ঢাকা ৫ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনই ছিল এমপি রবির নেশা

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ এএম
আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনই ছিল এমপি রবির নেশা
এমপি রবি

সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসন ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। দুই মেয়াদে টানা ১০ বছর সংসদ সদস্য থাকার সময় তিনিসহ তার সহযোগীরা হয়েছেন বিত্তশালী। অবৈধভাবে অর্থ ও সম্পদ অর্জন করাই ছিল মূলত এমপি রবির নেশা। এ নিয়ে বছরজুড়েই থাকতেন আলোচনায়। নাম লিখিয়েছেন টেন্ডার-বাণিজ্যে, জড়িয়েছেন দুর্নীতি ও অপকর্মে। একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে গড়ে তোলেন পঞ্চপাণ্ডব। আর এসব বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তার রোষানল থেকে মুক্তি মেলেনি সংবাদপত্র-সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাংবাদিক সংগঠনগুলোরও।

বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও বড় ব্যবধানে পরাজিত হন মহাজোট প্রার্থীর কাছে।

এদিকে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিন আগেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। 

যেভাবে শিক্ষাদস্যু হন এমপি রবি
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তার বিরুদ্ধে তিন ধাপে ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগে জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। ঘুষ নিয়েও ছেলেকে চাকরি না দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন সদরের ব্যাংদহা গ্রামের নিমাই চন্দ্র ঢালী। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যাংদহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী পদে চাকরি পেতে ছেলে রাজকুমার ঢালীর জন্য তিনি সংসদ সদস্যকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিলেও ৬ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে চাকরি বাগিয়ে নেন প্রতিদ্বন্দ্বী অসীম কুমার।
 
নিমাই চন্দ্র ঢালীর ছেলে রাজকুমার ঢালী বলেন, ‘চাকরি না হওয়ায় বাবা টাকা ফিরে পেতে দেনদরবার করলে সংসদ সদস্য ১ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। বাকি টাকার শোকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসহ প্যারালাইজড হয়ে অচল হয়ে পড়েন বাবা। সেই শোকে মারাও গেছেন তিনি।’
এ ছাড়া বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় নিয়োগ ও এমপিও-বাণিজ্যেও মীর মোস্তাক আহমেদ রবির সম্পৃক্ততার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তিনি স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটিতে নিজের লোকদের বসিয়ে নিয়োগ ও এমপিও-বাণিজ্য করেছেন। নিজের বোন, পিএ, সিএ, এমনকি ছাতা ধরা কর্মচারীকেও করেছেন একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি। 

ঢাকায় থাকা ছোট বোন রোটারি ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগরের ক্লাব প্রেসিডেন্ট নাজনীন আরা নাজু কালেভদ্রে সাতক্ষীরায় আসেন। অথচ তাকে সাতক্ষীরা নবারুন উচ্চবালিকা বিদ্যালয়, ঝাউডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ ও ভালুকা চাঁদপুর আদর্শ কলেজের সভাপতি করে এমপি রবি নিজেই কলকাঠি নাড়তেন।

শুধু বোন নয়, রবির ব্যক্তিগত সহকারী মকসুমুল হাকিমকে করা হয়েছে সাতক্ষীরার রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং সাতক্ষীরা সিটি কলেজের সভাপতি। রবির ভাইপো জিয়াউর বিন সেলিম জাদুকে বল্লী মো. মুজিবর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি, গোপনীয় সহকারী শেখ মাহফুজুর রহমানকে শিকড়ী বৈকারী-কুশখালী (বিকে) মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আগরদাড়ী আমিনিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি, শেখ মাহফুজুর রহমানের বাবা শেখ তৌহিদুর রহমান ডাবলুকে কাথণ্ডা আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসার সভাপতি করা হয়।

এই পঞ্চপাণ্ডবই বিগত ১০ বছর নিয়ন্ত্রণ করেছেন সাতক্ষীরা সদরের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার নিয়োগ-বাণিজ্য। 

এ ছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নিয়ম বা দাবি থাকলেও এমপি রবি তা হতে দেননি। তিনি নিজের লোককে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি বানিয়ে কমিটি চাপিয়ে দেন এবং তাদের মাধ্যমেই চলত অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ-বাণিজ্য। 

