বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘হাসিনার পালানোর পর নতুন এক বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে। পালিয়ে গেছে অনেক সরকারি দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তারা। আজকের এই পরিবর্তিত বাংলাদেশে এখন আর কাউকে ঘুষ দিতে হয় না। তবে অনেক ঘুষখোর কর্মকর্তা এখন কাজে অনীহা দেখাচ্ছে। ঘুষ খেতে না পারায় তারা কাজ স্লো করে দিয়েছে।’
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খাগড়াছড়ি টাউন হলে ‘ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময়’ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, খাগড়াছড়ির বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখসারির ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলামসহ জেলার সমন্বয়ক এবং সাধারণ নাগরিকরা।
সমন্বয়ক হাসনাত আরও বলেন, ভূমি, পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও বিদ্যুৎসহ প্রায় প্রতিটি সরকারি অফিসে গত ১৬ বছর ধরে লাগামহীন দুর্নীতি হয়েছে। অনিয়ম হয়েছে। ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা পায়নি সাধারণ নাগরিকরা।
ঘুষখোর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘আপনাদের কত বেতন-ভাতা দেওয়া হবে, তা জেনে-বুঝেই সরকারি চাকরিতে যোগদান করেছেন। যদি এখনো ঘুষ খাওয়ার আশা মনে পোষণ করে থাকেন, তবে চাকরি ছেড়ে চলে যান।’
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি এই সরকারের মেয়াদে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠিত হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ সকল খাতে দুর্নীতি সমূলে উৎপাটন করা হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এমন করা হবে যে, রাষ্ট্রপতি যেখানে চিকিৎসা নেবেন, সেখানে একজন দিনমজুর, একজন তাঁতী কিংবা একজন রিকশাওয়ালা চিকিৎসা নিতে পারবেন। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে শিক্ষাব্যবস্থাটা এমন হবে যে, একজন মন্ত্রীর ছেলে যেখানে পড়ালেখার সুযোগ পাবে, সেখানে একজন সাধারণ মানুষের সন্তানও পড়ালেখার সুযোগ পাবে। কোনো ক্ষেত্রেই কোনো দুর্নীতি থাকবে না। থাকবে না বৈষম্য।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমাদেরকে হিন্দু-মুসলিম কিংবা পাহাড়ি-বাঙালির বিভাজনে ব্যস্ত রেখে আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। কারণ তারা জানত, জনগণকে বিভাজিত করে না রাখলে সমাজ এবং রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা চলে আসবে। আর রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা আসলে জনগণ সরকারকে প্রশ্ন করা শুরু করে দেবে।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, পাহাড়ের মানুষ যুগ যুগ ধরে অধিকারবঞ্চিত। পাহাড়ের শান্তিপ্রিয় জনগণকে বিভিন্নভাবে বিভাজন করে অপ-রাজনীতি করেছে আওয়ামী লীগ। সময় এসেছে বৈষম্য দূর করার। পাহাড়ে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’