকে। বন্যার্তদের সহযোগিতায় অবিশ্রান্ত কাজ করে যাচ্ছেন, এমন কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা বলেছেন মোহনা জাহ্নবী

সামিয়া আক্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। বন্যার্তদের জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বন্যার্তদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবার প্রথম। এর আগে আমি এ ধরনের কোনো কাজ করিনি। অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যার কারণে যখন আমার দেশ ও দেশের মানুষের জীবন বিপন্ন, তখন বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়াতে, সহযোগিতা প্রদানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘গণত্রাণ সংগ্রহ’ কর্মসূচি ঘোষণা দেয় এবং আমি সেই কর্মসূচিতে একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করি। আমরা প্রতিদিন টিএসসি বুথে বানভাসি মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসা মানুষদের থেকে নগদ অর্থ, শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় মেডিসিন, শিশুখাদ্য, পোশাক, স্যালাইন, স্যানিটারি ন্যাপকিন, বিশুদ্ধ পানি গ্রহণ করে থাকি। এই সংগ্রহ করা অর্থ ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন যেসব ত্রাণসামগ্রী সংগৃহীত হয়, তা সারা দিন ব্যাপক সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের অংশগ্রহণে প্যাকেজিং করা হয়। প্যাকেজিং শেষে সেগুলোকে ট্রাক, পিকআপ এবং সেনাবাহিনীর সহায়তায় এয়ার কার্গোতে করে প্রয়োজনের ভিত্তিতে বন্যাকবলিতে এলাকাগুলোয় সরবরাহ করা হয়। আমার অভিজ্ঞতা মূলত ত্রাণ সংগ্রহ নিয়ে। আর এ ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রমে অংশ নিয়ে আমি বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই, যা আমাকে সত্যিই অভিভূত করে। এই গণত্রাণ কার্যক্রমে সারা দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এ কার্যক্রমকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। একজন রিকশাচালক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, আইনজীবী, স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী, শিশু- সবার অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরাও অর্থ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের এই ত্রাণ সংগ্রহে অংশগ্রহণ করেছেন। অনেক আপু যাদের কাছে নগদ অর্থ ছিল না, তারা তাদের স্বর্ণালংকার যেমন- চুড়ি, কানের দুল, চেইন, আংটি দিয়ে গেছেন আমাদের কাছে এসে, যা দেখে সত্যিই আমি আবেগাপ্লুত হই। একটা জাতীয় সংকটে আমরা সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবার ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে তা মোকাবিলা করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা যে জাতি হিসেবে কতটা ঐক্যবদ্ধ, এই ঘটনা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে এসে আমাদের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিয়ে যায় বন্যার্তদের জন্য। শিগগিরই আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।’

স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করতে গিয়ে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাজ করতে গিয়ে আমি কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হইনি। আমার প্রতি অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক ভাই ও বোনদের পূর্ণ সহযোগিতা ও সম্মান ছিল এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সমস্যায় পড়লে সবাই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসে তা সমাধান করার জন্য।’

এই সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে তার প্রতি পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি বা অনুভূতি সম্পর্কে সামিয়া বলেন, ‘আমার এসব কাজে পরিবারের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত ইতিবাচক। তারা আমাকে নিয়ে খুবই খুশি এবং আমার এই সামাজিক কাজে তাদের পূর্ণ সমর্থন ও দোয়া রয়েছে। আমি দেশ ও দেশের মানুষের সহায়তায় কিছু করতে পারছি ভেবেই তারা আমায় নিয়ে খুবই আনন্দিত।’

