চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্থিত মন্দিরে বাড়তি নিরাপত্তার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। ইতিমধ্যে গৃহীত নিরাপত্তাব্যবস্থার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আরও নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে। আসতে পারে নতুন নির্দেশনাও।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকালে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্থিত মন্দির ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শনে যান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সীতাকুণ্ড থানার ওসি কামাল উদ্দিন, সীতাকুণ্ড স্রাইন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন দাশ, কমিটির ম্যানেজার প্রদীপ দত্ত, সদস্য অশোক চক্রবর্তী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সীতাকুণ্ড উপজেলা শাখার সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট পুলন রায় ও স্রাইন কমিটির অন্য নেতারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খবরের কাগজকে বলেন, ‘মন্দিরের নিরাপত্তাব্যবস্থা কীভাবে নেওয়া হবে সেটি নিয়ে স্রাইন কমিটি ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি আমিও দেখেছি। এ বিষয়ে কোনো জিডি বা অভিযোগ আমাদের কাছে কেউ করেননি। তবে সেখানে গিয়ে বারবিকিউ পার্টি করার কোনো আলামত কিংবা এমন কোনো কিছু আমরা পাইনি। যদিও নিরাপত্তাব্যবস্থা কীভাবে নেওয়া হবে সে বিষয়ে কথা হয়েছে। কমিটি কীভাবে কাজ করবে এবং অন্যান্য বিষয়েও কথা হয়েছে। আমি রিপোর্ট দাখিল করব। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।’
সীতাকুণ্ডের ওসি কামাল উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের একটি টিম সব সময় চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় দায়িত্বে থাকে। তারা নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এ ছাড়া ইকোপার্ক এলাকায় আমাদের একটি মোবাইল টিম সব সময় থাকবে। তারা তল্লাশি করবে। আপাতত এ ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। আগামীতে নিরাপত্তা বিষয়ে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সম্প্রতি সীতাকুণ্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বারবিকিউ পার্টি করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হয়। ওই পোস্টে চন্দ্রনাথ পাহাড়কে মেনশন দেওয়া হয়। বিষয়টি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নজরে আসে। এরপর ধর্মীয় স্থানে এমন বিনোদন কেন প্রশ্ন তুলে এবং এটি মন্দিরের প্রতি অমর্যাদা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশও নড়েচড়ে বসে।
চন্দ্রনাথ পাহাড় প্রায় ১ হাজার ২০০ ফুট উচ্চতার। পাহাড়টি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাতীর্থ স্থান। এখানে রয়েছে কয়েক শ বছরের পুরোনো অর্ধশতাধিক মঠ-মন্দির। প্রতিবছর বাংলা ফাল্গুন মাসে এখানে তিন দিনব্যাপী শিব চতুর্দশী মেলা হয়। এ মেলায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভিড় জমান। ব্যসকুণ্ড, গয়াকুণ্ড, মহাদেব বাড়ি, সীতারকুণ্ড ও মন্দির, বীরপাক্ষ ও চন্দ্রনাথের শিব মন্দির এখানের উল্লেখযোগ্য মন্দির। হিন্দুদের কাছে পুণ্যস্থান হিসেবে পরিচিত এই চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের বাইরেও আছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে আলাদা কদর। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে স্থানটি খুবই আকর্ষণীয়, মোহনীয় আর পছন্দের শীর্ষ তালিকার একটি।
এমএ/