ঢাকা ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মৃত নবজাতককে অন্য হাসপাতালে রেফার!

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম
মৃত নবজাতককে অন্য হাসপাতালে রেফার!
ছবি : সংগৃহীত

যশোরে নবজাতকের মৃত্যুর দুই ঘণ্টা পর অন্য হাসপাতালে রেফার করার অভিযোগ উঠেছে।  দুই দিনের এ নবজাতক শিশুকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। মৃত নবজাতকটি যশোর শহরতলী নোয়াপাড়া ইউনিয়নের শেখহাটি জামরুলতলা এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে।

বাবা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতক জন্মের পরে একটু অসুস্থ বোধ করলে তারা নবজাতকে নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের বিপরীত পাশে কিংস হসপিটালের ডাক্তার পলাশ কুমার পালকে দেখান। এ সময় ওই হাসপাতালের চিকিৎসক শিশুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং আলট্রাসনো করেন। কিন্তু তেমন কোনো রোগ ধরা না পড়ায় সাধারণ নিউমোনিয়া উল্লেখ করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে বলেন। গত রবিবার রাত ৮টার দিকে নবজাতকটিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে এক ইন্টার্নি চিকিৎসক ওই শিশুকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে আসছিলেন। 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, অনেক অনুরোধের পর ওইদিন রাতে ডাক্তার আফসার আলী এসে নবজাতককে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে যান। এরপর থেকে ওয়ার্ডের সেবিকারা রোগীর স্বজনদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে গতকাল সোমবার ভোর ৫টার দিকে নবজাতকের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে হট্টগোল হয় হাসপাতালজুড়ে।

এদিকে খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শিশু চিকিৎসক আফসার আলী হাসপাতালে যান। ঘটনা ধামাচাপার দেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি অন্য খাতে নিতে তিনি মৃত নবজাতকের ব্যবস্থাপত্রে ভোর ৫টার দিকে রেফারের বিষয়টি উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে স্বজনরা নবজাতককে খুলনায় নিয়ে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ করেন ওই চিকিৎসক। অথচ এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানান স্বজনরা। 

শিশুর মা শান্তা ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘দুই দিনের নবজাতককে শিশু চিকিৎসক আফসার আলী ‘হাই পাওয়ারের’ ওষুধের ডোজ দিয়েছেন। এতে নবজাতক মারা গেছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘নবজাতকের মৃত্যুর পরে চিকিৎসক জীবিত বলে খুলনায় রেফার্ড করেন।’ 

এ ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘নবজাতক শিশুকে মৃত অবস্থায় খুলনায় রেফার করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করছেন স্বজনরা। এ বিষয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’

পঞ্চগড়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৫ বাংলাদেশি আটক

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৬ এএম
পঞ্চগড়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৫ বাংলাদেশি আটক
ছবি : খবরের কাগজ

পঞ্চগড় বোদা উপজেলায় রাতের আঁধারে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের মালকাডাঙ্গা বিওপির সীমান্ত থেকে ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৭৭৫/এমপি শুয়েরপাড় থেকে তাদের আটক করে।

পরে রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী -৫৬ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেল কর্নেল শেখ মোহাম্মাদ বদরুদ্দোজা।

আটকরা হলেন, জেলার ডোমার উপজেলার বোরাগাড়ি নয়নি বাকডোগড়া গ্রামের মৃত মধূসূদনের ছেলে শ্রী নন্দকিশোর রায় (৪৫), তার ছেলে শ্রী পরিমল রায় (২১), বোরাগাড়ি নৌদাবস গ্রামের শ্রী ত্রৈলক্ষ্য রায়ের ছলে শ্রী নিত্যানন্দ রায় (২১), একই গ্রামের শ্রী বড়কান্ত চন্দ্রের ছেলে শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র (১৭), মৃত শিবেনের ছেলে শ্রী কল্যাণ রায় (২৪)।

এ সময় তাদের কাছে থাকা বাংলাদেশি ২৪ হাজার ৪১০ টাকা, ভারতীয় ৯০ রুপি, ৫টি এন্ড্রয়েড মোবাইল জব্দ করা হয়।

ঘটনার সময় টহল দলের উপস্থিতি  বুঝতে পেরে মানবপাচার চক্রের সদস্য বোদা উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেন পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন,  সীমান্ত এলাকায় বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে সীমান্ত অনুপ্রবেশের চেষ্টার মামলাসহ চক্রটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রনি মিয়াজী/জোবাইদা/অমিয়/

প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে মন্তব্য করায় বরখাস্ত সিএ

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৩ এএম
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে মন্তব্য করায় বরখাস্ত সিএ
এসএম মনিরুজ্জামান

ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের সাঁট গোপনীয় সহকারী (সিএ) এসএম মনিরুজ্জামানকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে মন্তব্য করায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

‘জেলে না গিয়ে বঙ্গভবনে শপথ নিলাম’ এই শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্বাক্ষাৎকারের অনলাইন ভার্সনে বিরূপ মন্তব্য করেন সিএ উপজেলা পরিষদের (সিএ) এসএম মনিরুজ্জামান। মন্তব্যে মনির উল্লেখ করেন, ‘আগে জেলে যাবার সম্ভাবনা ছিলো এখন ফাঁসি নিশ্চিত (যদি বাংলাদেশে জীবিত থাকেন)’। 

