ঢাকা ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

আখাউড়া চেকপোস্টে কড়াকড়ি

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
আখাউড়া চেকপোস্টে কড়াকড়ি
ছবি : খবরের কাগজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশিদের ভারত যেতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। ভিসা থাকলেও নিষেধাজ্ঞা থাকায় যেতে পারছেন না তারা। আবার অনেক পাসপোর্টধারী যাত্রীকে অনেক বেশি যাচাই-বাছাইয়ের পর যেতে দেওয়া হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে আখাউড়া দিয়ে পরিবার নিয়ে ভারতে যেতে চান জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। তবে বিকেল নাগাদ তিনি যেতে না পেরে ফিরে যান। দেশত্যাগে ইমিগ্রেশন থেকে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। 

এদিকে ইমিগ্রেশন থেকে পাওয়া এক তথ্যে জানা যায়, মঙ্গলবার এই ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে আসেন ১৪৯ জন, ভারতে যান ১৭৫ জন। ভারত যাওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই ওই দেশের নাগরিক।

বাংলাদেশি যারা যেতে চেয়েছেন, তাদেরকে অনেক যাচাই-বাছাই করে যেতে দেওয়া হয়। হিসাব অনুযায়ী ৪ আগস্ট ১৯১ জন ও ৫ আগস্ট ১০৪ জন ভারত থেকে আসেন। এ ছাড়া ৪ আগস্ট ১৯১ জন ও ৫ আগস্ট ২০৫ জন ভারতে যান। 

আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা মো. খায়রুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ওনি ফেরত গেছেন। ওনার মতো যাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তাদেরকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদের যাচাই-বাছাই করে যেতে দেওয়া হচ্ছে।’

যশোরের তিন মহাসড়ক বেহাল

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৯ এএম
যশোরের তিন মহাসড়ক বেহাল
যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাঠি এলাকা যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খবরের কাগজ

যশোরের তিনটি মহাসড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মহাসড়কগুলোর প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ছোট যানবাহনগুলো দুর্ঘটনার সম্মুখীন বেশি হচ্ছে। এমনকি ঘটছে প্রাণহানিরও ঘটনা। আর বড় যানবাহনের মালিকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। অনেক বাস ও ট্রাক সড়কের গর্তের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যাচ্ছে। এতে মৃত্যুসহ অনেকে পঙ্গু হচ্ছেন। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসছে না। কাজের মান খারাপ ও অতিবৃষ্টিতে সড়কগুলো আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, ভাঙাচোরা সড়কে জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে পুরো পিচই (বিটুমিন) উঠে গেছে। ফলে বিটুমিন দিয়ে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে যশোর থেকে উত্তরবঙ্গের সড়কপথে যাতায়াতের একমাত্র পথ যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাঠি বাজার অংশে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

যশোরের সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর-খুলনা মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের নাভারণ থেকে বগআঁচড়া পর্যন্ত সাত কিলোমিটার, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কালীগঞ্জ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া যশোর-ঢাকা মহাসড়কের মনিহার অংশে এক কিলোমিটার সড়ক বেহাল রূপ নিয়েছে। তবে ভাঙাচোরা সড়কের বিস্তার আরও বেশি। এসব সড়কের মধ্যে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। 

যশোর সওজ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-খুলনা ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কে সৃষ্ট গর্তগুলো ইট দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। যা বৃষ্টি হলেই বড় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ইটের আদলা ও খোয়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে গোটা সড়কে। খানাখন্দ ও ইটের আদলা, খোয়াভর্তি এসব সড়কে চলাচল করতে গিয়ে যাত্রীরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া সড়কগুলো চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনেরও যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। 

যশোর সদরের চুড়ামনকাঠি বাজারের মুদি দোকানি শাহাবুদ্দিন আহমেদ শিহাব বলেন, ‘গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের চুড়ামনকাঠি বাজার অংশের মহাসড়কের বেহাল দশা। এখানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছিল। বিভিন্ন সময় খোয়া দিয়ে মেরামত করে গেলেও তা টেকসই হয়নি। সর্বশেষ কিছুদিন আগে পুরো বাজার অংশের সড়কটিতে ইটের সলিং করে রেখে চলে গেছে। এখন প্রতিনিয়ত এখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।’

