ঢাকা ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪

চিকিৎসককে মারধরের জেরে সেবা বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগীরা

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম
চিকিৎসককে মারধরের জেরে সেবা বন্ধ, ভোগান্তিতে রোগীরা
চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি আট শতাধিক রোগী। ছবি : খবরের কাগজ

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও ওয়ার্ডকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। জরুরি সেবা চালু থাকলেও তা সীমিত। সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি আট শতাধিক রোগী।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে কাজে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।

হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষে ভাঙচুর চালান। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে টেনহিঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারধর করতে থাকেন। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপরই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। 

বুধবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কর্মবিরতি পালন করায় বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ডেঙ্গুসহ নানা রোগের প্রায় আট শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন। 

ডেঙ্গু পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজন খালেদ হোসেন আবরার জানান, চিকিৎসা বন্ধ থাকায় তারা চরম আতঙ্কিত সময় পার করছেন। নার্সরা কিছুটা সেবা দিলেও চিকিৎসক না আসায় তারা চিন্তিত।

আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। যেভাবে তাদের সহকর্মীর ওপর হামলা হয়েছে, তাতে তার মৃত্যু হতে পারত। তাই যতক্ষণ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হবে ততক্ষণ তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।

এদিকে দুপুর ১২টা থেকে হাসপাতালে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। হামলার বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে রোগী মারা গেছেন তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল ছিল। তাকে কার্যকর সেবা দেওয়ার জন্য স্বজনদের দরকার হয়। কিন্তু ওই সময় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু আমাদের চিকিৎসক সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, যার কোনো ঘাটতি ছিল না। এরপরও চিকিৎসকের ওপর হামলা করা হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সেবা তারা শুরু করেছেন।’ 

এদিকে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসাধীন প্রায় ৮০০ রোগী বিপাকে পড়েছেন। অনেকে পার্শ্ববর্তী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। তবে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ থাকলেও সেবা চালু আছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।

সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয় চিকিৎসাসেবা বন্ধ নিয়ে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে দুজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জরুরি সেবা চালু করা হয়েছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

জরুরি সেবা চালুর কথা বলা হলেও চেম্বারগুলোতে চিকিৎসকদের অবস্থান নেই, এমন বিষয়টি তার নজরে আনা হলে তিনি বলেন, সেবা শুরু হয়েছে, হয়তো চেয়ারে দেখা যাচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হলেও চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন কেন, এমন প্রশ্নে সিভিল সার্জন বলেন, এই বিষয়টি তার জানা নেই।

যশোরের তিন মহাসড়ক বেহাল

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৯ এএম
যশোরের তিন মহাসড়ক বেহাল
যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাঠি এলাকা যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খবরের কাগজ

যশোরের তিনটি মহাসড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মহাসড়কগুলোর প্রায় ৫০ কিলোমিটার অংশে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিশেষ করে মোটরসাইকেল ও ছোট যানবাহনগুলো দুর্ঘটনার সম্মুখীন বেশি হচ্ছে। এমনকি ঘটছে প্রাণহানিরও ঘটনা। আর বড় যানবাহনের মালিকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। অনেক বাস ও ট্রাক সড়কের গর্তের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যাচ্ছে। এতে মৃত্যুসহ অনেকে পঙ্গু হচ্ছেন। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও তা কাজে আসছে না। কাজের মান খারাপ ও অতিবৃষ্টিতে সড়কগুলো আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। 

স্থানীয়রা জানান, ভাঙাচোরা সড়কে জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে পুরো পিচই (বিটুমিন) উঠে গেছে। ফলে বিটুমিন দিয়ে সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষ করে যশোর থেকে উত্তরবঙ্গের সড়কপথে যাতায়াতের একমাত্র পথ যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের চুড়ামনকাঠি বাজার অংশে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

যশোরের সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর-খুলনা মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের নাভারণ থেকে বগআঁচড়া পর্যন্ত সাত কিলোমিটার, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কালীগঞ্জ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া যশোর-ঢাকা মহাসড়কের মনিহার অংশে এক কিলোমিটার সড়ক বেহাল রূপ নিয়েছে। তবে ভাঙাচোরা সড়কের বিস্তার আরও বেশি। এসব সড়কের মধ্যে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান রয়েছে। 

যশোর সওজ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-খুলনা ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কে সৃষ্ট গর্তগুলো ইট দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। যা বৃষ্টি হলেই বড় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে ইটের আদলা ও খোয়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে গোটা সড়কে। খানাখন্দ ও ইটের আদলা, খোয়াভর্তি এসব সড়কে চলাচল করতে গিয়ে যাত্রীরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া সড়কগুলো চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনেরও যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। 

