চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পথচারীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সব অবৈধ স্থাপনা ও ভাসমান দোকান উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় কিছু ব্যবসায়ী মহাসড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে আসছিল তারা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন অনিয়ম করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। স্থানীয় ও পথচারীদের চাপের মুখে পড়ে বেশ কয়েকবার লোক দেখানো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীরা আবারও ভাসমান দোকানগুলো তৈরি করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিগত দিনের মতো শিক্ষার্থী ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীতে ট্রাফিকব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছেন। মহাসড়কের উভয় পাশের ফুটপাতে দেখা যায়, একদল শিক্ষার্থী মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে ঝাড়ু হাতে সড়ক পরিষ্কার করছে। আরেকটু সামনে এগোতেই দেখা যায়, আরেক দল শিক্ষার্থী মাইকিং করে ফুটপাত ও মহাসড়কের একাংশ দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করছেন। আরেকটি দল উচ্ছেদ হওয়া জায়গাগুলোর ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় পরিষ্কার করছেন।
জানা যায়, ২০২২ সালে সরকার ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে দোহাজারী সাঙ্গু নদীর ওপর ৪ লেন বিশিষ্ট একটি সেতু নির্মিত হয়। সেই সময় সেতুটির পরিধি অনুযায়ী উভয় পাশের সড়ক প্রশস্ত করা হয়। যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে সড়ক বিভাজন ব্লকের মাধ্যমে লেনগুলো আলাদা আলাদাভাবে চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। তার মধ্যে ফুটপাতসংলগ্ন লেনটি রাখা হয় রিকশা ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে। এর কিছুদিন যেতে না যেতেই ওই লেনটি দখল করে ব্যবসা শুরু করে কিছু ব্যবসায়ী। সেই থেকে বিভিন্ন সময় এসব ব্যবসায়ীকে উৎখাত করা হলেও আবারও তারা বসে যায়।
স্থানীয় পথচারীদের দাবি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পদবিধারী ক্যাডারদের ছত্রছায়ায় ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখল করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ চাঁদা ও ইজারা দেওয়ার বিনিময়ে তারা ভাসমান দোকানগুলো তৈরি করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দোহাজারী পৌরসভার সমন্বয়ক মোহাম্মদ আকিব বলেন, ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্র সংস্কারে এগিয়ে এসেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে যানজট নিরসন ও স্থানীয় পথচারীদের চলাচলের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা মহাসড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত করেছি। আজকের পর থেকে কেউ যদি আবার ফুটপাত ও মহাসড়কের একাংশ দখল করে দোকানপাট তৈরির অপচেষ্টা চালায়, তা হলে ছাত্র সমাজ তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।’