পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত তিনজন হলেন- আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের কুড়ুলিয়া (দলুয়া) এলাকার ব্যবসায়ী শেখ সেলিমের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩২) এবং দুই ছেলে সৈকত শেখ (১৪) ও সায়হাম শেখ (৮)।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন নবীন ইসলাম জাহিদ (২২) ও রিমন ইসলাম (৩০)। তাদের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা।
জানা গেছে, জাহিদ বোদা সাতখামার এলাকার এবং রিমন ইসলাম নগরকুমারী এলাকার বাসিন্দা। পলাতক অন্য দুই আসামি হলেন- বোদা উপজেলার ইসলামপুর এলাকার সাজ্জাদুর রহমান বাঁধন (২৭) ও কলেজপাড়া এলাকার রিফাত (৩২)।
পুলিশ সুপার বলেন, জাহিদ, রিমন, বাঁধন ও রিফাত ব্যবসায়ী সেলিমের বাড়িতে মুরগির খামারে কাজ করতেন। তারা খামারের বিভিন্ন খাবার ও ওষুধ চুরি করলে তাদের ছাঁটাই করা হয়। এ ঘটনায় তারা ক্ষুব্ধ ছিলেন। এর জেরে সেলিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে বুধবার রাতে জাহিদ ও রিমনসহ চারজন তার বাড়িতে যান। সেলিমকে না পেয়ে তারা প্রথমে তার ছোট ছেলে, পরে তার স্ত্রী ও বড় ছেলেকে বঁটি দিকে কুপিয়ে ও ছোরার আঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যান। সেলিম বোদা বাজারে তার কাপড়ের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে এসে তিনজনের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ গিয়ে লাশ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এদিকে জাহিদের হাতের তালু কাটা যাওয়ায় তিনি ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান। সেই তথ্য অনুযায়ী তাকে তার চাচার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পরে ব্যবসায়ী সেলিমের বাড়ির পেছনের বাঁশঝাড় থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা ছোরা উদ্ধার করা হয়।
অন্যদিকে আজ বিকেলে বোদা টিঅ্যান্ডটি এলাকা থেকে রিমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে খামারের মালিক সেলিম বাদী হয়ে আটোয়ারী থানায় নবীনকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।