ঢাকা ২৪ মাঘ ১৪৩১, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১

ডাকাত থেকে আ.লীগ নেতা জমি দখল, চাঁদাবাজি করে শত কোটি টাকার মালিক আলমগীর

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১০ এএম
আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৯ এএম
জমি দখল, চাঁদাবাজি করে শত কোটি টাকার মালিক আলমগীর
সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আলমগীর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

একসময় করতেন ডাকাতি। পরে শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে এখন প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক নারায়ণগঞ্জের ‘সাইনবোর্ডের ক্যাডার’খ্যাত আলমগীর হোসেন। অভিযোগ রয়েছে, জমি দখল, চাঁদাবাজি আর কিশোর গ্যাং গড়ে তুলে স্থানীয়দের হয়রানি করতেন তিনি। এমনকি আন্দোলনের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাতে জড়িত ছিলেন সাবেক এমপি শামীম ওসমানের এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের মাহমুদপুর এলাকার ফজর আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন পুলিশের তালিকায় বহু আগে থেকেই চাঁদাবাজি মামলার আসামি। এক দশক আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজামের হাত ধরে তার রাজনীতিতে আসা। এরপর শ্রমিক লীগের নেতা থেকে হয়ে যান কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১নং ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক। ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন দুর্ধর্ষ ক্যাডার। নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকা। সেখানে পরিবহন ও স্ট্যান্ড বসিয়ে চাঁদা তুলতেন আলমগীর। সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় দোকান বসিয়ে নিতেন নিয়মিত চাঁদা। সে সময় পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশ থাকায় ভূইগড়, মাহমুদপুরসহ আশপাশের এলাকায় বিচার-সালিশ চলতো তার কথায়। স্থানীয়দের হয়রানি করতে আলমগীরের ছিল বিশাল কিশোর গ্যাং। তার বিরুদ্ধে গেলেই হামলা চালাতো ওই গ্যাংয়ের সদস্যরা।

স্থানীয়রা আরও জানায়, জমি দখল, চাঁদাবাজি করে আলমগীর এখন প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই দেওয়া হয় একের পর এক মামলা। এরপর বাড়িঘর ভাঙচুরসহ হামলা চালায় তার নিয়ন্ত্রণে থাকা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ভূইগড় ও মাহমুদপুরেই আলমগীরের দোতলা ও চারতলার দুটি বাড়ি রয়েছে। কোটি টাকা মূল্যের কয়েকটি জায়গারও মালিক তিনি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে দখলে রেখেছেন অন্যের সম্পত্তি। এমনকি জোর করে দখলে নিয়েছেন স্বজনদের সম্পত্তিও। মাহমুদপুর এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী ইমতিয়াজ আহাম্মেদের তিন কোটি টাকা মূল্যের জমি নামমাত্র দামে জোর করে লিখিয়ে নিয়েছিলেন আলমগীর। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে তার বাড়িতে গিয়ে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করেন ওই ব্যবসায়ী।

আলমগীর হোসেনের চাচাতো ভাই ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আলমগীর রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল। এটি সবাই জানে। সাইনবোর্ডে পরিবহন, অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি করত নিয়মিত। শামীম ওসমানের ক্ষমতার প্রভাবে ও শাহ নিজামের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় এলাকার বহু মানুষের জায়গা-জমি আলমগীর দখল করেছে। এমনকি আমাকেও ছাড় দেয়নি। আমার জায়গায় দখল করে দেয়াল দিয়ে রেখেছে।’

আলমগীরের বাড়ির পাশে থাকা জমির মালিক র‌্যাবের সাবেক উপপরিদর্শক শাহ আলী বলেন, ‘২০০৩ সালে আমি এখানে ৬ শতাংশ জমি কিনেছিলাম। আলমগীর আমার সেই জমি দখল করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালায়। এমনকি তার বাবা ফজর আলীকে দিয়ে জাল ওয়ারিশনামা তৈরি করে এসিল্যান্ড অফিসে মিথ্যা মামলা করে। এ ছাড়া চাচা মোহাম্মদ আলীকে দিয়েও আদালতে আরও একটি মামলা করে, যেন জমি বিক্রি করতে না পারি।’

এলাকার বহু মানুষের জায়গা আলমগীর দখল করেছে উল্লেখ করে শাহ আলী আরও বলেন, ‘জমি দখলের পর আলমগীর জমি কেনার জন্য প্রস্তাব পাঠায়। তবে সেটা স্বল্প মূল্যে। আলমগীরদের অত্যাচারে ও হামলা-মামলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল এলাকাবাসী।’

