ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

শীতে কাঁপছে ‘রেশম নগরী’

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩১ এএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
শীতে কাঁপছে ‘রেশম নগরী’
রাজশাহী শহর। ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহীতে চার দিন ধরে অধিকাংশ সময় দেখা মিলছে না সূর্যের। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা ও হিমশীতল বাতাসে জেঁকে বসেছে শীত।

এ ছাড়া শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় হাত-পা জমে যাওয়ার মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, শুক্রবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটিই এবারের শীত মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গতকাল তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। এর ফলে উত্তরের এই জেলায় শীত আরও বেড়ে গেছে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের উচ্চ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, ‘তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সেই অনুযায়ী গতকাল থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এটি কত দিন থাকবে, তা বলা যাচ্ছে না।’

মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরুর পর ভোর থেকে কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে এ জেলা। এর সঙ্গে বয়ে চলেছে উত্তরের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পথে-প্রান্তরে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো। সূর্যের মুখ খুব একটা দেখা না যাওয়ায় রোদের উত্তাপ না পেয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন শীতার্ত মানুষগুলো।

দিনভর কুয়াশা ঢাকা প্রকৃতি পেরিয়ে সন্ধ্যা নামতেই আবারও অসহনীয় হয়ে উঠছে শীতের দাপট। শহর-নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে এখন শীতের কাঁপুনি বেশি অনুভূত হচ্ছে। গ্রামের মানুষের জন্য এই শীতের তীব্রতা বয়ে এনেছে বাড়তি কষ্ট ও দুর্ভোগ। হিমেল বাতাস আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

এদিকে শীত এলেও জেলায় সরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সালাহ উদ্দীন আল ওয়াদুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো শীতবস্ত্র বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ এলে জেলার সবখানেই তা বিতরণ করা হবে।’

অন্যদিকে হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বাড়ায় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। শীত যতই বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। এতে শিশু ও বয়স্ক মানুষই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে নবজাতক শিশুরা বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বয়সের শিশু ও বয়স্করাও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর-সর্দি, কাশি ও হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন।

এদিকে শীত বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। এতে শহরের রাস্তাঘাটেও মানুষের চলাচল কিছুটা কম দেখা যাচ্ছে। ভোরে সূর্য উঠতে দেরি হওয়ায় কুয়াশার ভেতর খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত থেকে বাঁচতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের। এমনকি শীতবস্ত্র নিয়ে এখনো সেভাবে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না কাউকে।

 অন্যদিকে রাজশাহীর মাঠজুড়ে এখন চলছে রবিশস্যের আবাদ। সরিষা, টমেটো, শিম, লাউ, শালগম, বাঁধাকপি, আলু থেকে শুরু করে একাধিক রবি ফসল চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেক ফসল ঘরে তোলার সময়ও হয়েছে। কিন্তু সপ্তাহ ধরে টানা কুয়াশায় অনেক ফসলেই বেড়েছে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ। কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে রবিশস্যের ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

কৃষি তথ্য সূত্র জানায়, কুয়াশার কারণে ধানের চারা হলদে হয়ে যেতে পারে। সরিষায় বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া আলুর পাতায় মড়ক লাগার আশঙ্কা আছে। সাধারণত এ সময় আমগাছে মুকুল আসে। তাই ভালো ফলন পেতে বাড়তি যত্ন নিতে হবে। এসব বিষয়ে সমাধান পেতে কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে সমাধান নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের আক্রমণসহ নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। এভাবে বেশি দিন ঘন কুয়াশা থাকলে রবি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

প্রায় ২০ লাখ টাকা ও ইয়াবাসহ বিএনপি নেতার স্ত্রী-ছেলে আটক

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম
প্রায় ২০ লাখ টাকা ও ইয়াবাসহ বিএনপি নেতার স্ত্রী-ছেলে আটক
যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক দুইজন। ছবি: খবরের কাগজ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে প্রায় ২০ লাখ টাকা ও এক হাজার পিস ইয়াবাসহ এক বিএনপি নেতার স্ত্রী-ছেলেকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ৩টার দিকে উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগী চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে যৌথ বাহিনী।

