বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনে রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে সবুজ নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে নগরীর স্বচ্ছ টাওয়ার মোড়ে ত্রিমুখী এ সংঘর্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
নিহত সবুজ বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নগরীর রাণীনগর এলাকায় বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল থেকে নগরীর তালাইমারী সংলগ্ন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সামনে জড়ো হতে থাকেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর স্বচ্ছ টাওয়ার মোড়ে আসেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এদিকে, নগরীর আলুপট্টি মোড়ে সশস্ত্র অবস্থায় অপেক্ষা করছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি সাগরপাড়া মোড়ে পৌঁছালে তাঁরা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেন। মিছিল থেকে ককটেল ছুঁড়ে মারা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কিছুটা পিছু হটেন। এরপর পুলিশ এলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণ করেন। এ সময় বেশ কিছু ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। মুহুর্মুহু গুলি ছুঁড়ে আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পুলিশও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবুজ পালিয়ে শাহ মখদুম কলেজের পাশে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওই বাড়িতে সবুজকে কুপিয়ে হত্যা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৪০ জনের মধ্যে ৩৭ জন এসেছেন রাজশাহী মহানগর থেকে। আর তিনজন এসেছেন জেলার গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে। ভর্তি হওয়া ৪০ জনের মধ্যে ৩০ জনই গুলিবিদ্ধ।
রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর নগরীতে সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যা জানাতে পারেননি।
এনায়েত করিম/এমএ/