হোসনে আরা প্রাপ্তি, সরকারি শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী। বন্যার্তদের নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবু অনেক নারী হাসিমুখে এসব কাজ করে যাচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশ যে বন্যার মুখোমুখি হয়েছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং পার্শ্ববর্তী দেশের আমাদের প্রতি অবহেলার ফল। কেউ ভেসে যাচ্ছে স্রোতে কিংবা কারও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের মানুষ কিংবা প্রবাসী তারা কেউ পরিবার আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এমন আরও হাজারও দুঃখ ভরা সংবাদ আমরা শুনতে পাচ্ছি। এই বিষয়গুলো আমাদের ভাবাচ্ছে। সাঁতার জানা নেই তাই বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় যেতে পারিনি। তবে ত্রাণ সংগ্রহ এবং প্যাকেজিংসহ যারা বন্যাকবলিত জেলাগুলোয় যাচ্ছে তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আমরা টিএসসিতে কাজ করছি মানুষের জন্য। ছেলেমেয়ে, ছোট-বড়, এমনকি আমাদের মা-বাবার বয়সের মানুষদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছি। নতুন করে শিখছি অনেক কিছু। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুকনো খাবার, জামাকাপড়, খাবার স্যালাইনসহ গুরুত্বপূর্ণ পণ্য প্যাকেজিং করছি। আলহামদুলিল্লাহ। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই অনুভূতি জীবনের শ্রেষ্ঠ অনুভূতির একটি হয়ে থাকবে।’

বন্যার্তদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নানাবিধ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন প্রাপ্তি। তিনি বলেন, ‘বন্যার্তদের জন্য কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু চমৎকার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি যা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে, তা হলো একতা। আমরা বাংলাদেশিরা এতটা ঐক্যবদ্ধ তা এই প্রথম অনুভব করলাম। ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষক, রিকশাচালক কিংবা সমাজের উচ্চবিত্ত সব স্তরের মানুষ এক হয়ে গেছে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। এই যে একতা এটা আমাকে চমৎকারভাবে প্রভাবিত করেছে। আমরা টিএসসি প্রাঙ্গণে দেখেছি কোনো প্রতিবন্ধকতাই তাদের জন্য বাধা হতে পারেনি। তারা সব বাধা জয় করে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।’

কাজ করতে গিয়ে নারী হিসেবে আলাদা করে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্য কাজ করছি। বানভাসি মানুষগুলো অনাহারে আছে, শিশুরা আশ্রয় খুঁজছে, একটু উষ্ণতা আর খাদ্য তাদের প্রশান্তি দিতে পারে। তাদের জন্য আমরা নারী-পুরুষ সবাই এক হয়ে কাজ করছি। এই কাজে নারী-পুরুষ একসঙ্গে একে অপরকে সহযোগিতা করছি। নারী হিসেবে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়িনি। বরং কাজের ক্ষেত্রে ছাত্ররা আমাদের সহযোগিতা করছে। বেশি ভারী কাজগুলো ছেলেরা করছে। প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে যারা ত্রাণ দিচ্ছে তাদের বেশির ভাগই ছাত্র কিংবা পুরুষ। তারা নারী, শিশু, বৃদ্ধদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। নারী হিসেবে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো আমরা সহজেই করতে পারি না। আমরা ত্রাণ সংগ্রহ করছি, প্যাকেজিং করছি, সেই কাজেও আমাদের সঙ্গে ছেলেরা সহযোগিতা করছে। সর্বোপরি আমরা নারী-পুরুষ একত্রে একটা দল হয়ে আমাদের মানুষদের, শিশুদের নিরাপদ রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে চলেছি।’

সুমাইয়া সাইনা, ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী। তার কাছে জানতে চাইলাম, এই যে বন্যার্তদের নিয়ে কাজ করছেন এসব কাজে তো সবাই আগ্রহ প্রকাশ করে না, এই মানবিক বা সামাজিক কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ তৈরি হলো কীভাবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন ধরে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি জীবনযাপন করছে। হাজার হাজার মানুষের ঘর ভেসে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা দেখছি পর্যাপ্ত খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানির অভাব। বৃদ্ধ নারী ও শিশুরা পড়েছে চরম বিপাকে। মৃত ব্যক্তির লাশকে ভাসিয়ে দিতে হচ্ছে জলে, কারণ দাফন দেওয়ার মতো স্থান নেই। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। এমতাবস্থায় একজন মানুষ হিসেবে ঘরে বসে থাকা আসলেই সম্ভব নয়। সেই জায়গা থেকেই বন্যার্তদের সহযোগিতা এগিয়ে আসা।’

