রাজশাহীতে লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠে নেমেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে নগরীর বুলনপুর ও কোর্ট এলাকায় অভিযান চালান তারা। এ সময় লুটের প্রায় ৩০ শতাংশ মালামাল উদ্ধার করা হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, লুট হওয়া মালামাল ফেরত দিতে মাইক নিয়ে প্রতিটি গলিগলিতে আহ্বান জানান ছাত্ররা। আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেকেই মালামাল ফেরত দেন। একজন ম্যাজিস্ট্রেট ফেরত পাওয়া মালামালগুলোর তালিকা করেন। জানা যায়, গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করলে সারা দেশের মতো রাজশাহীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সেই লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে শনিবার থেকে পাড়া-মহল্লায় সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে অভিযান শুরু হয়।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, স্থানীয় তরুণ সমাজ, সংশ্লিষ্ট অফিস ও রেড ক্রিসেন্টের আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজশাহীর বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা থেকে লুট হওয়া মালামাল ফিরিয়ে দিতে শুরু করেন অনেকে। নগর ভবন থেকে লুট হওয়া মালামাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মানুষ ফেরত দিতে শুরু করে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা এসব মালামাল লিপিবদ্ধ করে লোকজনের কাছ থেকে বুঝে নেন। বিশেষ করে হাইটেক পার্ক ও রাসিকের মালামাল ফেরত আসে বেশি। এ ছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস ও স্থাপনা থেকে লুট হওয়া মালামালও অল্প কিছু ফেরত আসে। ফিরিয়ে দেওয়া মালামালের মধ্যে কম্পিউটার সামগ্রী, অফিস আসবাবপত্র, ফ্যান, এসি, চেয়ার ও সোফা রয়েছে।
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ফাহিম রাজ জানান, যা ঘটে গেছে তা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। তারা এগুলো কখনোই সমর্থন করেন না। তাই শুরু থেকেই এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য তাদের পক্ষ থেকে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর সমন্বয়ক তাহাজ নূর আদি বলেন, এসব ঘটনার পর শুরু থেকেই মানুষকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট না করার জন্য সচেতন করা হয়েছে। কারণ এসব সম্পদ সবার। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে যারা মালামাল ফেরত দিচ্ছেন, তাদের কাউকেই কোনো হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে না। এ ছাড়া তাদের পরিচয়ও গোপন রাখা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর মেজর মোবাশ্বির হোসেন খান বলেন, ‘আমরা রেড ক্রিসেন্টসহ সহযোগী সংগঠন নিয়ে মাঠে নেমেছি। আমরা লুটপাট হওয়া মালামাল উদ্ধারে মাঠে নেমেছি। এরই মধ্যে আমরা ৩০ শতাংশ লুটপাটের মালামাল উদ্ধার করেছি। এসব মালামাল স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযান চলমান থাকবে।