চাঁদপুরে বন্যায় কচুয়া, শাহরাস্তি, হাজীগঞ্জ এবং অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে ফরিদগঞ্জ, সদর ও হাইমচর উপজেলায় ১৯২ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৪ কালভার্ট। এতে সম্ভাব্য ক্ষতি প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তবে এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
গত কয়েক দিন বন্যা দুর্গত শাহরাস্তি, কচুয়া ও হাজীগঞ্জ উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ গ্রামীণ পাকা সড়কে পানি উঠেছে। এখন পানি কমলেও সড়কের বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় পাকা অংশ পানিতে ভেসে গেছে।
এদিকে চাঁদপুর সদর, হাইমচর ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এ কারণে এই তিন উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ পাকা সড়ক দীর্ঘ প্রায় ১ মাস ধরে পানির নিচে আছে। সড়কের ওপর দিয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে সেগুলো আরও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর ফলে সড়কগুলোর পাশের মাটি নরম হয়ে ভেঙে পড়ছে। কিছু জায়গায় সড়কের পাশে থাকা বড় বড় গাছ উল্টে পড়েছে। এতে সড়কের পাশে বড় গর্ত দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, বন্যা ও জলাবদ্ধতায় সদরে ১২টি, হাইমচরে ১০টি, হাজীগঞ্জ ৪৫টি, কচুয়ায় ২২টি, শাহরাস্তিতে ৫৩টি এবং ফরিদগঞ্জে ৫০টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৬ উপজেলায় ৪৪টি কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর ইউনিরেন পিপলকরা গ্রামের কৃষক শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘বানের পানিতে সড়কের পাশাপাশি আমাদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গর্ত হওয়ার কারণে সড়কে যানবাহন চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা বেশি।’
শাহরাস্তি উপজেলার উনকিলা গ্রামের মনির হোসেন বলেন, ‘এলাকায় বানের পানিতে বহু সড়ক তলিয়ে গেছে। এসব সড়ক ভেঙে এখন বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। তবে কিছু সড়ক আগ থেকে ভাঙা ছিল। এখন আরও বেড়েছে।’
সদরের বালিয়া ইউনিয়নের ঢালীরঘাট-ফরক্কাবাদ সড়কের বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সড়ক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনই মাটি নরম হয়ে বড় বড় গাছ উল্টে পড়েছে। একটি গাছ উল্টে আমার বসতঘরের ওপরে পড়েছে। প্রায় এক সপ্তাহ পার হলেও গাছটি কেউ কেটে অপসারণ করেনি।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলার মানিকরাজ গ্রামের মোক্তার হোসেন বলেন, ‘টানা বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন অংশ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সড়কের পাশের অংশগুলো বেশি ভেঙেছে। কিছু এলাকায় গাছ উল্টে সড়কে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান কবির বলেন, ‘বন্যার পানি এখনো পুরো নামেনি এবং জলাবদ্ধতাও রয়েছে। আমরা গ্রামীণ সড়ক ও কালভার্টের ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত করিনি। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছি। এই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। একই সঙ্গে আমরা এসব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও কালভার্ট মেরামতের সম্ভব্য ব্যয় (প্রাক্কলন) তৈরি করছি। কিছু জায়গায় মেরামত কাজ শুরু হয়েছে।’