
খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই সংঘাত ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। গত চার মাসে ১০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে জনমনে উদ্বেগ ও শঙ্কা ছড়াচ্ছে।
এদিকে বুধবার (২২ জানুয়ারি) আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে মহানগর ও জেলা বিএনপি। কেডি ঘোষ রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ের সামনে করা সমাবেশে নগরীর সব থানার ওসিকে অপসারণের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় তারা জেলা প্রশাসক ও মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর দপ্তর ঘেরাওসহ খুলনা অচল কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশে বলা হয়, গত পাঁচ মাসে পুলিশ প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। একের পর এক খুন, জখম, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ-প্রবণতা বাড়লেও পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে না। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, খুলনার অলিগলিতে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। কিন্তু পুলিশ এ অপরাধ দমনে কোনো ভূমিকা রাখছে না।
জানা যায়, সর্বশেষ ১৯ জানুয়ারি পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় চাকুর আঘাতে ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহসভাপতি মানিক হাওলাদার নিহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও আসবাবপত্রে অগ্নিসংযোগ করে।
একই দিন নগরীর কমার্স কলেজের মধ্যে নওফেল নামে ছাত্রদল কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সজীব শিকদার নামে আরেক যুবক গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া ১৮ জানুয়ারি মিস্ত্রিপাড়া রসুলবাগ মসজিদের সামনে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েকটি গুলি করা হয়। একটি গুলি কান দিয়ে বের হয়ে গেলেও ডান বুকে বিদ্ধ হওয়া গুলিটি চিকিৎসক বের করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ৩ নভেম্বর রাতে মাদক বেচাকেনায় আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বে রাসেল নামের যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৩০ নভেম্বর রাতে সন্ত্রাসীরা ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব আমিন হোসেনকে কুপিয়ে জখম করে। ৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়। ১৩ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব বানিয়াখামার এলাকায় আকাশ নামের একজনকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়ে। একটি গুলি তার কোমরে বিদ্ধ হয়।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘সমাজে অস্থিরতা বাড়া, মাদকের প্রভাব ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ও জনসচেতনতা তৈরি করতে বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকজন শীর্ষ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।