তার কাছে আরও জানতে চাইলাম, সবাই বলছে বাংলাদেশের এই ঐক্য আগে কখনো দেখেনি। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী? তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমাদের এই ঐক্যটা গড়ে উঠেছে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যখন সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ওপর দমন-নিপীড়ন চালানো শুরু হয়, তখন সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছে। এদিকে গণ-অভ্যুত্থান সফল হতে না হতেই ভারত বাঁধ খুলে দেওয়ায় আকস্মিকভাবে বন্যা শুরু হলো। এমতাবস্থায় ভারতের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এত বড় ত্যাগ ও লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে, তা রক্ষা করার জন্য মানুষ পুনরায় এক হয়েছে। চরম অবক্ষয় এবং ব্যক্তি স্বার্থের যুগে এমন ঐক্যবদ্ধতা প্রমাণ করে মানুষের মধ্যে মানবিকতা ও সহনশীলতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি।’

বন্যা প্রতিরোধে আমাদের কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে আপনি মনে করেন? এ প্রশ্নের জবাবে সুমাইয়া বলেন, ‘যেহেতু প্রতিবেশী দেশ ভারতের সাথে আমরা অনেকগুলো নদী ভাগাভাগি করছি ফলে ভারতকে আন্তর্জাতিক নদী আইন মানতে বাধ্য করতে হবে। তিস্তাসহ সব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক বাঁধগুলো নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক নদী আইন মানতে হবে। সব অসম চুক্তি মূল্যায়নের মাধ্যমে পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করতে হবে। বন্যাসহ সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণগুলো চিহ্নিত করে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংসের যে প্রকল্পগুলো রয়েছে সেগুলো অবিলম্বে বাতিল করে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পগুলোকে উৎসাহিত করতে হবে।’

জাহ্নবী

বন্যার্তদের জন্য ওয়েবসাইট

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ পিএম
আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ পিএম
বন্যার্তদের জন্য ওয়েবসাইট
তানজিমা হোসেন সীমা ও শানজিন সায়মা শারিতা

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে মারাত্মক বন্যা হয়েছে। বন্যার পানিতে ১০টিরও বেশি জেলা প্লাবিত হয়ে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি করে। প্রবল বন্যায় হাজার হাজার মানুষ আটকা পড়ে সাহায্যের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

বন্যার এই চরম অসহায় অবস্থা আর বিশৃঙ্খলার বিপরীতে bonna2024.xyz নামে একটি রিয়েল টাইম তথ্য কেন্দ্র নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চার শিক্ষার্থী ইফতেখার উচ্ছাস আহমেদ, তানজিমা হোসেন সীমা, মো. শাহ আব্দুল আজিজ, শানজিন সায়মা শারিতা। কথা হয় এই টিমের তরুণ নারী সদস্য শানজিন সায়মা শারিতার সঙ্গে।

শারিতার ভাষ্য, ‘আমাদের ১০ মিনিটের মধ্যে না বাঁচালে আমরা ডুবে মারা যাব। আমি আমার পরিবারের কোনো খবর পাচ্ছি না, কেউ খবর পেলে দয়া করে আমাকে জানান। এ আকুতি দুজন বন্যাদুর্গত ব্যক্তির। বন্যা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকজুড়ে মানুষের এমন আর্তনাদ ও সাহায্যের ডাক আমাদের বিচলিত করে। বন্ধু ইফতেখার উচ্ছাস আহমেদ চিন্তা করেন ফেসবুকের এই পোস্টগুলোকে কীভাবে আরও অর্গানাইজ করা যায়, বিভিন্ন জায়গার এত বিচ্ছিন্ন আর্তিকে যদি আমরা এক জায়গায় নিয়ে আসতে পারি তাহলে রেসকিউ টিমগুলোকে সাহায্য করা যাবে। এমন চিন্তা থেকেই বন্ধু উচ্ছাস ২১ আগস্ট সকালে ওয়েবসাইটটি বানিয়ে ফেলে।’

শারিতাদের দলটি প্রথমে ফেসবুকের পোস্ট, ব্যক্তিগত যোগাযোগ, মোবাইল ফোনের তথ্য, ওয়েবসাইটের পাওয়া তথ্যগুলোকে ম্যানুয়ালি ইনপুট দিয়ে ডেটাবেইজ তৈরি করতে থাকেন। একটা সময় গিয়ে বন্যা ২০২৪ ওয়েবসাইটটি ভাইরাল হয় এবং আক্রান্ত মানুষ থেকে শুরু করে অন্যরাও ডেটা ইনপুট দিতে থাকেন। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুযায়ী এ পর্যন্ত মোট ৮০ হাজার বন্যাকবলিত মানুষ ওই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজেদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন।

