ঢাকা ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে ভাঙন আতঙ্কে কয়েক হাজার মানুষ

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৮ পিএম
লক্ষ্মীপুরে ভাঙন আতঙ্কে কয়েক হাজার মানুষ
নদীভাঙনের শিকার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরকাছিয়া এলাকা। ছবি: খবরের কাগজ

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের মেঘনা নদীর উপকূলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার তিন ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী শতাধিক পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

সরেজমিন দেখা গেছে, ভাঙন এতই তীব্র যে নদীপাড়ের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সুযোগও পাচ্ছে না। মেঘনার পানি উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী এলাকার মিয়ারহাট (রাহুল ঘাট) পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় ইউনিয়নের কাঠমা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া, মোল্লারহাট, পানির ঘাট, চরইন্দ্ররিয়া, চরঘাসিয়া ও জালিয়ার চর গ্রামের দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি এবং আলতাফ মাস্টার ঘাট এলাকা মেঘনায় বিলীন হয় গেছে। এ কারণে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

ভাঙনের কারণে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ‍হুমকির মুখে পড়েছে। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, শতাধিক বাড়িঘর ও শত শত হেক্টর ফসলি জমি যেকোনো সময় মেঘনায় বিলীন হয়ে যেতে পারে। ওই এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি-জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

চরকাছিয়া গ্রামের সরদার মাঝি ও মফিজ জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও মেঘনায় পানি বাড়তে থাকে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। পানি কমলে পাড় জেগে ওঠে। ওই সময় নদীভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের মিয়ারহাট, রাহুল ঘাট, পানির ঘাট, হাজিমারা ও চরকাছিয়া গ্রামে মেঘনার ভাঙন বেড়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’ 

উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষ খেটে খাওয়া। তারা ত্রাণ বা অন্য কোনো সাহায্য চান না। তারা নদীভাঙন রোধে একটি স্থায়ী সমাধান চান। এতে নিজ বাড়িতে বসবাস করে নিজের জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন।’

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুখ আহম্মেদ বলেন, ‘ভাঙন রোধে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। জিও ব্যাগ ফেললে অনেক স্থাপনা রক্ষা পাবে। এই এলাকাটির ভাঙন ঠেকাতে প্রকল্প হাতে নেবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।’

রাজবাড়ীতে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৪ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩৬ এএম
রাজবাড়ীতে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর
সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে। ছবি : খবরের কাগজ

রাজবাড়ী শহরের বাস মালিক সমিতির পাশে অবস্থিত সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বেলা ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে জানান মন্ডপ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। ওই সময় মন্দিরে কোনো লোক ছিল না।

পুলিশ ও মন্দির কমিটির সাথে কথা বলে জানা যায়, অস্থায়ী মন্ডপ তৈরি করে রাজবাড়ী-ফরিদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মন্দিরের পেছনে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়। রাতে মন্দিরে পাহারার ব্যবস্থা ছিল। সকালে পাহারাদার চলে যায়। বেলা ১১টার দিকে ডেকোরেটরের লোকজন মন্দিরে সিসি ক্যামেরা লাগানো ও সাজসজ্জার কাজ করতে আসেন। এ সময় মন্দিরের সামনে থাকা কাপড় সরালে প্রতিমা ভাঙার বিষয়টি চোখে পড়ে।

মন্ডপে থাকা দুর্গা, সরস্বতী, লক্ষ্মীর চোখ, নাক, মুখ ভেঙে ফেলেছে। এছাড়া কার্তিক ও গনেশের ঘার থেকে ভাঙা দেখা গেছে।

ডেকোরেটরের শ্রমিক বিষয়টি মন্ডপ কমিটিকে জানালে তারা প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। সন্ধার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিমা ভাঙচুরের বিষয় নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। অনেকেই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করে দোষীদের বিচার চান। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত হন।

অনেক বছর ধরে রাজবাড়ী বাস মালিক সমিতির আয়োজনে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে সামনে মন্ডপ করে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। এ বছর বাস মালিক সমিতির আয়োজনে ওই পূজা হচ্ছে না। এ কারনে স্থানীয়দের আয়োজনে সজ্জনকান্দা মধ্যপাড়া সর্বজনীন মন্ডপে এ পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

সজ্জনকান্দা সর্বজনীন দু্র্গা মন্ডপের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাধন চন্দ্র দাস বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলেনি।

