কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) ও সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরিষদের সামনের সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণ করে প্রভাবশালীদের বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগ করেছেন উপজেলার সেকান্দরনগর ইউনিয়নের ধলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আলী হায়দার।
অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা পরিষদসংলগ্ন (তাড়াইল-নান্দাইল) মহাসড়কের রাস্তা দখল করে সাবেক ইউএনও আল মামুনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দশটি দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি দোকান বরাদ্দের জন্য ৯ জনের কাছ থেকে এককালীন ২ লাখ করে মোট ১৮ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। যেখানে সরকারি কোনো নিয়ম মানা হয়নি। সওজের সড়কটি ৭০ ফুট প্রশস্ত হলেও দোকান তৈরির পর ৩০ ফুট আছে। এতে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং জনসাধারণের চলাচলের ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানানা, সওজের জায়গায় সরকারি আমলা দোকান করে প্রভাবশালীদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন অথচ তাদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা করেননি। উপজেলার সামনে ছোট ছোট দোকান নিয়ে কিছু লোকজন প্রতিদিন বসেন। তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করাসহ দোকান ভাঙচুর করে উঠিয়ে দেওয়া হতো।
শুধু সাবেক ইউএনও নন। উপজেলার সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম এসব দোকান ঘর নির্মাণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন। তাড়াইল জামে মসজিদ মার্কেটের দোহাই দিয়ে দোকান ঘরগুলো নির্মাণ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া জন্য একাধিকবার তার মোবাইলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তাড়াইল উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, দোকানগুলো (জাইকা) প্রকল্পের আওতায় তাড়াইল উপজেলায় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে উপজেলার সাবেক ইউএনও আল মামুন নথিভুক্ত করেছেন। সেখানে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে প্রত্যেককে ৬ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আল মামুন বলেন, ‘সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে আগে থেকেই এখানে মার্কেট ছিল। আমরা নতুন করে সংস্কার করে দিয়েছি। আপনি যদি সড়কের ৭০ ফুট জায়গা দখলমুক্ত করতে চান তা হলে থানা, ভূমি অফিস, মসজিদ, ব্যাংক, মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে সেগুলো সড়কের জায়গা দখল করে করা হয়েছে। আমরা যখন দোকানের কাজ করি তখন এ বিষয়ে কেউ কিছুই বলেনি। দোকান বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা করে নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘সড়ক ও জনপথের জায়গায় যে দোকান ঘর নির্মাণ করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেই সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। এভাবে দোকান ঘর নির্মাণের জন্য সওজের কোনো জায়গা ইজারা দেওয়া যায় না। সার্ভেয়ার দিয়ে সড়ক মাপার পর দেখা গেছে দোকানগুলো সড়কের জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’