ঢাকা ২৯ মাঘ ১৪৩১, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

চুঙ্গাপিঠার সঙ্গে হারাচ্ছে ঢলুবাঁশ

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১০ এএম
চুঙ্গাপিঠার সঙ্গে হারাচ্ছে ঢলুবাঁশ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজারে বিক্রিতারা ঢলুবাঁশ বিক্রির জন্য পসরা সাজিয়ে রেখেছেন। ছবি: খবরের কাগজ

পিঠা বাঙালির খাদ্যসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য। বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে কোনো না কোনো ধরনের পিঠা তৈরি করা হয়। প্রত্যেক অঞ্চলের পিঠা গুণে ও স্বাদে অতুলনীয়। দেশের অন্য অঞ্চলের মতো মৌলভীবাজার অঞ্চলেও শীতের ঐতিহ্য চুঙ্গাপিঠা।

ঢলুবাঁশের লম্বা-সরু চুঙ্গায় বিন্নি চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি করা হয় চুঙ্গাপিঠা। পৌষসংক্রান্তির সময় বাড়িতে অতিথিদের খাবারের শেষ পাতে সেই চুঙ্গাপিঠা পরিবেশন না করলে লজ্জায় যেন গৃহকর্তার মাথা কাটা যেত। কিন্তু বর্তমানে সেই দিন আর নেই। চুঙ্গাপিঠা তৈরির প্রধান উপকরণ ঢলুবাঁশের সরবরাহ এখন অনেক কমে গেছে।

একসময় বাঁশ কেটে চুঙা বানিয়ে এর ভেতর ভেজা বিন্নি চাল ভরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন এক ধরনের খাবার তৈরি করতেন। ধীরে ধীরে এ খাবার মৌলভীবাজারের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। খাবারটি চুঙ্গাপিঠা নামে বহুল পরিচিতি পায়। শীত এলেই বাজার থেকে মাছ কিনে কিংবা হাওর-নদী থেকে বড় বড় রুই, কাতল, বোয়াল, পাবদা, কই মাছ ধরে এনে হাল্কা মসলায় ভেজে দিয়ে এ পিঠা খাওয়া ছিল এ অঞ্চলের অন্যতম ঐতিহ্য।

মৌলভীবাজারের বড়লেখার পাথরিয়া পাহাড়, জুড়ীর লাঠিটিলা, রাজনগরের চা-বাগানের টিলা, কুলাউড়ার গাজীপুরের পাহাড় ও জুড়ী উপজেলার চুঙ্গাবাড়িতে প্রচুর ঢলুবাঁশ পাওয়া যেত। এর মধ্যে একসময় ঢলুবাঁশের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল চুঙ্গাবাড়ি। বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়ায় হারিয়ে গেছে বাঁশ। জেলার কিছু কিছু পাহাড়ি টিলায় এখনো ঢলুবাঁশের দেখা মেলে। তবে সরবরাহ তুলনামূলক কম থাকায় দাম অনেক চড়া।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, বিক্রেতারা ঢলুবাঁশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ভিড় না থাকলেও অল্পসংখ্যক ক্রেতা বাঁশ কিনছেন।

স্থানীয়রা জানান, ঢলুবাঁশ ছাড়া চুঙ্গাপিঠা তৈরি করা যায় না। এ বাঁশে এক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ আছে। এর ফলে বাঁশ পোড়ে না। ভেতরে দেওয়া পিঠা আগুনের তাপে সেদ্ধ হয়। চুঙার ভেতরে বিন্নি চাল, দুধ, চিনি, নারিকেল ও চালের গুঁড়া দিয়ে পিঠা তৈরি করা হয়। পরে খড় জ্বালিয়ে সেই চুঙ্গা পোড়ানো হয়। প্রয়োজনীয় তাপে পিঠা তৈরি হয়ে গেলে মোমবাতির মতো চুঙা থেকে পিঠা আলাদা হয়ে যায়। চুঙ্গাপিঠা পোড়াতে আবার প্রচুর পরিমাণ খড় দরকার হয়। খড়ের দামও একটু বেশি।

বাঁশের জোগান কম থাকলেও পৌষসংক্রান্তির সময় শ্রীমঙ্গল, রাজনগর ও কমলগঞ্জের মুন্সীবাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে অল্পসংখ্যক ঢলুবাঁশ পাওয়া যায়। ঢলুবাঁশ বিক্রেতা জসীম মিয়া বলেন, ‘পাহাড়ে এখন আগের মতো ঢলুবাঁশ পাওয়া যায় না। চাহিদা থাকলেও জোগান কম। তাই পসরা সাজানোর আগেই এসব বাঁশ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।’