তবে এই পুজা মন্ডপের উদ্যোক্তা কুঞ্জন সরকার জানান, কারা ঘটনা ঘটেয়েছে বিষয়টি আমরা জানি না। এজন্য কারও প্রতি আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আর এই কারনেই আমরা ঘটনা কাউকে জানাইনি। রাতের মধ্যেই প্রতিমা আমরা ঠিক করে ফেলব। এজন্য প্রতিমাশিল্পীদেরও নিয়ে এসেছি।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছা. শামীমা পারভীন জানান, ধারণা করা হচ্ছে  প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘটেছে। বিষয়টি মন্দির কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়নি। আমাদের সোর্সের মাধ্যমে জেনে দ্রুত মন্দিরে এসেছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আমরা শহরের প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে মন্দির কর্তৃপক্ষকে অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু এই মন্দিরে আজকে ঘটনা ঘটার পর সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুমন বিশ্বাস/অমিয়/

ময়মনসিংহ-নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৫ এএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ পিএম
ময়মনসিংহ-নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি। ছবি : খবরের কাগজ

ভারী বৃষ্টি না থাকা ও রোদ উঠায় শেরপুরে ধীরে ধীরে কমছে বন্যার পানি। উজান থেকে নামা এই পানির কারণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আর কিছু স্থানে পানি কমতে শুরু করায় ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট। অনেক জায়গাতেই পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। তবে জেলার বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত জেলায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে নেত্রকোনায় অতিবৃষ্টির কারণে আবার বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। আর বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ময়মনসিংহের বিভিন্ন ইউনিয়নে। শেরপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ প্রতিনিধির পাঠানো খবর। 

শেরপুরে বন্যায় নিহতরা হলেন নালিতাবাড়ীর খলিসাকুড়া এলাকার খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়া এলাকার ইদ্রিস আলী (৬৩), নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের দুই ভাই আলম (১৭) ও হাতেম (৩০), বাঘবেড় বালুরচরের ওমেজা বেওয়া (৫৫), চিকনা এলাকার উজ্জ্বল (৫০), ঘোনাপাড়া এলাকার জিমি আক্তার (৮) ও নকলার গজারিয়া এলাকার আ. রাজ্জাক (৫০) ও টালকি ইউনিয়নের রাহিম (৫) পানিতে ডুবে মারা গেছেন। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন এক নারী।

এদিকে শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতে পানি কমছে। কিন্তু এখনো ঘরে পানি রয়েছে শেরপুর সদরের গাজীরখামার, বাজিতখিলা ও ধলা ইউনিয়নে এবং নকলা উপজেলার নায়ারণখোলা, উরফা ইউনিয়নে। স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও বিভিন্ন দপ্তর থেকে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে দুর্গম এলাকায়। তবে সব জায়গায় নৌকা না থাকায়, ত্রাণ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে।

শেরপুর জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টি না হলেও কোনো কোনো উপজেলায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে সকালে। এতে কোনো প্রভাব পড়েনি নদীগুলোতে। সবগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চলতি বন্যার কারণে জেলার ২৪২টি প্রাথমিক ও ৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন। এসব প্রতিষ্ঠানে পানিবন্দিদের উদ্ধার করে রাখা হচ্ছে এবং তাদের মাঝে ত্রাণ ও রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, জেলার ভোগাই নদীর পানি ১৬৯ সেন্টিমিটার, চেল্লাখালী নদীর ৮৭ সেন্টিমিটার ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৫২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।

জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস জানান, এবারের বন্যায় পৌনে দুই লাখ কৃষকের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে, এতে ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারি নানা প্রণোদনাসহ পরবর্তীতে সহযোগিতা করা হবে।

জেলা মৎস্য বিভাগে মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকার বলেন, ‘এবারের বন্যায় জেলার ৭ হাজার ৩০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে করে খামারিরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৭০ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যা যা করণীয় মৎস্য বিভাগ তা করবে।’

নেত্রকোনায় থামেনি বৃষ্টি, আবারও বাড়ছে পানি 

নেত্রকোনায় দুই দিন বৃষ্টি কমার ফলে কমতে শুরু করেছিল নদ-নদীর পানি। সোমবার রাত থেকে আবারও শুরু হয়েছে বৃষ্টি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে একটানা বৃষ্টিপাতের সঙ্গে কখনো হচ্ছে বজ্রপাত। একটানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতির দিকে এগোচ্ছে। অনেক স্থানে বাড়িতে পানি উঠায় চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বন্যার্তদের।

এ সময় সাধারণভাবে বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও তা স্থায়ী হয় না। এবার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ২০ হাজার হেক্টর জমির ধান। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০০-এর বেশি মৎস্য খামার ও পুকুরের মাছ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ১৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

ময়মনসিংহে পানি বাড়ায় আতঙ্কিত মানুষ

গত কয়েক দিনের বৃষ্টি আর ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া, হালুয়াঘাট উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যা দেখা দিয়েছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা ফুলপুরেও। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। তবে সোমবার কোথাও পানি কম ছিল আবার কোথাও স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার বন্যা পরিস্থিতির আবার অবনতি হয়েছে। এদিন ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হওয়ায় এই তিন উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বৃষ্টি বাড়লে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।

ফুলপুরের ইউএনও এ বি এম আরিফুল ইসলাম জানান, নতুন করে ১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নতুন একটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিনটি উপজেলায় ৩৪ হাজার পরিবারের দেড় লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় ৬৩ মেট্রিক টন চাল, ৭ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে ত্রাণ কার্যক্রম চালানো হবে।’

চমেক হাসপাতালে সাবেক এমপি লতিফ

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৭ পিএম
চমেক হাসপাতালে সাবেক এমপি লতিফ
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এমপি লতিফকে (৫৬) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে কারারক্ষীরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। 

এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন কারারক্ষী সন্ধ্যার দিকে সাবেক এমপি লতিফকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। লতিফ হুইল চেয়ারে বসে ছিলেন। তার মুখে মাস্ক এবং ডান দিকের কপালে ব্যান্ডেজ দেখা যায়। 

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার খবরের কাগজকে বলেন, কারারক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, বাথরুমে মাথাঘুরে পড়ে ডান পাশের কপালে আঘাত পান সাবেক এই সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ১৯নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। 

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওজু করতে গিয়ে পা পিছলে বাথরুমে পড়ে আহত হয়েছেন তিনি। বয়স্ক মানুষ, উনার বাইপাস হয়েছে, তাই এমনটা হতে পারে। উনাকে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

তারেক মাহমুদ/এমএ/

বন্যায় আশ্রিত শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, বৃদ্ধ কারাগারে

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
বন্যায় আশ্রিত শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা, বৃদ্ধ কারাগারে
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বন্যায় আশ্রয় নেওয়া পরিবারের দুই বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মো. হারুন (৫৫) নামে এক বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়ন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মো. হারুন চাষিরহাট ইউনিয়নের রথি গ্রামের মৃত ইমরাত উল্যাহ মুন্সির ছেলে। বিকেলে আদালতে পাঠালে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম খবরের কাগজকে বলেন, ভুক্তভোগীর অটোরিকশা চালক (৪১) বাবার দায়ের করা মামলায় আসামি মো. হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামি মো. হারুন বাদির প্রতিবেশি চাচা হয়। বন্যার কারণে বাড়িঘর ডুবে যাওয়ায় বাদি পরিবার নিয়ে আসামির বাড়িতে আশ্রয় নেন। গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে বাদির দুই বছরের কন্যাকে নির্জন কক্ষে নিয়ে আসামি হারুন ধর্ষণের চেষ্টা করেন। শিশুর চিৎকারে লোকজর জড়ো হলে আসামি পালিয়ে যায়।

আদালতের পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মো. শাহ আলম খবরের কাগজকে বলেন, আসামি মো. হারুনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বিচারক। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এমএ/

বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ ২৬ ঘণ্টা পর ফেরত

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩২ পিএম
বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশির লাশ ২৬ ঘণ্টা পর ফেরত
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলা ভর্তি সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে কামাল হোসেন নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। পরে তার মরদেহ ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার গলিয়ারা উত্তর ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের যশপুর বিওপির কাছে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত কামাল হোসেন সদর দক্ষিণ উপজেলার কুড়িয়াপাড়া গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনার দীর্ঘ ২৬ ঘন্টা পর পতাকা বৈঠক শেষে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৯টার দিকে তার মরদেহ ফেরত দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ইফতেখার হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পাহাড়পুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন কামাল হোসেনসহ ৩ জন। কাঁটাতারের বেড়া টপকানোর পর এ তিনজনকে বিএসএফের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরই একটি গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা। এ সময় সেখান থেকে দুইজন দৌড়ে পালিয়ে গেলেও কামাল হোসেন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকেন। এরপর আরও একটি গুলির শব্দ শোনা যায়।  গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন কামাল। পরে বিএসএফ সদস্যরা একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মরদেহ নিয়ে যায়।

নিহত কামালের মেয়ে কামরুন্নাহার জানায়, লাদেন কামাল ও শাহ আলম নামে দুই লোক ৭ তারিখ বিকালে আমার বাবাকে নিয়ে সীমান্তে যায়। এরপর আর উনি আসেনি। রাতে লোকজন খবর দেয় আমার বাবাকে বিএসএফ গুলি করে মেরে ভারতে নিয়ে গেছে। আমার বাবাকে কেন মারল তারা আমি জানি না। লাদেন কামাল আর শাহ আল পালিয়ে গেছে।

নিহত কামালের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোন অপরাধের অভিযোগ থাকলে তারে জেলে দিয়ে বিচার করতেন। এভাবে মেরে ফেললেন কেন?

১০ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল ইফতেখার হোসেন জানান, কামাল হোসেন নামের ওই যুবক সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের অভ্যন্তরে ঢুকে পরলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

জহির শান্ত/এমএ/