ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৯ পিএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩০ এএম
মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে রাজশাহী
রাজশাহীতে শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহীতে চারদিন ধরে অধিকাংশ সময় দেখা মিলছে না সূর্যের। সেইসঙ্গে ঘন কুয়াশা ও হিমশীতল বাতাসে জেঁকে বসেছে শীত।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় হাত-পা জমে যাওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, শুক্রবার সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই এবার জেলায় শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শুক্রবার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। এর ফলে উত্তরের এই জেলায় শীত আরও বেড়ে গেছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের উচ্চ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, ‘তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সে অনুযায়ী শুক্রবার থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এটি কয়দিন থাকবে তা বলা যাচ্ছে না।’

মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরুর পর ভোর থেকে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে রাজশাহী। এর সঙ্গে বয়ে চলেছে উত্তরের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। এতে কাবু হয়ে পড়েছে পথে-প্রান্তরে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো। সূর্যের মুখ খুব একটা দেখা না যাওয়ায় রোদের উত্তাপ না পেয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।

দিনভর কুয়াশাঢাকা প্রকৃতি পেরিয়ে সন্ধ্যা নামতেই আবারও অসহনীয় হয়ে উঠছে শীতের দাপট। শহর-নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এখন শীতের কাঁপুনি বেশি অনুভূত হচ্ছে। গ্রামের মানুষের জন্য এই শীতের তীব্রতা বয়ে এনেছে বাড়তি কষ্ট ও দুর্ভোগ। হিমেল বাতাস আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

এ দিকে শীত নামলেও রাজশাহীতে সরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সালাহ উদ্দীন আল ওয়াদুদ বলেন, আমাদের কাছে এখনও শীতবস্ত্র বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ এলে জেলার সবখানেই তা বিতরণ করা হবে।

এ ছাড়া, হঠাৎ করে আবারও শীতের প্রকোপ বাড়ায় কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। শীত যতই বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। শিশু ও বয়স্করাই অন্যদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে নবজাতক শিশুরা বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বয়সের শিশু ও বয়স্করাও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর-সর্দি, কাশি ও হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বলে জানান এ চিকিৎসক।

অন্যদিকে শীত বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না মানুষ। ফলে শহরের রাস্তাঘাটেও মানুষের চলাচল কিছুটা কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোরে সূর্য উঠতে দেরি করায় কুয়াশার ভেতর খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে নিম্নআয়ের মানুষকে।

অপরদিকে, রাজশাহীর মাঠজুড়ে এখন চলছে রবিশস্যের আবাদ। সরিষা, টমেটো, শিম, লাউ, শালগম, বাঁধাকপি, আলু থেকে শুরু করে একাধিক রবি ফসল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

অনেক ফসল ঘরে তোলার সময়ও হয়েছে। কিন্তু সপ্তাহ ধরে টানা কুয়াশায় অনেক ফসলেই বেড়েছে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ। এ কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে রবিশস্যের ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ জানায়, কুয়াশার কারণে ধানের চারা হলদে হয়ে যেতে পারে। সরিষায় বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া আলুর পাতায় মড়ক লাগার আশঙ্কা আছে। সাধারণত এ সময় আম গাছে মুকুল আসে। তাই ভালো ফলন পেতে বাড়তি যত্ন নিতে হবে। এসব বিষয়ে সমাধান পেতে নিকটস্থ কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে সমাধান নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের আক্রমণসহ নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। এভাবে বেশিদিন ঘন কুয়াশা থাকলে রবি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

এনায়েত করিম/নাবিল/এমএ/

টেকনাফ পাহাড়ে বন্য হাতির মৃত্যু

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম
টেকনাফ পাহাড়ে বন্য হাতির মৃত্যু
টেকনাফের পাহাড়ে মৃত বন্য হাতি। ছবি: খবরের কাগজ

কক্সজারের টেকনাফে গহীন পাহাড় থেকে একটি বন্য হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বনবিভাগ ধারণা করছেন মাদী হাতিটির আনুমানিক বয়স (১৫)। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা নুনাছড়া খাল নামক পাহাড়ি এলাকা থেকে মৃত হাতিটি উদ্ধার করা হয়। 

টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ বলেন, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার সময় হ্নীলা বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুনা খাল নামক পাহাড়ি এলাকায় একটি বন্য হাতির মৃত্যুর সংবাদ পাই। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাটিতি পাহারা দেওয়া হয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে শনিবার সকালে গিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে হাতিটি মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

