ঢাকা ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন সাব্বির

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পিএম
৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হার মানলেন সাব্বির
সাব্বির হোসেন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ কুমিল্লার সাব্বির হোসেন (১৯) গত ৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। 

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টার দিকে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ী এলাকায় নিজ নানার বাড়িতে মৃত্যু হয় তার। 

নিহত সাব্বির হোসেনের বাড়ি জেলার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল এলাকায়। তবে ছোটবেলা থেকেই নানাবাড়ি দেবিদ্বারের ভিংলাবাড়ীতে মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মরিচাকান্দা জিয়া স্মৃতি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার সাব্বিরের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরতে অটোরিকশা চালাতেন তিনি। 

সাব্বিরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের দিন শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবরে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই দিন বিকেলে মিছিল করতে দেবিদ্বার থানার দিকে যান মিছিলকারীরা। এ সময় পুলিশ থানার ছাদে উঠে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকলে ১৫-১৬ জন মিছিলকারী গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে সাব্বিরের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুলি লাগে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তার মাথার ভেতরে গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে অস্ত্রোপচার করে সাব্বিরের মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। পরে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন সাব্বির। কিছুদিন পর ঢাকা মেডিকেল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে দেবিদ্বার ভিংলাবাড়ী মাসহ ফিরে আসেন তিনি। শনিবার সকালে হঠাৎ খারাপ লাগছে বলে মাকে জানান সাব্বির। পরে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাব্বিরের নানা অসিউল মিয়া বলেন, ‘সাব্বিরের তিন ভাইবোনের মধ্যে সে সবার বড়। দুই বছর আগে তার বাবা মারা গেছে। এরপর সাব্বির সংসারের হাল ধরতে অটোরিকশা চালানো শুরু করে। তার মৃত্যুতে আমরা এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।’

সাব্বিরের মামা নাজমুল হক বলেন, ‘সাব্বিরকে নিষেধ করছিলাম আন্দোলনে না যেতে। কিন্তু সে শোনেনি। ৫ আগস্ট সকালে নিউ মার্কেট চত্বরে গেলে গোলাগুলি শুরু হলে সাব্বিরের মাথায় গুলি লাগে। পরে আমরা তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কুমিল্লা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ঢাকায় পাঠান। গত তিন দিন আগে তাকে বাড়িতে আনা হয়। আজ সকালে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সে মার যায়। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা করেছি। আমি সরকারের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।’ 

দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘সাব্বিরের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আমরা তার নানার বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে তার লাশের ময়নাতদন্তের জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু স্থানীয় লোকজন আমাদের বাধা দিয়ে জানান, তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করবেন। পরে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সাব্বিরের লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে থানায় ফিরে আসি।’

ইলিশের দাম ৭ হাজার!

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
ইলিশের দাম ৭ হাজার!
কুয়াকাটার স্থানীয় মাছ বাজারে সোয়া দুই কেজির একটি ইলিশ মাছ প্রায় সাত হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ছবি: খবরের কাগজ

কুয়াকাটায় দুই কেজি ২৮০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রায় সাত হাজার টাকায়।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে কুয়াকাটার স্থানীয় জেলে মো. আলমাসের জালে ধরা পড়ে ইলিশটি। 

পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারের মনি ফিস আড়তে মাছটি নিয়ে যান তিনি। সেখানে নিলামে ওঠানো হলে ফিশ ভ্যালীর পক্ষে মো. হাসান ছয় হাজার ৮৪০ টাকায় ইলিশটি কিনেন।

মো. আলমাস বলেন, মাছ ধরার উদ্দেশে সাগরে গিয়ে বরাবরের মতো হাইর নামক স্থানে জাল ফেলি। এ সময় এ বড় মাছটি আমাদের জালে ধরা পড়ে। বড় মাছের দামও একটু বেশি হয়। সাগরে এমনিতেও এখন বেশি মাছ মিলছে না। তবে বড় মাছ পেলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালো থাকতে পারি।

মনি ফিস আড়তের ব্যবসায়ী রুবেল ঘরামি বলেন, এত বড় মাছ এই বাজারে খুব কম পাওয়া যায়। তাই নিলামে মাছটি ছয় হাজার ৮৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘এটি আসলেই ভালো খবর। এ সাইজের মাছ মূলত গভীর সমুদ্রের থাকে, সমুদ্রের মোহনায় পলি পরার কারণে গভীরতা কমে যাচ্ছে, তাই সমুদ্র মোহনা খনন এবং জালের প্রশস্ততা বাড়ালে এ মাছ বেশি ধরা পড়বে।’

হাসিবুর রহমান/সাদিয়া নাহার/

পঞ্চগড়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৫ বাংলাদেশি আটক

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৬ এএম
পঞ্চগড়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ৫ বাংলাদেশি আটক
ছবি : খবরের কাগজ

পঞ্চগড় বোদা উপজেলায় রাতের আঁধারে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় পাঁচ বাংলাদেশিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাতে উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের মালকাডাঙ্গা বিওপির সীমান্ত থেকে ১০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৭৭৫/এমপি শুয়েরপাড় থেকে তাদের আটক করে।

