ঢাকা ২৩ ভাদ্র ১৪৩১, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কর্মসংস্থানে সক্ষমতা হারাচ্ছে খুলনা

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৪৫ পিএম
কর্মসংস্থানে সক্ষমতা হারাচ্ছে খুলনা
খুলনার একটি পাটকলে কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। ফাইল ছবি

লোকসানের কারণে খুলনায় একের পর এক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও কল-কারখানা বন্ধ হয়েছে। গত দুই দশকে নিউজপ্রিন্ট মিল, হার্ডবোর্ড মিল, ম্যাচ ফ্যাক্টরি, চিংড়ি কারখানা ও জুটমিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

একসময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ কাজের সন্ধানে খুলনায় ছুটে আসতেন। কিন্তু শিল্পনগরী এখন সেই অতীত ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সঠিক তদারকি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাব, মান্ধাতা আমলের পাটকল, অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ ও পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় বন্ধ হয়েছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া উন্নয়নকাজে ধীরগতি, বিমানবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে অনিশ্চয়তায় সংকট আরও বাড়ছে।

জানা গেছে, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী খুলনা মহানগরীর লোকসংখ্যা ছিল ১৫ লাখ। এখন বেড়ে লোকসংখ্যা হওয়া উচিত ২০ লাখ অথচ কমে হয়েছে ১৩ লাখ। কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে বলে দাবি করছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান জানান, খুলনায় একসময় চিংড়ি প্রক্রিয়াজাত কারখানা ছিল ৫৯টি। যার বেশিরভাগ এখন বন্ধ হয়ে গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে ৩০ হাজারের বেশি স্থায়ী ও বদলি শ্রমিক-কর্মচারী চাকরি করতেন। তারা সবাই এখন চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, খুলনার উন্নয়নে সব বন্ধ কল-কারখানা চালু করতে হবে। নতুন কল-কারখানা স্থাপন করতে হবে। পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। পদ্মা সেতু ও মোংলা বন্দরের উন্নয়নকে কাজে লাগাতে হবে। নাগরিক সুবিধা বাড়াতে হবে। তা হলেই কর্মসংস্থানের নগরী হিসেবে অতীত ঐতিহ্য ফিরে পাবে খুলনা।

দারিদ্র্যের হার কমছে কর্মসংস্থান কমছে: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে (এইচআইইএস) দেখা গেছে, খুলনায় ২০১৬ সালে ছিল দারিদ্র্যের হার ছিল ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২২ সালে তা কমে হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে দরিদ্রতার পাশাপাশি কর্মসংস্থানও কমেছে। বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়াস টার্ন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৯৯৫ সালে কর্মসংস্থানে দেশের শীর্ষ পাঁচ শহরের তালিকায় খুলনা ছিল পঞ্চম। ওই সময় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মসংস্থান ছিল খুলনায়। তবে ২০১২ সালের পর সেই অবস্থান হারিয়েছে খুলনা। ২ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়ে তালিকায় পঞ্চম স্থানে আসে সিরাজগঞ্জ।

যেভাবে কমেছে কর্মসংস্থান: কাঁচামালের ব্যয় বৃদ্ধি ও মুনাফা হ্রাস পাওয়ায় ২০১৩ সালে বন্ধ হয়ে যায় হার্ডবোর্ড মিল। এর আগে আর্থিক লোকসানে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর বন্ধ হয় নিউজপ্রিন্ট মিল। এতে দুই মিলের প্রায় তিন হাজার শ্রমিক চাকরি হারান। একইভাবে লোকসানের অজুহাতে ২০১০ সালের ১৩ আগস্ট খুলনার দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি বন্ধ করা হয়। এতে চরম বিপদে পড়েন এখানকার সাড়ে ৭০০ শ্রমিক-কর্মচারী। 

২০২০ সালের ২ জুলাই খুলনার স্টার, প্লাটিনাম, কার্পেটিং, ইস্টার্ন, ক্রিসেন্ট, জেজেআই, দৌলতপুর ও আলীম জুট মিল বন্ধ হয়ে যায়। এতে চাকরি হারান প্রায় ৩০ হাজার স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী। তবে খুলনার শিপইয়ার্ডও একসময় লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেওয়ার পর সঠিক তদারকি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

১৯৬৬ সালে ২৬৪টি প্লট নিয়ে খুলনার বিসিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল উৎপাদনমুখী শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা। তবে এত বছর পরও বেশিরভাগ প্লট অব্যবহৃত পড়ে আছে। গ্যাস সরবরাহ না থাকায় বিদ্যুৎ ব্যবহারে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যয় বাড়তে থাকে। বিমানবন্দর তৈরির প্রকল্প আটকে গেছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলও অনিশ্চয়তায়। ব্যবসা অনুকূল পরিবেশ না থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না বিনিয়োগও হচ্ছে না। 

আঞ্চলিক উন্নয়নে সম্ভাবনা: খুলনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মফিদুল ইসলাম টুটুল খবরের কাগজকে জানান, দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়নের জন্য খুলনার রূপসা এবং বটিয়াঘাটাতে দুটি পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চলকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে বড় পরিকল্পনা হাতে নেওয়া প্রয়োজন। প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবল তৈরির জন্য খুলনায় আইটি পার্ক প্রতিষ্ঠার কাজ চলমান। সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে কর্মসংস্থানে ঘুরে দাঁড়াবে খুলনা।

দারিদ্র্যের পাশাপাশি কর্মসংস্থানও কমেছে: বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, খুলনার বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানা বন্ধ হওয়ায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। এদের অধিকাংশ জীবনের তাগিদে খুলনা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে বা অন্য শহরে গেছেন। ফলে খুলনা নগরীর খালিশপুর দৌলতপুর অঞ্চলের জনসংখ্যাও কমেছে। শ্রমিক শ্রেণির মানুষ ওই অঞ্চলে কমে যাওয়ায় পরিসংখ্যান অনুযায়ী দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কম দেখালেও মূলত কর্মসংস্থানের সক্ষমতা হারিয়েছে খুলনা।  

তবে খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বিশ্বাস বুলু বলেছেন, এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না। খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। মোংলা বন্দরের সাথে সারা দেশের রেল নেটওয়ার্ক যুক্ত হওয়ায় কম খরচে দ্রুত আমদানি-রপ্তানি করা পণ্য পরিবহন করা যাবে। বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্যিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশসহ ভারত, ভুটান, নেপাল অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে। এতে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এর মধ্য দিয়ে খুলনা মহানগরীর ঐতিহ্য আবার ফিরে আসবে বলে আশা করছি।

কুমিল্লার ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উন্মোচন, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পিএম
কুমিল্লার ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উন্মোচন, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার
অভিযুক্ত আক্তার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি : খবরের কাগজ

কুমিল্লার হোমনায় ঘরের ভেতর থেকে মা-ছেলেসহ তিনজনের লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। আলোচিত এই ট্রিপল মার্ডারের একমাত্র অভিযুক্ত আক্তার হোসেনকে (২৭) নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে হোমনার শ্রীমদ্দি চরের গাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আক্তার হোসেন শ্রীমদ্দি চরের গাঁও এলাকার হক মিয়ার ছেলে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে হোমনার বড় ঘাগুটিয়া এলাকায় শাহ পরাণের ঘরের ভেতর থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় তিনজনকে হত্যা করে লাশ একটি খাটের ওপর ফেলে রাখা হয়।

নিহতরা হলেন, বড় ঘাগুটিয়া এলাকার মো. শাহ পরাণের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ৯ বছরের ছেলে সাহাত এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা (১৪)।

হত্যাকাণ্ডের পর বৃহস্পতিবার রাতে নিহত মাহমুদার বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতক আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আক্তারকে আদালতে তোলা হয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে হোমনা থানা ওসি জয়নাল আবেদীন জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন আক্তার হোসেন।

তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ হত্যাকারী আক্তারকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে শ্রীমদ্দি চরের গাঁও এলাকার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার বিকেলে আদালতে তোলা হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ঘাতক আক্তার।’

গ্রেপ্তার আক্তারের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে ওসি জানান, নিহত মাহমুদার সঙ্গে আক্তার হোসেনের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের সুবাদে প্রেমিকের কাছ থেকে মাহমুদা ৪০ হাজার টাকা ধার নেন। সেই টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে আক্তারের সঙ্গে মাহমুদার কয়েক দফা বাগবিতণ্ডা হয়। গত বুধবার সন্ধ্যায় আক্তারকে তার পাওনা টাকা ফেরত দেবেন বলে বাড়িতে ডাকেন মাহমুদা। পরে রাতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন মাহমুদা, আক্তার, মাহমুদার ছেলে সাহাত এবং মাহমুদার ভাতিজি তিশা। খাওয়া শেষে তিশা ও সাহাত ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে ঝগড়া বাধে মাহমুদা ও আক্তারের মধ্যে। ঝগড়ার একপর্যায়ে মাহমুদাকে মাথায় আঘাত করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন আক্তার। পরে আক্তারকে খুনি হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, এই ভয়ে সাক্ষী না রাখার কথা ভেবে তিশা ও সাহাতকেও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে সে। পরে লাশ তিনটি এক খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যায় আক্তার।

ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে আ.লীগ নেতা আটক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম
আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে আ.লীগ নেতা আটক
আটক আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমদ

পালিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে ধরা পড়েছেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর জৈন্তাপুরের গোয়াবাড়ি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিজিবির জৈন্তাপুর বিওপির টহল দল তাকে আটক করে। সীমান্তের ওই এলাকাটি ১৯ বিজিবির অধীন। রাতে যোগাযোগ করলে ১৯ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল খোন্দকার মো. আসাদুন্নবী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবি সূত্র জানায়, সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে কামাল আহমদকে আটক করা হয়েছে। বিজিবির হাতে ধরা পড়ার পর তিনি পালিয়ে ভারত যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা দিয়ে জৈন্তাপুর থানার পুলিশে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

