ঢাকা ৯ চৈত্র ১৪৩১, রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
English

বরিশালে আমু, সাদিক ও সবুর খানের বাড়ি ভাঙচুর

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
বরিশালে আমু, সাদিক ও সবুর খানের বাড়ি ভাঙচুর
ভাঙচুর দেখেতে মানুষের ভিড়। ছবি: খবরের কাগজ

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ্ ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ  ছাত্র-জনতা। তারা বাড়ি দুইটির সীমানা প্রাচীর, প্রধান ফটক ও বাড়ির সামনের অংশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।  পাশাপাশি আসবাবপত্রে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ওই দুই বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। একইসঙ্গে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড চেয়ারম্যান আবদুস সবুর খানের বাসভবন।

নগরীর কালিবাড়ি রোডের ‘সেরনিয়বাত ভবন’টি শেখ হাসিনার ফুপা সাবেক মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়ি। ওই বাড়িতে বসবাস করতেন রব সেরনিয়াবাতের দৌহিত্র ও আওয়ামী লীগের প্রভাশালী নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লার বড় ছেলে সাবেক মেয়র সেরনিয়বাত সাদিক আবদুল্লাহ। নগরীর বগুড়া রোডে একই কম্পাউন্ডে আমির হোসেন আমু ও আবদুস সবুর খানের বাড়ি। সম্পর্কে তারা দুইজন আপন মামাতো-ফুপাতো ভাই।

ছবি: খবরের কাগজ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল অধিবেশনকে কেন্দ্র করে ‘দেশব্যাপী বুলডোজার-৩২ কর্মসূচি’র ঘোষণার পর বরিশালেও উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১১টার দিকেই নগরীর কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনটি পুলিশ ঘিরে রাখে। ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও কালিবাড়ি রোডে আসেন। প্রায় একই সময়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে কালিবাড়ি রোডের সেরনিয়াবাত ভবনমুখী হন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সড়কের দুইপাশ থেকেই প্রবেশে বাধা দিলেও ছাত্র-জনতা তা উপেক্ষা করে সেরনিয়াবাত ভবনের ভেতর ঢুকে যান। এসময় তারা পরিত্যক্ত বাড়ির বিভিন্ন তলায় গিয়ে পড়ে থাকা ভাঙা আসবাবপত্র ও গ্লাস ভাঙচুর করে।

পরে রাত ১টার দিকে এক্সকেভেটর এনে বাড়ি ভাঙার জন্য ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাতে বাধা দেন। কিন্তু শিক্ষর্থীরা সেই বাধা উপেক্ষা করে সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবনের সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দেয়। পরে তারা ভেতরে প্রবেশ করে ভবনের সামনের অংশ, গাড়ির গেরেজ ও টিনসেডের অংশবিশেষ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। পরে তারা নগরীর বগুড়া রোডের আমির হোসেন আমুর বাসভবন ভাঙচুর চালায়। সেখানে একতলা ভবনের সামনের অংশ, একটি দ্বিতল ভবনের সামনের অংশ এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় তারা।

পরে রাত আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা এক্সকেভেটর দিয়ে আমির হোসেন আমুর বাসভবনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশে করে ভাঙচুর চালায়। পাশাপাশি ভেতরে থাকা বিভিন্ন মালামাল বাড়ির সামনে জড়ো করে তাতে অগ্নিসংযোগ করে। ওই সময়ে কিছু মানুষ বিভিন্ন মালামাল লুট করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা তাতে বাধা দেয়। 

ছবি: খবরের কাগজ

এদিকে সরেজমিনের ওই দুই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সের ও নানা শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ ওই বাড়ির সামনে ভিড় করছেন। তারা কেউ কেউ ভিডিও করছেন, কেউ কেউ ছবি তুলছে। আবার বাড়ির ভেতরের বিভিন্ন কক্ষে বারান্দায় বসে সেলফি তুলছেন।  

সেরনিয়াবাত ভবনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১১টা পর্যন্ত দুই তলা বিশিষ্ট ভবনের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। সকাল থেকে শত শত মানুষ বাড়ির সামেনে ভিড় করেছে পোড়া বাড়ি দেখার জন্য। এতে দুপুর ৩টা পর্যন্ত কালী বাড়ির রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। 

