কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসককে হামলার প্রতিবাদ ও দোষীদের দ্রুত বিচার এবং চিকিৎসকদের কর্মস্থলে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করা চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ দিন পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আন্দোলনরত চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ এবং সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে চিকিৎসকরা এ সিদ্ধান্ত জানান।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি শাহ তালাল মাহমুদ দিহান বলেন, ‘কক্সবাজারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা ৫ দিনের জন্য কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি। যা আজ (রবিবার) বিকেল ৩টা থেকে কার্যকর হবে। আমরা চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চাই। কিন্তু ৫ দিনের মধ্যে আমাদের দাবির অগ্রগতি না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘রোগীর স্বজন দ্বারা ডা. সজীব কাজীকে মারধরের ঘটনায় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগের ফলে তাৎক্ষণিক ব্যাটালিয়ন আনসার মোতায়েন করতে পেরেছি। এখন থেকে ১২ জন আনসার মোতায়েন থাকবে তার মধ্যে ৬ জন অস্ত্রধারী থাকবে। পুলিশের একটা স্থায়ী ক্যাম্প করার ব্যবস্থা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ সার্বক্ষণিক টহল দেবে এবং যৌথ বাহিনীর টহলও রয়েছে। এভাবেই নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা জড়িত ৪ জনকে আটক করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মামলা হওয়ার আগে থেকেই কিন্তু আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদেরও ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হন ডা. সজীব কাজী নামের এক চিকিৎসক। হামলার শিকার সজীব হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সিসিইউতে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষ ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারতে থাকেন। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপরই হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর থেকে জরুরি বিভাগ ছাড়া সব চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল।