সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি কিছুটা কমলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। চলতি বছর বন্যায় জেলার পাঁচ উপজেলায় ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকেছে। আর এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদ খবরের কাগজকে জানান, জেলার পাঁচ উপজেলার ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকেছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যার পানি না নামা পর্যন্ত তা বন্ধ থাকবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ হার্ডপয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে, কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, সোমবার থেকে আগামী তিন থেকে চারদিন পানি কমবে। এরপর আবার পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ ছাড়াও পাঁচ উপজেলার চরাঞ্চলবেষ্টিত ৩৪টি ইউনিয়নের ১৮ হাজার পরিবারের প্রায় ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবতার জীবনযাপন করছেন। এসব এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
একই সঙ্গে দেখা গেছে গবাদিপশুর খাদ্য সংকট। এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সহায়তা পায়নি বলে জানান বানভাসিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, এরই মধ্যে ছয় হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমির রোপা আমন, পাট, তিল, মরিচ, বাদাম, বোনা আমন, শাকসবজি, বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানি কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান জানান, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলার ৫টি উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের মোট ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ইতোমধ্যেই বন্যাকবলিতদের মাঝে ৯৫ টন চাল, পাঁচ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের আরও যথেষ্ট মজুদ আছে, সময়মতো সেগুলো বিতরণ করা হবে।
সিরাজুল ইসলাম/জোবাইদা/অমিয়/