এমপি রবির বিরুদ্ধে আরও যত অভিযোগ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম, নারীঘটিত কেলেঙ্কারি, জুয়া, টেন্ডার-বাণিজ্যে নাম ওঠে এমপি রবি ও তার পরিবারের সদস্য এবং অনুসারীদের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে তার দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় সাতক্ষীরার স্থানীয় পত্রিকা অফিসসহ প্রেসক্লাবে হামলা চালান রবির পরিবারের সদস্য ও কর্মী-সমর্থকরা। 

পত্রিকা অফিসে হামলা
দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২০১৭ সালের ২৯ মে সাতক্ষীরার ‘দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা’ নামক একটি পত্রিকা অফিসে সন্ত্রাসী হামলা চালান পরিবারের সদস্যরা। আর এ ঘটনায় রবির দুই ভাইসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং চার-পাঁচজন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানায় পত্রিকাটির তৎকালীন সার্কুলেশন ম্যানেজার আমির হোসেন খান চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন।

এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন সাতক্ষীরার এই সংসদ সদস্য। আর যে সংবাদকর্মী তার দুর্নীতি ও অপকর্ম নিয়ে রিপোর্ট করতেন, তাদের নিয়ে প্রকাশ্যে বাজে মন্তব্য করতেন তিনি। এসব কারণে ২০১৯ সালের ২০ মার্চ তাকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

জুয়াকাণ্ড
প্রেসক্লাবে এমপি রবিকে অবাঞ্ছিত করার চার দিন না যেতেই ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ তার মামাতো ভাইয়ের বাড়ির জুয়ার আসরে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই সময় মুনজিতপুর এলাকায় এমপির মামাতো ভাই হায়দার আলী তোতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৪০ হাজার টাকাসহ ৯ জুয়াড়িকে আটক করে পুলিশ। অভিযোগ ছিল, এমপির ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তোতা চালাতেন এই জুয়ার আসর। যে জুয়ার আয়ের একটি অংশ যেত এমপি রবির পকেটে।

প্রেসক্লাবে হামলা
জুয়াকাণ্ডের ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা একযোগে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ করলে ওই বছরের ৩০ মে প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা চালানো হয়। আর এ হামলায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের তৎকালীন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদসহ ১০ সিনিয়র সাংবাদিক আহত হন।

ওই বছরের ২০ মার্চ সাংবাদিকের নিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে রবিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব। এ ঘটনার আড়াই মাস পর ৩০ মে প্রেসক্লাব সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর ওই দিন প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। 

টেন্ডার-বাণিজ্য
বছরের পর বছরজুড়ে সংবাদের শিরোনাম হওয়া রবির বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের আগস্টে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ কোটি টাকার টেন্ডার-বাণিজ্যে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে। রবির মদদে তার গোপনীয় সহকারী মাহফুজুর রহমান হাসপাতালের ৬ কোটি টাকার টেন্ডারের শিডিউল ঠিকাদারদের কিনতে দেননি। আর এ-সংক্রান্ত কারণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ইঞ্জিনিয়ার মো. শামীম নামে এক ব্যক্তি। এর আগে ২৪ আগস্ট পুলিশ সুপারের কাছেও একটি অভিযোগ করেন তিনি। তবে এ ঘটনার কোনো প্রতিকার পাননি বলে ওই সময়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান ভুক্তভোগী শামীম। 

১০ বছর শোষিত ভোমরা স্থলবন্দর
এমপি রবি তার ১০ বছরের শাসনামলে ভোমরা স্থলবন্দরের শ্রমিকদের শোষিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত করেছেন। এই স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ চাঁদা আদায় করতেন। তার কারণে ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। যার প্রভাব পড়ে ভারত-বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমে। আর এ ঘটনায় ২০২৩ সালে যখন সাধারণ শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন, তখন এমপি রবি শ্রমিকদের পরিশ্রমের মূল্যও আটকে দেন। তার হাত থেকে রক্ষা পায়নি ভোমরার বাথরুম। সংসদ সদস্য থাকার সময় ভোমরার পাবলিক টয়লেট থেকে দৈনন্দিন চাঁদার টাকা নিতেন তিনি।

এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পেছনে এমপি রবির মতো নেতারা অনেকাংশে দায়ী জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রবি সংসদ সদস্য থাকার সময় দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণকে অবমূল্যায়ন করেছিলেন। সাতক্ষীরাকে তার বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করেছিলেন। তার দুর্নীতির বিপক্ষে যারা অবস্থান নিয়েছেন, তিনি তাদের কোণঠাসা করেছেন। এ জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি রবির দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের শপথ করে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা রবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির আশুর পক্ষে অবস্থান নেন।

এ নিয়ে সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু বলেন, রবির আমলে জেলায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম গড়ে তোলা হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনগণের মধ্যে। এ জন্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সাতক্ষীরার সর্বস্তরের জনগণ আওয়ামী লীগ নেতা রবির পক্ষে অবস্থান না নিয়ে তার পক্ষে অবস্থান নেন এবং তিনি বিজয় লাভ করেন।

শ্বেতপত্র প্রকাশ হবে কি না প্রশ্নের উত্তরে আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘আমার নির্বাচনি ওয়াদার প্রথমটা ছিল রবির দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। আর সেই শ্বেতপত্র জনসমক্ষে আনতে এবং দেশবাসীকে জানাতে কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেই কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।’ নির্বাচনি ওয়াদা মোতাবেক শিগগিরই তার দুর্নীতি ও অনিয়মের শ্বেতপত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

টেকনাফ পাহাড়ে বন্য হাতির মৃত্যু

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম
টেকনাফ পাহাড়ে বন্য হাতির মৃত্যু
টেকনাফের পাহাড়ে মৃত বন্য হাতি। ছবি: খবরের কাগজ

কক্সজারের টেকনাফে গহীন পাহাড় থেকে একটি বন্য হাতির মরদেহ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বনবিভাগ ধারণা করছেন মাদী হাতিটির আনুমানিক বয়স (১৫)। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা নুনাছড়া খাল নামক পাহাড়ি এলাকা থেকে মৃত হাতিটি উদ্ধার করা হয়। 

টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ বলেন, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত ৯টার সময় হ্নীলা বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুনা খাল নামক পাহাড়ি এলাকায় একটি বন্য হাতির মৃত্যুর সংবাদ পাই। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাটিতি পাহারা দেওয়া হয় এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে শনিবার সকালে গিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে হাতিটি মাটিতে পুঁতে রাখা হয়। তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কারণ জানা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

মেহেদী/

মহানবী (সা:) সংখ্যালঘুর ওপর জুলুমকারীর বিপক্ষে দাঁড়াবেন: আজহারী

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম
মহানবী (সা:) সংখ্যালঘুর ওপর জুলুমকারীর বিপক্ষে দাঁড়াবেন: আজহারী
ইসলামী বক্তা ও আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারী।ছবি: খবরের কাগজ

জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ও আলোচক ড. মিজানুর রহমান আজহারী হাদিসের উদ্ধৃত করে বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুম, নির্যাতন কিংবা ভয়ভীতি দেখালে কেয়ামতের ময়দানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) তার বিরুদ্ধে বাদি হয়ে মহান আল্লাহর কাছে বিচার দেবেন। তাই সংখ্যালঘু পাড়া-প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহাবস্থান করতে হবে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে লালমনিরহাটের শেখ শফি উদ্দিন কমার্স কলেজ মাঠে হেলিকপ্টারে পৌঁছান তিনি। পরে সোহরাওয়ার্দী মাঠে ইসলামী সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন।

আলোচনায় আজহারী ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থান নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তাকে একনজর দেখতে লাখো উৎসুক মানুষের ঢল নামে এলাকায়।

তিনি বলেন, আস্তিক হোক কিংবা নাস্তিক, মুসলিম হোক কিংবা অমুসলিম সবার সঙ্গে সদব্যবহার করতে হবে। বিশ্বনবী (সা:) সবার সঙ্গে সদব্যবহার করে চলতেন। প্রতিবেশী অমুসলিমদের হক আদায় করতে হবে। তাদের সুখে দু:খে পাশে থাকতে হবে। কোনভাবেই তাদের ধন সম্পদ লুট করা যাবেনা। জুলুম করা যাবেনা।

এদিকে সকাল থেকে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রথম অধিবেশনে আলোচনা করেন স্থানীয় ইসলামি আলোচকরা। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতারাও বক্তব্য দেন। 

মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন রংপুর বিভাগীয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।

আয়োজক কমিটি ধারণা করছে মাহফিলে ১০ থেকে ১২ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে। তাই মূল প্যান্ডেল ছাড়াও পাঁচটি মাঠ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 

মাহফিল ঘিরে তৎপর লালমনিরহাটের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার, পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীসহ রয়েছে আয়োজকদের স্বেচ্ছাসেবকের বিশাল কর্মীবাহিনী।

ইসলামিক সোসাইটি লালমনিরহাটের আয়োজনে ঐতিহাসিক এ মাহফিলের সভাপতি ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম বলেন, আজহারী হুজুরসহ জনপ্রিয় ইসলামি আলোচকদের আগমনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। আমরা সর্বাত্মক চেস্টা করেছি সুশৃঙ্খল আয়োজন উপহার দিতে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত (ওসি) বাদল কুমার বলেন, মাহফিলের নিরাপত্তায় যৌথ বাহিনী কাজ করেছে। এ ছাড়া পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নিরাপত্তার চাদরে পুরো জেলা শহরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল অব্যাহত ছিলো। তা ছাড়া স্বেচ্ছাসেবীরাও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন।

মেহেদী/

বিনা খরচে যৌতুকবিহীন ৮ দম্পতির বিয়ে

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪৮ পিএম
বিনা খরচে যৌতুকবিহীন ৮ দম্পতির বিয়ে
চট্টগ্রামে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে যৌতুকবিহীন বিয়ে। ছবি: খবরের কাগজ

১৫শ বড় যাত্রীর খাবার আয়োজন, শরিয়তসম্মত নাচগান, লেপ তোষক উপহার ও ফ্রি হানিমুনেরসুবিধাসহ ৮ দম্পতির বিয়ে হয়েছে অতি ধুমধামে। ক্লাবে বর যাত্রীর খাবার ছাড়াও চা-কফি-পান সুপারির ব্যবস্থাও ছিল। কমতি ছিল না আধুনিক সাজসজ্জা, বিয়ের সানাইয়েরও।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন যৌতুকবিহীন ও বিনা খরচে ৮ দম্পতির বিয়ে আয়োজন করে।

ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ সমাজে যৌতুকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি এবং একটি সুস্থ সম্মানজনক সম্পর্কের ধারণা প্রচার করার উদ্দেশে করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগরের বাকলিয়ার কে বি কনভেনশন সেন্টারে ৮ দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় প্রশাসন, সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং ফাউন্ডেশনের সদস্যরা।

প্রতিটি বিয়ের খরচ এবং আনুষঙ্গিক আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছে ফাউন্ডেশন। যাতে কোন দম্পতিই আর্থিক সমস্যার কারণে বিয়ে করতে পিছিয়ে না পড়ে।

আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, আমাদের সমাজে এখনও যৌতুকের দাবিতে অনেক বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। মানুষের সচেতনতা বাড়াতে ৮ দম্পতির বিয়ে দিয়েছি আমরা। যা আগামীতে চলমান থাকবে। আমাদের ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবে দম্পতিরা। সম্প্রতি এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে একাধিক সামাজিক আন্দোলন এবং কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। বিশেষত, যৌতুকবিহীন বিয়ের প্রতি আগ্রহ এবং প্রতিশ্রুতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধরনের বিয়েগুলি শুধু দুজন মানুষের মধ্যে সম্পর্কের একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নয় বরং সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রদূত। জেলা শহর এবং গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় সমাজসেবী সংগঠনগুলি যৌতুকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য নানা কর্মসূচি আয়োজন করছে।

তিনি বলেন, এখনও সমাজে যৌতুক একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এক্ষেত্রে, স্থানীয় প্রশাসন, এনজিও এবং সমাজকর্মীরা যৌতুককে একটি অবাঞ্ছিত সামাজিক ব্যাধি হিসেবে তুলে ধরতে পারে। সবচেয়ে ভূমিকা রাখতে পারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব, টেলিভিশন এবং পত্রিকা।