এ সড়কে নিয়মিত থ্রি-হুইলার চালান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে খানাখন্দ আর ভাঙা ইটের টুকরোর কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে। এতে গাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি যাত্রীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়কে ভাঙা ইটের অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যানবাহনগুলো বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়।’

বেসরকারি চাকরিজীবী দেবাশীষ বসু রানা বলেন, ‘যশোর-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে নিয়মিত অফিস করতে হয়। প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিগত দিনে সড়ক সংস্কারের নামে টেন্ডারবাজি এবং দুর্নীতি করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, শুধু এ সড়ক নয়, আমাকে যশোর-সাতক্ষীরা, যশোর-নড়াইল-ঢাকা সড়কসহ জেলার বিভিন্ন মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও তা মেরামত ও স্থায়ী সংস্কার করতে সড়ক বিভাগ বারবার ব্যর্থ হয়েছে।’

যশোরের শার্শা উপজেলার সাইদুজ্জামান জনি নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, ‘যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের অবস্থা বেহাল। চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। তার পরও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। একবার মোটরসাইকেল পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। দুর্ঘটনা অহরহ ঘটছে।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, চলতি বছর অতিবৃষ্টিতে যশোরের বিভিন্ন মহাসড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে যশোর-খুলনা, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেশকিছু অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো আমরা জরুরি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে থাকি। 

এ বছর যশোর-খুলনা মহাসড়কে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার ঢালাই কাজের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মহাসড়ক জরুরি সংস্কারের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে সাত কোটি টাকার চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জরুরি সংস্কারের ক্ষেত্রে মহাসড়কগুলোতে ইটের কাজ করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে বিটুমেনের কাজ করা যায় না। জনগণের দুর্ভোগ কমাতে আমরা সড়কগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ইট দিয়ে প্রাথমিক সংস্কারকাজ করে থাকি।’ 

কটিয়াদীতে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
কটিয়াদীতে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর সদরে পুরোনো বাজারে বসছে ঐতিহাসিক ঢাকের হাট। ছবি : খবরের কাগজ

প্রতিবছরের মতো এবারও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বসছে ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক ঢাকের হাট। দিনভর এই হাটে ঢাকিরা বাদ্যযন্ত্র বাজান। বিভিন্ন জেলা থেকে পূজারিরা ছুটে আসেন এখান থেকে ঢাকিদের বায়না করতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৩০০ ঢাকি হাটে এসেছেন। তাদের থাকার জন্য বাজারে একটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। তবে শৌচাগারের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বাজার শুরুর পর থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে টহল দিচ্ছে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। 

জনশ্রুতি রয়েছে, ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় রাজা নবরঙ্গ রায় তার প্রসাদে সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজার আয়োজন করতেন। কটিয়াদী উপজেলার চারিপাড়া গ্রামে ছিল তার অট্টলিকা। 

প্রাসাদে আয়োজিত দুর্গাপূজার জন্য দেশসেরা ঢাকিদের সন্ধান করতে বিভিন্ন জায়গায় তিনি ডাকযোগে চিঠিপত্র পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানাতেন। রাজার আমন্ত্রণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঢাকিরা জড়ো হতেন পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে। রাজা সশরীরে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের থেকে বাছাই করে ঢাকিদের নিয়ে যেতেন প্রাসাদে এবং উপযুক্ত সম্মানী দিতেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাটটি স্থানান্তরিত হয়ে বর্তমানে সেটি কটিয়াদী পৌর সদরের পুরাতন বাজারে বসছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অন্য ধর্মের মানুষের কাছেও এই হাটটি ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। দূর-দূরান্ত থেকে বাদকদের বাজনা শুনতে উন্মুখ হয়ে থাকেন স্থানীয়রা।