কামাল আহমদ জৈন্তপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পাশাপাশি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য। তিনি ২০১৯ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সীমান্ত এলাকার চোরাচালান, পাথর কোয়ারিতে লুটপাটসহ বিভিন্ন অপরাধে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ছিল। সরকার পতনের পর তিনি জৈন্তাপুর সীমান্ত এলাকায় আত্মগোপন করেছিলেন। তবে তিনি কোথায় ছিলেন, এ বিষয়ে কেউ কিছু জানত না।

গাজীপুরে শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা মামলায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
গাজীপুরে শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা মামলায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার কনস্টেবল মো. আকরাম হোসেন

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জের পারাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ আগস্ট কোনাবাড়ী থানার পাশে গুলি করে কলেজছাত্র মো. হৃদয়কে (২০) হত্যা করা হয়। নিহত হৃদয় টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমনগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখার পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রেপ্তারকৃত ওই কনস্টেবলের নাম মো. আকরাম হোসেন (২২)। তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত ছিলেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী সড়কের কোনাবাড়ী এলাকায় গত ৫ আগস্ট মো. হৃদয় (২০) বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় কয়েকজন পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। ওই সময় শিল্প পুলিশে কর্মরত কিছু পুলিশ সদস্য কোনাবাড়ী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় তারা হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল আকরাম অতি উৎসাহী হয়ে তাকে পেছন দিক থেকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই হৃদয়ের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে কিশোরগঞ্জের পারাইল এলাকা থেকে আকরামকে গ্রেপ্তার করে। 

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যে তদন্ত করা হয়েছে, সেখানে কনস্টেবল আকরামের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে তাকে কিশোরগঞ্জ থেকে আটক করে আজ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন আদালতে তোলা হয়। আদালত সোমবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।’ ওই ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি জানান।

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ২ বিদেশি জাহাজের সংঘর্ষ

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ পিএম
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে ২ বিদেশি জাহাজের সংঘর্ষ
চট্টগ্রাম বন্দর (ফাইল ছবি)

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে দুটি বিদেশি জাহাজের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে সারবাহী জাহাজের আঘাতে ডালবাহী জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টার দিকে বন্দরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই জাহাজের প্রপেলার আটকে যায়। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আটকে যাওয়া প্রপেলার মুক্ত করার পর জাহাজ দুটি নিরাপদ দূরত্বে নোঙর করেছে। 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা ২টায় লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি ফ্রেন্ডলি আইল্যান্ড’ আগে থেকেই আলফা অ্যাংকরজে অবস্থান নিয়ে মসুর ডাল খালাস করছিল। আর ড্যাপ সার বহনকারী পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি নাভিওস সেলেসটিলা’র অবস্থান ছিল কুতুবদিয়ার কাছাকাছি। দুপুরে হঠাৎ করে নাভিওস সেলেসটিলা ছুটে এসে ফ্রেন্ডলি আইল্যান্ডকে ধাক্কা দেয়। এ সময় দুটি জাহাজের প্রপেলার পরস্পরের সঙ্গে আটকে যায়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘জাহাজ দুটির প্রপেলার আটকে যাওয়ার পর উভয় জাহাজের ক্যাপ্টেনদের সহায়তায় জাহাজ দুটি মুক্ত হয়। বর্তমানে দুটি জাহাজই পৃথক স্থানে নোঙর করা আছে।’ 

জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে ২৭ হাজার ২১০ টন মসুর ডাল নিয়ে গত ১৪ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরে আসে এমভি ফ্রেন্ডলি আইল্যান্ড। সে সময় থেকে ডাল খালাস করছে জাহাজটি। আর শনিবার ৪৩ হাজার ৭৫৫ টন সার নিয়ে চট্টগ্রামে আসে সার বহনকরী পানামার পতাকাবাহী এমভি নাভিওস সেলেসটিলা জাহাজ।

‘বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম’

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম
‘বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম’
নিহত স্কুলশিক্ষক নজরুল ইসলাম ও তার লেখা চিরকুট

‘বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম’- এমন চিরকুট লিখে বরগুনার আমতলীতে নজরুল ইসলাম নামে এক স্কুলশিক্ষক আত্মহত্যা করেছেন। 

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) আমতলীর হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নজরুল ইসলাম উপজেলার উত্তর টিয়াখালী ছোবাহান বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। 

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হরিদ্রাবাড়িয়ার খালেক খানের ছেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে দেড় বছর আগে একই গ্রামের দুলাল ভূঁইয়ার মেয়ে খাজিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলে আসছে। গতকাল শুক্রবারও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে শনিবার সকালে স্ত্রী খাজিদা তার বাবার বাড়ি চলে যান। দুপুরে স্থানীয়রা নজরুলকে বাড়ির পাশে গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ সময় নজরুলের পরনে কাপড়ে পেঁচানো একটি চিরকুট পাওয়া যায়।

নজরুলের ভাই ফোরদৌস বলেন, ‘আমার ভাইকে তার স্ত্রী বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে অত্যাচার করে আসছেন। এ নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছেন।’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।’