ভূইগড়ের স্থানীয় বাসিন্দা শিখা আক্তার বলেন, ‘আমার চারতলা বাড়িসহ পুরো জমিটি মাত্র ৬০ লাখ টাকা দিয়ে আলমগীর লিখে নিয়েছে। অথচ আমার সেই ভিটের দামই এক কোটি টাকার বেশি। তাকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম, আমার বাড়িটি ছাড়া আর কিছু নেই। আলমগীর কোনো কথা না শুনে হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জমিটা দখল করে।’

শুধু জমি দখলই নয়, বিচারের নামে নারীদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে শারীরিকভাবে অত্যাচারেরও অভিযোগ রয়েছে আলমগীরের বিরুদ্ধে। ভূইগড় এলাকার গৃহবধূ রত্না খাতুন বলেন, ‘আমার শ্বশুরবাড়িতে কয়েকজন ভাড়াটিয়া থাকেন। তাদের সঙ্গে ভাড়ার টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। সেই ঘটনার সালিশ করার জন্য আমাকে ডেকে নেয় আলমগীর। এক পর্যায়ে সে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এমনকি কুপ্রস্তাবও দেয়।’

আলমগীরের অপকর্ম এখানেই শেষ নয়। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাইনবোর্ড থেকে মৌচাক পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় এই আলমগীর। তবে গত ৫ আগস্টের পর আলমগীর পালিয়ে গেলেও এখনো তার সহযোগীরা স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে। এ ছাড়া এই আলমগীর ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যায় সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন। তিনি জানান, আলমগীরের বিরুদ্ধে হত্যাসহ অন্তত ৯টি মামলার তথ্য রয়েছে। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে খুঁজছে। দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।

এ নিয়ে জানতে আলমগীরের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়ার পরও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার স্বজনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই মিথ্যা।’

শত্রুতা করে এক একর জমির কাঁচা ধানগাছ কেটে দিল প্রভাবশালী

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম
শত্রুতা করে এক একর জমির কাঁচা ধানগাছ কেটে দিল প্রভাবশালী
কেটে ফেলা কাঁচা ধানগাছ। ছবি: খবরের কাগজ

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় শত্রুতা করে মো. আশিক মিয়া (৪২) নামে এক কৃষকের তিন কানি (এক একর ৫ শতাংশ) জমির কাচা ধানগাছ কেটে নষ্ট করে দিয়েছে স্থানীয় এক প্রভাবশালী। 

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার গুণধর ইউনিয়নের কদিমমাইজহাটি গ্রামের সামনের বড়হাওরে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছেন। কৃষক বাদি হয়ে করিমগঞ্জ থানায় মামলা করারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কদিমমাইজহাটি গ্রামের প্রভাবশালী আবুল কাশেম ওরফে কানা কাশেম বৃহস্পতিবার দুপুরে সাত আটজন লোক নিয়ে বড়হাওরে গিয়ে কৃষক আশিক মিয়ার কাচা ধানক্ষেত কেটে নষ্ট করে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক আশিক মিয়ার অন্তত ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

কৃষক আশিক মিয়ার অভিযোগ, ‘আমার গ্রামের প্রভাবশালী প্রতিবেশী আবুল কাশেম ওরফে কানা কাশেম (৬০) আমাকে ও আমার ভাইদেরকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিল। আমার এক ভাইকে মেরেও ফেলা হয়েছে। ১৭ বছর আগে আমার বাবা মারা গিয়েছেন। কয়েকদিন ধরে মিথ্যা দাবি তুলেছেন আমার বাবার কাছে নাকি তিনি মোটা অংকের টাকা-পয়সা পেতেন। অথচ আমার বাবা মারা যাওয়ার সময়, অথবা এর পরে এসব টাকা পয়সা পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আমাদের কাছে বা কারো কাছে বলেননি। এতদিন পর টাকা চাওয়ায় আমরা এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলি। এ কারণে শক্তি দেখিয়ে তিনি আমার জমির কাঁচা ধান কেটে নষ্ট করে দিয়েছেন। আমি এর বিচার চাই।'

