লক্ষ্মীপুরে কলেজেপড়ুয়া ছেলেকে আটক করে নিয়ে যাওয়ায় হার্ট অ্যাটাক করে বাবা সামছুল আলম মামুন মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, আটক সাইফ মোহাম্মদ আলী লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা ছিল না।
মঙ্গলবার ভোরে সাইফকে আটকের জন্য তার বাসায় অভিযান চালায় সদর থানাপুলিশ। এ সময় তার বাবা সামছুল আলম মামুন ছেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ও ওয়ারেন্ট আছে কিনা, পুলিশের কাছে সেই বিষয়টি জানতে চান। তবে পুলিশ কোনো উত্তর না দিয়ে সাইফকে আটক করে নিয়ে যান। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে হার্ট অ্যাটাক করে ঘটনাস্থলে মারা যান সামছুল আলম মামুন।
এদিকে পুলিশের করা নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে সাইফ মোহাম্মদ আলীর জামিন আবেদন করে তার আইনজীবীরা। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমের জিম্মায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাবার জানাজায় অংশ নিতে প্যারোলে জামিন দেওয়া হয়।
সাইফ মোহাম্মদ আলীর আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ বলেন, ‘সাইফের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তাকে পুলিশের করা নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে বাসা থেকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাবা সামছুল আলম মামুন ছেলেকে না নিতে পুলিশকে অনুরোধ করে। পুলিশ সাইফকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে মামুন হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। আদালতে সাইফের জামিন আবেদন করা হলে আদালত জানাজায় অংশ নিতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্যারোলে জামিন দেন।’
সাইফ মোহাম্মদ আলীর মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন অভিযোগ করে বলেন, ‘সাইফ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। পুলিশ জোর করে সাইফকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এ সময় সাইফের বাবা আতঙ্কিত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। ছেলেকে অন্যায়ভাবে বিস্ফোরক ও নাশকতার মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ছেলের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিল মজুমদার ফারুক বলেন, ‘নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকালে শুনেছি। সাইফ ছাড়া আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিংসতা ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।’