ঢাকা ১ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাদারীপুরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গুলিসহ পিস্তল ও শর্টগান উদ্ধার

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৮ পিএম
আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
মাদারীপুরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গুলিসহ পিস্তল ও শর্টগান উদ্ধার
উদ্ধার হওয়া পিস্তল ও শর্টগান। ছবি: খবরের কাগজ

মাদারীপুরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গুলিসহ পিস্তল ও শর্টগান উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে শহরের শহিদ মহসিন সড়কের আবুল খায়ের হাওলাদারের বাড়ির সামনে থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে এর মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পুলিশ ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, সড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি সাদা প্লাস্টিকের বস্তা দেখতে পায় স্থানীয়রা। বিষয়টি সন্দেহ হলে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাটি খুলে ১৮ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিনসহ একটি পিস্তল ও ৭ রাউন্ড কার্তুজসহ একটি শর্টগান উদ্ধার করে। 

পরে সাধারণ ডায়েরি করে এগুলো আদালতে পাঠায় পুলিশ।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএস সালাউদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হলেও এর মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এগুলো কিভাবে সড়কে এলো সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে। আর আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/

বেনাপোল বন্দর সোম ও মঙ্গলবার বন্ধ

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
বেনাপোল বন্দর সোম ও মঙ্গলবার বন্ধ
ছবি : খবরের কাগজ

বেনাপোল বন্দরে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে আজ সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে দুদেশের মধ্যে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন।

তিনি জানান, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় আজ সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এবং আগামীকাল মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভারতে বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। আগামী বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে পুনরায় এ বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম চালু হবে।

বেনাপোল আর্ন্তজাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাহারুল ইসলাম জানান, ছুটির কারণে দুদিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

নজরুল ইসলাম/অমিয়/

টাঙ্গাইলে ডোবা থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ এএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পিএম
টাঙ্গাইলে ডোবা থেকে কিশোরের লাশ উদ্ধার
জিহাদ

টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ডোবা থেকে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। 

রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের মোবাইল মার্কেটের পেছনে পরিত্যক্ত ডোবা থেকে লাশটি করা হয়।

নিহত জিহাদ উপজেলার চেচুয়া গ্রামের বাসিন্দা তুলার সন্তান। 

স্থানীয় বাসিন্দারা ও পুলিশ জানায়, জিহাদ গত তিন দিন ধরে নিখোঁজ ছিল। রবিবার বেলা ১২টার দিকে মার্কেটের একজন কর্মচারী পেছনের ডুবাতে প্রস্রাব করতে গেলে জিহাদের লাশটি ভাসতে দেখেন। এরপর মার্কেটের অন্য লোকজনকে ডেকে এনে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

কালিহাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়েছি। আমি এখন যাব; তারপর বিস্তারিত বলা যাবে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হবে।’ 

তাড়াইল সাবেক ইউএনও সওজের জায়গায় দোকান নির্মাণের অভিয়োগ

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পিএম
সওজের জায়গায় দোকান নির্মাণের অভিয়োগ
তাড়াইল উপজেলা পরিষদের সামনে সড়কের জায়গা দখল করে দোকান ঘর করা হয়েছে। খবরের কাগজ

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) ও সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরিষদের সামনের সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে প্রভাবশালীদের বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ করেছেন উপজেলার সেকান্দরনগর ইউনিয়নের ধলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আলী হায়দার।

অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা পরিষদসংলগ্ন (তাড়াইল-নান্দাইল) মহাসড়কের রাস্তা দখল করে সাবেক ইউএনও আল মামুনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দশটি দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি দোকান বরাদ্দের জন্য ৯ জনের কাছ থেকে এককালীন ২ লাখ করে মোট ১৮ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। যেখানে সরকারি কোনো নিয়ম মানা হয়নি। সওজের সড়কটি ৭০ ফুট প্রশস্ত হলেও দোকান তৈরির পর ৩০ ফুট আছে। এতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং জনসাধারণের চলাচলের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানানা, সওজের জায়গায় সরকারি আমলা দোকান করে প্রভাবশালীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন অথচ তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করেননি। উপজেলার সামনে ছোট ছোট দোকান নিয়ে কিছু লোকজন প্রতিদিন বসেন। তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করাসহ দোকান ভাঙচুর করে উঠিয়ে দেওয়া হতো।

শুধু সাবেক ইউএনও নন। উপজেলার সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম এসব দোকান ঘর নির্মাণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন। তাড়াইল জামে মসজিদ মার্কেটের দোহাই দিয়ে দোকান ঘরগুলো নির্মাণ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া জন্য একাধিকবার তার মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তাড়াইল উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, দোকানগুলো (জাইকা) প্রকল্পের আওতায় তাড়াইল উপজেলায় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে উপজেলার সাবেক ইউএনও আল মামুন নথিভুক্ত করেছেন। সেখানে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে প্রত্যেককে ৬ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে আল মামুন বলেন, ‘সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে আগে থেকেই এখানে মার্কেট ছিল। আমরা নতুন করে সংস্কার করে দিয়েছি। আপনি যদি সড়কের ৭০ ফুট জায়গা দখলমুক্ত করতে চান তা হলে থানা, ভূমি অফিস, মসজিদ, ব্যাংক, মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে সেগুলো সড়কের জায়গা দখল করে করা হয়েছে। আমরা যখন দোকানের কাজ করি তখন এ বিষয়ে কেউ কিছুই বলেনি। দোকান বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা করে নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘সড়ক ও জনপথের জায়গায় যে দোকান ঘর নির্মাণ করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেই সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। এভাবে দোকান ঘর নির্মাণের জন্য সওজের কোনো জায়গা ইজারা দেওয়া যায় না। সার্ভেয়ার দিয়ে সড়ক মাপার পর দেখা গেছে দোকানগুলো সড়কের জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ডিসি-এসপির আশ্বাসে ৫ দিন পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
ডিসি-এসপির আশ্বাসে ৫ দিন পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসককে হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনরতদের সঙ্গে কথা বলছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। খবরের কাগজ

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসককে হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের দ্রুত বিচার এবং চিকিৎসকদের কর্মস্থলে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করা চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ দিন পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন। 

 রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আন্দোলনরত চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবং সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে চিকিৎসকরা এ সিদ্ধান্ত জানান।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি শাহ তালাল মাহমুদ দিহান বলেন, ‘কক্সবাজারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা ৫ দিনের জন্য কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। যা আজ (রবিবার) বিকেল ৩টা থেকে কার্যকর হবে। আমরা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চাই। কিন্তু ৫ দিনের মধ্যে আমাদের দাবির অগ্রগতি না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘রোগীর স্বজন দ্বারা ডা. সজীব কাজীকে মারধরের ঘটনায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগের ফলে তাৎক্ষণিক ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েন করতে পেরেছি। এখন থেকে ১২ জন আনসার মোতায়েন থাকবে তার মধ্যে ৬ জন অস্ত্রধারী থাকবে। পুলিশের একটা স্থায়ী ক্যাম্প করার ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ সার্বক্ষণিক টহল দেবে এবং যৌথ বাহিনীর টহলও রয়েছে। এভাবেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’ 

পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা জড়িত ৪ জনকে আটক করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদেরও ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’ 

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হন ডা. সজীব কাজী নামের এক চিকিৎসক। হামলার শিকার সজীব হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সিসিইউতে কর্মরত ছিলেন।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষ ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারতে থাকেন। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপরই হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর থেকে জরুরি বিভাগ ছাড়া সব চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল।

পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস ‘উড়াল গ্যাসের গ্রামে’ অগ্নিঝুঁকি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ এএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
‘উড়াল গ্যাসের গ্রামে’ অগ্নিঝুঁকি
তিতাস নদী থেকে উদগিরণ হওয়া গ্যাস ড্রামে সংরক্ষণ করে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে বাসাবাড়ি ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বাকাইল গ্রাম থেকে তোলা/ খবরের কাগজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস নদীতে উদগিরণ হওয়া গ্যাস প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে ঝুঁকি নিয়ে বাসা-বাড়ি ও বাণিজ্যিক কারখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। চাপ নিয়ন্ত্রণ না করে এসব গ্যাস ব্যবহারের ফলে অগ্নিঝুঁকি বাড়ছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রভাবশালী একটি চক্র বছরের পর বছর এভাবেই গ্যাস সংযোগ দিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তারা হাতিয়ে নিচ্ছে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। তারা চান, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে তাদেরকে গ্যাস সরবরাহ করা হোক। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখানে ব্যবহার হওয়া গ্যাসের উৎপত্তিস্থলের প্রেসার অনেক কম। যা দিয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মেনে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব নয়। শিগগিরই ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের মজলিশপুর ইউনিয়নের বাকাইল গ্রামে গেলে দেখা যাবে, রাস্তার দুপাশে গাছের ওপর প্লাস্টিকের পাইপ ঝুলছে। এই পাইপগুলো সরাসরি তিতাস নদী থেকে টানা হয়েছে। নদী থেকে উদগিরণ হওয়া গ্যাস এই পাইপগুলোর মাধ্যমে বাসা-বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। গ্যাসের এই পাইপের কারণে গ্রামটিকে স্থানীয়রা ‘উড়াল গ্যাসের গ্রাম’ হিসেবে চেনেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দেড় দশকের বেশি সময় আগে বাকাইল গ্রামসংলগ্ন তিতাস নদীর কয়েকটি জায়গায় গ্যাসের উদগিরণ শুরু হয়। তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ৩নং কূপ খননের সময় লিকেজের কারণেই এই গ্যাসের উদগিরণ হয় বলে জানা গেছে। কূপের গ্যাস মাটির ওপরের স্তরে চলে আসে এবং মাটির ফাঁকফোকর দিয়ে নলকূপ, নদীর পাড়, জমির আইল এবং বাড়ির আঙিনা দিয়ে উদগিরণ হতে থাকে। গ্যাসের এই উদগিরণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে ২০০৭ সালে ৩নং কূপটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)। এরপর থেকে গ্যাসের উদগিরণও কমে আসে।