হাটে আসা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল মনি দাস বলেন, ‘ঠাকুরদা গোরা চাঁদমনি দাসের আমল থেকে ঢাকঢোল বাজিয়ে আসছি। সঙ্গে আমার ছেলেরাও হাটে এসেছে। ভালো বায়না পেলে কারো বাড়িতে যাব।’

মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার বলমন্তচরের বাসিন্দা সুশীল মনি দাস বলেন, ‘আমি টানা ১২ বছর ধরে এই হাটে ঢাকঢোল নিয়ে আসি। ৬০ বছর বয়স হয়েছে, তবুও ঢাক না বাজালে ভালো লাগে না।’ 

পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনি কুমার সাহা বলেন, ‘কটিয়াদীতে প্রতিবছর পূজার তিন দিন আগে এখানে ঢাকঢোলের হাট বসে। হাটটি ইতিহাসের দিক থেকে অনেক পুরোনো। আমরা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঢাকিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিই।’ কটিয়াদী পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবুজিৎ সাহা বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পূজারিরা এসে ঢাকিদের বায়না করে নিয়ে যান।’

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ধ্রুবরঞ্জন দাস খবরের কাগজকে বলেন, ‘হাটটিতে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শৌচাগারের প্রয়োজন। একটি বিশ্রামাগার তাদের জন্য তৈরি করা হলেও সেটির কাজ অসমাপ্ত থেকে গেছে। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে চাই, এখানে আগত ঢাকিদের জন্য প্রশাসন থেকে সার্বিক সুবিধা দেওয়া হোক।’ 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘হাটে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সেজন্য ঢাক বাজার কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখা হচ্ছে। আশা করছি, প্রতিবারের মতো এবারও সুশৃঙ্খলভাবে হাটের সব কার্যক্রম শেষ হবে।’

ঢাক বাজার সমিতির সভাপতি শীতল সাহা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা এখানে পূজারিদের ঠিকানা ও ঢাকিদের ঠিকানা লিখে রাখি। কোনো পক্ষের সঙ্গে কোনো সমস্যা বা ঝামেলার সৃষ্টি হলে সেই বিষয়গুলো আমরা দেখি। মূলত একেকটি দল ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকায় বায়না হয়। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ১২ জন অথবা ১৫ জন থাকে।’

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতি অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধা সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলার বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। তারা শহরের ডিবি রোড গানাসাস মার্কেটের সামনে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা মনজুর আলম মিঠু, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি প্রণব চৌধুরী খোকন, বাসদ জেলা আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী, সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের জেলা সভাপতি মোস্তফা মনিরুজ্জামান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সম্পাদক রেবতী বর্মণ, সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক নওশাদুজ্জামান নওশাদ, জাতীয় কৃষক সমিতির জেলা সভাপতি আশরাফ আলী, বাসদ জেলা সদস্যসচিব সুকুমার মোদক, সিপিবির জেলা সদস্য এমদাদুল হক মিলন, বাসদ মার্কসবাদীর জেলা সদস্য রাহেলা সিদ্দিকা, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জেলা সংগঠক কনক রায়, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের জেলা সদস্য জুয়েল মিয়া, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা সদস্য সবুজ মিয়া, তাপস রায় প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভূমি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদনে অতিরিক্ত টাকা আদায়, জাল দলিল, টাকার বিনিময়ে ভলিয়ম ও বালাম বই ছিঁড়ে ফেলা, একই পে-অর্ডার দাখিল করে একাধিক দলিল সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবিলম্বে অনিয়ম-দুর্নীতি বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। 

তারা ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতাদের ক্ষতিপূরণ এবং জাল দলিল হওয়া জমির আসল দলিল ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। সমিতির নামে অতীতে উত্তোলন করা সব টাকা ফিরিয়ে দেওয়াসহ অবৈধভাবে টাকা আদায়কারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এ সময় রেজিস্ট্রেশন বাবদ সরকার নির্ধারিত ফি অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করাসহ অতিরিক্ত টাকা আদায়কারীদের শাস্তির দাবি করা হয়।

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পাটকেলঘাটার অর্ধশত গ্রামের মানুষ দিশেহারা

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
পাটকেলঘাটার অর্ধশত গ্রামের মানুষ দিশেহারা
নিজ বসতবাড়ির ধ্বংসস্তূপের ওপরে দাঁড়িয়ে প্রতিবন্ধী হাফিজুল-শেফালী দম্পতির একমাত্র সন্তান সাব্বির সরদার। সাব্বির নিজেও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার নগরঘাটা থেকে তোলা। খবরের কাগজ

হাফিজুল হোসেন ও শেফালী খাতুন দম্পতি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানা এলাকার নগরঘাটায় বসবাস করেন। দুই শতক জমির ওপর নির্মিত মাটির একটি ঘরই ছিল তাদের শেষ সম্বল। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিপাত ও বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তাদের এলাকা প্লাবিত হয়। এতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর এই দম্পতিকে আশ্রয়স্থল হারাতে হয়।

স্বামী-সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভাতার টাকায় কোনো রকমে সংসার চলত শেফালীর। একই সঙ্গে ইট ভাটায় কাজ করে শ্রমে-ঘামে মাটির ঘরে তৈরি করেন প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। তবে এর কোনটাই রক্ষা করতে পারেননি শেফালী। এক কাপড়ে স্বামী, সন্তান নিয়ে তাকে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতে হয়।

সরেজমিনে হাফিজুল-শেফালীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে ধ্বংসস্তূপের ক্ষত। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় পানি নেমে গেলেও এখনো প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রিত অবস্থায় দিন পার করছেন তারা। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে মেলেনি কোনো সহায়তা। টাকা না থাকায় নতুন করে ঘর বানাতে পারছেন না। এতে ঘরবাড়ি হারিয়ে এই দম্পতি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

শেফালী খাতুন জানান, একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে বেতনার বাঁধ ভেঙে তাদের এলাকা প্লাবিত হয়। এতে প্রচণ্ড পানির তোড়ে ঘটনার দিন দুপুরে বসতবাড়ি ভেঙে যায়। সে দিন তারা ঘর থেকে যে কাপড় নিয়ে বের হয়েছিলেন, সেগুলোই এখন একমাত্র সম্বল। কোনো রকমে স্বামী-সন্তান নিয়ে প্রাণে বাঁচলেও রক্ষা করা সম্ভব হয়নি গৃহস্থালির আসবাবপত্র।

ক্ষোভ প্রকাশ করে শেফালী বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তার হাত বাড়ায়নি। বাঁচলাম কী মরলাম কেউ খোঁজ রাখেনি। গত কয়েক দিন ধরে মানুষের দেওয়া খাবার খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি। স্বামী-সন্তানের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আর নিজের পরিশ্রমের অর্থ দিয়েও যেখানে পেটের খাবার জোগানো দায়, সেখানে সহায়তা ছাড়া নতুন করে ঘর বানানো আমার পক্ষে সম্ভব না।

শুধু হাফিজুল-শেফালি দম্পতির বসতবাড়ি নয়। একদিকে বৃষ্টি অপরদিকে বেতনার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার ফলে নগরঘাটা এলাকাসহ ৫০টি গ্রামের অধিকাংশ মাটির ঘরের একই দশা। বেতনা নদীর নিকটবর্তী হওয়ায় নগরঘাটা এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা বেশি। এখানকার মাটির ঘর বলতে শুধু ধ্বংসস্তূপের চিহ্ন। ঘরবাড়ি, গাছপালা, শৌচাগার, হাঁস-মুরগির খোয়াড় সব ভেঙে পড়ে আছে। ঘর ভেঙে মিশে গেছে মাটির সঙ্গে।

এমনই একজন নগরঘাটা এলাকার ভ্যানচালক আব্দুর রহমান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বসতবাড়ি হারানোর পর থেকে গোয়ালঘরে বসবাস করতে হচ্ছে তাকে। আব্দুর রহমান বলেন, ঘর বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পর কিছুদিন অন্যের জমিতে থাকতে হয়েছে। পরে প্রতিবেশীদের নানান সমস্যা হওয়ায় সেখানে আর থাকা হয়নি। নতুন করে ঘর নির্মাণ কিংবা সংস্কার করার অর্থ আমার ছিল না। এ জন্য উপায়ন্তর না পেয়ে ভ্যানের ব্যাটারি বিক্রি করে গোয়ালঘরে থাকার পরিবেশ তৈরি করি। এখন স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে থাকতে পারলেও অনাহারে দিন কাটছে। তার ওপর ভ্যানের ব্যাটারি বিক্রি করায় আয়ের উৎসও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

একই এলাকার নাসিরউদ্দিন বলেন, এলাকার সবার মতো তার মাটির ঘরটিও ভেঙে গেছে। বর্তমানে অন্যের আশ্রয়ে রয়েছেন। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কোনো সহায়তা না পাওয়াতে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন তিনি।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাই তার বক্তব্য জানা যায়নি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভারী বর্ষণের কারণে ১৭ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। চার দিন পর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেন। তবে ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সংস্কার করা বাঁধ আবারও ভেঙে যায়। পরে ২৯ সেপ্টেম্বর বাঁধটি মেরামত করা সম্ভব হলেও ততক্ষণে বেতনার পানিতে প্লাবিত হয় কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম। এ সময় পানির তোড়ে পড়ে অধিকাংশ মাটির ঘর ভেঙে মাটিতে মিশে যায়।

রাজবাড়ীতে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৪ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৬ এএম
রাজবাড়ীতে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর
সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। ছবি : খবরের কাগজ

রাজবাড়ী শহরের বাস মালিক সমিতির পাশে অবস্থিত সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বেলা ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে জানান মন্ডপ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। ওই সময় মন্দিরে কোনো লোক ছিল না।

পুলিশ ও মন্দির কমিটির সাথে কথা বলে জানা যায়, অস্থায়ী মন্ডপ তৈরি করে রাজবাড়ী-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মন্দিরের পেছনে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়। রাতে মন্দিরে পাহারার ব্যবস্থা ছিল। সকালে পাহারাদার চলে যায়। বেলা ১১টার দিকে ডেকোরেটরের লোকজন মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগানো ও সাজসজ্জার কাজ করতে আসেন। এ সময় মন্দিরের সামনে থাকা কাপড় সরালে প্রতিমা ভাঙার বিষয়টি চোখে পড়ে।

মন্ডপে থাকা দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মীর চোখ, নাক, মুখ ভেঙে ফেলেছে। এছাড়া কার্তিক ও গনেশের ঘার থেকে ভাঙা দেখা গেছে।

ডেকোরেটরের শ্রমিক বিষয়টি মন্ডপ কমিটিকে জানালে তারা প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। সন্ধার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয় নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। অনেকেই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করে দোষীদের বিচার চান। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত হন।

অনেক বছর ধরে রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির আয়োজনে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে সামনে মন্ডপ করে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। এ বছর বাস মালিক সমিতির আয়োজনে ওই পূজা হচ্ছে না। এ কারনে স্থানীয়দের আয়োজনে সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন মন্ডপে এ পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

সজ্জনকান্দা সর্বজনীন দু্র্গা মন্ডপের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাধন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলেনি।

তবে এই পুজা মন্ডপের উদ্যোক্তা কুঞ্জন সরকার জানান, কারা ঘটনা ঘটেয়েছে বিষয়টি আমরা জানি না। এজন্য কারও প্রতি আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আর এই কারনেই আমরা ঘটনা কাউকে জানাইনি। রাতের মধ্যেই প্রতিমা আমরা ঠিক করে ফেলব। এজন্য প্রতিমাশিল্পীদেরও নিয়ে এসেছি।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছা. শামীমা পারভীন জানান, ধারণা করা হচ্ছে  প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘটেছে। বিষয়টি মন্দির কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়নি। আমাদের সোর্সের মাধ্যমে জেনে দ্রুত মন্দিরে এসেছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আমরা শহরের প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু এই মন্দিরে আজকে ঘটনা ঘটার পর সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুমন বিশ্বাস/অমিয়/