পরে রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী -৫৬ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেল কর্নেল শেখ মোহাম্মাদ বদরুদ্দোজা।

আটকরা হলেন, জেলার ডোমার উপজেলার বোরাগাড়ি নয়নি বাকডোগড়া গ্রামের মৃত মধূসূদনের ছেলে শ্রী নন্দকিশোর রায় (৪৫), তার ছেলে শ্রী পরিমল রায় (২১), বোরাগাড়ি নৌদাবস গ্রামের শ্রী ত্রৈলক্ষ্য রায়ের ছলে শ্রী নিত্যানন্দ রায় (২১), একই গ্রামের শ্রী বড়কান্ত চন্দ্রের ছেলে শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র (১৭), মৃত শিবেনের ছেলে শ্রী কল্যাণ রায় (২৪)।

এ সময় তাদের কাছে থাকা বাংলাদেশি ২৪ হাজার ৪১০ টাকা, ভারতীয় ৯০ রুপি, ৫টি এন্ড্রয়েড মোবাইল জব্দ করা হয়।

ঘটনার সময় টহল দলের উপস্থিতি  বুঝতে পেরে মানবপাচার চক্রের সদস্য বোদা উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মনোয়ার হোসেন পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন,  সীমান্ত এলাকায় বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে সীমান্ত অনুপ্রবেশের চেষ্টার মামলাসহ চক্রটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রনি মিয়াজী/জোবাইদা/অমিয়/

প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে মন্তব্য করায় বরখাস্ত সিএ

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪৩ এএম
প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে মন্তব্য করায় বরখাস্ত সিএ
এসএম মনিরুজ্জামান

ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদের সাঁট গোপনীয় সহকারী (সিএ) এসএম মনিরুজ্জামানকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে মন্তব্য করায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

‘জেলে না গিয়ে বঙ্গভবনে শপথ নিলাম’ এই শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্বাক্ষাৎকারের অনলাইন ভার্সনে বিরূপ মন্তব্য করেন সিএ উপজেলা পরিষদের (সিএ) এসএম মনিরুজ্জামান। মন্তব্যে মনির উল্লেখ করেন, ‘আগে জেলে যাবার সম্ভাবনা ছিলো এখন ফাঁসি নিশ্চিত (যদি বাংলাদেশে জীবিত থাকেন)’। 

বিষয়টি জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমানের নজরে আসলে তিনি সিএ মনিরুজামানকে সাময়িক বরখাস্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। এর পর সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনিরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়।

বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা ইয়াসমিন।

মনিরুজ্জামান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের গোপনীয় সহকারী (সিএ) পদে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন।

আল-আমিন/জোবাইদা/অমিয়/

সাতক্ষীর-খুলনা-বাগেরহাটের সুন্দরবন অঞ্চল লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর আসা ঠেকাতে নাইলনের বেড়া

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০৫ এএম
লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর আসা ঠেকাতে নাইলনের বেড়া
সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের সুন্দরবনের প্রাণীদের লোকালয়ে আসা ঠেকাতে নাইলনের বেড়া। ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের সুন্দরবন অঞ্চলের প্রাণীদের লোকালয়ে আসা ঠেকাতে বন ঘিরে নাইলনের বেড়া দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের এ বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ কিলোমিটার বেষ্টনী দেওয়ার কাজ চলছে। এই পদ্ধতিতে সুন্দরবনঘেঁষা লোকালয়ে বাঘ এবং অন্য বন্যপ্রাণীর আসা ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে বনবিভাগ জানায়, এই বেড়া দেওয়ার ফলে মানুষ ও গবাদিপশু বন্যপ্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পাবে। আবার বণ্যপ্রাণীও আতঙ্কিত গ্রামবাসীর আঘাত থেকে রক্ষা পাবে।

বন বিভাগ আরও জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৩ মার্চ ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের’ অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এর মেয়াদ ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের আওতায়ই নাইলনের বেষ্টনী দেওয়া হচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে মাঠপর্যায়ে বেষ্টনী দেওয়ার কাজ শুরু হয়।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও প্রকল্প পরিচালক ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, সুন্দরবনের যেসব এলাকায় বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব বেশি, সেখানে বেষ্টনী দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাগেরহাটের ধানসাগর, শরণখোলা, সাতক্ষীরার কৈখালী, খুলনার কৈলাশগঞ্জসহ বনের প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ কিলোমিটার এলাকায় একই ধরনের বেষ্টনী দেওয়া হবে। বেষ্টনী তদারকির জন্য ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিমের সদস্যদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে, যাতে বনজীবী কিংবা দুষ্কৃতকারীরা তা ছিঁড়ে না ফেলেন। কোথাও ছিঁড়ে ফেললে তারা যাতে দ্রুত বন বিভাগকে জানান, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ডিএফও ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, ঝড় ও অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোয়ারের সময় পানি বেশি হলে বাঘ ও হরিণ মাটির কিল্লায় আশ্রয় নিচ্ছে। ক্যামেরা ট্রাপিং করে কোনো কোনো কিল্লায় বন্যপ্রাণী ওঠে, কীভাবে ওঠে, কতক্ষণ থাকে, তা নজরদারির চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বনের ভেতর আরও ৮টি মাটির কিল্লা তৈরির প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

