অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন শাখাটির ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ (৩৮)। অভিযুক্ত দীপংকর ঘোষ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া গত ২ সেপ্টেম্বর মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করা হয়। এ সময় দীপংকর জানান, তার বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে না এলে আবারও তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ওই দিন তার প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইলে ফোন দেওয়া হয়। তিনি জানান, তার স্বামী অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন। কিন্তু ওই দিন বিকেল হয়ে গেলেও দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত হননি। যার ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে তার কার্যকলাপ সন্দেহজনক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।
ব্যবস্থাপক বলেন, দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টের টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী গত ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও থানার পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দ্বারা ভল্টের গ্রিল কেটে এবং চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। এরপর সবার উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। অর্থাৎ ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী গণনাকালে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ কিছুদিন ধরে মাঝেমধ্যে কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে আসতেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ভল্টের একটি চাবি তার কাছে থাকায় কৌশলে নিজে অথবা অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।
ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া বলেন, ‘আমি মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন। থানার পুলিশও তদন্ত করছে।’
মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়ে ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে।