ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে বন্যার্তদের পাশে ‘বন্ধুজন’, সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
লক্ষ্মীপুরে বন্যার্তদের পাশে ‘বন্ধুজন’,  সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ
মনোহরপুর গ্রামে বন্ধুজনের সুরক্ষাসামগ্রী গ্রামবাসীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ

লক্ষ্মীপুরে বন্যার্তদের পাশে সুরক্ষাসামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়েছেন খবরের কাগজের পাঠকদের সংগঠন ‘বন্ধুজন’। শুক্রবার ও শনিবার লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দুর্গম পাঁচপাড়া, জয়পুর ও উত্তর জয়পুর, দাউদপুর, জয়রামপুর ও দক্ষিণ জয়পুর গ্রামের ৪০০ পরিবারের মধ্যে এ সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হয়। 

এতে সাপের কামড় ও আতঙ্ক থেকে রক্ষায় প্রতিটি পরিবারকে একটি করে কার্বলিক অ্যাসিডের শিশি, ওরস্যালাইন, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট, ফিলমেট ট্যাবলেট, গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, এলার্জির ট্যাবলেট দেওয়া হয়। 

বন্ধুজনের সদস্য মো. জাবের আল ইসলাম রাফি, মো. সোহেল, জাকির হোসেন ও মো. হারুনুর রশিদ কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পরিমাণ পানি উপেক্ষা করে ভিজে সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেন। 

বন্ধুজনের এ উদ্যোগ এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। মনোহরপুর গ্রামের মো. মনির হোসেন নামের এক বৃদ্ধ জানান, কোনো পত্রিকা খবর প্রকাশের পাশাপাশি মানুষের বিপদের সময় পাশে এসে দাঁড়ায় এটা খবরের কাগজ পত্রিকা প্রমাণ করেছে। মো. আলমগীর নামের এ মাদ্রাসাশিক্ষক বলেন, সংগঠন বন্ধুজন যে উপকরণগুলো দিয়েছে তা আমাদের সবারই প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে যে কার্বলিক অ্যাসিডের শিশি দিয়েছে তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এলাকায় সাপের উপদ্রব ও আতঙ্ক দূর হবে।

মো. কাউছার নামের এক গ্রামবাসী জানান, খবরের কাগজ বন্ধুজনের সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণের এই উদ্যোগের প্রশংসা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

এম. রফিকুল  ইসলাম/এমএ/

রূপসী ঝরনায় নিখোঁজ দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩১ পিএম
রূপসী ঝরনায় নিখোঁজ দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
রূপসী ঝরনার গভীর কূপ থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার। ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনার গভীর কূপ থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের রূপসী ঝরনা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন- মুসফিকুর রহমান আদনান (২১) ও মাহবুব রহমান মুত্তাকিম (২১)। 

নিহতদের মধ্যে আদনান ঢাকার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও মাদারীপুরের চাষাড়া এলাকার আতিকুর রহমানের ছেলে। আর মুত্তাকিম নারায়ণগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও লক্ষ্মীপুরের মৃত মোহাম্মদ মুরাদের ছেলে।

বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী।

জানা যায়, সকালে রূপসী ঝরনায় ১৪ জন পর্যটক একসঙ্গে ঘুরতে যান। ঝরনা উপভোগের একপর্যায়ে ছবি তোলার সময় মুত্তাকিম পা পিছলে ঝরনার কূপে পড়ে যান। পরে আদনান তাকে উদ্ধার করতে গেলে তিনিও কূপে পড়ে যান। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।

মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘দুইজন পর্যটক নিখোঁজের খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থল পৌঁছায়। এরপর চট্টগ্রাম থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঝরনায় এসে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর কূপ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।’

মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের বলেন, ‘নিখোঁজের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি দল ছুটে যায়। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

সালমান/

ময়মনসিংহে ৪০ বস্তা চোরাই চিনিসহ গ্রেপ্তার ২

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২০ পিএম
ময়মনসিংহে ৪০ বস্তা চোরাই চিনিসহ গ্রেপ্তার ২
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে অভিযান চালিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা ৪০ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সদরের রঘুরামপুর এলাকা থেকে চিনি জব্দসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হলেন- নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে সেলিম মিয়া (২২) ও কুদ্দুছ আলীর ছেলে ইজাজুল ইসলাম (২০)।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা বিপুল পরিমাণ চিনি ময়মনসিংহে আনা হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা সড়কে ময়মনসিংহ সদরের রঘুরামপুর এলাকায় তাৎক্ষণিক অভিযান চালানো হয়। এসময় একটি পিকআপ তল্লাশি করে চোরাইপথে নিয়ে আসা ভারতীয় ৪০ বস্তা চিনি পাওয়া যায়। এসময় গাড়িতে থাকা ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করে চিনিসহ গাড়ি জব্দ করা হয়।

তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দিয়ে প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। চোরাকারবারি সব চক্রগুলো শনাক্ত করে ধরতে চেষ্টা চলছে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/এমএ/

ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষে জামায়াতের নেতাসহ নিহত ৩

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৫৭ পিএম
ট্রাক-ইজিবাইক সংঘর্ষে জামায়াতের নেতাসহ নিহত ৩
দুর্ঘটনাকবলিত ইজিবাইক। ছবি: খবরের কাগজ

জামালপুরে ট্রাক ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইজিবাইকের চালক ও উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতাসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে শহরের টিউবওয়েলপাড় মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন- মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়ার কাপশহাটিয়া এলাকার জয়নাল হোসেনের ছেলে ইজিবাইকচালক রোকন মাহমুদ (৪৫), ইজিবাইকের যাত্রী একই ইউনিয়নের শেখসাদী এলাকার আব্দুস সোবাহানের ছেলে আব্দুল মালেক (৫৩) এবং জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার মৃত আব্দুস সোবাহানের ছেলে ও সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও বেলটিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান (৫৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া কালিবাড়ী এলাকা থেকে একটি ইজিবাইকে তিনজন যাত্রী জামালপুর শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। ইজিবাইকটি শহরের টিউবওয়েলপাড় মোড় এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকের চালক রোকন মাহমুদ নিহত হন। খবর পেয়ে আহত তিন যাত্রীকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে আব্দুল মালেককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। 

এদিকে আহত মোস্তাফিজুর রহমান ও নাদের মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে রেফার্ড করা হয়। 

পরে ময়মনসিংহে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর যাত্রী নাদের মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।   

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বাকি দুজন হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মরদেহ আনার কাজ চলছে। চালক ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় আটক করা যায়নি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’ 

আসিফ/পপি/

মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনায় ২ পর্যটক নিখোঁজ

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৭ পিএম
মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনায় ২ পর্যটক নিখোঁজ
মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনা

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে রূপসী ঝরনার কূপে দুই পর্যটক নিখোঁজ হয়েছেন। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে নিখোঁজের এ খবর পাওয়া যায়। 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের স্টেশন অফিসার ইমাম হোসেন পাটোয়ারী খবরের কাগজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ঝরনা এলাকায় কয়েকজন পর্যটক ঘুরতে যান। ঝরনার কূপে দুই পর্যটক নিখোঁজ হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে যান।
ইমাম হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ঝরনায় দুজন পর্যটক নিখোঁজের খবরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এখনো তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

মেহরাজ/পপি/

মমেক হাসপাতাল টাকা ছাড়া মেলে না সেবা

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৫ এএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ এএম
টাকা ছাড়া মেলে না সেবা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সেবাপ্রত্যাশীরা। ইনসেটে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে এক নারী কর্মচারী (অ্যাপ্রোন পরা) টাকা নিচ্ছেন। ছবি: খবরের কাগজ

এক হাজার শয্যার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রতিদিন তিনগুণেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকে। এর বাইরে আউটডোরে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও তিন থেকে চার হাজার রোগী। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালটিতে রোগী ও তাদের স্বজনদের সেবা পেতে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়েও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। অন্যথায় সেবা পাওয়া যায় না।

ভুক্তভোগীরা জানান, হাসপাতালে রোগী আনার পর ট্রলিতে উঠানো থেকেই শুরু হয় হয়রানি ও অনিয়ম। টাকা না দিলে ট্রলি পাওয়া যায় না। বেড পাওয়াসহ সব ক্ষেত্রে আয়া, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনারসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া আউটডোরে লম্বা লাইন থাকলেও বাড়তি টাকা গুনলেই তাৎক্ষণিক টিকিট পাওয়া যায়। ১০ টাকার এই টিকিটের জন্য দিতে হয় কমপক্ষে ১০০ টাকা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৩৭টি ওয়ার্ডের বিপরীতে প্রতিদিন তিন শিফটে ৪১০ জন চিকিৎসক এবং এক হাজার ৭২ জন নার্স দায়িত্ব পালন করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী এবং গাজীপুরের রোগীরা এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন।

রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের সামনে অনিয়ম হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। টাকা না দিলে কর্মচারীদের কাছ থেকে সেবা না পাওয়ার অভিযোগ দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা আমলে নেন না। অসাধু কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলেও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় না। ফলে সব ধরনের অনিয়ম এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওয়ার্ডগুলোর মেঝে এবং বারান্দাতে বহু রোগীকে ঠাসাঠাসি করে থাকতে হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন বৃদ্ধ নারী-পুরুষসহ শিশুরা।
 
হাসপাতালের আউটডোরেও একই অবস্থা। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে হচ্ছে। তবে অনেকে লাইন ছাড়াই টিকিট নিতে অসাধু কর্মচারীদের কাছে যান। তাদেরকে নির্ধারিত মূল্যের অন্তত দশগুণ বেশি অর্থ দিয়ে টিকিট নিয়ে চিকিৎসকের কক্ষে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময়ও রোগীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। দালাল ধরে গেলে সিরিয়াল ছাড়াই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাসহ দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।

মো. মনির নামে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার এক তরুণ খবরের কাগজকে বলেন, ‘সম্প্রতি হঠাৎ ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও ভালো না হওয়ায় বড় ভাইকে নিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে যাই। লম্বা লাইন দেখতে পেয়ে এক কর্মচারীকে সরকার নির্ধারিত ১০ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা দিয়ে লাইন ছাড়াই টিকিট কেটে ডাক্তার দেখাই।’ 

বাড়তি টাকা দেওয়া ঠিক হলো কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেকে অসাধু কর্মচারী কিংবা দালালদের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলে বাড়তি টাকা দিয়ে সুবিধা নেন। তাই আমিও দিয়েছি।’

আকাশ নামে আরেকজন বলেন, ‘কিছুদিন আমার মাকে কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করেছিলাম। ওই ওয়ার্ডে রনি ও এমদাদ নামে দুই কর্মচারীকে টাকা দিয়ে খুশি রাখতে হয়। টাকা না দিলে ভেতরে গিয়ে মাকে দেখতে দেওয়া হয় না। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়েছে। মায়ের ছুটি হওয়ার পর হাসপাতালের উপপরিচালকসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে জানানো হলে তদন্তে প্রমাণ মিললে চাকরিচ্যুত করা হবে জানানো হয়। কিন্তু পরে আর তদন্তও করা হয়নি, চাকরিচ্যুতও করা হয়নি। ফলে তাদের মতো অসাধু কর্মচারীরা রোগীদের যথাযথ সেবা না দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত থাকে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগরের সভাপতি আলী ইউসুফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ট্রলিতে রোগী আনা-নেওয়া, সিট পাওয়া, লাইনে না দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ এবং বিভিন্ন টেস্ট দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার ক্ষেত্রে রোগীদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীরা এই অনৈতিক কাজে জড়িত। বাড়তি সুবিধা আদায়ের আশায় রোগী ও তাদের স্বজনদের ইচ্ছাও দুর্নীতিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত, রোগীদের ভোগান্তি কমানোর দিকে মনোযোগী হওয়া।’

রোগীদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিতে চিকিৎসকদের চেষ্টার কমতি নেই উল্লেখ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। রোগী ও তাদের স্বজনদেরও সচেতন হওয়া দরকার।