যশোর সদরের চুড়ামনকাঠি বাজারের মুদি দোকানি শাহাবুদ্দিন আহমেদ শিহাব বলেন, ‘গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের চুড়ামনকাঠি বাজার অংশের মহাসড়কের বেহাল দশা। এখানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছিল। বিভিন্ন সময় খোয়া দিয়ে মেরামত করে গেলেও তা টেকসই হয়নি। সর্বশেষ কিছুদিন আগে পুরো বাজার অংশের সড়কটিতে ইটের সলিং করে রেখে চলে গেছে। এখন প্রতিনিয়ত এখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।’

এ সড়কে নিয়মিত থ্রি-হুইলার চালান মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে খানাখন্দ আর ভাঙা ইটের টুকরোর কারণে দুর্ভোগ বেড়েছে। এতে গাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি যাত্রীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়কে ভাঙা ইটের অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় মোটরসাইকেল ও তিন চাকার যানবাহনগুলো বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়।’

বেসরকারি চাকরিজীবী দেবাশীষ বসু রানা বলেন, ‘যশোর-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে নিয়মিত অফিস করতে হয়। প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিগত দিনে সড়ক সংস্কারের নামে টেন্ডারবাজি এবং দুর্নীতি করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, শুধু এ সড়ক নয়, আমাকে যশোর-সাতক্ষীরা, যশোর-নড়াইল-ঢাকা সড়কসহ জেলার বিভিন্ন মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও তা মেরামত ও স্থায়ী সংস্কার করতে সড়ক বিভাগ বারবার ব্যর্থ হয়েছে।’

যশোরের শার্শা উপজেলার সাইদুজ্জামান জনি নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, ‘যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের অবস্থা বেহাল। চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। তার পরও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। একবার মোটরসাইকেল পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। দুর্ঘটনা অহরহ ঘটছে।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া বলেন, চলতি বছর অতিবৃষ্টিতে যশোরের বিভিন্ন মহাসড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে যশোর-খুলনা, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বেশকিছু অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এগুলো আমরা জরুরি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে থাকি। 

এ বছর যশোর-খুলনা মহাসড়কে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার ঢালাই কাজের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মহাসড়ক জরুরি সংস্কারের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে সাত কোটি টাকার চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জরুরি সংস্কারের ক্ষেত্রে মহাসড়কগুলোতে ইটের কাজ করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে বিটুমেনের কাজ করা যায় না। জনগণের দুর্ভোগ কমাতে আমরা সড়কগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে ইট দিয়ে প্রাথমিক সংস্কারকাজ করে থাকি।’ 

কটিয়াদীতে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৩ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
কটিয়াদীতে ৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর সদরে পুরোনো বাজারে বসছে ঐতিহাসিক ঢাকের হাট। ছবি : খবরের কাগজ

প্রতিবছরের মতো এবারও দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বসছে ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক ঢাকের হাট। দিনভর এই হাটে ঢাকিরা বাদ্যযন্ত্র বাজান। বিভিন্ন জেলা থেকে পূজারিরা ছুটে আসেন এখান থেকে ঢাকিদের বায়না করতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ৩০০ ঢাকি হাটে এসেছেন। তাদের থাকার জন্য বাজারে একটি বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। তবে শৌচাগারের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বাজার শুরুর পর থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে টহল দিচ্ছে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। 

জনশ্রুতি রয়েছে, ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে স্থানীয় রাজা নবরঙ্গ রায় তার প্রসাদে সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজার আয়োজন করতেন। কটিয়াদী উপজেলার চারিপাড়া গ্রামে ছিল তার অট্টলিকা। 

প্রাসাদে আয়োজিত দুর্গাপূজার জন্য দেশসেরা ঢাকিদের সন্ধান করতে বিভিন্ন জায়গায় তিনি ডাকযোগে চিঠিপত্র পাঠিয়ে আমন্ত্রণ জানাতেন। রাজার আমন্ত্রণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঢাকিরা জড়ো হতেন পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে। রাজা সশরীরে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের থেকে বাছাই করে ঢাকিদের নিয়ে যেতেন প্রাসাদে এবং উপযুক্ত সম্মানী দিতেন।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাটটি স্থানান্তরিত হয়ে বর্তমানে সেটি কটিয়াদী পৌর সদরের পুরাতন বাজারে বসছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অন্য ধর্মের মানুষের কাছেও এই হাটটি ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। দূর-দূরান্ত থেকে বাদকদের বাজনা শুনতে উন্মুখ হয়ে থাকেন স্থানীয়রা।