মেহেদী/

মহানবী (সা:) সংখ্যালঘুর ওপর জুলুমকারীর বিপক্ষে দাঁড়াবেন: আজহারী

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
মহানবী (সা:) সংখ্যালঘুর ওপর জুলুমকারীর বিপক্ষে দাঁড়াবেন: আজহারী
ইসলামী বক্তা ও আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারী।ছবি: খবরের কাগজ

জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ও আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারী হাদিসের উদ্ধৃত করে বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুম, নির্যাতন কিংবা ভয়ভীতি দেখালে কেয়ামতের ময়দানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) তার বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মহান আল্লাহর কাছে বিচার দেবেন। তাই সংখ্যালঘু পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে লালমনিরহাটের শেখ শফি উদ্দিন কমার্স কলেজ মাঠে হেলিকপ্টারে পৌঁছান তিনি। পরে সোহরাওয়ার্দী মাঠে ইসলামী সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন।

আলোচনায় আজহারী ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তাকে একনজর দেখতে লাখো উৎসুক মানুষের ঢল নামে এলাকায়।

তিনি বলেন, আস্তিক হোক কিংবা নাস্তিক, মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম সবার সঙ্গে সদব্যবহার করতে হবে। বিশ্বনবী (সা:) সবার সঙ্গে সদব্যবহার করে চলতেন। প্রতিবেশী অমুসলিমদের হক আদায় করতে হবে। তাদের সুখে দু:খে পাশে থাকতে হবে। কোনভাবেই তাদের ধন সম্পদ লুট করা যাবেনা। জুলুম করা যাবেনা।

এদিকে সকাল থেকে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রথম অধিবেশনে আলোচনা করেন স্থানীয় ইসলামি আলোচকরা। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতারাও বক্তব্য দেন। 

মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন রংপুর বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।

আয়োজক কমিটি ধারণা করছে মাহফিলে ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে। তাই মূল প্যান্ডেল ছাড়াও পাঁচটি মাঠ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 

মাহফিল ঘিরে তৎপর লালমনিরহাটের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার, পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীসহ রয়েছে আয়োজকদের স্বেচ্ছাসেবকের বিশাল কর্মীবাহিনী।

ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাটের আয়োজনে ঐতিহাসিক এ মাহফিলের সভাপতি ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, আজহারী হুজুরসহ জনপ্রিয় ইসলামি আলোচকদের আগমনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। আমরা সর্বাত্মক চেস্টা করেছি সুশৃঙ্খল আয়োজন উপহার দিতে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত (ওসি) বাদল কুমার বলেন, মাহফিলের নিরাপত্তায় যৌথ বাহিনী কাজ করেছে। এ ছাড়া পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নিরাপত্তার চাদরে পুরো জেলা শহরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত ছিলো। তা ছাড়া স্বেচ্ছাসেবীরাও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন।

মেহেদী/

বিনা খরচে যৌতুকবিহীন ৮ দম্পতির বিয়ে

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম
বিনা খরচে যৌতুকবিহীন ৮ দম্পতির বিয়ে
চট্টগ্রামে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যৌতুকবিহীন বিয়ে। ছবি: খবরের কাগজ

১৫শ বড় যাত্রীর খাবার আয়োজন, শরিয়তসম্মত নাচগান, লেপ তোষক উপহার ও ফ্রি হানিমুনেরসুবিধাসহ ৮ দম্পতির বিয়ে হয়েছে অতি ধুমধামে। ক্লাবে বর যাত্রীর খাবার ছাড়াও চা-কফি-পান সুপারির ব্যবস্থাও ছিল। কমতি ছিল না আধুনিক সাজসজ্জা, বিয়ের সানাইয়েরও।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন যৌতুকবিহীন ও বিনা খরচে ৮ দম্পতির বিয়ে আয়োজন করে।

ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ সমাজে যৌতুকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি এবং একটি সুস্থ সম্মানজনক সম্পর্কের ধারণা প্রচার করার উদ্দেশে করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগরের বাকলিয়ার কে বি কনভেনশন সেন্টারে ৮ দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় প্রশাসন, সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।

প্রতিটি বিয়ের খরচ এবং আনুষঙ্গিক আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছে ফাউন্ডেশন। যাতে কোন দম্পতিই আর্থিক সমস্যার কারণে বিয়ে করতে পিছিয়ে না পড়ে।

আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, আমাদের সমাজে এখনও যৌতুকের দাবিতে অনেক বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে ৮ দম্পতির বিয়ে দিয়েছি আমরা। যা আগামীতে চলমান থাকবে। আমাদের ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবে দম্পতিরা। সম্প্রতি এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে একাধিক সামাজিক আন্দোলন এবং কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বিশেষত, যৌতুকবিহীন বিয়ের প্রতি আগ্রহ এবং প্রতিশ্রুতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধরনের বিয়েগুলি শুধু দুজন মানুষের মধ্যে সম্পর্কের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নয় বরং সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রদূত। জেলা শহর এবং গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় সমাজসেবী সংগঠনগুলি যৌতুকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য নানা কর্মসূচি আয়োজন করছে।

তিনি বলেন, এখনও সমাজে যৌতুক একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এক্ষেত্রে, স্থানীয় প্রশাসন, এনজিও এবং সমাজকর্মীরা যৌতুককে একটি অবাঞ্ছিত সামাজিক ব্যাধি হিসেবে তুলে ধরতে পারে। সবচেয়ে ভূমিকা রাখতে পারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব, টেলিভিশন এবং পত্রিকা।

ফাউন্ডেশন আরও জানায়, তারা নিয়মিতভাবে এই ধরনের আয়োজন করবে এবং সমাজের অন্যান্য অংশের সঙ্গে একযোগে যৌতুকবিরোধী প্রচারণা চালাবে। অনুষ্ঠানে সকল দম্পতির কাছে যৌতুকের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয় এবং সবাইকে যৌতুক মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য উৎসাহিত করা হয়।

নবদম্পতি লোকমান হাকিম ও ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, আমরা খুব আনন্দিত যে আমাদের বিয়ে একটি সামাজিক উদ্যোগের অংশ হয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। আমাদের পরিবার যৌতুকের জন্য কখনো চাপ সৃষ্টি করেনি, তবে এই উদ্যোগে অংশ নিয়ে আমরা খুশি যে আমাদের বিয়েকে একটি সামাজিক আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরা হলো।

অপর দম্পতি শফিকুল ইসলাম ও শিফা মনি বলেন, আমরা ২০ হাজার টাকা দেনমোহর পরিশোধের মাধ্যমে বিয়ে করেছি। আমাদের বিয়ে আয়োজন এতো সুন্দরভাবে হবে তা কখনও কল্পনাও করিনি। এমন বিয়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়ুক আমরা এটায় কামনা করি। আমাদের এ বিয়ের আয়োজনের জন্য শামসুল হক ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই।

ওই দুই দম্পতি ছাড়াও জুলফিকার আলী- খাদিজা খাতুন, শহিদুল ইসলাম - সালমা আক্তার, মোহাম্মদ ইলিয়াস- সাজকিয়াতুন জান্নাত, মেহেরাজুল ইসলাম- নাহিদা সুলতানা, মামুনুল রশিদ-মায়েদা আক্তার, রিয়াদ হোসেন- জান্নাতি দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়।

চট্টগ্রামের এ উদ্যোগের পর, পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর এবং গ্রামাঞ্চলে যৌতুকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এমন উদ্যোগের বিস্তার আশা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সমাজসেবীরা জানান, এ ধরনের কর্মসূচি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে এবং তরুণদের মাঝে যৌতুকবিহীন বিয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াবে।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি যা সমাজের মধ্যে সম্পর্কের পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমতার ভাবনা নষ্ট করে। আমরা চাই, আমাদের যুব সমাজ  এই ধরনের প্রথাকে ত্যাগ করুক এবং বিয়েকে এক ধরনের সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে পরিণত করুক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই এ ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং একযোগে যৌতুকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

আয়োজনের সব খরচ, যেমন- মেহমানদারি, সাজসজ্জা, পাত্র-পাত্রীর, উপহার, হানিমুন, খাবার, পোশাকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন সরবরাহ করেছে।

খাবারের মেন্যুতে ছিল পোলাও ভাত, খাসির মাংস, মুরগির রোস্ট, চনার ডাল ও মাংস। সচরাচর একটি বিয়েতে এভাবে খাবার মেন্যু হয়ে থাকে।

সরজমিনে দেখা যায়, বাকলিয়া কনভেনশন সেন্টারের প্রবেশ পথেও আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে। ভিতরের প্রবেশ করতে দুপাশে সাজানো হয়েছে। ভিতরের করা হয়েছে বর ও কনেদের জন্য বিয়ের স্টেজ। করা হয়েছে ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন। বরদের খাবার টেবিল আলাদা করে সাজানো হয়েছে। বরের স্বজনরা একসঙ্গে বসে খাবার গ্রহণ করেছেন। খাবার শেষে কাবিননামায় স্বাক্ষর করে ক্লাব থেকে বিদায় জানানো হয়েছে দম্পতিদের।

