যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল ‘জাবির ইন্টারন্যাশনাল’সহ অর্ধশতাধিক স্থাপনা, আ.লীগ নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। হোটেলে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ৮ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিক নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। এ ছাড়া অন্যান্য ঘটনায় আরও অন্তত ১৫০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে জাবির হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে অনেকেই হোটেলে আটকা পড়েন। হেলিকপ্টারে করে উদ্ধারকারী দল ১৪ তলা বিশিষ্ট হোটেলের ছাদ থেকে কয়েকজনকে উদ্ধার করে। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি দল রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যশোর শহরে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুদ্ধরা জাবির হোটেলে ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় হোটেলের ১২, ১৩ ও ১৪ তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে যান। এ সময় হোটেলে আটকা পড়া কয়েকজন ১৪ তলার বারান্দায় গিয়ে উদ্ধারের জন্যে হাত নেড়ে আকুতি জানান। উদ্ধারকারী একটি হেলিকপ্টার হোটেলের ছাদে ল্যান্ড করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় আটকাপড়া এক ব্যক্তি ছাদে গিয়ে দাঁড়ালে হেলিকপ্টার তাকে উদ্ধার করে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাবির হোটেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পাঁচজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে আনে ফায়ার সার্ভিসের টিম। এ ছাড়া তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হোটেলে অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২০ জনের মতো। আহতদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক।’
হোটেলে কতজন আটকা পড়েছেন এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানার জন্যে হোটেলের মালিক এমপি শাহীন চাকলাদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে শাহীন চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও তার শহরের কাজী পাড়া কাঠালতলাস্থ বাসভবন, কাজীপাড়াতে যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসা, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, শেখ রাসেলের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
তুহিন/সালমান/