গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গভীর রাতে আটকের পরদিন দুজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাদের স্বজনরা। পুলিশ বলছে, আটকের পর অসুস্থতাজনিত কারণে তারা মারা যান।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তাদের তুলে নেওয়া হয় বলে জানান স্বজনরা।
নিহতরা হলেন উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দি গ্রামের সোহরাব হোসেন ওরফে আপেল (৩৫) ও শফিকুল ইসলাম (৪৫)। সোহরাব হোসেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এবং শফিকুল ইসলাম বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মোহাম্মদ আসিফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আজ সকালে পুলিশ সোহরাবকে মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার শরীরে মারধরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর পৌনে ১টার দিকে তিনি মারা যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘লাশের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।’
এদিকে শফিকুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেননি।
সোহরাব হোসেনের চাচা মো. সুজাউদৌলা বলেন, ‘গতকাল রাত ১২টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে আমাদের বাড়িতে অস্ত্র আছে বলে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় সোহরাব হোসেন আপেলসহ সাঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন ওরফে সুইট (৫৫), রিয়াজুল ইসলাম রকি, শফিকুল ইসলাম (৪৫), শাহাদত হোসেন পলাশ (২৮) ও রিয়াজুল ইসলাম রকিকে (২৮) তুলে নিয়ে যায় তারা। এর মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় সোহরাব, মোশারফ হোসেন ও শাহাদত হোসেনকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মারা যান সোহরাব। অন্যদিকে শফিকুল ও রিয়াজুলকে বগুড়ার শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মারা যান শফিকুল।’
এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইবনে মিজান খবরের কাগজকে বলেন, ‘যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় আটক দুজন অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন।’ তবে কতজনকে আটক করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি জানাতে পারেননি।