নাইলনের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে খুলনা নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও পরিবেশ আন্দোলনকারী কুদরত-ই-খোদা বলেন, ‘নাইলনের বেড়া দিয়ে আর কতটুকু সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব? এ ছাড়া নাইলন পচনশীল নয়। এটি প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর। এ বেড়া দিয়ে সাময়িকভাবে লোকালয়ে প্রাণীদের আসা ঠেকানো হয়তো সম্ভব। কিন্তু মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ছাড়া পশু শিকার ঠেকানো সম্ভব নয়।’

একই কথা বললেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), খুলনার সমন্বয়ক বাবুল হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের প্রাণীদের রক্ষার জন্য এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিকতাই যথেষ্ট। কিন্তু তাদের মধ্যে সেই আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। সুন্দরবন ও বনের প্রাণীদের রক্ষার চেষ্টা তাদের মধ্যে দেখা যায় না।’ 

এমনকি তাদের বিরুদ্ধেই হরিণ শিকারের অভিযোগে রয়েছে বলে জানান এই পরিবেশ আন্দোলনকারী। তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে সচেতনতা এবং বন বিভাগের কর্মীদের সততার প্রয়োজন প্রাণীদের রক্ষায়।’

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও পারাপার

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৯ এএম
ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার পরও পারাপার
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু। খবরের কাগজ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকা। সেখানকার ছোট যমুনা নদীর ওপর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য বিকল্প চলাচলে তৈরি হয় কাঠের সেতু। কিন্তু সেটি এখন হয়ে উঠেছে মরণফাঁদ। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তীব্র স্রোতে সেতুটির পিলার ও পাটাতন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও ঝুঁকি নিয়েই চলছে ছোটখাটো যানবাহনসহ হাজার হাজার মানুষ। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এদিকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। 

জানা গেছে, প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেজ কর্মসূচির আওতায় ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বড় মানিক এলাকার ৩৪০ মিটার চেইনেজ ৯০ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৮ কোটি ৫৭ লাখ ১১ হাজার ৭৭২ টাকা ব্যয়ে কাজটি শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড ও এমডি সোহেল জেভি। কাজটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের ৮ জুলাই। এ জন্য পুরোনো সেতুটি ভেঙে দিয়ে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের জন্য পাশে বিকল্প কাঠের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানির চাপে কাঠের সেতুটির কয়েকটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ওপরের কাঠের পাটাতনেরও কিছু অংশ দেবে গেছে। কর্তৃপক্ষ যানচলাচল নিষিদ্ধ করলেও বাধ্য হয়ে চলছে সাধারণ মানুষ ও ছোট যানবাহনগুলো। 

করিয়া গ্রামের অটোরিকশা চালক মাহমুদুল হাসান রিপন বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ার কারণে কাঠের সেতু কিছু অংশের ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য এই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। আমরা যাত্রীকে নামিয়ে দিয়ে শুধু গাড়ি নিয়ে পার হচ্ছি। না হলে প্রায় ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হবে। এটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

ধরঞ্জী গ্রামের মোটরসাইকেল চালক এনামুল হক বলেন, ‘গত কয়েক দিন বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি বেড়েছে। এ কারণে কাঠের পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাটাতন বাঁকা হয়ে গেছে। যেকোনো সময় এটি পড়ে যেতে পারে।’

মালিদহ গ্রামের অটোযাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘পানি বাড়ার কারণে সেতুটির ভয়াবহ অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। এই সেতু দিয়ে যাত্রী নিয়ে কোনো যানবাহন যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে আমরা নেমে হেঁটে যাচ্ছি। আমার এক আত্মীয়কে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে এলাম। এটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেঙে পড়তে পারে।’

পাঁচবিবি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আরিফা বলেন, ‘আমি এই পথ দিয়ে কলেজে যাই। আমার মতো এমন হাজারও শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা অনেক ভয়ের মধ্যে পারাপার হচ্ছি।’

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি নুর ইসলাম পলাশ বলেন, ‘বিকল্প কাঠের সেতুটি এক লেন করার কথা ছিল। মানুষ এক দিক দিয়ে আসবে, এক দিক দিয়ে যাবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এটি দুই লেন করা হয়। হঠাৎ নদীর পানি বাড়ায় তীব্র স্রোতের মধ্যে গাছের গুঁড়ি, বর্জ্য পলিথিন, কচুরিপানা সেতুতে ধাক্কা খাওয়ায় এটি একটু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য মানুষ চলাচলে একটু বিঘ্ন হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা সংস্কার কাজ শুরু করেছি। পানি বেশি থাকার কারণে কাজ দ্রুত করা যাচ্ছে না। পানি কমে গেলে কাজ শেষ করতে পারব।’

এ বিষয়ে এলজিইডির পাঁচবিবি উপজেলা প্রকৌশলী সামিন শারার ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা সেতুটি পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সতর্কতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সেতুটির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয়দের দাবির মুখে সেখানে একটি বেইলি ব্রিজ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’