জেলার সদর থেকে ঢলুবাঁশের চুঙা নিতে আসা আমির হোসেন বলেন, ‘চুঙার ভেতরে চালের গুঁড়া দিয়ে তা আগুনে পুড়িয়ে খেতে আলাদা মজা। তাই চুঙা নিতে এসেছি। দাম বেশি থাকায় অল্প নিয়েছি।’

শ্রীমঙ্গলের চা-শ্রমিক রাজ মোহন বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ঢলুবাঁশ পাওয়া যেত। এখন বনাঞ্চল উজাড় হয়ে যাওয়ায় ঢলুবাঁশ পাওয়া যায় না। তবে এখনো জেলার কোনো কোনো পাহাড়ি এলাকায় এ বাঁশের দেখা মেলে।’ 

কমলগঞ্জের গণমাধ্যমকর্মী সালাউদ্দীন শুভ বলেন, ‘মৌলভীবাজারের প্রাচীন ঐতিহ্য পিঠে-পুলির অন্যতম চুঙ্গাপিঠা প্রায় বিলুপ্তের পথে। আগের মতো এখন আর গ্রামীণ এলাকার বাড়িতে বাড়িতে চুঙ্গাপিঠার আয়োজন চোখে পড়ে না। শীতের রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে সারা রাত চুঙাপোড়ার দৃশ্যও তাই দেখা যায় না।’

একসময় ঢলুবাঁশ দিয়ে চুঙ্গাপিঠার ধুম লেগেই থাকত জানিয়ে লেখক-গবেষক আহমদ সিরাজ বলেন, ‘আগে কমবেশি সবার বাড়িতে ঢলুবাঁশ ছিল। এখন সেই বাঁশ আগের মতো নেই। এই বাঁশ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি হারিয়ে যাচ্ছে চুঙ্গাপিঠাও।’

হাতিয়ায় ৩ জেলেকে পিটিয়ে ডাকাত সাজানোর চেষ্টা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১৫ পিএম
হাতিয়ায় ৩ জেলেকে পিটিয়ে ডাকাত সাজানোর চেষ্টা
পিটুনির শিকার তিন জেলে। ছবি: খবরের কাগজ

নিজেদের ঘর থেকে ডেকে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। তিনজনকে পিঠিয়ে করা হয় অজ্ঞান। ডাকাত হিসাবে জোরপূর্বক নেওয়া হয় স্বীকারোক্তি। সঙ্গে দেওয়া অস্ত্র, জোর করে সম্মতিও নেওয়া হয়। এসময় পরিবারের লোকজন বাঁচাতে এলে তাদেরকেও লাঞ্চনা করা হয়। পরে ডাকাত তকমা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

 এর আগে পুরো ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। জেল ফেরত এক বিএনপি নেতাকে দেখতে যাওয়ার অপেরাধে এই বর্বরোচিত ঘটনার শিকার হন নোয়াখালী হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের তিন জেলে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাহাজমারা ইউনিয়নের কাদেরিয়া সুইচগেইট এলাকার সরকারি ব্যারাক হাউজে এই ঘটনা ঘটে।
আহত তিন জেলে হলো- ওইএলাকার আলী আজ্জমের ছেলে ফখরুউদ্দিন (২৮), মো. দিলুর ছেলে শাহারাজ (২৭) ও কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. কাউসার (২৭)।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আহত তিনজন পেশায় জেলে। ঘটনার দিন জাহাজমারা ইউনিয়ন বিএনপির ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি হাসান মাঝি দীর্ঘদিন পর জেল থেকে বের হলে তাকে দেখতে তার বাড়িতে যায় শাহারাজ, ফখরুউদ্দিন ও কাউসার। হাসান মাঝির সঙ্গে দেখা করার অপরাধে ওই দিন রাত ১০টায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের হামলা ও বেধড়ক পিটুনির শিকার হন তিন জন। পরে তাদেরকে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। 

ভূয়া রকেট লঞ্চার সামনে দিয়ে ডাকাত সাজিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ে ভিডিও ধারণ করে। এখানে শেষ নয়, থানায় ফোন করে ডাকাত ধরা হয়েছে বলে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। থানার প্রধান ফটকে দেখা হয় জেলে কাউসারের মা জাহেরা খাতুনের সঙ্গে। সাংবাদিকদের দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে জাহেরা জানান, তার সন্তানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত কিংবা মৌখিক কোনো অভিযোগ কখনো আসেনি। তারা সব সময় নদীতে থাকেন। রাতে তাদেরকে ঘর থেকে ডেকে এনে বেধড়ক পিটানো হয়। এসময় বার বার অনেকের পায়ে ধরেও নিজের ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি বলে জানান জাহেরা।

এ বিষয়ে জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের জানান, থানায় সোপর্দ করা তিন জন সরাসরি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনা তিনি জানেন না। তবে বিগত সরকারের আমলে তারা বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।