হাটে আসা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল মনি দাস বলেন, ‘ঠাকুরদা গোরা চাঁদমনি দাসের আমল থেকে ঢাকঢোল বাজিয়ে আসছি। সঙ্গে আমার ছেলেরাও হাটে এসেছে। ভালো বায়না পেলে কারো বাড়িতে যাব।’

মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার বলমন্তচরের বাসিন্দা সুশীল মনি দাস বলেন, ‘আমি টানা ১২ বছর ধরে এই হাটে ঢাকঢোল নিয়ে আসি। ৬০ বছর বয়স হয়েছে, তবুও ঢাক না বাজালে ভালো লাগে না।’ 

পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনি কুমার সাহা বলেন, ‘কটিয়াদীতে প্রতিবছর পূজার তিন দিন আগে এখানে ঢাকঢোলের হাট বসে। হাটটি ইতিহাসের দিক থেকে অনেক পুরোনো। আমরা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঢাকিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিই।’ কটিয়াদী পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবুজিৎ সাহা বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহ্যবাহী ঢাকের হাট। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পূজারিরা এসে ঢাকিদের বায়না করে নিয়ে যান।’

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ধ্রুবরঞ্জন দাস খবরের কাগজকে বলেন, ‘হাটটিতে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শৌচাগারের প্রয়োজন। একটি বিশ্রামাগার তাদের জন্য তৈরি করা হলেও সেটির কাজ অসমাপ্ত থেকে গেছে। আমরা এলাকাবাসী হিসেবে চাই, এখানে আগত ঢাকিদের জন্য প্রশাসন থেকে সার্বিক সুবিধা দেওয়া হোক।’ 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘হাটে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সেজন্য ঢাক বাজার কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখা হচ্ছে। আশা করছি, প্রতিবারের মতো এবারও সুশৃঙ্খলভাবে হাটের সব কার্যক্রম শেষ হবে।’

ঢাক বাজার সমিতির সভাপতি শীতল সাহা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা এখানে পূজারিদের ঠিকানা ও ঢাকিদের ঠিকানা লিখে রাখি। কোনো পক্ষের সঙ্গে কোনো সমস্যা বা ঝামেলার সৃষ্টি হলে সেই বিষয়গুলো আমরা দেখি। মূলত একেকটি দল ৫০ হাজার থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকায় বায়না হয়। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ১২ জন অথবা ১৫ জন থাকে।’

সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুর্নীতি অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ
ছবি : খবরের কাগজ

গাইবান্ধা সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলার বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। তারা শহরের ডিবি রোড গানাসাস মার্কেটের সামনে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের নেতা মনজুর আলম মিঠু, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি প্রণব চৌধুরী খোকন, বাসদ জেলা আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী, সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের জেলা সভাপতি মোস্তফা মনিরুজ্জামান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সম্পাদক রেবতী বর্মণ, সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক নওশাদুজ্জামান নওশাদ, জাতীয় কৃষক সমিতির জেলা সভাপতি আশরাফ আলী, বাসদ জেলা সদস্যসচিব সুকুমার মোদক, সিপিবির জেলা সদস্য এমদাদুল হক মিলন, বাসদ মার্কসবাদীর জেলা সদস্য রাহেলা সিদ্দিকা, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন জেলা সংগঠক কনক রায়, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের জেলা সদস্য জুয়েল মিয়া, সাম্যবাদী আন্দোলন জেলা সদস্য সবুজ মিয়া, তাপস রায় প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভূমি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদনে অতিরিক্ত টাকা আদায়, জাল দলিল, টাকার বিনিময়ে ভলিয়ম ও বালাম বই ছিঁড়ে ফেলা, একই পে-অর্ডার দাখিল করে একাধিক দলিল সম্পূর্ণ করার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবিলম্বে অনিয়ম-দুর্নীতি বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। 

তারা ক্ষতিগ্রস্ত ক্রেতাদের ক্ষতিপূরণ এবং জাল দলিল হওয়া জমির আসল দলিল ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। সমিতির নামে অতীতে উত্তোলন করা সব টাকা ফিরিয়ে দেওয়াসহ অবৈধভাবে টাকা আদায়কারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এ সময় রেজিস্ট্রেশন বাবদ সরকার নির্ধারিত ফি অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ করাসহ অতিরিক্ত টাকা আদায়কারীদের শাস্তির দাবি করা হয়।

ময়মনসিংহে চিরকুট আতঙ্ক!