আটক কাজল রেখা ওরফে কাজলি খাতুন (৪৬) ও তার ছেলে আব্রাহাম লিংকন (২০) উপজেলার মরিচা ইউনিয়ন বিএনপির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক লিয়াকত আলীর স্ত্রী ও ছেলে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা।

সেনাবাহিনীর কুষ্টিয়া ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাতে সেনাবাহিনী কুষ্টিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা দৌলতপুর উপজেলার বৈরাগীরচর এলাকার লিয়াকত আলীর বাড়িতে অভিযান চালায়, এ সময় এক হাজার পিস ইয়াবা এবং ১৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকাসহ কাজল রেখা ওরফে কাজলি খাতুন ও তার ছেলে আব্রাহাম লিংকনকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

ওসি নাজমুল হুদা বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভিযানে সাবেক ইউপি সদস্য লিয়াকতের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ও এক হাজার পিস ইয়াবাসহ তার স্ত্রী-সন্তানকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আজকেই আসামিদের কারাগারে পাঠানো হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব শহিদ সরকার মঙ্গল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যদি এমন হয়ে থাকে, তবে আমরা তাকে দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে দল থেকে বহিষ্কার করব।’

মিলন/সালমান/

ছাত্রীনিবাস থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম
ছাত্রীনিবাস থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ছাত্রীনিবাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে ছাত্রীনিবাসের ২০০১ নম্বর কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত রিয়ামনি আক্তার মিলা (১৮) বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মো. মনিরুল ইসলামের মেয়ে।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকাল ৮টার দিকে মিলা ছাত্রীনিবাসে আসেন। সকাল ১০টার দিকে তার রুমমেটরা রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকার সময় মিলা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে সহপাঠীরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

অন্যদিকে, দুপুর ১২টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মো. আবু নাহিয়ান অর্পন নামে এক যুবক নিজেকে মিলার স্বামী দাবি করেন। তিনি জানান, গতকাল (শনিবার) তাদের বিয়ে হয়েছে। উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে বিয়ের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। স্বামী দাবি করা নাহিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মোদাচ্ছের বিল্লাহ্ বলেন, ‘মিলা আমার কলেজের একজন মেধাবী ছাত্রী। সে কেন এ ধরনের কাজ করেছি বুঝতে পারছি না। এ ঘটনায় পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। আশা করি তদন্তে সব বের হয়ে আসবে।’

পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

হাসিবুর/সালমান/

জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ায় সিবিএ নেতাকে শোকজ, ২ জনকে বদলি

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:২৯ পিএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
জয় বাংলা স্লোগান দেওয়ায় সিবিএ নেতাকে শোকজ, ২ জনকে বদলি
আব্দুস সোবহান, নাজমুল ইসলাম এবং মঞ্জুর আহমদ (বাঁ থেকে)

‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের কর্মচারী ও কর্মচারী লীগের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহানকে শোকজ ও দুই নেতাকে বদলি করা হয়েছে।  

গ্যাস ফিল্ডের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফরিদুল হুদার সই করা অফিস আদেশে এ শোকজ ও বদলি করা হয়।

জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের প্রধান কার্যালয় অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন দপ্তরের ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ) পান্না লাল ধরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক উসমানী আলী ও কর্মচারী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান। সোবহান তার বক্তব্য শেষে জয় বাংলা স্লোগান দেন। এর প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর অভিযোগ জানায় বিএনপিসমর্থিত কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা।

এরপর শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফরিদুল হুদা স্বাক্ষরিত চিঠিতে সোবহানকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। দুদিনের মধ্যে তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় চিঠিতে। এরপর শনিবার (১৮ জানুয়ারি) আরেক আদেশে কর্মচারী লীগের প্রচার সম্পাদক জুনিয়র কম্পিউটার অপারেটর নাজমুল ইসলামকে রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে ও জুনিয়র কম্পিউটার মঞ্জুর আহমদকে বিয়ানীবাজার ফিল্ডে বদলি করা হয়।

