ঢাকা ২৭ ভাদ্র ১৪৩১, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিসিক মেয়রসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরকে পদত্যাগের আলটিমেটাম

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৫৪ পিএম
সিসিক মেয়রসহ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরকে পদত্যাগের আলটিমেটাম
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়করা। ছবি: মামুন হোসেন

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলীসহ সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করার জন্য আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সিলেটের শিক্ষার্থীরা। এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে নগরভবন ঘেরাও করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় সিলেট মহানগরের পূর্ব জিন্দাবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়করা।

মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়করা বলেন, আমরা এক মাসেরও অধিক সময় বিপ্লব করে দীর্ঘ ১৫ বছরে স্বৈরাচার সরকার পতন ঘটিয়েছে। এখন প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতিমুক্ত করার আন্দোলন চালাচ্ছি। তাই স্বৈরাচারের অধীনে যত প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়েছে এবং এসব নির্বাচনে যারা বিজয়ী রূপে বিভিন্ন চেয়ারে বসেছে তাদের আমরা আর চেয়ারে দেখতে চাই না। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলীসহ সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলরকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে পরে আমরা নগরভবন ঘেরাও করবো। এরপর জনতা আপনাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।

প্রেসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে উল্লেখ করে সমন্বয়করা বলেন, এতদিন সরকার সাংবাদিকদের গলা চেপে ধরেছিল। তাদের কুকর্ম প্রকাশ না করার জন্য। কিন্তু আমরা এমনটা চাই না। আমরা চাই সাংবাদিকের কলম চলবে দুর্বার গতিতে। আমরা নতুন, তাই বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের ভুল ত্রুটি হতে পারে। আপনারা আমাদের ভুল ধরিয়ে দেন এটাই আমরা চাই। এই সরকারের ভাল, মন্দ সব দিক তুলে ধরবেন আপনাদের খবরে এটাই আমরা চাই।

এই আন্দোলনে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাব ও শিক্ষার্থী রোদ্র সেনকে স্মরণ করে সমন্বয়করা বলেন, স্বৈরাচার সরকার পতন হওয়ার পর এখন হিন্দু সম্প্রদায়কে ব্যবহার করে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা ও নাশকতা করার পায়তারা করছে। আমরা আপনাদেরকে বলে দিতে চাই, এদেশের ছাত্র সমাজ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত। আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই। এদেশে কোনো মেজরিটি মাইনরিটি নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি। বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা করতে আসলে আমরা কাউকে ছাড় দেব না। সবাইকে জানাতে চাই এটা ১৪ জনের সরকার না। এটা ১৮ কোটি মানুষের সরকার। এই সরকার দেশের যে সংস্কার করবে এর সুফল সবাই ভোগ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শাবিপ্রবি ও সিলেটের সমন্বয়ক মো. গোলাম মর্তুজা সেলিমের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্নয়ক আসাদ উল্লাহ আল গালিব, শাবিপ্রবি সমন্নয়ক দেলোয়ার হোসেন শিশির, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসমন্নয়ক ফয়সল হোসেন, শাবিপ্রবি সমন্নয়ক হাফিজুর রহমান, শাবিপ্রবি সমন্নয়ক জহিরুল ইসলাম। এসময় তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

শাকিলা ববি/এমএ/

 

সন্তান জন্মের ৯ ঘণ্টা পর ডেঙ্গুতে মায়ের মৃত্যু

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪২ পিএম
সন্তান জন্মের ৯ ঘণ্টা পর ডেঙ্গুতে মায়ের মৃত্যু
শান্তা সূত্রধর

সন্তান জন্ম দেওয়ার ৯ ঘণ্টা পরই ডেঙ্গুতে মারা গেলেন শান্তা সূত্রধর। নবাগত সন্তানের মুখও ভালোভাবে দেখতে পারেননি প্রথমবার মা হওয়া এই নারী। 

গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। 

শান্তা সূত্রধর মহানগরের লাভলেইন এলাকার বাসিন্দা। একই রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান শাকিলা আক্তার নামের এক নারী। তার গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী। 

শান্তা মা হওয়ার সংবাদে পরিবারে নেমে আসে আনন্দের জোয়ার। তাকে ঘিরে কত শত উচ্ছ্বাস, মাতামাতি। কিন্তু হঠাৎ ৭ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুর সংবাদ সব কিছু এলোমেলো করে দেয়। প্রচণ্ড জ্বরে পুড়ে যেতে থাকেন শান্তা সূত্রধর। ওই দিনই তাকে ভর্তি করা হয় চমেক হাসপাতালে। ধরা পড়ে ডেঙ্গু। এরপর সেখানেই তার অস্ত্রোপচার হয়। সোমবার দুপুরে তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। সন্তানের বাবা হওয়ার পর ভাইকে মিষ্টিও আনতে বলেছিলেন তার স্বামী সাগর দাশ। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। রাতেই তিনি মারা যান। ভালো করে দেখা হয়নি সন্তানের মুখখানাও। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শান্তার নবজাতক কন্যা বর্তমানে সুস্থ আছে। মায়ের বুকের দুধের জন্য কান্নাকাটি করছে বাচ্চাটি। মা না থাকায় কীভাবে এই মেয়েকে বড় করবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বজনরা। 

শান্তার স্বামীর মামাতো ভাই আকাশ দে বলেন, ‘এক আত্মীয়ের বুকের দুধ দেওয়া হয়েছে বাচ্চাটিকে। কিন্তু অনবরত কান্নাকাটি করছে সে। বাচ্চা হওয়ার পর দাদা আমাকে ফোন করে মিষ্টি নিয়ে যেতে বলেন। পরে আমি হাসপাতালে গিয়ে বউদির সঙ্গে কথা বলি। তিনি তখন ওয়ার্ডে ছিলেন। তখনো তিনি কথা বলতে পারছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যার পর তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে আইসিইউতে রেফার করা হয় এবং সেখানেই রাতে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।’

ব্যাংকের ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
ব্যাংকের ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও ক্যাশিয়ার
অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন শাখাটির ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ (৩৮)। অভিযুক্ত দীপংকর ঘোষ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন। 

এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া গত ২ সেপ্টেম্বর মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে না আসায় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করা হয়। এ সময় দীপংকর জানান, তার বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্যাংকে না এলে আবারও তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

ওই দিন তার প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইলে ফোন দেওয়া হয়। তিনি জানান, তার স্বামী অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন। কিন্তু ওই দিন বিকেল হয়ে গেলেও দীপংকর ঘোষ ব্যাংকে উপস্থিত হননি। যার ফলে ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী সময়ে তার কার্যকলাপ সন্দেহজনক হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া।

ব্যবস্থাপক বলেন, দীপংকর ঘোষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টের টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী গত ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও থানার পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দ্বারা ভল্টের গ্রিল কেটে এবং চাঁদপুরের প্রধান শাখায় রক্ষিত ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। এরপর সবার উপস্থিতিতে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। ব্যাংকের ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী ১ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা ছিল। অর্থাৎ ক্যাশ পজিশন অনুযায়ী গণনাকালে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ কিছুদিন ধরে মাঝেমধ্যে কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে আসতেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকায় ভল্টের একটি চাবি তার কাছে থাকায় কৌশলে নিজে অথবা অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা ব্যাংকের ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন।

ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া বলেন, ‘আমি মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন। থানার পুলিশও তদন্ত করছে।’

মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ক্যাশ ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়ে ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি মামলা হয়েছে।

যৌথ বাহিনীর হাতে আটকের পরদিন দুজনের মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০১ পিএম
আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ পিএম
যৌথ বাহিনীর হাতে আটকের পরদিন দুজনের মৃত্যুর অভিযোগ
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটকের পরদিন দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের স্বজনরা। ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গভীর রাতে আটকের পরদিন দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের স্বজনরা। পুলিশ বলছে, আটকের পর অসুস্থতাজনিত কারণে তারা মারা যান। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তাদের তুলে নেওয়া হয় বলে জানান স্বজনরা।
 
নিহতরা হলেন উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দি গ্রামের সোহরাব হোসেন ওরফে আপেল (৩৫) ও শফিকুল ইসলাম (৪৫)। সোহরাব হোসেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এবং শফিকুল ইসলাম বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। 

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোহাম্মদ আসিফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আজ সকালে পুলিশ সোহরাবকে মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর পৌনে ১টার দিকে তিনি মারা যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘লাশের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।’

এদিকে শফিকুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেননি। 

সোহরাব হোসেনের চাচা মো. সুজাউদৌলা বলেন, ‘গতকাল রাত ১২টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে আমাদের বাড়িতে অস্ত্র আছে বলে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় সোহরাব হোসেন আপেলসহ সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন ওরফে সুইট (৫৫), রিয়াজুল ইসলাম রকি, শফিকুল ইসলাম (৪৫), শাহাদত হোসেন পলাশ (২৮) ও রিয়াজুল ইসলাম রকিকে (২৮) তুলে নিয়ে যায় তারা। এর মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় সোহরাব, মোশারফ হোসেন ও শাহাদত হোসেনকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মারা যান সোহরাব। অন্যদিকে শফিকুল ও রিয়াজুলকে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মারা যান শফিকুল।’

এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। 

গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইবনে মিজান খবরের কাগজকে বলেন, ‘যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় আটক দুজন অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন।’ তবে কতজনকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি জানাতে পারেননি।

সিলেট ও নেত্রকোনায় ৫৭৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ পিএম
সিলেট ও নেত্রকোনায় ৫৭৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ
সিলেটে বালুবাহী ট্রাকে মেলে ৩০০ বস্তা চোরাই চিনি। ছবি : খবরের কাগজ