শারিতা বলেন, ‘এই কাজটি করতে গিয়ে আমরা সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জটি পেয়েছি তা ছিল ত্রাণ বিতরণ এবং সাহায্য পৌঁছানোর অসমতা ও সমন্বয়ের অভাব। কোথাও আমরা খবর পেতাম ত্রাণ পৌঁছে গেছে, আবার কোথাও খবর পেতাম ৫-৬ দিন হয়ে গেছে কোনো খাবার সেখানে পৌঁছায়নি। এই দুইয়ের সমন্বয় কঠিন ছিল।’

ওয়েবসাইটটিতে চার সদস্যের এই টিম দিন-রাত পরিশ্রম করে একটি রিয়েল টাইম স্ট্যাটাস সচল রাখেন, যাতে করে বন্যাক্রান্ত মানুষ, রেসকিউ টিম এবং ত্রাণ বিতরণকারী দলগুলোর মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন করা যায়। দলের সদস্য তানজিমা হোসেন সীমার কাজ ছিল যেসব তথ্য পাওয়া যেত তার সত্যতা যাচাই করে তারপর ওয়েবসাইটে ইনপুট দেওয়া। সীমা বন্যার সময়গুলোয় ২৪ ঘণ্টাই ঘুম, খাওয়া বাদ দিয়ে তথ্য যাচাই, যোগাযোগ এবং ডেটা ইনপুট করে গেছেন। শানজিন সায়মা শারিতা সারাক্ষণ ডেটাগুলোকে চেক করে করে যেসব জায়গায় রেসকিউ হয়ে গেছে তা আপডেট করা, যেখানে সাহায্য দরকার সেখানে সমন্বয় করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের স্ট্যাটাসকে লাইভ এবং আপডেটেড রাখার দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

সে সময়ের অভিজ্ঞতা এবং চ্যালেঞ্জকে মনে করে শারিতা বলেন, ‘একটা অদ্ভুত সময় ছিল, অনেক ভয় আর চাপ ছিল। আমরা এত তথ্য পাচ্ছিলাম, এত হাহাকার, মানুষ প্রতিনিয়ত সাহায্য চাচ্ছে। রিমোট এরিয়াতে সাহায্য পৌঁছানো একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। ত্রাণ বিতরণে কিছু স্থানীয় সমস্যা ছিল। তথ্যের সত্যতা যাচাই করা এবং তা আপডেট রাখাটা অনেক সময়সাপেক্ষ ছিল। আমরা অনেক স্ট্রেসড ছিলাম, আমাদের সাহায্য করার ক্ষমতা অনেক কম ছিল, তবুও আমরা হাল ছাড়িনি। বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করে গেছি।’

শানজিন সায়মা শারিতা সিলেটের মেয়ে। সিলেটে তার দাদাবাড়ি-নানাবাড়ির সবাই বন্যার কবলে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতেও শারিতা অন্যদের বাঁচানোর তাগিদে নিজেকে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত রেখে নিরন্তর কাজ করে যান।

এই টিমের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান, তারা ‘ফিক্স বাংলাদেশ’ নামে একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে চান, যার কাজ শুরু হয়ে গেছে। শারিতারা বিশ্বাস করেন এই ওয়েবসাইটটি প্রাথমিকভাবে দুর্যোগ আক্রান্ত মানুষকে সাহায্য করার পাশাপাশি যেকোনো জায়গায় অন্যায় ঘটলে কোথায় কীভাবে রিপোর্ট করতে হবে, অন্যায়ের প্রতিকার কীভাবে পাওয়া যাবে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের সহযোগী হতে পারবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ওয়েবসাইটটি অধিক কার্যকর হবে বলে তারা আশাবাদী।

জাহ্নবী

শান্তির কর্মী বের্টা ফন জুটনার

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পিএম
শান্তির কর্মী বের্টা ফন জুটনার

নারীদের মধ্যে প্রথম শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন অস্ট্রিয়ান নারী বের্টা ফন জুটনার। তিনি একজন ঔপন্যাসিক। সাহিত্যে নোবেলজয়ী নারী মেরি কুরির পর তিনি দ্বিতীয় নারী যিনি নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার পুরো নাম বের্টা ফেলিতসিটার জোফিয়ে ফ্রাইফ্রাউ ফন জুটনার।

