ঢাকা ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অসহযোগের প্রথম দিনে থমথমে ময়মনসিংহ

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৩ এএম
অসহযোগের প্রথম দিনে থমথমে ময়মনসিংহ
ছবি : খবরের কাগজ

এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে ময়মনসিংহে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। নগরীজুড়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করলেও যাত্রী-চালকসহ সবাই ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

রবিবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নগরীর টাউন হল মোড়ে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন। 

এ সময় অনেকের হাতে ছিল লাঠি। একই সময়ে শহরের জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসা বড় মসজিদ চত্বরে হেফাজত ইসলামের উদ্যোগে মাদ্রাসা ছাত্রবন্ধনের ব্যানারে মাদ্রাসার শিক্ষক ও সাধারণ ছাত্ররা আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সারোয়ার হোসেন, শিক্ষক আবদুল আওয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এতে ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় বক্তব্যে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে অনুরোধ জানান তারা। সমাবেশ শেষে বড় মসজিদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে স্টেশন মোড় হয়ে আবার জামিয়া ফয়জুর রহমান মাদ্রাসা বড় মসজিদে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে শেষ করা হয়।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে নগরীর চরপাড়া মোড় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জামিয়া ইসলামিয়াসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সরকারের পদত‍্যাগ দাবি করে স্লোগান দেয়। 

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাদ্রাসাশিক্ষার্থী আবু সাঈদ, রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ। তারা বলেন, ‘ন‍্যায‍্য দাবির আন্দোলনে আমাদের ছাত্র ভাইদের বুকে গুলি চালিয়েছে সরকার। তাদের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো অধিকার নেই। আমার টাকায় কেনা বুলেট, আমার ভাইয়ের বুকে বিদ্ধ হবে। এটা মেনে নেওয়া হবে না।’

বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীরা ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজির গেট ভাঙচুর করেন। এ সময় কাচারিঘাট জিরো পয়েন্ট মোড়ে একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ডিজিটাল সেন্টার। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানান বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। 

সারা দিন শহর আন্দোলনকারীদের দখলে থাকলেও বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিলে মিছিল বের করে। সবার হাতে হাতে ছিল লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র। তখন এক দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সড়কে থাকা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দেখা যায়নি।

এর কিছুক্ষণ আগে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল আইনজীবী সমিতির সামনের সড়কে মিছিল বের করে।

অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে নগরীর কোনো সড়কেই পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস‍্যদের উপস্থিতি দেখা যায়নি। সর্বত্রই বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা।

কক্সবাজার উপকূলে ভেসে এলো আরও ১ মরদেহ

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১২ এএম
কক্সবাজার উপকূলে ভেসে এলো আরও ১ মরদেহ
সমুদ্রে ভেসে এলো আরও এক মরদেহ। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার সমুদ্রপাড়ে ভেসে এসেছে আরও একটি মরদেহ। ধারণা করা হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যাওয়া মাছ ধরার ট্রলার নিখোঁজের ঘটনায় তার মরদেহ ভেসে এসেছে। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে কক্সবাজার শহরের সমিতিপাড়া ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কুতুবদিয়ায় মরদেহটি দেখা যায়।

বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন সি সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র লাইফগার্ড মোহাম্মদ ওসমান। 
তিনি বলেন, ভোরে আমাদের লাইফগার্ড রশিদ আহমদ জানিয়েছেন সমিতিপাড়ায় মরদেহ ভেসে এসেছে। এখনো সমুদ্রপাড়ে পড়ে আছে। আমি নিজেও গিয়ে নিশ্চিত হয়েছি।

লাইফগার্ড রশিদ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে খবরের কাগজকে বলেন, ‘একটি মরদেহ ভেসে আসার খবর পেয়ে আমি সমিতিপাড়ার পশ্চিম কুতুবদিয়া পাড়ার ওখানে গিয়েছিলাম। এগুলো সাগরে ট্রলার ডুবির ঘটনার মরদেহ হবে।’ 

