
চায়ের রাজ্য মৌলভীবাজারে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো রয়েছে প্রকৃতি। জেঁকে বসেছে শীত। দিনভর কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চা-বাগান অধ্যুষিত জেলার কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার বিরাট অংশজুড়ে হাকালুকি হাওর। এ ছাড়াও শ্রীমঙ্গল এবং সদর উপজেলার একাংশ হাইল হাওরসহ ছোট-বড় অনেক হাওর রয়েছে। শীতে এসব হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গত কয়েকদিন ধরে শ্রমজীবী মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার চাষি, চা-শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষের পরিবার-পরিজন।
পৌরশহরে কথা হয় দিনমজুর মনসুর উদ্দীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে কাজ পাব এ আশায় বের হই। কিন্তু গত দুই দিন ধরে বেশ ঠাণ্ডা পড়ায় কোনো কাজ পাইনি।’
জেলা সদরের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক জিতু মিয়া বলেন, ‘দুর্ঘটনা এড়াতে দিনে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়েও স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চালানো কষ্টকর। শীতে যাত্রীও কমে গেছে। তাই আগের মতো আয় হচ্ছে না।’
কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা-বাগানের শ্রমিক রত্না গোয়ালা বলেন, ‘সকাল থেকেই কুয়াশা। এর মধ্যেই চা-বাগানে পাতা তুলতে হয়। এ সময় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। এরপরও কাজ করতে হয় পরিবারের জন্য।’
রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি এলাকার চাষি রমেশ দাশ জানান, নিচু জমিতে বোরো ধান লাগানোর মৌসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। কুয়াশার জন্য ৫০০ টাকা রোজের শ্রমিক ৬০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে না। এতে কৃষি খাতে ক্ষতি হচ্ছে।’
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে জেলায় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন এভাবে তাপমাত্রা ওঠানামা করতে পারে।’