গুণধর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সায়েম রাসেল ভূঁইয়া বলেন, ‘কারো কাছে টাকা-পয়সা পাওনা থাকলে গ্রামের লোকজন আছে, সমাজ আছে, আইনকানুন আছে। কিন্তু এভাবে জমির কাঁচা ধান কেটে ফেলে দেওয়া ঠিক হয়নি। এতে তো অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।’ 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবুল কাশেম বলেন, ‘কীসের টাকা-পয়সা, এইটা আমার জমি। এই জমি এখন আমি ভোগ করব। ২৫ বছর আগে এই জমি তার (আশিকের) বাপের কাছ থেকে মৌখিকভাবে আমি কিনেছি। এ জমির ধান কাটব নাকি রাখব এটা আমার বিষয়।’

করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব মোরশেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তাসলিমা আক্তার মিতু/মাহফুজ 

 

আজীবন বহিষ্কৃত নেতাকে প্রধান করে সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মসূচি

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
আজীবন বহিষ্কৃত নেতাকে প্রধান করে সিলেটে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মসূচি
ছবি: খবরের কাগজ

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে গত ২০২৩ সালের ২১ জুন আওয়ামী লীগের অধীনে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় আজীবন বহিষ্কার করা হয় সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনিরকে। এই বহিষ্কার আদেশ এখনো প্রত্যাহার না হলেও তাকে সাংগঠনিক দল প্রধান করে থানা কমিটি করেছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। তবে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী দাবি করেছেন তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ২০২৩ সালের ৫ জুন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪৩ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। আজীবন বহিষ্কার তালিকায় ছিল সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনিরের নাম। কারণ তিনি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থী ছিলেন। তবে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হলেও তাকে সাংগঠনিক দল প্রধান করে কমিটি করেছে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল।

সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল সূত্রে জানা যায়, স্বেচ্ছাসেবক দল সিলেট শাখার অধীনে থানা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সেজন্য ৬টি থানায় সাংগঠনিক টিম গঠন করে দিয়েছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। এই ৬ থানার একটি বিমানবন্দর থানা। এই বিমানবন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের টিম প্রধান করা হয়েছে উসমান হারুন পনিরকে। এ কমিটি গত বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীতে আলোচনা সভার আয়োজন করে। উসমান হারুন পনিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় অংশ নেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী ও সদস্য সচিব আফসর খান। 

এদিকে আজীবন বহিষ্কৃত নেতা নিয়ে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের এক যুগ্ম আহ্বায়ক খবরের কাগজকে বলেন, আজীবন বহিষ্কার করে, আবার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করে দায়িত্ব দেওয়া সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। দুর্দিনে ব্যক্তিগত স্বার্থে যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তাদের পদায়ন করা দুঃখজনক। আর যদি তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয় তাহলে সেটা কেন প্রকাশ করা হলো না। 

সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও কয়েকজন কর্মী খবরের কাগজকে বলেন, উসমান হারুন পনিরের মত সুবিধাবাদী নেতারা সবসময় নিজের স্বার্থ বুঝেন। তিনি কখনোই দল বা দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জন্য কাজ করবেন না। দলে আবার দুঃসময় আসলে দেখা যাবে তিনি আবার নিজের খোলস পরিবর্তন করেছেন। তিনি আজীবন বহিষ্কৃত হওয়ার পরও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্বশীলরা তাকে কমিটির প্রধান পদ দিলেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভি তাকে বহিষ্কার করেছেন। যদি আমাদের নেতা তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে থাকেন তাহলে আমরা তৃণমূলের নেতা কর্মীরা কেন সেটা জানি না। 

এ বিষয়ে সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। এটা প্রকাশ হয়নি কারণ এটা আমাদের সংগঠনের ভিতরের খবর। আমরা জানি উনার বহিষ্কার আদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি প্রত্যাহার করেছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব আমাদেরকে জানিয়েছেন তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার হয়েছে। এরপরই আমরা তাকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়েছি।

শাকিলা ববি/এমএ

 

হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বাড়ি পুড়াল ছাত্র-জনতা

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
হাতিয়ার সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বাড়ি পুড়াল ছাত্র-জনতা
ছবি: খবরের কাগজ

নোয়াখালীর বিছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে নোয়াখালী-৬ হাতিয়া আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বাড়ি। 

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড লক্ষীদিয়া বড় পোল ও পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড ব্রিকফিল্ড বাজারের পাশে অবস্থিত দুটি বাড়ীতেই আগুন দেওয়া হয়। এতে মোহাম্মদ আলীর দুটি বাড়ির অধিকাংশ পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। এর আগে রাত ১১ টার দিকে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা স্লোগান দিয়ে এসে বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করলে মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করেন। এতে উভয় পক্ষে হামলায় ইটপাটকল নিক্ষেপ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়। পরে রাত ২টার পর মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা চলে গেলে আগুন দেওয়া হয় তার বাসায়। 