বিএনপি নেতা হাসান মাঝি জানান, এখানে সরকারি ব্যারাকের অনেক মানুষ আমাকে দেখতে এসেছে। তাদের মধ্যে ব্যারাকে বসবাস করা তিনজনকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দায়ী করেন।

এবিষয়ে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আজমল হুদা বলেন, ডাকাত হিসেবে থানায় সোপর্দ করা ৩ জনের বিষয়ে আমরা ক্ষতিয়ে দেখেছি। তবে এখন পর্যন্ত তাদের অতীতে রেকর্ডে কোনো ডাকাত কিংবা কোনো অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাদের কাছে পাওয়া রকেট লঞ্চার বাস্তবে কোনো রকেট লঞ্চার না। এটি আসলে একপ্রকার সমুদ্রে ব্যবহৃত প্যারাস্যুট সিগনাল বাতি। তবে এ বিষয়ে হাতিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। থানায় সোপর্দ করা তিনজনকে তাদের স্বজনদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য জাহাজমারা ফাঁড়ি থানার ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

মো: হানিফ উদ্দিন সাকিব/মাহফুজ

মাদারীপুরের শিবচরে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০১ পিএম
মাদারীপুরের শিবচরে পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

ট্রাক ও নছিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষ

মাদারীপুরে শিবচরে ট্রাক ও নছিমনের মুখোমুখি সংঘর্ষে নছিমন চালক সাগর সরদার (৩৫) নিহত হয়েছে। নিহত সাগর সরদার শরীয়তপুর জেলা পালং উপজেলা রুদ্রকর গ্রামের কুদ্দুস সরদারের ছেলে। 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টায় জেলার শিবচরের দ্বিতীয়খন্ড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সাগর সরদার জেলার শিবচর বাজারের দোকানে টিন পৌঁছে দিয়ে নছিমন নিয়ে শরীয়তপুর ফিরছিলেন। তার নছিমনটি দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের নদীর পাড় এলাকায় আসলে একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে সাগর সরদার নছিমন থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে শিবচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মুত্যু

অন্যদিকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে উপজেলার পাঁচ্চর এলাকার রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে রেললাইন পার হবার সময় ট্রেনের ধাক্কায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি যায়নি।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গাগামী একটি ট্রেনের সঙ্গে ওই নারীর ধাক্কা লাগে। এসময় ওই নারী ছিটকে রেললাইন থেকে দূরে গিয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রতন শেখ বলেন, ‘আমরা দুইটি ঘটনার খবর পেয়েছি। ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। আর মরদেটি থানায় রয়েছে। অন্যদিকে যেহেতু রেলে কাটা পড়ে মারা গেছে, সেহেতু বিষয়টি রেল পুলিশ দেখবে। আমরা রেল পুলিশকে অবগত করেছি।’

মো. রফিকুল ইসলাম/মাহফুজ 

 

বরিশালে দেশীয় তৈরি ৫টি পাইপগান উদ্ধার

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম
বরিশালে দেশীয় তৈরি ৫টি পাইপগান উদ্ধার
ছবি: খবরের কাগজ

বরিশালের বাবুগঞ্জ থেকে দেশীয় তৈরি পাঁচটি পাইপগান উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে খান বাড়ির পুকুর পাড় থেকে ব্যাগভর্তি ওই অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার সুশান্ত কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে রহমাত পুরন-খানপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুকুরের পাড়ে গেলে ব্যাগটি দেখতে পায়। পরবর্তীতে তারা খান বাড়ির লোকজনে জানালে তারা ব্যাগভর্তি অস্ত্র দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

উপ পুলিশ কমিশনার সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, গত রাতে তারা রহমতপুর এবং চাঁদপাশা ইউনিয়নে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযান পরিচালনা করেন। ওসময় কাউকে আটক করতে পারেননি। তবে ওই ঘটনা টের পেয়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পুকুরের পাড়ে অস্ত্রগুলো ফেলে রেখে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অস্ত্র কারা ব্যবহার করত, কোথা থেকে আসছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

মঈনুল ইসলাম সবুজ/এমএ/

সিলেটে চা শ্রমিকদের অভ্যর্থনায় মুগ্ধ ইইউ দূত

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৯ পিএম
সিলেটে চা শ্রমিকদের অভ্যর্থনায় মুগ্ধ ইইউ দূত
সিলেটে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারকে বরণ করে নিচ্ছেন এক নারী চা শ্রমিক। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূত মাইকেল মিলার সিলেটের দলদলী চা বাগানের এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (একডো) প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় চা শ্রমিকদের অভ্যর্থনায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন তিনি।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে মাইকেল মিলারের নেতৃত্বে একডো ও ত্রাণ সংস্থা অক্সফামের প্রতিনিধিদল চা-বাগানে পৌঁছালে সেখানকার নারী চা শ্রমিকরা মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে ঐতিহ্যবাহী ঝুমুর নৃত্যের তালে তালে শঙ্খ বাজিয়ে অতিথিদের স্বাগত জানান।