এ ব্যাপারে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (সমন্বয়) মো. আব্দুর রহমান চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘মহাব্যবস্থাপকের আদেশে দুজন কর্মচারীকে বদলি করা হয়েছে। এটা ওই স্লোগানের জন্য করা হয়েছে কি-না আমার জানা নেই। আরেকজন সিবিএ নেতাকে শোকজ করা হয়। তবে শোকজের বিষয়টি প্রশাসনের এডমিনে দায়িত্বরতরা ভালো বলতে পারবেন।’

সালমান/

মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পঞ্চগড়

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৮ পিএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পঞ্চগড়
ছবি : খবরের কাগজ

উত্তরের জেলা পঞ্চগড় আবারও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে। উত্তরে হিমেল হাওয়া এই জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার কারণে কমেছে তাপমাত্রা, বাড়ছে শীত। আর এই কনকনে শীতের কারণে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। এ ছাড়া তাপমাত্রা হ্রাসের কারণে এ জেলায় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

রবিবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আজ সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড।

সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত এ জেলার ওপর দিয়ে হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কনকনে শীত, ঘন কুয়াশা আর শিশি পড়ে রাতভর। ফলে কনকনে শীতের দাপটে চরম বিপাকে পড়েছেন এ জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ৷ অনেকেই শীতের কারণে সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না।

অন্যদিকে আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিন দিন শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক। চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এলাকার পাথর শ্রমিক শাহিনুর ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, কয়েক দিন থেকে অনেক শীত অনুভূত হচ্ছে। আমাদের কাজে আসতে অনেক সময় লাগছে। শীতের কারণে তেমন কাজ করতে পারছি না। আমাদের আয় কমে গেছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। উত্তরের হিমেল হওয়ার কারণে তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, দেশের সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হয় এই পঞ্চগড় জেলায়। তাই আমরা আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। এ পর্যন্ত ৪৫ হাজারের মতো শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমাদের শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

রনি মিয়াজী/জোবাইদা/

রাজশাহীর ১৪ পৌরসভা : সেবা না মিললেও দিতে হয় কর-বিল

প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৫ পিএম
রাজশাহীর ১৪ পৌরসভা : সেবা না মিললেও দিতে হয় কর-বিল
রাজশাহী

রাজশাহী জেলার ১৪টি পৌরসভায় পানি, বিদ্যুৎ, পয়োনিষ্কাশন, মশক নিধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মতো জরুরি নাগরিক সেবা দেওয়া না হলেও সেবার নামে কর ও বিল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। 

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহীর বেশ কিছু পৌরসভায় পানির পাইপলাইনই বসানো হয়নি, অথচ পৌরকরের সঙ্গে পানি সরবরাহ বিল আদায় করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাস্তা আলোকায়নের বিদ্যুৎ বিল, পরিচ্ছন্নতা বিল আদায় করা হলেও এসব সুবিধা পাচ্ছেন না তারা। 

রাজশাহীর ৯টি উপজেলার পৌরসভাগুলো হচ্ছে বাঘা উপজেলার বাঘা ও আড়ানী, চারঘাট উপজেলায় চারঘাট, পুঠিয়া উপজেলার পুঠিয়া, পবা উপজেলার কাটাখালী ও নওহাটা, গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট ও গোদাগাড়ী, তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা ও তানোর, দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর, বাগমারার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর এবং মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট। 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশ কয়েকটি উপজেলায় একাধিক পৌরসভা রয়েছে। নাগরিক সেবা দেওয়ার কথা বলে এসব পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হলেও বাস্তবে এসব পৌরসভা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক। সেবা প্রদান তো দূরের কথা, পৌরসভাগুলোর বেশির ভাগই নিজেদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। বেশির ভাগ নাগরিকের পাইপলাইনে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা নাই। আবার পানি না দিলেও বেশ কয়েক জায়গায় নেওয়া হয় পানির বিল। সড়কে বাতি না থাকায় রাতের বেলা ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। অথচ আদায় করা হয় রাস্তা আলোকায়নের বিদ্যুৎ বিল। আবার পৌরসভার রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কোনো ব্যবস্থা নেই। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা বিলের অর্থ আদায় করা হয়। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভায় পানির পাইপলাইনের সংযোগ নেই। তবে বাড়ির ট্যাক্সের সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হচ্ছে পানির বিলের অর্থ। এই পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকাতেই সড়ক আলোকায়নের ব্যবস্থাও নেই। কিন্তু পৌরবাসীর কাছ থেকে আদায় করা হয় বিল।
 