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩১ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
ময়মনসিংহে চিরকুট আতঙ্ক!
বাড়ির গেটে ঝুলিয়ে রাখা একটি চিরকুট। ছবি : খবরের কাগজ

বাড়ির গেটে ঝুলিয়ে রাখা একটি চিরকুটে লেখা ছিল ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। এই টাকা না দেওয়ায় এক দিন পর আরেকটি চিরকুট দিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। এতেও কাজ না হলে আবারও চিরকুটের মাধ্যমে হত্যার হুমকিসহ স্ত্রী-সন্তানদের ক্ষতি করার কথা বলা হয়। ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাথপাড়া মহল্লায় ঘটেছে এমন ঘটনা। একের পর এক হুমকির চিরকুট পেয়ে মহল্লার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। যদিও পুলিশ বলছে, অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

স্থানীয়রা জানান, নরসুন্দা নদীর কারণে উপজেলার অন্য এলাকা থেকে এই জায়গাটি প্রায় বিচ্ছিন্ন। গত ১ অক্টোবর একই মহল্লার সুনীল চন্দ্র বর্মণের বাসার ফটকে ৫০ হাজার টাকা চেয়ে কে বা কারা চিরকুট ফেলে রেখে যায়। টাকা না দেওয়ায় এক দিন পর এক লাখ টাকা দাবি করে আরেকটি চিরকুট রেখে যায়। এতেও কোনো সাড়া না পেয়ে তৃতীয় চিরকুটে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।

গত রবিবার একই মহল্লায় বসবাস করা বন কর্মকর্তা মো. আল-আমিনের বাসায় ৫০ হাজার টাকা দাবি করে চিরকুট ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। চিরকুটে দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে শিক্ষিকা স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের ক্ষতি করার হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই দিন রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। 

চিরকুট পাওয়ার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ভয়ে অনেকেই কথা বলতে রাজি হননি। তবে ওই মহল্লার আচারগাঁও উত্তরপাড়ার মোজ্জাম্মেল হক জানান, তার ভগ্নিপতি বন কর্মকর্তা মো. আল-আমিন কর্মস্থল ঢাকায় থাকেন। নান্দাইলের ওই মহল্লার বাড়িতে মোজ্জাম্মেল হকের বোন সালমা বেগম, আড়াই বছরের এক ভাগ্নে ও বোনের শাশুড়ি বসবাস করেন। বোন কাছাকাছি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।

নৌকা ব্যবহার করে সালমা বেগম প্রতিদিন নদী পার হয়ে মাদ্রাসায় যান। গত রবিবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির ফটক লাগানোর সময় সেখানে পলিথিন মোড়ানো একটি কাগজ ঝুলতে দেখতে পান। কৌতূহলবশত পলিথিন খুলে ভেতরের হুমকির চিরকুট পাওয়া যায়। কাগজটিতে লেখা ছিল, ‘চাহিদামতো টাকা না পেলে বাড়িতে আগুন জ্বলবে এবং স্ত্রী-সন্তানের ক্ষতি হবে।’ টাকাগুলো বাড়ির কাছে বাঁধা নৌকায় রেখে দিতে বলা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘চিরকুট দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছে। অনেকে ভয়ে রাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।’ আসাদ মিয়া নামে আরেকজন বলেন, ‘কয়েক দিনের মধ্যেই একাধিক চিঠি পেয়েছি। এটি নিঃসন্দেহে আতঙ্কের। ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ এই কাজটি যারা করছে, দ্রুত তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, যারা চিরকুট দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত পাটকেলঘাটার অর্ধশত গ্রামের মানুষ দিশেহারা

প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
পাটকেলঘাটার অর্ধশত গ্রামের মানুষ দিশেহারা
নিজ বসতবাড়ির ধ্বংসস্তূপের ওপরে দাঁড়িয়ে প্রতিবন্ধী হাফিজুল-শেফালী দম্পতির একমাত্র সন্তান সাব্বির সরদার। সাব্বির নিজেও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার নগরঘাটা থেকে তোলা। খবরের কাগজ

হাফিজুল হোসেন ও শেফালী খাতুন দম্পতি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানা এলাকার নগরঘাটায় বসবাস করেন। দুই শতক জমির ওপর নির্মিত মাটির একটি ঘরই ছিল তাদের শেষ সম্বল। সম্প্রতি টানা বৃষ্টিপাত ও বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তাদের এলাকা প্লাবিত হয়। এতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর এই দম্পতিকে আশ্রয়স্থল হারাতে হয়।