ফাউন্ডেশন আরও জানায়, তারা নিয়মিতভাবে এই ধরনের আয়োজন করবে এবং সমাজের অন্যান্য অংশের সঙ্গে একযোগে যৌতুকবিরোধী প্রচারণা চালাবে। অনুষ্ঠানে সকল দম্পতির কাছে যৌতুকের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা হয় এবং সবাইকে যৌতুক মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য উৎসাহিত করা হয়।

নবদম্পতি লোকমান হাকিম ও ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, আমরা খুব আনন্দিত যে আমাদের বিয়ে একটি সামাজিক উদ্যোগের অংশ হয়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। আমাদের পরিবার যৌতুকের জন্য কখনো চাপ সৃষ্টি করেনি, তবে এই উদ্যোগে অংশ নিয়ে আমরা খুশি যে আমাদের বিয়েকে একটি সামাজিক আন্দোলনের অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরা হলো।

অপর দম্পতি শফিকুল ইসলাম ও শিফা মনি বলেন, আমরা ২০ হাজার টাকা দেনমোহর পরিশোধের মাধ্যমে বিয়ে করেছি। আমাদের বিয়ে আয়োজন এতো সুন্দরভাবে হবে তা কখনও কল্পনাও করিনি। এমন বিয়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়ুক আমরা এটায় কামনা করি। আমাদের এ বিয়ের আয়োজনের জন্য শামসুল হক ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই।

ওই দুই দম্পতি ছাড়াও জুলফিকার আলী- খাদিজা খাতুন, শহিদুল ইসলাম - সালমা আক্তার, মোহাম্মদ ইলিয়াস- সাজকিয়াতুন জান্নাত, মেহেরাজুল ইসলাম- নাহিদা সুলতানা, মামুনুল রশিদ-মায়েদা আক্তার, রিয়াদ হোসেন- জান্নাতি দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়।

চট্টগ্রামের এ উদ্যোগের পর, পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর এবং গ্রামাঞ্চলে যৌতুকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এমন উদ্যোগের বিস্তার আশা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সমাজসেবীরা জানান, এ ধরনের কর্মসূচি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হবে এবং তরুণদের মাঝে যৌতুকবিহীন বিয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াবে।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি যা সমাজের মধ্যে সম্পর্কের পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমতার ভাবনা নষ্ট করে। আমরা চাই, আমাদের যুব সমাজ  এই ধরনের প্রথাকে ত্যাগ করুক এবং বিয়েকে এক ধরনের সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধনে পরিণত করুক।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই এ ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এবং একযোগে যৌতুকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

আয়োজনের সব খরচ, যেমন- মেহমানদারি, সাজসজ্জা, পাত্র-পাত্রীর, উপহার, হানিমুন, খাবার, পোশাকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন সরবরাহ করেছে।

খাবারের মেন্যুতে ছিল পোলাও ভাত, খাসির মাংস, মুরগির রোস্ট, চনার ডাল ও মাংস। সচরাচর একটি বিয়েতে এভাবে খাবার মেন্যু হয়ে থাকে।

সরজমিনে দেখা যায়, বাকলিয়া কনভেনশন সেন্টারের প্রবেশ পথেও আলোকসজ্জা করা হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে। ভিতরের প্রবেশ করতে দুপাশে সাজানো হয়েছে। ভিতরের করা হয়েছে বর ও কনেদের জন্য বিয়ের স্টেজ। করা হয়েছে ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন। বরদের খাবার টেবিল আলাদা করে সাজানো হয়েছে। বরের স্বজনরা একসঙ্গে বসে খাবার গ্রহণ করেছেন। খাবার শেষে কাবিননামায় স্বাক্ষর করে ক্লাব থেকে বিদায় জানানো হয়েছে দম্পতিদের।

আয়োজকদের আশা, এমন উদ্যোগ দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ুক। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ যৌতুকের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করুক। বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্ম যৌতুকবিহীন বিয়ে এবং সম্পর্কের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হোক। 

এ আয়োজনের মাধ্যমে যৌতুকমুক্ত বিয়ের ধারণা সমাজে আরও বিস্তার লাভ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা।