তবে তাৎক্ষণিক তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। 

এদিকে গতকাল ইনানী সৈকতে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলার নিখোঁজের ঘটনায় এক জেলেসহ দুইজনের মরদেহ ভেসে এসেছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ইনানী মোহাম্মদ শফির বিল সৈকত এলাকায় মরদেহ দুটি পাওয়া যায়।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/ইসরাত চৈতী/

চুনারুঘাটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ নিহত ২

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ এএম
চুনারুঘাটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ নিহত ২
নিহত হাফিজ সরকার ও মোস্তাফিজুর রহমান

হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।

শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের রামগঙ্গা ব্রিজ এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুদিয়াখলা গ্রামের মৌলদ মিয়ার ছেলে ও শায়েস্তাগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক হাফিজ সরকার (২৭) এবং একই উপজেলার তালুগড়াই গ্রামের হাজী কিম্মত আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (২৬)।

পুলিশ জানায়, হাফিজ ও মোস্তাফিজুর মোটরসাইকেলে ওই এলাকায় ঘুরতে যান। রাত ১০টার দিকে তারা চুনারুঘাটের দিকে ফিরছিলেন। রামগঙ্গা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে তাদের মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এ সময় পেছন থেকে আসা একটি  ট্রাক তাদেরকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় খবরের কাগজকে জানান, খবর পেয়ে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

কাজল সরকার/অমিয়/

লিংক রোড়ে পাহাড় কেটে রেস্তোরাঁ, গুড়িয়ে দিল প্রশাসন

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৯ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
লিংক রোড়ে পাহাড় কেটে রেস্তোরাঁ, গুড়িয়ে দিল প্রশাসন
অভিযান পরিচালনা করে রেস্তোরাঁটি গুড়িয়ে দেওয়া হয়। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডে পাহাড় কেটে নির্মাণ করা কাঁচালংকা রেস্তোরাঁসহ কয়েকটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত মো. আকতার হোসেনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে পাহাড় কাটার সরঞ্জাম। 

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে রেস্তোরাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে নেতৃত্ব দেন কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকী। অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন। 

সহকারী কমিশনার আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, বায়েজিদ লিংক রোডে পাহাড় কেটে ও দখল করে গড়ে তোলা একটি রেস্তোরাঁ পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পাহাড় কেটে রেস্টুরেন্ট নির্মাণে জড়িত মো. আকতার নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দোষ স্বীকার করেননি। এ জন্য নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘যে পাহাড়ে রেস্তোরাঁ করা হয়েছিল সেটির ওপরে আরও তিনটি টিনের ঘর তৈরি করা হয়। সেগুলোও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘরগুলো মনির নামের এক ব্যক্তি নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছিল। তবে আমরা সেখানে অভিযুক্ত মনিরকে পাইনি।’ 

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা অভিযুক্ত আকতার হোসেন ও মনির হোসেনের বিরুদ্ধে আকবরশাহ থানায় পরিবেশ আইনে মামলা করেছি। এ ছাড়াও এই পাহাড়ের বিভিন্ন অংশে নির্মিত বৌদ্ধমন্দির ও অন্যান্য স্থাপনার মালিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পাহাড় কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।’ 

এর আগে শনিবার ভোরে ও শুক্রবার রাতে টানা বৃষ্টির কারণে বায়েজিদ লিংক রোডে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। এ সময় লিংক রোডের এক অংশে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়। পরে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ থেকে মাটি সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। 

ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

হবিগঞ্জের বানিয়াচং খোয়াইর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৬ এএম
খোয়াইর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম
খোয়াই নদীর ভাঙনের কারণে মানুষের চলার পথ ছোট হয়ে গেছে। হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার রাধানগর গ্রাম থেকে তোলা। খবরের কাগজ

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার রাধানগর গ্রামের দরিদ্র কৃষক ছুয়েব আলী। খোয়াই নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে তার একমাত্র বসতভিটা। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। ছুয়েব আলী বলেন, ‘এক মাস আগে খোয়াই নদীতে গোলা (জোয়ার) আসে। পানি নেমে যাওয়ার পর নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এ সময় আমার ঘরবাড়ি সব ভেঙে পড়ে। এখন আমি বউ-বাচ্চা নিয়ে গ্রামের আরেকজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘অন্যের বাড়িতে কতদিন থাকা যায়? এখন কী করব, কোথায় যাব, কিছুই মাথায় ধরছে না। নতুন করে আরেকটা বাড়ি বান্ধার (বানানোর) তৌফিক (ক্ষমতা) আমার নাই।’