স্বামী-সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভাতার টাকায় কোনো রকমে সংসার চলত শেফালীর। একই সঙ্গে ইট ভাটায় কাজ করে শ্রমে-ঘামে মাটির ঘরে তৈরি করেন প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। তবে এর কোনটাই রক্ষা করতে পারেননি শেফালী। এক কাপড়ে স্বামী, সন্তান নিয়ে তাকে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতে হয়।

সরেজমিনে হাফিজুল-শেফালীদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে ধ্বংসস্তূপের ক্ষত। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় পানি নেমে গেলেও এখনো প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রিত অবস্থায় দিন পার করছেন তারা। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে মেলেনি কোনো সহায়তা। টাকা না থাকায় নতুন করে ঘর বানাতে পারছেন না। এতে ঘরবাড়ি হারিয়ে এই দম্পতি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

শেফালী খাতুন জানান, একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে বেতনার বাঁধ ভেঙে তাদের এলাকা প্লাবিত হয়। এতে প্রচণ্ড পানির তোড়ে ঘটনার দিন দুপুরে বসতবাড়ি ভেঙে যায়। সে দিন তারা ঘর থেকে যে কাপড় নিয়ে বের হয়েছিলেন, সেগুলোই এখন একমাত্র সম্বল। কোনো রকমে স্বামী-সন্তান নিয়ে প্রাণে বাঁচলেও রক্ষা করা সম্ভব হয়নি গৃহস্থালির আসবাবপত্র।

ক্ষোভ প্রকাশ করে শেফালী বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তার হাত বাড়ায়নি। বাঁচলাম কী মরলাম কেউ খোঁজ রাখেনি। গত কয়েক দিন ধরে মানুষের দেওয়া খাবার খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি। স্বামী-সন্তানের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা আর নিজের পরিশ্রমের অর্থ দিয়েও যেখানে পেটের খাবার জোগানো দায়, সেখানে সহায়তা ছাড়া নতুন করে ঘর বানানো আমার পক্ষে সম্ভব না।

শুধু হাফিজুল-শেফালি দম্পতির বসতবাড়ি নয়। একদিকে বৃষ্টি অপরদিকে বেতনার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার ফলে নগরঘাটা এলাকাসহ ৫০টি গ্রামের অধিকাংশ মাটির ঘরের একই দশা। বেতনা নদীর নিকটবর্তী হওয়ায় নগরঘাটা এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা বেশি। এখানকার মাটির ঘর বলতে শুধু ধ্বংসস্তূপের চিহ্ন। ঘরবাড়ি, গাছপালা, শৌচাগার, হাঁস-মুরগির খোয়াড় সব ভেঙে পড়ে আছে। ঘর ভেঙে মিশে গেছে মাটির সঙ্গে।

এমনই একজন নগরঘাটা এলাকার ভ্যানচালক আব্দুর রহমান। গত ২৭ সেপ্টেম্বর বসতবাড়ি হারানোর পর থেকে গোয়ালঘরে বসবাস করতে হচ্ছে তাকে। আব্দুর রহমান বলেন, ঘর বাড়ি ভেঙে যাওয়ার পর কিছুদিন অন্যের জমিতে থাকতে হয়েছে। পরে প্রতিবেশীদের নানান সমস্যা হওয়ায় সেখানে আর থাকা হয়নি। নতুন করে ঘর নির্মাণ কিংবা সংস্কার করার অর্থ আমার ছিল না। এ জন্য উপায়ন্তর না পেয়ে ভ্যানের ব্যাটারি বিক্রি করে গোয়ালঘরে থাকার পরিবেশ তৈরি করি। এখন স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে থাকতে পারলেও অনাহারে দিন কাটছে। তার ওপর ভ্যানের ব্যাটারি বিক্রি করায় আয়ের উৎসও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

একই এলাকার নাসিরউদ্দিন বলেন, এলাকার সবার মতো তার মাটির ঘরটিও ভেঙে গেছে। বর্তমানে অন্যের আশ্রয়ে রয়েছেন। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে কোনো সহায়তা না পাওয়াতে মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন তিনি।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাই তার বক্তব্য জানা যায়নি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ভারী বর্ষণের কারণে ১৭ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। চার দিন পর ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেন। তবে ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সংস্কার করা বাঁধ আবারও ভেঙে যায়। পরে ২৯ সেপ্টেম্বর বাঁধটি মেরামত করা সম্ভব হলেও ততক্ষণে বেতনার পানিতে প্লাবিত হয় কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম। এ সময় পানির তোড়ে পড়ে অধিকাংশ মাটির ঘর ভেঙে মাটিতে মিশে যায়।