আয়োজকদের আশা, এমন উদ্যোগ দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ুক। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ যৌতুকের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করুক। বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্ম যৌতুকবিহীন বিয়ে এবং সম্পর্কের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হোক। 

এ আয়োজনের মাধ্যমে যৌতুকমুক্ত বিয়ের ধারণা সমাজে আরও বিস্তার লাভ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা।

নাবিল/এমএ/

ফরিদপুরে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
ফরিদপুরে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা
নিহত মো. শফিকুল ইসলাম উকিল। ছবি: খবরের কাগজ

ফরিদপুরের সালথায় নিজ দোকানের ভেতর থেকে মো. শফিকুল ইসলাম উকিল (৫০) নামে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে ঋণের চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড়দিয়া বাজারের  দোকানের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শফিকুল বাজারের পাশের ভাটপাড়া গ্রামের মৃত লতিফ শেখের ছেলে। সে মা জবেদা হার্ডওয়্যার স্টোর নামে একটি দোকান চালাতেন।

নিহতের পরিবার জানায়, শফিকুল প্রায় একযুগ ধরে বড়দিয়া বাজারে রড-সিমেন্টে ও হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করতেন। রাতে দোকানেই থাকতেন তিনি। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে তিনি দোকানেই ঘুমিয়ে ছিলেন। পরদিন সকালে তিনি দোকান না খোলায় পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তারা দোকানের সার্টার ভেঙে ভেতরে গিয়ে শফিকুলের মরদেহ দোকানের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখেন।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে আনা হয়েছে। জানতে পেরেছি শফিকুল ব্যবসা করতে গিয়ে ক্রেতাদের ২০-২৫ লাখ টাকা টাকা বাকি দেন। সম্প্রতি হালখাতা করেও ওই টাকা তুলতে পারেনি। অন্যদিকে দোকানের পুঁজি ঠিক রাখতে ব্যাংক থেকে অনেক টাকা ঋণ নেন শফিকুল। তবে দেনাদাররা টাকা না দেওয়ায় ওই ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ঋণের বিষয়টি নিয়ে কয়েকমাস ধরে তিনি চিন্তিত ছিলেন তিনি। ধারনা করা হচ্ছে ঋণের চাপেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

সঞ্জিব দাস/মেহেদী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ, আহত ২ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ, আহত ২ বাংলাদেশি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা। ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গাছ ও ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশিদের সংঘর্ষে দুজন বাংলাদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয়ের চলে ৩টা পর্যন্ত। উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি 'নো ম্যানস ল্যান্ড’ এলাকায় এ উত্তেজনা দেখা দেয়।

আহতরা হলেন- বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘন্টোলা বিশ্বনাথপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে রনি এবং কারিগঞ্জ গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে ফারুক।

দুপুর থেকে সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় ভারতীয় নাগরিকদের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ সময় ভারতীয় উত্তেজিত জনগণ বাংলাদেশের জনগণকে লক্ষ্য করে হাত-বোমা নিক্ষেপ করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সীমান্তবাসীরা লাঠি সোটা এবং হাসোয়া নিয়ে সীমান্ত অবস্থান করেছে।

এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চৌকা সীমান্ত এলাকায় অন্তত ৩০টি আমগাছ ও শতাধিক বরইগাছ বাংলাদেশি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে কেটে ফেলেছে ভারতীয়রা।

কালিগঞ্জ ঘুমটোলা গ্রামের রবু জানান, ফারুক মোটরসাইকেলে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি দেখার জন্য আসলে ভারতীয়দের ছোড়া পাথরে মাথায় গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় মিঠুন জানান, রনি সীমান্তে বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ভারতীয় আট-দশজন বাংলাদেশ ঢুকে রনির উপর আক্রমণ করে এতে রনি আহত হন।

৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের উপ-অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।এছাড়া  তলব করা হয়েছে অতিরিক্ত ফোর্স।  অপরদিকে ভারতীয় সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি) অধিনায়ক গোলাম কিবরিয়া জানান, সীমান্ত এলাকায় গাছ কাটলে বিজিবি ও সাধারণ মানুষ বাঁধা দেয়। এতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ উত্তেজিত হয়। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান গাছসহ ফসল কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয়রা। তারা ইট পাটকেল ও বোমা মেরে আতংক সৃষ্টি করছে।

জহির/মেহেদী