ছুয়েব আলীর মতো এই গ্রামের অনেক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। আগ্রাসী খোয়াই কেড়ে নিয়েছে অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই। সহায় সম্বল হারিয়ে এসব পরিবার এখন দিশাহারা। মূলত কয়েক বছর ধরেই বর্ষা মৌসুমে রাধানগর গ্রামে খোয়াই নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। তবে সময় যত যাচ্ছে ভাঙনের তীব্রতা যেন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভারতের আসাম রাজ্যের আঠারোমুড়া পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে খোয়াই নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্ত দিয়ে। পরে জেলার পাঁচটি উপজেলার ওপর দিয়ে ১৬৬ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় গিয়ে পড়েছে।

প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে উজানের ঢল নেমে এলেই ভয়ংকর রূপ ধারণ করে খোয়াই। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় খোয়াই যেন আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। সর্বশেষ গত আগস্টে উজানের ঢলে খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৭৭ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে যায়; যা কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর মাত্র আধা মিটার পানি বাড়লেই তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল হবিগঞ্জ শহর।

তবে পানি নেমে যাওয়ার পরপর নদীর বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এখন পর্যন্ত নদীর অন্তত ৫০টির বেশি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে চুনারুঘাটের রাজার বাজার, শায়েস্তাগঞ্জের আলাপুর, সদর উপজেলার তেঘরিয়া এবং বানিয়াচং উপজেলার রাধানগরসহ ১০ থেকে ১২টি স্থানের ভাঙন খুবই তীব্র। এসব ভাঙনে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট। এমনকি কিছু কিছু অংশে খোয়াই নদীর বাঁধেও তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে।

রাধানগর গ্রামের আলেয়া বানু বলেন, ‘নদীভাঙনে আমার ঘরবাড়িসহ সবকিছু শেষ। এখন সামান্য একটু ভিটে আছে। এখানেই থাকছি। যে অবস্থা, এ বছরই এই জায়গাটাও ভেঙে পড়বে। তখন কই যামু, কি করমু সেটাই চিন্তা করি।’ তিনি বলেন, ‘নদীভাঙন ঠেকাতে সরকার যদি আমাদের এখানে কিছু কাজ করত, তাহলে আমরা অসহায় মানুষগুলো বাঁচতাম।’

তেঘরিয়া এলাকায় সুজন মিয়া বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের এলাকায় নদী ভাঙে। তবে এ বছর একটু বেশি ভাঙছে। কিছুদিন আগে যে গোলা আইছিল (এসেছিল), তখন আমরা সবাই খুব আতঙ্কে আছলাম (ছিলাম)। আমাদের এখানে যদি নদীর বাঁধ পুরোপুরি ভাঙে তাহলে পুরো গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাবে। এ কারণে সবাই জিনিসপত্র নিয়ে বাঁধের ওপরে এসে রাত কাটিয়েছি।’

একই এলাকার আলতাফ হোসেন বলেন, ‘প্রতিনিয়ত নদী শুধু ভাঙছেই। এভাবে ভাঙতে থাকলে একসময় সবকিছু শেষ হয়ে যাবে। এখন ফসলি জমি ভাঙছে, রাস্তা ভাঙছে। কিছুদিন পর ঘরবাড়ি ভাঙবে। এখনই যদি সরকার ভাঙন ঠেকাতে কোনো কাজ না করে, তাহলে আমরা নদীপাড়ের মানুষ শেষ হয়ে যাব।’

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে রাধানগর গ্রামে। তবে এই গ্রামসহ যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে আমরা তার তালিকা তৈরি করছি। সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে আমরা বাজেট পাই। এ বছর বাজেট পেলে এসব এলাকায় কাজ করা সম্ভব হবে।’

