ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্যসংকটের কারণে কুড়িগ্রামের চিলমারী-রৌমারী নৌপথের ফেরি চলাচল আবার বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) গত শুক্রবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে চিলমারী-রৌমারী ফেরিঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী গাড়ির চালক ও ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এর আগেও একাধিকবার নাব্যসংকটের কারণে এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর চিলমারী-রৌমারী রুটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের পর থেকে ওই রুটে কুঞ্জলতা নামে একটি ফেরির যাতায়াত শুরু করে। সপ্তাহখানেক পর বেগম সুফিয়া কামাল নামে আরও একটি ফেরি এই রুটে যোগ হয়। দুটি ফেরি দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকসহ নিয়মিত যাত্রী পারাপার করা হয়। ওই রুটে নিয়মিত ফেরি চালু রাখতে নদী খননের জন্য একটি স্ট্যান্ডিং টিম থাকার কথা। ঘাটে ড্রেজিং জাহাজ দেখা গেলেও খননকাজ করতে দেখা যায় না। ফলে প্রায়ই শুষ্ক মৌসুমে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়।
বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানায়, গত প্রায় ১০ দিন ধরে ফেরিগুলো চলাচলের সময় নাব্যসংকটে সমস্যায় পড়ে। তবে দুই ঘাটের পণ্যবাহী অসংখ্য ট্রাকের কথা বিবেচনা করে ফেরির মাস্টাররা কমসংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে পারাপার করছিলেন। কিন্তু গত শুক্রবার রৌমারী ঘাট এলাকায় একটি ফেরির নিচের অংশ নাব্যসংকটের কারণে আটকে যায়। এতে কর্তৃপক্ষ ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
চিলমারী নদীবন্দর এলাকায় দেখা গেছে, চিলমারী বন্দর ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় অর্ধশতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ঘাট থেকে শুরু করে চিলমারীর মাটি কাটা মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় গাড়ির সারি। পার হতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-চালকসহ অন্যরা।
এসব গাড়ির চালক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে দুই দিন আবার কেউ কেউ তিন-চার দিন ধরে নদী পার হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। ভুরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে পাথর নিয়ে আসা ট্রাকচালক শাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে অপেক্ষায় থেকেও সিরিয়াল মেলেনি। আমাদের আগে অনেক গাড়ি দাঁড়ানো ছিল। এর মাঝে হঠাৎ করে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লোড গাড়ি নিয়ে রাস্তার ওপর থাকতে হবে। খরচ হবে অনেক। কবে ফেরি চালু হবে তাও নিশ্চিত না। খুব বিপদে পড়ে গেলাম।’
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান জানান, ব্রহ্মপুত্রের ঘাটে পানি কমে যাওয়ায় নাব্যসংকট দেখা দিয়েছে। ফেরি চলাচলের রুটে প্রায় দুই হাজার ফিট এলাকা ড্রেজিং শুরু করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৮০০ ফিট খনন করা গেছে। বাকি অংশ ড্রেজিং হলে ওই চ্যানেল দিয়ে সহজে ফেরি চলাচল করতে পারবে।
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত গভীরতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টাও করা হচ্ছে। আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে।’