বিষয়টি জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমানের নজরে আসলে তিনি সিএ মনিরুজামানকে সাময়িক বরখাস্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এর পর সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়।

বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন।

মনিরুজ্জামান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের গোপনীয় সহকারী (সিএ) পদে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন।

আল-আমিন/জোবাইদা/অমিয়/

সাতক্ষীর-খুলনা-বাগেরহাটের সুন্দরবন অঞ্চল লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর আসা ঠেকাতে নাইলনের বেড়া

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৫ এএম
লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর আসা ঠেকাতে নাইলনের বেড়া
সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের সুন্দরবনের প্রাণীদের লোকালয়ে আসা ঠেকাতে নাইলনের বেড়া। ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের সুন্দরবন অঞ্চলের প্রাণীদের লোকালয়ে আসা ঠেকাতে বন ঘিরে নাইলনের বেড়া দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের এ বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ কিলোমিটার বেষ্টনী দেওয়ার কাজ চলছে। এই পদ্ধতিতে সুন্দরবনঘেঁষা লোকালয়ে বাঘ এবং অন্য বন্যপ্রাণীর আসা ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বনবিভাগ জানায়, এই বেড়া দেওয়ার ফলে মানুষ ও গবাদিপশু বন্যপ্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পাবে। আবার বণ্যপ্রাণীও আতঙ্কিত গ্রামবাসীর আঘাত থেকে রক্ষা পাবে।

বন বিভাগ আরও জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের’ অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের আওতায়ই নাইলনের বেষ্টনী দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে মাঠপর্যায়ে বেষ্টনী দেওয়ার কাজ শুরু হয়।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনের যেসব এলাকায় বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব বেশি, সেখানে বেষ্টনী দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাগেরহাটের ধানসাগর, শরণখোলা, সাতক্ষীরার কৈখালী, খুলনার কৈলাশগঞ্জসহ বনের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ কিলোমিটার এলাকায় একই ধরনের বেষ্টনী দেওয়া হবে। বেষ্টনী তদারকির জন্য ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের সদস্যদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে, যাতে বনজীবী কিংবা দুষ্কৃতকারীরা তা ছিঁড়ে না ফেলেন। কোথাও ছিঁড়ে ফেললে তারা যাতে দ্রুত বন বিভাগকে জানান, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএফও ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, ঝড় ও অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারের সময় পানি বেশি হলে বাঘ ও হরিণ মাটির কিল্লায় আশ্রয় নিচ্ছে। ক্যামেরা ট্রাপিং করে কোনো কোনো কিল্লায় বন্যপ্রাণী ওঠে, কীভাবে ওঠে, কতক্ষণ থাকে, তা নজরদারির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বনের ভেতর আরও ৮টি মাটির কিল্লা তৈরির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

নাইলনের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে খুলনা নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও পরিবেশ আন্দোলনকারী কুদরত-ই-খোদা বলেন, ‘নাইলনের বেড়া দিয়ে আর কতটুকু সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব? এ ছাড়া নাইলন পচনশীল নয়। এটি প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। এ বেড়া দিয়ে সাময়িকভাবে লোকালয়ে প্রাণীদের আসা ঠেকানো হয়তো সম্ভব। কিন্তু মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ছাড়া পশু শিকার ঠেকানো সম্ভব নয়।’

একই কথা বললেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), খুলনার সমন্বয়ক বাবুল হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের প্রাণীদের রক্ষার জন্য এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতাই যথেষ্ট। কিন্তু তাদের মধ্যে সেই আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। সুন্দরবন ও বনের প্রাণীদের রক্ষার চেষ্টা তাদের মধ্যে দেখা যায় না।’ 

এমনকি তাদের বিরুদ্ধেই হরিণ শিকারের অভিযোগে রয়েছে বলে জানান এই পরিবেশ আন্দোলনকারী। তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে সচেতনতা এবং বন বিভাগের কর্মীদের সততার প্রয়োজন প্রাণীদের রক্ষায়।’

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও পারাপার

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৯ এএম
ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও পারাপার
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু। খবরের কাগজ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকা। সেখানকার ছোট যমুনা নদীর ওপর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য বিকল্প চলাচলে তৈরি হয় কাঠের সেতু। কিন্তু সেটি এখন হয়ে উঠেছে মরণফাঁদ। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র স্রোতে সেতুটির পিলার ও পাটাতন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ঝুঁকি নিয়েই চলছে ছোটখাটো যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এদিকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেজ কর্মসূচির আওতায় ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকার ৩৪০ মিটার চেইনেজ ৯০ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৮ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৭৭২ টাকা ব্যয়ে কাজটি শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড ও এমডি সোহেল জেভি। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৮ জুলাই। এ জন্য পুরোনো সেতুটি ভেঙে দিয়ে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের জন্য পাশে বিকল্প কাঠের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানির চাপে কাঠের সেতুটির কয়েকটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ওপরের কাঠের পাটাতনেরও কিছু অংশ দেবে গেছে। কর্তৃপক্ষ যানচলাচল নিষিদ্ধ করলেও বাধ্য হয়ে চলছে সাধারণ মানুষ ও ছোট যানবাহনগুলো। 

