উত্তরাঞ্চলের শীতপ্রবণ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও সকাল থেকে ঘন কুয়াশার দেখা মেলেনি তবে প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাস এবং তীব্র শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এর আগে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমাগত নিচে নামতে শুরু করেছিলো যা শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ঠান্ডা বাতাসের কারণে সূর্যের তাপও খুব একটা অনুভূত হচ্ছে না। বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যার সময় শীতের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ ও শিশুরা। রাস্তার ধারে, রেল স্টেশনে, ও খোলা জায়গায় থাকা মানুষজন আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। দিনমজুর এবং শ্রমজীবী মানুষেরা কাজে বের হতে হিমশিম খাচ্ছেন। ঠান্ডা বাতাসের কারণে তাদের কাজের পরিবেশও হয়ে উঠেছে কষ্টকর।
স্থানীয় কৃষকদের জন্যও শীত এক নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে সবজি চাষে কুয়াশা ও ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। পাশাপাশি, হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর শীতজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার বলেন শীতের তীব্রতা আরও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে।
তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাতের তাপমাত্রা আরও নিচে নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা জানান, শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে এবং আরও বরাদ্দ আসার অপেক্ষা চলছে।
এদিকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে। তারা শীতবস্ত্র সংগ্রহ এবং বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শীতের তীব্রতা যেভাবে বাড়ছে তাতে আরও বড় আকারে সহায়তা প্রয়োজন।
ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিবারই নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে শীত । তবে এ বছর তাপমাত্রার দ্রুত কমা এবং ঠান্ডা বাতাসের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টায় শীত মোকাবিলা করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন সবাই।
নবীন হাসান/মেহেদী