সম্প্রতি খোয়াই নদী পরিদর্শনে আসেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। এ সময় ফারুক ই আজম বলেন, ‘আমি স্থানীয় প্রশাসনকে বলেছি, তারা যেন এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটা আমাদের জানায়। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’

কুমিল্লার ১১ থানায় নতুন ওসি, দুইজনকে পুলিশলাইন্সে সংযুক্ত

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪১ এএম
কুমিল্লার ১১ থানায় নতুন ওসি, দুইজনকে পুলিশলাইন্সে সংযুক্ত
কুমিল্লার ১১ থানায় নতুন ওসি

কুমিল্লার নতুন পুলিশ সুপার দায়িত্ব নেওয়ার পর জেলা পুলিশে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় জেলার ১১টি থানায় নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর দুই ওসিকে পুলিশলাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

গতকাল শনিবার কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসফিকুজ্জামান আক্তার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানা গেছে। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ডিআইও-১ সৈয়দ ফজলে রাব্বী।

জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট কুমিল্লার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব নেন মো. আসফিকুজ্জামান আক্তার। দায়িত্বগ্রহণের দুই সপ্তাহ পর জেলা পুলিশের বিভিন্ন দপ্তরে ব্যাপক রদবদল আনেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে জেলার বিভিন্ন থানা ও গুরুত্বপূর্ণ পদে ১৫ জন কর্মকর্তাকে বদলি বা পদায়ন করেন। 

এর মধ্যে ১১ জন কর্মকর্তাকে ১১টি থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে, একজনকে জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদে, একজনকে সদর কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক ও দুইজনকে কুমিল্লা জেলা লাইনওআর-এ (পুলিশলাইন্স) সংযুক্ত করে অফিস আদেশ দেওয়া হয়। 

আদেশে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তারা বদলি করা স্থানে দায়িত্ব পালন করবেন এবং এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। 

জেলা পুলিশ সুপারের অফিস আদেশসূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. মাহবুবুল হককে মুরাদনগর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে বদলি করা হয়েছে। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আলমগীর ভূঞাকে লাইনওআর কুমিল্লায় সংযুক্ত করা হয়েছে। মুরাদনগর থানার ওসি প্রভাষচন্দ্র ধরকে সদর কোর্ট কুমিল্লায় পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) পদে বদলি করা হয়েছে। তিতাস থানার ওসি কাজী নাজমুল হককে বরুড়া থানায় ওসি পদে বদলি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, কুমিল্লা লাইনওআর পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সাজ্জাদ করিম খানকে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি পদে বদলি করা হয়েছে। কুমিল্লা লাইনওআর থেকে পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. মহিনুল ইসলামকে কোতোয়ালি থানায় ওসি এবং চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মো. নাজমুল হুদাকে চান্দিনা থানার ওসি পদে বদলি করা হয়েছে।

কুমিল্লা লাইনওআর থেকে পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) এ টি এম আক্তার উজ্জামানকে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি পদে বদলি করা হয়েছে। কুমিল্লা লাইনওআর থেকে পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) জুনায়েত চৌধুরীকে দাউদকান্দি থানায় অফিসার ইনচার্জ পদে বদলি করা হয়েছে। কুমিল্লা লাইনওআর থেকে পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আজিজুল হককে বুড়িচং থানায় ওসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কুমিল্লা লাইনওআর থেকে পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামকে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় বদলি করা হয়েছে। মো. শাহ আলমকে কুমিল্লা লাইনওআর থেকে পুলিশ পরির্দশক (নিরস্ত্র) লালমাই থানায় ওসি পদে বদলি করা হয়েছে। বরুড়া থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দীন চৌধুরীকে কুমিল্লা লাইনওআর-এ সংযুক্ত করা হয়েছে। হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীনকে মেঘনা থানায় বদলি করা হয়েছে। 

জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আজিজুল ইসলামকে তিতাস থানার ওসি পদে বদলি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও জেলা পুলিশ সুপার মো. আসফিকুজ্জামান আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জহির শান্ত/ইসরাত চৈতী/অমিয়/