![উৎসকর কার্যকর হলে চালের দাম বাড়বে](uploads/2024/07/04/Naogaon-1720066417.jpg)
চাল প্রক্রিয়াজাত করার পর বিপণনের ক্ষেত্রে উৎসকর কার্যকর হলে ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম বাড়বে। মিলমালিকদের সঙ্গে আলোচনা না করে অযৌক্তিকভাবে ধান-চাল মজুতের সীমা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি চালের বস্তায় ধানের জাতের নাম, উৎপাদন তারিখ ও মিলগেটের মূল্য লেখার যে পরিপত্র জারি করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে মিলাররা ইচ্ছুক। কিন্তু সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ধানের জাতের নাম মিলারদের কাছে সরবরাহ না করায় সিদ্ধান্তটি পুরোপুরিভাবে কার্যকর করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন অটোরাইস মিলমালিকেরা।
বুধবার (৩ জুলাই) বিকেলে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স সমন্বয় পরিষদ’ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় চালকল মালিকরা এসব কথা বলেন। সভা শেষে বিকেল ৩টার দিকে গণমাধ্যমের সামনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক এম এ খালেক।
এম এ খালেক বলেন, ‘সম্প্রতি জারি হওয়া পরিপত্র অনুযায়ী চালের বস্তায় ধানের জাতের নাম, উৎপাদনের তারিখ ও মিল গেটের মূল্য লেখার ক্ষেত্রে মিলারদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু মিলারদের দাবি হচ্ছে, ধানের জাতের নাম মিলারদের কাছে সরকারকেই পৌঁছাতে হবে। গত ১৪ এপ্রিল থেকে চালের বস্তায় জাতের নাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হলেও এখন পর্যন্ত ধানের জাতের নাম মিলারদের কাছে পৌঁছানো হয়নি। সাধারণত কৃষকেরা সরকারি উৎসের বাইরে থেকেও ধান বীজ সংগ্রহ করে এবং সেই অনুযায়ী ধানের নামকরণ করে।’
লিখিত বক্তব্যে খালেক আরও বলেন, ‘চটের বস্তার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রমের সুযোগ নেই। অথচ বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, করপোরেট ব্যবসায়ীরা চাল বাজারজাত করার ক্ষেত্রে প্লাস্টিক বা পলিথিনের প্যাকেট ব্যবহার করছেন। আবার বিদেশ থেকে যেসব চাল আমদানি করা হচ্ছে, সেগুলো প্লাস্টিকের বস্তায় প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। চটের বস্তা ব্যবহারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য এসব করপোরেট ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের কোনো শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। অথচ প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করার অপরাধে শুধু মিলমালিকদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক। চটের বস্তার ব্যবহার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই বৈষম্য দূর করতে হবে।’
সম্প্রতি চাল প্রক্রিয়াজাতকরণের পর বিপণনের ক্ষেত্রে উৎসকর দেওয়ার বিষয়টি সংযুক্ত করেছে। এ ক্ষেত্রে মিলারদের বক্তব্য হলো, মিলাররা দেশের বিদ্যমান আইন মেনে সরকারকে আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর চাল বিপণনের ক্ষেত্রে উৎসকর দেওয়া হলে ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম বেড়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে উৎসকর কার্যকর যুক্তিসংগত কিনা তা সরকারকে ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিকুল ইসলাম, বেলকন গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাব অটোমেটিক রাইসমিলের মালিক আকবর আলী, দিনাজপুরের ইশরাক এগ্রো অ্যান্ড ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইশতিয়াক আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অটো রাইসমিলার নেতারা সভায় অংশ নেন।