চা শ্রমিকদের এই অভ্যর্থনায় মুগ্ধ মাইকেল মিলার। পরে প্রতিনিধি দলটি একডো আয়োজিত নারী চা শ্রমিকদের উঠান বৈঠকে অংশগ্রহণ করে এই খাতে শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন।

দলটি প্রথমে বুধবার দুপুর দুইটার দিকে একডো কার্যালয়ে আসেন। এরপর একডোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ প্রকল্পের
কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতিনিধিদলের কাছে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

এরপর প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত দলদলী চা বাগানের নারী শ্রমিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দলদলী চা বাগানে যান তারা।

এসময় চা শ্রমিকরা কম মজুরি, অপর্যাপ্ত রেশন, চা বাগানের চিকিৎসা ও শিক্ষার দুরবস্থাসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান।

এরপর নারী চা শ্রমিকদের অধিকার উপজীব্যে মঞ্চায়িত পথ নাটক ‘সবুজ বৃক্ষের নীল কষ্ট’ উপভোগ করে প্রতিনিধিদল।

এই পরিদর্শন দলে ইইউ’র অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন কাউন্সিলর ও টিমলিডার, হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট
জুরাতে স্মালস্কাইট মেরভিল, প্রোগ্রাম ম্যানেজার লায়লা জেসমিন বানু ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুঁই চাকমা।

এদিকে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা অক্সফাম ইন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে ছিলেন, কান্ট্রি ডিরেক্টর আশিষ ড্যামলে, এডভোকেসি ও কমিউনিকেশন প্রধান মো. শরিফুল ইসলাম, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর শাহাজাদী বেগম, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর তারেক আজিজ, প্রোগ্রাম অফিসার খাদেজা আক্তার অন্তরা ওন কমিউনিকেশন অফিসার সামিউল ইসলাম।

এ প্রসঙ্গে একডো’র নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ খবরের কাগজকে বলেন, ‘একডো নারী চা শ্রমিকদের মধ্যে নেতৃত্ব বিকাশের লক্ষ্যে সিলেট সদর উপজেলার দলদলী, কেওয়াছড়া ও হিলুয়াছড়া বাগানে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘লিডারশীপ ডেভেলপমেন্ট ফর টি গার্ডেন উইমেন ওয়ার্কারস অন দেয়্যার রাইটস’ প্রকল্পটি পরিদর্শনে এসেছিলেন বাংলাদেশস্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ই.ইউ) প্রতিনিধি প্রধান মি. মাইকেল মিলারসহ একটি প্রতিনিধিদল। তারা সরজমিনে চা শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছেন।’

এ সময় মিলার চা শ্রমিকদের দৃঢ় মনোবলের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন বলেও জানান তিনি।

নাইমুর/

না ফেরার দেশে গদখালির ফুল চাষের সূতিকাগার শের আলী

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
না ফেরার দেশে গদখালির ফুল চাষের সূতিকাগার শের আলী
গদখালির ফুল চাষের সূতিকাগার শের আলী সরদার

যশোরের ঝিকরগাছার গদখালির ফুল চাষের সূতিকাগার শের আলী সরদার চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার ফুল চাষের মাধ্যমে গদখালি এখন ফুলের রাজধানী নামে খ্যাত। 

ফুলচাষের পথ প্রদর্শক শের আলীর দেখানো পথে গদখালি ও পাশের গ্রাম পানিসারার প্রায় সবাই কমবেশি ফুল চাষ করেন। পানিসারার পার্শ্ববর্তী গ্রামেও এখন ফুল চাষ হচ্ছে। বর্তমানে এ এলাকায় প্রতিবছর প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। এ চাষে কর্মসংস্থান হয়েছে পাঁচ হাজার লোকের বেশি। এছাড়া ফুল ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত আরও ৫০ হাজার মানুষ। আর এসব সম্ভব হয়েছে শের আলীর কারণেই। প্রথমে তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বীজ নিয়ে এসে এক বিঘা জমিতে রজনীগন্ধার চাষ শুরু করেন।

যশোর ফুল উৎপাদক ও বিপনন সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, শের আলী সরদার ফুল চাষের প্রথম উদ্যোক্তা। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
 
মৃত্যুকালে তিনি দুই স্ত্রী, চার পুত্র, তিন কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুম শের আলী সরদারের প্রথম জানাজা যোহরের নামাজর পর পানিসারায় তার নিজ বাড়িতে এবং দ্বিতীয় জানাজা আসরের নামাজের পর পানিসারা ফুল মোড়ে সম্পন্ন হয়। শের আলীর মৃতুতে আবদুর রহিম গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।

এইচ আর তুহিন/মাহফুজ