১৮৪৩ সালের ৯ জুন তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার (বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র) রাজধানী প্রাগ শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জন্মের আগেই তার বাবা মারা যান। বার্থার মা জোফি ফন কোরনার অস্ট্রীয় আভিজাত্যপূর্ণ উচ্চশিক্ষায় তাকে বড় করে তোলেন। মাতৃভাষা জার্মান ছাড়াও বার্থা ফরাসি, ইংরেজি ও ইতালীয় ভাষায় বেশ দক্ষ ছিলেন। তিনি পড়াশোনা এবং ভ্রমণেও অনেক আগ্রহী ছিলেন। এমনকি সংগীতেও দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।

ভিয়েনা শহরের কাছের এক গ্রামে অভিজাত এক পরিবারে গৃহশিক্ষিকার চাকরি শুরু করেন বের্টা। তখন তার বয়স ছিল ৩০ বছর। আর্থার ছিলেন সেই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। তারা দুজনে প্রেমে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বের্টা এবং আর্থার বিয়ে করেন। ১৮৭৬ সালে তিনি আলফ্রেড নোবেলের একটি বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে প্যারিসে তার বাসার গৃহকর্মীর দায়িত্ব নেন। তিনি শুধু এক সপ্তাহের জন্য সেখানে ছিলেন। যদিও আলফ্রেড নোবেলের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ ক্ষণিকের জন্য, তবুও নোবেলের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার সঙ্গে জুটনারের চিঠি আদান-প্রদান হয়েছে। ধারণা করা হয়, আলফ্রেড নোবেল তার সব অর্থ যেসব পুরস্কারের জন্য উইল করে দিয়েছিলেন তার মধ্যে ‘শান্তি পুরস্কার’ সংযুক্ত করার পেছনে জুটনারের এক বিশাল প্রভাব আছে।

আর্থার এবং বের্টা দম্পতি ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত ৯ বছর জর্জিয়ায় অবস্থান করেন। অস্ট্রিয়ায় ফিরে আসার পর বের্টা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শান্তি কার্যক্রম সম্পর্কে জ্ঞাত হন এবং এই কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৮৮৯ সালে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন তিনি। ‘দ্য মেশিন এজ’ নামের সেই গ্রন্থে তিনি লিখেছিলেন, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিই যুদ্ধের অবসান ঘটাবে। ‘দ্য মেশিন’ গ্রন্থটি সফল হলেও তার পরবর্তী উপন্যাস ‘ডাই ওয়াফেন নিডার’ (ইংরেজি অনুবাদ ‘লে ডাউন ইয়োর আর্মস’) তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এবং স্বীকৃতি এনে দিয়েছিল। ওই উপন্যাস অবলম্বনে ১৯১৪ এবং ১৯৫২ সালে দুটি চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছিল।

১৮৯১ সালে তিনি একটি শান্তিকামী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯২ থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শান্তিকামী সাময়িকীর সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘লে ডাউন ইয়োর আর্মস’ এর জন্য ১৯০৫ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি কেবল শান্তির কর্মীই ছিলেন না; উদার ধারণার চেতনা, উপযোগী দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারী অধিকারের বিষয়েও তিনি ছিলেন সোচ্চার। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগে ১৯১৪ সালের ২১ জুন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরে ৭১ বছর বয়সে মারা যান বের্টা ফন জুটনার।

জাহ্নবী

স্বল্প উচ্চতার অধিকারী হয়েও অনন্য উচ্চতায় জ্যোতি

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পিএম
স্বল্প উচ্চতার অধিকারী হয়েও অনন্য উচ্চতায় জ্যোতি
জ্যোতি অ্যামগে

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সুবাদে জ্যোতি অ্যামগেকে চেনেন না এমন মানুষ পাওয়া বোধহয় দুষ্কর। জ্যোতি অ্যামগে হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে খাটো নারী। ২০১১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে খাটো নারী হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠে জ্যোতির। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী জ্যোতির বর্তমান বয়স প্রায় ৩০ বছর আর উচ্চতা ২ ফুট।