বালুবাহী ট্রাকে বিশেষ কৌশলে পাচারের সময় সিলেটে চোরাইপথে আনা ৩০০ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ ছাত্র-জনতা একটি ট্রাক জব্দ করেছে। অন্যদিকে নেত্রকোনার কলমাকান্দা সীমান্তে যৌথবাহিনী ২৭৪ বস্তা চিনি জব্দ করেছে। 

সিলেটে ট্রাকভর্তি বালুর নিচে ত্রিপলে মুড়িয়ে চিনি পাচারের খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় জনতা ট্রাকটি আটক করে পুলিশে খবর দেন। তাদের উপস্থিতিতে বালুচাপা দেওয়া অবস্থায় ৩০০ বস্তা চোরাই চিনি জব্দ করে পুলিশ। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া সেরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আটক দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএমপির এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল সোমবার এসএমপির শাহ পরাণ (রহ.) থানা এলাকার জহিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একটি বালুবাহী ট্রাক আটক করেন ‘ছাত্র-জনতা’। তারা চিনিগুলো চোরাইপথে আনা ভারতীয় চিনি সন্দেহে ট্রাকটি পুলিশের হেফাজতে দেন। শাহ পরাণ (রহ.) মাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মো. আব্দুল আজিজ আটক ট্রাকটি তল্লাশি করে ৩০০ বস্তা চিনি পান। ট্রাকে বালুর নিচে ত্রিপল দিয়ে মোড়ানো ৩০০ বস্তায় প্রতিটিতে ৪৯ কেজি করে মোট ১৪ হাজার ৭০০ কেজি ভারতীয় চিনি পাওয়া যায়। যার আনুমানিক মূল্য ১৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এ ঘটনায় মামলায় চোরাই চিনির বাহক মো. রায়হান (২৫), ট্রাকচালক রতন আলী (৩২) ও হেলপার আলী হোসেনকে (২০) আসামি করা হয়। মঙ্গলবার আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

অন্যদিকে নেত্রকোনা সীমান্তের কলমাকান্দায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে জব্দ করা হয় ২৭৪ বস্তা ভারতীয় চিনি। 

মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কলমাকান্দার যৌথবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডার আসিফ প্রামাণিক নুহাশ।

গতকাল সোমবার মধ্যরাতে খবর পেয়ে রফিক মিয়ার গোডাউনে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। ওই গোডাউনে ২৭৪ বস্তা ভারতীয় চিনি পাওয়া যায়। এসব চিনির আনুমানিক মূল্য ১৬ লাখ টাকা।

‘রাস্তায় যদি কোনো আ.লীগকে দেখেন পিটিয়ে মারবেন’

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ পিএম
‘রাস্তায় যদি কোনো আ.লীগকে দেখেন পিটিয়ে মারবেন’
ভিডিও থেকে নেওয়া

‘যদি কখনো কোনো আওয়ামী লীগকে রাস্তায় দেখেন, পিটিয়ে মারবেন। ওই (শুয়ারের) বাচ্চারা আমাদের রাস্তায় বের হতে দেয়নি, বাজারে যেতে দেয়নি। আমাদের বাজার পর্যন্ত করতে দেয়নি। এত জঘন্য রাজনীতি করে তারা’। 

কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা ১ মিনিট ২ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে এসব কথা বলেন। 

গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের নিমতলা বাজারে স্থানীয় বিএনপি অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি নেতা-কর্মীদের এমন নির্দেশ দেন। রফিকুল ইসলাম রফিক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী রব্বানের ভাগিনা। 

ভিডিওতে যুবদল নেতা রফিকুল আরও বলেন, ‘বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের কাউকে তিনজন একসঙ্গে বসতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমাদের নামে গায়েবি ও নাশকতা মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই অনেক কষ্ট করেছি। তাই আপনাদের অনুরোধ করে বলব, আপনারা দলের ভেতর কোনো গ্রুপিং করবেন না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতি করবেন।’

এমন বক্তৃতার বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছর আমরা যে পরিমাণ নির্যাতনের শিকার হয়েছি, তা ভাষায় বলে বোঝানো যাবে না। সেই কষ্টের জায়গা থেকে আবেগে এসব কথা বলেছি। আবার এটুকু না বললেও তো হয় না। নেতা-কর্মীদের ধরে রাখতে গেলেও বলতে হয়।’ 

এটা প্রতিশোধপরায়ণ বক্তব্য কি না, এমন প্রশ্ন করলে তিনি আবারও বলেন, ‘এ রকম না, তবে এটুকু না বললে হয় না।’ 

এমন বক্তব্য বিএনপি সমর্থন করে কি না, জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ আব্দুল হক বলেন, ‘বিএনপি এই ধরনের বক্তব্যকে সমর্থন করে না। আমাদের এমন কোনো নির্দেশও নেই। আর নিমতলা বাজারে বিএনপির অফিস উদ্বোধনের বিষয়েও আমার কিছু জানা নেই।’