নাবিল/এমএ/

ফরিদপুরে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
ফরিদপুরে ঋণের চাপে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা
নিহত মো. শফিকুল ইসলাম উকিল। ছবি: খবরের কাগজ

ফরিদপুরের সালথায় নিজ দোকানের ভেতর থেকে মো. শফিকুল ইসলাম উকিল (৫০) নামে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে ঋণের চাপে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড়দিয়া বাজারের  দোকানের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত শফিকুল বাজারের পাশের ভাটপাড়া গ্রামের মৃত লতিফ শেখের ছেলে। সে মা জবেদা হার্ডওয়্যার স্টোর নামে একটি দোকান চালাতেন।

নিহতের পরিবার জানায়, শফিকুল প্রায় একযুগ ধরে বড়দিয়া বাজারে রড-সিমেন্টে ও হার্ডওয়্যারের ব্যবসা করতেন। রাতে দোকানেই থাকতেন তিনি। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে তিনি দোকানেই ঘুমিয়ে ছিলেন। পরদিন সকালে তিনি দোকান না খোলায় পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তারা দোকানের সার্টার ভেঙে ভেতরে গিয়ে শফিকুলের মরদেহ দোকানের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখেন।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে আনা হয়েছে। জানতে পেরেছি শফিকুল ব্যবসা করতে গিয়ে ক্রেতাদের ২০-২৫ লাখ টাকা টাকা বাকি দেন। সম্প্রতি হালখাতা করেও ওই টাকা তুলতে পারেনি। অন্যদিকে দোকানের পুঁজি ঠিক রাখতে ব্যাংক থেকে অনেক টাকা ঋণ নেন শফিকুল। তবে দেনাদাররা টাকা না দেওয়ায় ওই ঋণের টাকাও পরিশোধ করতে পারছিলেন না। ঋণের বিষয়টি নিয়ে কয়েকমাস ধরে তিনি চিন্তিত ছিলেন তিনি। ধারনা করা হচ্ছে ঋণের চাপেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

সঞ্জিব দাস/মেহেদী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ, আহত ২ বাংলাদেশি

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ, আহত ২ বাংলাদেশি
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে উত্তেজনা। ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে গাছ ও ফসল কাটাকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশিদের সংঘর্ষে দুজন বাংলাদেশি নাগরিক আহত হয়েছেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয়ের চলে ৩টা পর্যন্ত। উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি 'নো ম্যানস ল্যান্ড’ এলাকায় এ উত্তেজনা দেখা দেয়।

আহতরা হলেন- বিনোদপুর ইউনিয়নের ঘন্টোলা বিশ্বনাথপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে রনি এবং কারিগঞ্জ গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে ফারুক।

দুপুর থেকে সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় ভারতীয় নাগরিকদের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ সময় ভারতীয় উত্তেজিত জনগণ বাংলাদেশের জনগণকে লক্ষ্য করে হাত-বোমা নিক্ষেপ করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সীমান্তবাসীরা লাঠি সোটা এবং হাসোয়া নিয়ে সীমান্ত অবস্থান করেছে।

এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চৌকা সীমান্ত এলাকায় অন্তত ৩০টি আমগাছ ও শতাধিক বরইগাছ বাংলাদেশি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে কেটে ফেলেছে ভারতীয়রা।

কালিগঞ্জ ঘুমটোলা গ্রামের রবু জানান, ফারুক মোটরসাইকেলে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি দেখার জন্য আসলে ভারতীয়দের ছোড়া পাথরে মাথায় গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় মিঠুন জানান, রনি সীমান্তে বাঁশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় ভারতীয় আট-দশজন বাংলাদেশ ঢুকে রনির উপর আক্রমণ করে এতে রনি আহত হন।

৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের উপ-অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।এছাড়া  তলব করা হয়েছে অতিরিক্ত ফোর্স।  অপরদিকে ভারতীয় সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি) অধিনায়ক গোলাম কিবরিয়া জানান, সীমান্ত এলাকায় গাছ কাটলে বিজিবি ও সাধারণ মানুষ বাঁধা দেয়। এতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ উত্তেজিত হয়। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান গাছসহ ফসল কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয়রা। তারা ইট পাটকেল ও বোমা মেরে আতংক সৃষ্টি করছে।

জহির/মেহেদী