ভারতের নাগপুরে ১৯৯৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জ্যোতি। জন্মের সময় তার ওজন ছিল ১.৪ কেজি। আর বর্তমান ওজন ৫.৪ কেজি বা তার কিছু বেশি। পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে ওঠেন, এরপর থেকে হরমোন ও জেনেটিকজনিত সমস্যার কারণে তা থমকে যায়। জ্যোতির একধরনের বামনতা আছে যাকে বলা হয় অ্যাকোন্ড্রোপ্লাসিয়া, যা তার বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করে।

অন্যসব স্বাভাবিক শিশুর সঙ্গেই মাত্র চার বছর বয়সে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় কিন্তু জ্যোতির জীবনযুদ্ধটা ছিল অন্য সবার থেকে একেবারেই আলাদা। উচ্চতা তাকে কখনোই পেছনে ফেলতে পারেনি বরং সে তার কাজ দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। কিশোরী বয়স থেকেই জ্যোতির মেকআপ আর ফ্যাশনের ওপর আলাদা একটা ভালো লাগা কাজ করত। জ্যোতি জীবনে একজন সফল অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। বাস্তবতার খাতিরে অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি ঠিকই কিন্তু পরিশ্রম আর একাগ্রতা দিয়ে নিজের একটা শক্ত পরিচয় দাঁড় করিয়েছেন বটে!

২০০৯ সালে জ্যোতি অ্যামগেকে ‘বডি শক-টু ফুট টল টিন’ শিরোনামের তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছিল। তিনি ভারতীয় টেলিভিশন শো বিগ বস সিজন-৬-এ একজন অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণও করেছিলেন। ২০১৪ সালে ‘আমেরিকান হরর স্টোরি’ নামে একটি টিভি শোতেও দেখা গিয়েছিল তাকে।

লোনাভালার সেলিব্রেটি মোমের মূর্তির মিউজিয়ামে জ্যোতি অ্যামগের প্রতিকৃতির একটি মূর্তি রয়েছে। মিসরের গিজা শহরে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তি তুরস্কের সুলতান কোসেনের সঙ্গে জ্যোতির তোলা ছবি সবার নজরে এসেছিল এবং প্রশংসা কুড়িয়েছিল। মিসরের রাজধানী শহর কায়রোর কাছে গিজার গ্রেট স্ফিংস এবং গিজা পিরামিডের পাশে আইকনিক এই জুটিকে পোজ দিতে দেখা যায়। সুলতানের উচ্চতা ৮ ফুট ৯ ইঞ্চি আর জ্যোতির উচ্চতা ২ ফুট। জ্যোতি ও সুলতানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল মিসরের পর্যটন প্রোমোশন বোর্ড।

জ্যোতি অ্যামগে উচ্চতায় খাটো হলেও নিজে কখনোই কোনো হীনম্মন্যতায় ভোগেন না। বরং নিজের চেষ্টায় একজন স্বাভাবিক মানুষের থেকেও বহু গুণ এগিয়ে আছেন বিশ্বের সবচেয়ে এই খাটো নারীটি।

জাহ্নবী

৫০০ পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন 'ড্রিমার ইয়ুথ অর্গানাইজেশন'

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
৫০০ পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন 'ড্রিমার ইয়ুথ অর্গানাইজেশন'

সম্প্রতি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে বাংলাদেশের দশ এর অধিক জেলায়। বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের অনেক মানুষ। অনেকের মতো ছোঁয়াও তার সংগঠন থেকে বন্যার্তদের জন্য কাজ করেছেন।

বন্যা কবলিত এলাকায় ৫০০ পরিবারের জন্য শুকনা খাবার ( চিড়া,মুড়ি,গুড়,খাবার স্যালাইন,বিস্কিট, ঔষধ) ৫০০ স্যানোরা ও ৫০০ বোতল খাবার পানি এবং ৫০০০ এর অধিক বস্ত্র বিতরণ করেছেন তারা। যার মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে শিশু ও নারীদের বস্ত্র ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। এ সার্বিক কাজের পরিচালনায় ছিলেন Dreamer  youth organisation (DYO) এর সভাপতি বিধান কৃষ্ণ গোস্বামী, সাধারণ সম্পাদক সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া।

মহৎ কাজের উৎসাহ যুগিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুন কৃষ্ণ পাল, থানা ইনচার্জ  আব্দুল মজিদ। কাজটি ভালোভাবে শেষ করতে পারার জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়েছে।

জাহ্নবী