বাকাইল গ্রামের বাসিন্দারা এই গ্যাস যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের দেওয়ার দাবি জানালেও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস প্রবাহ না থাকায় বিজিএফসিএল এ গ্যাস সংরক্ষণ বা উত্তোলনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে না। বিজিএফসিএল সূত্রে জানা গেছে, উদগিরণ হওয়া এই গ্যাস মূলত কূপের গভীরের লিকেজ হওয়া ‘পকেট গ্যাস’। এগুলো এক সময় শেষ হয়ে যাবে। বাণিজ্যিকভাবে এগুলো ব্যবহার বৈধ নয়। বাকাইল গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস প্রবাহ নেই। এখানে যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো নলকূপের গভীরতার সমান। তবে বাসা-বাড়িতে বিজিএফসিএলর উৎপাদিত যে গ্যাস সরবরাহ করা হয় তা অনেক গভীর এবং প্রেসারের।

বাকাইল গ্রামে দেখা গেছে, তিতাস নদীর যেসব স্থানে গ্যাস উদগিরণ হচ্ছে সেখানে অপরিকল্পিতভাবে ড্রামে করে পানিসহ গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এরপর একটি পাইপ দিয়ে পানি বের করে আরেকটি পাইপ দিয়ে উত্তোলন করা গ্যাস কয়েক শ ঘর-বাড়িতে সরবরাহ করা হচ্ছে। কয়েকটি চুন ও চুড়ির কারখানাও চলে বিজিএফসিএলর এই পকেট গ্যাস দিয়ে। যদিও এই গ্যাসের প্রেসার ওঠানামা করে। 

স্থানীয় বাসিন্দা সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের গ্যাস আমরা বৈধভাবে ব্যবহার করি। ২০০৭ সালের আগে গ্যাস লিকেজ হয়েছে। গ্যাস ফিল্ডের কর্মকর্তারা উড়াল গ্যাস বন্ধ করতে পারছেন না। যার কারণে ঝুঁকি আছে জেনেও আমরা উড়াল গ্যাস পাইপের মাধ্যমে এনে ব্যবহার করি।’ খসরু মিয়া নামে গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনে দিয়ে গ্যাস উড়ে চলে যাচ্ছে। তাই আমরা কারও না কারও মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার করে থাকি।’ 

এ বিষয়ে নদী সুরক্ষাভিত্তিক সংগঠন ‘তরী বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক শামীম আহমেদ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস সংযোগ দিয়ে অবৈধ বাণিজ্য চলছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’ 

উড়াল গ্যাসের বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ‘বাখরাবাদের উদ্যোগে এখানে অভিযান চালানোর সুযোগ খুবই সীমিত। জেলা প্রশাসন জনগণের স্বার্থে এখানে একটা উদ্যোগ নিতে পারে। আর যেহেতু গ্যাসফিল্ডের কোনো গ্যাসকূপ থেকেই এই গ্যাস আসছে, তাই তাদেরকেই এটা মনিটরিং করতে হবে।’

আইনি পদক্ষেপ প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা বলেন, বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে শিগগিরই উদগিরিত গ্যাসের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহার বন্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ২৪টি কূপ থেকে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। ১৯৬২ সালে দেশের প্রাচীন এই গ্যাস ফিল্ড আবিষ্কার করে পাকিস্তান শেল ওয়েল কোম্পানি।