নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে নতুন গ্যাসকূপের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। এখান থেকে প্রতিদিন ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন কর্মকর্তারা।
উপজেলার ওয়াছেকপুর গ্রামে বেগমগঞ্জ-৪ কূপের তিনটি স্তরে মিলেছে জ্বালানি গ্যাস।
সোমবার (১২ আগস্ট) রাত ৮টায় এ কূপে আগুন জ্বালানো হয়।
কূপটিতে তিন হাজার ১১৩ মিটার গভীর পর্যন্ত চারটি স্তরে খনন করা হয়।
বাপেক্সের কর্মকর্তারা জানান, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল শুরু হওয়া খনন কাজ ও ডিএসটি টেস্ট শেষে এখন চলছে সর্বনিম্ন স্তরের উৎপাদন টেস্ট। প্রাথমিকভাবে কূপটির চারটি স্তরে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। উৎপাদন টেস্ট শেষে জানা যাবে এখানে মজুত মোট গ্যাসের পরিমাণ। টেস্টিং কার্যক্রম শেষে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। নতুন কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের জন্য প্রায় তিন কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে হবে। এরই মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
কূপের খনন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে দেশে গ্যাসের যে তীব্র সংকট চলছে, এই সংকটময় মুহূর্তে এ কূপে গ্যাস পাওয়া অনেক আশার জন্ম দিয়েছে। আগামী কয়েক দিন কূপের প্রতিটি স্তরে গ্যাসের ডিএসটি টেস্ট করা হবে। এরপর কূপে গ্যাসের মোট মজুত সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘একসময় গ্যাসকূপ খননের কাজে বিদেশি শ্রমিক ও কর্মকর্তারা যুক্ত থাকতেন। কিন্তু এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। এ কূপ খননের সঙ্গে জড়িত প্রায় দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই বাংলাদেশের। এটাও আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। কূপটিতে প্রয়োজনীয় পাইপলাইন বসানোর পর অল্প সময়ের মধ্যে এই কূপ থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা হবে।’
এর আগে গত ২৯ মার্চ জেলার কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়া ইউনিয়নের চরকাঁকড়া গ্রামে সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্রের চার নম্বর কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই গ্যাসক্ষেত্র থেকে ইতোমধ্যে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা শুরু হয়েছে।
বাপেক্সের কর্মকর্তারা আশা করছেন, বেগমগঞ্জ-৪ নামের নতুন কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তার চেয়েও আশার দিক হলো এই কূপের চারটি স্তরেই গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে।
১৯৭৬ সালে বেগমগঞ্জ-১ এবং ১৯৭৮ সালে বেগমগঞ্জ-২ গ্যাসকূপ খনন করা হলেও সেগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।
২০১৪ সালে বেগমগঞ্জ-৩ কূপ খনন করা হয় এবং সেখান থেকে এখনো প্রতিদিন আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ফেনী-নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এখানে বেগমগঞ্জ-৫ ও বেগমগঞ্জ-৬ কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে বাপেক্সের।
ইকবাল হোসেন/পপি/অমিয়/