
মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা সরকারের সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান সংঘাতের কারণে ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিতে। গত ১৯ দিন পর মায়ানমার মংডু শহর থেকে আরাকান আর্মির তত্ত্বাবধানে জানুয়ারি মাসে তিনটি কাঠের ট্রলারে করে এসেছে মাত্র ১ হাজার ৫৬০ বস্তা ফেলন ডাল।
টেকনাফ স্থলবন্দরের ম্যানেজার ছৈয়দ আনোয়ার হোসেন জানান, মায়ানমারে জান্তা সরকার ও আরকান আর্মি সঙ্গে সংঘাত চলছে। সংঘাতের কারণে টেকনাফ স্থল বন্দরের সকল স্টেকহোল্ডাররা নীরবতার দিন পার করছে। সর্বশেষ গেল ১৪ ডিসেম্বর একটি মাছভর্তি ট্রলার এসেছিল।
তিনি জানান, চলিত বছরের ৩ জানুয়ারি জিন্নাহ এন্টারপ্রাইজের কাছে ১ হাজার বস্তা ফেলন ডাল এসেছিল, ৫ জানুয়ারি একই সিএন্ডএফের কাছে আসছে ২৬০ বস্তা ডাল এবং সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি আসছে ৩০০ বস্তা ফেলন ডাল। আগের মতো পণ্যবোঝাই কোনো জাহাজ আসতে না পারার ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পাশাপাশি কাজ না থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে শ্রমিকদেরও।
টেকনাফ স্থলবন্দর কাস্টমস কর্মকর্তা বি.এম আবদুল্লাহ আল মাসুম জানান, মায়ানমারে চলমান সংঘাতের কারণে গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৭ হাজার মেট্রিক টন মালামাল আমদানির বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫৭ কোটি টাকা। এছাড়া রপ্তানি হয়েছে ৬৩৬ মেট্রিক টন পণ্য। কিন্তু ২০২৪-২০২৫ চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পণ্য আমদানি হয়েছে মাত্র ১১ হাজার মেট্রিক টন। রাজস্ব আদায় ৮৭ কোটি টাকা এবং রপ্তানি হয়েছে ৬৯১ মেট্রিক টন মালামাল। গেল অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব কমেছে ১৭০ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, টেকনাফ স্থলবন্দরের মাস খানেক আগেও আমদানি পণ্যের ভিড় আর শ্রমিকদের সুরগোলে মুখরিত থাকত বন্দরের জেটি আর গাড়ির দীর্ঘ লাইনে। সেখানে আজ খালি পড়ে আছে বন্দরের জেটি, অলস বসে আছে শ্রমিকরা। কালেভদ্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্য নিয়ে দু-একটা ট্রলার গেলেও মায়ানমার থেকে আসছে না কোনো মালামালবাহী ট্রলার। ফলে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অর্থাভাবে ভয়ংকর শঙ্কায় দিন কাটছে শ্রমিকদের।
মো. শাহীন/মাহফুজ