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার বাসিন্দা অলিমুদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পানির লাইন দেওয়া হয়নি। শুকনো মৌসুমে পানির অসুবিধায় পড়ি। পশু পালন থেকে নিজেদের সব ধরনের পানির জন্যই সমস্যা হয়। গরিব মানুষ বলে একটি পানির মোটরও বসাতে পারি না। কিন্তু আমাকে প্রতিবছর পৌরসভার পানির ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। ট্যাক্স দিলেও পাচ্ছি না পানি। রাস্তাও অন্ধকার থাকে। কিন্তু পৌরসভা থেকে শুধু টাকা নেয়।’ 

তানোর পৌরসভার বাসিন্দা নাজমুল বলেন, ‘আমার বাড়িতে পানির লাইন আছে। তবে পানি পাওয়া যায় না। আবার বিল তো ঠিকই দিতে হয়। কিছু করার থাকে না। বিলের অর্থ পরিশোধের বিষয়টি বাধ্যতামূলক।’

নওহাটা পৌরসভার বাসিন্দা আরমান হোসেন বলেন, ‘পানির লাইন সবাই পাইনি। সবাই সব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তবুও সবার কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে।’

পুঠিয়া পৌরসভার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, পুঠিয়া পৌরসভা নামেই শুধু পৌরসভা। এখানে না আছে লাইটের ব্যবস্থা, না আছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ। শুধু বছর শেষে ট্যাক্স আদায় করে। 

এ বিষয়ে রাজশাহীর কাঁকনহাট পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখনো পানির সংযোগ সব জায়গাতে দিতে পারিনি। বিদ্যুৎ লাইনও সব জায়গায় দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু হোল্ডিং ট্যাক্স ও বিদ্যুৎ বিল নিয়ে থাকি, অন্য বিল নয়। আমাদের সব জায়গাতেই বিদ্যুৎ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’

গোদাগাড়ী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মোহা. সারওয়ার জাহান বলেন, ‘আমাদের এটি সফটওয়্যারের বিল। সেখানে পানি ও বিদ্যুতের উল্লেখ আছে। তবে ইউএনর সঙ্গে বসে এগুলোর সমাধান করা হয়েছে। এসব বিল আর পৌরবাসীর কাছ থেকে গ্রহণ করা হবে না।’

আড়ানী পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাবিহা সুলতানা ডলি বলেন, ‘সেবা না দিয়ে বিল আদায়সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে কেউ কোনো সেবা না পেয়ে বিল দেবে এমনটি নয়। আমি এখনই নির্বাহীকে বলে দিচ্ছি, কীভাবে চলছে সেটা আমাকে জানাতে।’

এদিকে পৌরসভাগুলোর সার্বিক সেবা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা নিয়ে কাজ হচ্ছে জানিয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি এসেই বেশ কিছু পৌরসভা ভিজিট করেছি। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে আমরা সবখানে কথা বলেছি। পৌরসভাগুলোর যে নাগরিক সেবা দেওয়ার কথা, সব সময় সেই সেবা দিতে পারছে না। তাদের ফান্ডের সংকট থাকলে আয় বাড়াতে হবে। তাদের আয় বাড়ানোর কর্মপরিকল্পনা স্মার্ট না। পৌরসভাতে পানি সরবরাহ, আলোকায়ন, ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিত করা- সবই পৌরসভাগুলোর কাজ।’
 
বেশির ভাগ পৌরসভার এসব নিশ্চিত করতে না পারা প্রসঙ্গে তিনি একমত হয়ে বলেন, ‘এর পেছনের দুটি কারণের একটি হচ্ছে তারা আয় বাড়াতে পারছে না। আরেকটা হলো তারা যে আয় বাড়াতে পারছে না, এটা এক্সপোজও করতে পারছে না। সরকারের কাছে তারা এই প্রস্তাবও দিতে পারেনি যে এসব সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কী কী সাপোর্ট লাগবে।’