করিয়া গ্রামের অটোরিকশা চালক মাহমুদুল হাসান রিপন বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ার কারণে কাঠের সেতু কিছু অংশের ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য এই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। আমরা যাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে শুধু গাড়ি নিয়ে পার হচ্ছি। না হলে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হবে। এটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

ধরঞ্জী গ্রামের মোটরসাইকেল চালক এনামুল হক বলেন, ‘গত কয়েক দিন বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বেড়েছে। এ কারণে কাঠের পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাটাতন বাঁকা হয়ে গেছে। যেকোনো সময় এটি পড়ে যেতে পারে।’

মালিদহ গ্রামের অটোযাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘পানি বাড়ার কারণে সেতুটির ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এই সেতু দিয়ে যাত্রী নিয়ে কোনো যানবাহন যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমরা নেমে হেঁটে যাচ্ছি। আমার এক আত্মীয়কে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে এলাম। এটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেঙে পড়তে পারে।’

পাঁচবিবি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আরিফা বলেন, ‘আমি এই পথ দিয়ে কলেজে যাই। আমার মতো এমন হাজারও শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা অনেক ভয়ের মধ্যে পারাপার হচ্ছি।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নুর ইসলাম পলাশ বলেন, ‘বিকল্প কাঠের সেতুটি এক লেন করার কথা ছিল। মানুষ এক দিক দিয়ে আসবে, এক দিক দিয়ে যাবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এটি দুই লেন করা হয়। হঠাৎ নদীর পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের মধ্যে গাছের গুঁড়ি, বর্জ্য পলিথিন, কচুরিপানা সেতুতে ধাক্কা খাওয়ায় এটি একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য মানুষ চলাচলে একটু বিঘ্ন হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা সংস্কার কাজ শুরু করেছি। পানি বেশি থাকার কারণে কাজ দ্রুত করা যাচ্ছে না। পানি কমে গেলে কাজ শেষ করতে পারব।’

এ বিষয়ে এলজিইডির পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী সামিন শারার ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা সেতুটি পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেতুটির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয়দের দাবির মুখে সেখানে একটি বেইলি ব্রিজ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতা পানি নিষ্কাশনের দাবি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৬ এএম
ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতা পানি নিষ্কাশনের দাবি
ছবি : খবরের কাগজ

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সাত গ্রামের কৃষি জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে থাকার কারণে ফসল উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা দাবি করছেন, দ্রুত কালভার্ট ও স্লুইসগেট নির্মাণ না হলে তাদের রোপিত ধান ও রবিশস্য নষ্ট হবে। প্রশাসন বলছে, অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করেছেন।

জানা গেছে, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি। স্থানীয়ভাবে রবিশস্য ও বোরো ধান চাষ করে জীবনধারণ করেন ওই এলাকার কৃষকরা। কয়েক দিন আগে অতিবৃষ্টিতে রবিশস্য- মরিচ, বাদাম, মুগের ডালসহ অন্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই ক্ষত এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি আবারও অতিবৃষ্টিতে বোপণ করা বোরো ধানের বীজ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

কলাগাছিয়া ইউনিয়নের খারিজ্জমা, কুমারখালী, দক্ষিণ ও পশ্চিম কল্যাণ কলস গ্রামের কৃষি জমি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষক আব্দুল জলিল সিকদার জানান, বিগত সময়ে সরকারি জমি দিয়ে পানি নিষ্কাশনের যে ব্যবস্থা ছিল, তা এক শ্রেণির মানুষ বাঁধ দিয়ে মাছচাষ করছে। আর কৃষিজমির পানি নিষ্কাশনের জন্য একমাত্র ভরসা ঝাটিবুনিয়া স্লুইসগেটের একটি মাত্র কপাট থাকায় দ্রুত পানি নামানো অসম্ভব। ফলে কৃষকের জমির চাষ করা ধানের চারা ও রবিশস্য ধ্বংসের মুখে। এর ফলে প্রতিবছর কৃষকরা নিঃস্ব হচ্ছে। তাই দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য কুমারখালী বটতলা এলাকায় বিকল্প কালভার্ট ও স্লুইসগেট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘খারিজ্জমার খালে অবৈধ বাঁধের কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এটি দুঃখজনক। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, ‘বৃষ্টির পানির চাপের স্লুইসগেটের একটি কপাট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও খালের মধ্যে বাঁধ দেওয়ার কারণে পানির প্রবাহ বেড়ে গিয়ে কৃষকের আমন ধান পানির নিচে রয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘গলাচিপা উপজেলার খারিজ্জমা এলাকায় জলবদ্ধতার যে অভিযোগ উঠেছে, সেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশন দিবে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

এদিকে সম্প্রতি পানি নিষ্কাশনের জন্য বিকল্প কালভার্ট ও স্লুইসগেট নির্মাণের দাবিতে ভুক্তভোগী কৃষকরা মানববন্ধন করেছেন।