এদিকে একই সময় আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে মোহাম্মদ আলীর মালিকানার যাত্রীবাহী ট্রলার। এতে নলচিরা ঘাট তীরে অবস্থন করা ৪টি ট্রলার ও ৫টি স্পীডবোট পুড়ে ছাঁই হয়ে গেছে। রাত ১২টার সময় দুবত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। ৫ আগস্টের পরে এসব ট্রলার ও স্পীড বোট নলচিরা ঘাট তীর বেঁধে রাখা হয়েছিল।

এই বিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে এম আজমল হুদা বলেন, রাতের অন্ধকারে বৈষম্যবিরাধী ছাত্র-জনতা সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর বাসভবন হামলা ও অগ্নিসংযাগ করে। পরে তারা নলচিরা ঘাটেও স্পীডবোট ও ট্রলারে আগুন লাগিয়ে দেয়।

হানিফ সাকিব/মাহফুজ

শাওন ও মির্জা আজমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
শাওন ও মির্জা আজমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
জামালপুরে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বাবার বাড়িতে এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

জামালপুরে অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনের বাবা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলীর এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রথমে সদর উপজেলার নরুন্দিতে মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র- জনতা। এরপর জামালপুর শহরের বকুলতলা এলাকায় মির্জা আজমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার নেতারা শেখ হাসিনার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার আহ্বায়াক মীর ইসহাক হাসান ইখলাস জানান, পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, আমরা চাই যেন কোনো প্রকার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাই আমরা ফায়ার সার্ভিসে ফোন করে আগুন নেভানোর জন্য বলেছি।

এ ব্যাপারে জানার জন্য জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আসমাউল আসিফ/সুমন/

মুক্তিপণে ফিরেছে টেকনাফে অপহৃত ৫ জন

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম
মুক্তিপণে ফিরেছে টেকনাফে অপহৃত ৫ জন
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

কক্সবাজারে টেকনাফের পাহাড়ী এলাকায় জ্বালানি কাঠ সংগ্রহকালে অপহৃত পাঁচজনকে দুইদিন পর ছেড়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। তবে তাদের ছাড়িয়ে আনতে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ প্রদান করেছে স্বজনরা।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে অপহৃতদের ৫ জনকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী পাহাড়ের পাদদেশে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হুমায়ুন কাদের চৌধুরী।

অপহৃতরা হলেন- টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মাঠ পাড়া ও বাইন্ন্যা পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হকের ছেলে মারুফ উল্লাহ (১৮), মোহাম্মদ হাসানের ছেলে মোহাম্মদ কাইফ উল্লাহ (১৭), হামিদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ ইসা (২৮), মৃত কালা মিয়ার ছেলে ইউসুফ উল্লাহ (৩০) এবং শফিউল আজমের ছেলে মো. আবুইয়া (২০)।

গত বুধবার সকালে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মাঠ পাড়া ও বাইন্ন্যা পাড়া এলাকার ১৫ জন লোক স্থানীয় পাহাড়ে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে যান। এক পর্যায়ে স্থানীয় চাকমা পাড়া সংলগ্ন এলাকার পূর্ব পাশের পাহাড়ী এলাকায় একদল দূর্বৃত্ত অস্ত্রের মুখে তাদের জিন্মি করে। পরে তাদের মধ্যে ৫ জনকে জিন্মি রেখে অন্যদের ছেড়ে দেয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ুন কাদের চৌধুরী বলেন, ঘটনার ২ দিন পার হলে দূর্বৃত্তরা তাদের ছেড়ে দেয়। এর আগে বুধবার রাতে অপহৃতদের ছেড়ে দিতে স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে কয়েক দফায় আলোচনা করে ৫ জনের পরিবার মোট ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ পাঠানোর পর এদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন স্বজনরা। 

তবে মুক্তিপণের টাকা কী প্রক্রিয়ায় কাকে পাঠানো হয়েছে বিস্তারিত বলেছেন না স্বজনরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর থেকে পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধারে টেকনাফের বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছিল। এক পর্যায়ে এদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্বজনরাও মুক্তিপণ প্রদানের কোনো তথ্য পুলিশকে জানায়নি। ৫ জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এই নিয়ে গত ১৩ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২২৪ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে একইসময়ে উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে ৮৭ জনকে অপহরণ করা হয়।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/মাহফুজ