এদিকে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভোররাতে নগরীর বগুড়া রোডের আমির হোসেন আমুর বাড়ির প্রধান ফটক ও সীমানা প্রাচীর এক্সকেভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ সময়ে কিশোর বয়সের কয়েকজন হাতুড়ি, লোহার রড ও বিভিন্ন সরঞ্জাম হাতে নিয়ে বাড়িরটি দুইতলা ও নিচতলায় দরজা জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করছে। পাশাপাশি গত ৫ আগস্ট বিকেল লুটের পরে বাড়িতে থাকা অবশিষ্ট ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র অটোরিকশাযোগে এবং হাতে করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এদিকে ওই কম্পাউন্ডে থাকা অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড চেয়ারম্যান আবদুস সবুর খানের বাড়িতে ওই কিশোররা প্রবেশ করে তিনতলার বাড়ির প্রায় ২০টি কক্ষে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরে করে। 

স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট আমির হোসেন আমুর বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হলেও সবুর খানের বাড়ির কাছে কেউ আসেনি। কিন্তু গতকাল রাত ১১টার পরে তিন চারজন কিশোর ওই ভবনের ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর করে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় নানা বয়সের নারী ও বেশ কিছু শিক্ষার্থীরা।

তারা বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে আলমিরা, ওয়ারড্রব, শোকেস, বুক সেলফ, শিশুদের বিভিন্ন প্রকার খেলনা, রান্না ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময়ে নারী ও কিশোরদের বিভিন্ন জিনিসপত্র ব্যাগ ও বস্তা ভরতে দেখা যায়। বিভিন্ন কক্ষে থাকা এসি, ফ্যান, বই, রানা ঘরের বিভিন্ন উপকরণ, লেপ-তোশক, কাঁথা-বালিশসহ বিভিন্ন মামলামাল লুট করা হয়।

বরিশাল বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের বাহিরে থেকে পালাতক, খুনি, ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার পায়তারা করছে। ফ্যাসিস্টদের মূল উৎপাটনে জনগণের টাকায় বানানো বাড়িঘরে আজকের এ প্রোগ্রাম।

নাঈম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কালিবাড়ি রোড ও বগুড়া রোডের এ ভবনগুলোতে ফ্যাসিবাদের আস্তানা। আমরা বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কোনো আস্তানা রাখতে চাই না। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে মানুষের কঠোর অবস্থানের প্রতিফলন আজকের কর্মকাণ্ড। তাই বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতা ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্তানা ভেঙে দিচ্ছে।

তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কেউ কোনো বক্তব্য দিতে কেউ রাজি হননি।   

উল্লেখ্য ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবরের পর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর কালিবাড়ি রোডের বাসভবন এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর বগুড়া রোডের বাসভবনে আগুন দিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। যে ঘটনায় সাদিক আব্দুল্লাহর বাসা থেকে বিসিসির সাবেক প্যানেল মেয়র গাজি নইমুল ইসলাম লিটুসহ তিন আওয়ামী লীগ কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। 

মঈনুল ইসলাম সবুজ/মাহফুজ

 

শেরপুরে হাতি হত্যা, প্রতিশোধে তাণ্ডব হাতির দলের

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম
শেরপুরে হাতি হত্যা, প্রতিশোধে তাণ্ডব হাতির দলের
মৃত হাতি। ছবি: খবরের কাগজ

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে হাতি মৃত্যুর পর মাটিচাপা দেওয়া মৃত বন্যহাতির প্রতিশোধ নিতে ওই এলাকায় রাতভর চিৎকার-চেচামেচি করে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে একদল বন্যহাতি। তাণ্ডব চালিয়ে তারা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) ও শনিবার (২২ মার্চ) রাতভর এই তাণ্ডব চালায়।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কের উত্তরে লাল টেংগুর পাহাড়ি এলাকায় কৃষকের দেওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে একটি পুরুষ হাতি মারা যায়। মৃত ওই হাতিকে ময়নাতদন্ত শেষে কৃষকের ক্ষেতের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকেই প্রতিশোধ নিতে মৃত বন্যহাতির কবরের পাশে অবস্থান নেয় প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি বন্যহাতির দল। সাথী এক হাতিকে হারিয়ে তাকে উদ্ধার করতে ওই স্থানে জড়ো হয়। এসময় হাতিগুলো চিৎকার-চেচামেচি শুরু করে। সেইসঙ্গে হাতি হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া কৃষক জিয়াউর রহমান জিয়ার ৫০ শতাংশ বোরোধান ক্ষেতে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তাণ্ডব চালিয়ে খেতের ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করে। পরে গ্রামবাসীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে বন্যহাতির পাল পিছিয়ে যায়।

এদিকে, হাতির মৃত্যুর ঘটনায় শেরপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আল আমিন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় কৃষক জিয়াউল হক ও অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক জিয়াউল হককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

ছবি: খবরের কাগজ

মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, সেদিন যেখানে হাতির মৃত্যু হয়েছে। তার কবর ও আশপাশে দু’দিন ধরে রাতে একদল বন্যহাতি অবস্থান নিয়ে চিৎকার-চেচামেচি করছে। বর্তমানে ওই হাতির দলটি মধুটিলা ইকোপার্ক এলাকায় অবস্থান করছে। কিন্তু দিনের আলোতে খুব একটা বের হচ্ছে না, সন্ধ্যা হলেই বের হচ্ছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতন ও সর্তকতা করে যাচ্ছি।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘শাইনের’ নির্বাহী পরিচালক ও শেরপুর বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মুগনিউর রহমান মনি বলেন, কেউ যদি হাতিকে ক্ষতি করে, তারা পরে তাদের প্রতিশোধও নিতে পারে। কারণ, হাতির মস্তিষ্ক অত্যন্ত বড় এবং স্মৃতিশক্তি আশ্চর্যজনকভাবে শক্তিশালী। শুধু তাই নয়, হাতি এমন একটি প্রাণী যে তাদের পুরোনো শত্রুদেরও চিনতে পারে এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধ নিতে পারে।

 শাকিল মুরাদ/মাহফুজ

 

মুন্সীগঞ্জে আন্দোলনে নিহত ৭ নেতাকর্মীর পাশে তারেক রহমান

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:২১ পিএম
মুন্সীগঞ্জে আন্দোলনে নিহত ৭ নেতাকর্মীর পাশে তারেক রহমান
ছবি: খবরের কাগজ

মুন্সীগঞ্জে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত দলীয় ৭ নেতা-কর্মীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

রবিবার (২৩ মার্চ) বেলা ১১ টার দিকে জেলা শহরের উপকন্ঠ মুক্তারপুর এলাকার উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে নিহতদের পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

এসময় আওয়ামী লীগ আমলে আন্দোলনে নিহত পঞ্চসার ইউনিয়নের চম্পাতলা গ্রামের বিএনপির কর্মী হাদিস আলী, মিরকাদিম পৌরসভার মুরমা এলাকার পৌর যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদ শহীদুল ইসলাম শাওন ও একই এলাকার যুবদল কর্মী আকবর হোসেনর পরিবারের সদস্যদের হাতে নগদ টাকা তুলে দেওয়া হয়।

এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত মিরকাদিম পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শাহরিক চৌধুরী মানিক, শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বিএনপি কর্মী সজল মোল্লা, রিয়াজুল ফরাজী ও নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজলের পরিবারকে আথিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

আথিক সহায়তা প্রদানকালে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ফকির, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক দেওয়ান মো. মজিবুর রহমান, সদস্য সচিব মু. মাসুদ রানা, শহর যুবদলের সদস্য সচিব রায়হান কবীর প্রমুখ।

মঈনউদ্দিন আহমেদ সুমন/মাহফুজ

 

সাভারে উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:১৯ পিএম
সাভারে উচ্ছেদ অভিযানে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর
বিক্ষুব্ধ দখলদাররা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। ছবি: খবরের কাগজ

সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ দখলদারদের ইটপাটকেল নিক্ষেপের কারণে ঘটনাস্থল থেকে সরে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের তিনটি গাড়ি।

রবিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বলিভদ্র বাজার ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযানে এই ঘটনা ঘটে।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনূর কবির জানান, আসন্ন ঈদকে ঘিরে সড়কে চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বলিভদ্র বাজার এলাকায় উচ্ছেদে গেলে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে তোলা দখলদাররা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশের ৩টি যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বুলডোজার দিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। 

সহস্রাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ

অন্যদিকে এক দিন পরই মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে কেন্দ্র করে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে অনুষ্ঠিত হবে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। এরপরই মুসলিম উম্মাহর সবচেয় বড় উৎসব ঈদুল ফিতর ঘিরে রাজধানী ঢাকা ছাড়বে কোটি মানুষ। এই দুটি উৎসবেই মানুষ চলাচলের জন্য রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী অন্যতম সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। তাই ঈদযাত্রা ও স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধের আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে যাতে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সেই লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের পাশ দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। এ সময় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অবৈধ সহস্রাধিক দোকানপাট। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাভার বাসস্ট্যান্ড ও হেমায়েতপুর এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও অভিযানে সেনাবাহিনী, সাভার থানা ও হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। 

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সরকার বলেন, পথচারীদের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

 

নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই এলজিইডির নির্মাণাধীন কালভার্টে ফাটল

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই এলজিইডির নির্মাণাধীন কালভার্টে ফাটল
গাবুরার ১০ নম্বর সোরা গ্রামের শেখ বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন খালের ওপর নির্মাণাধীন কালভার্ট। ছবি: খবরের কাগজ

নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই সাতক্ষীরার শ্যামনগরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্মাণাধীন একটি কালভার্টে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নির্মাণকাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কালভার্টে ফাটল ধরেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও এলজিইডি প্রকৌশলীদের দায়িত্বহীনতার কারণে কালভার্টিতে ফাটল ধরেছে।

নির্মাণাধীন কালভার্টে ফাটল। ছবি: খবরের কাগজ

স্থানীয় বাসিন্দা বাদশা হোসেন বলেন, কালভার্টিতে নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই কালভার্টের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঠিকাদার ও দায়িত্বরত ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, কিউরিং না করার কারণে এমন ঘটনা ঘতে পারে। সোমবার (২৪ মার্চ) উপজেলা এলজিইডি অফিস থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন তারা, যে সিদ্ধান্ত দিবে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।

এলজিইডি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার ১০ নম্বর সোরা গ্রামের শেখ বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন খালের ওপর সাড়ে চার মিটার দৈর্ঘ্যের কালভার্ট সেতু নির্মাণ করছে এলজিইডি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে কার্যাদেশ পেয়ে রাস্তা ও কালভার্টের নির্মাণকাজ শুরু করে আব্দুল হাকিম নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গাবুরার হরিশখালি থেকে চাঁদনীমুখা পর্যন্ত রাস্তাসহ কালভার্ট নির্মাণ করার কথা।

গাবুরার ১০ নম্বর সোরা গ্রামের শেখ বাড়ি মসজিদ সংলগ্ন খালের ওপর নির্মাণাধীন কালভার্টটির কাজ ওই বছরের নভেম্বর মাসের ২৬ তারিখে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার শেষ হয়নি। এরই মধ্যে কালভার্টের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় কালভার্টটির কালভার্টের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরপর স্থানীয়রা কালভার্ট নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়।

এ ব্যাপারে ঠিকাদার মো. আব্দুল হাকিম বলেন, কাজ নিম্নমানের ছিল না। নিম্নমানের কাজ করিনি আমরা। কালভার্টের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, কী কারণে ফাটল ধরেছে তা বলতে পারছিনা। তবে ধারণা করছি কিউরিং এর কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। সোমবার উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে তদন্তে যাবেন। তারা যে সিদ্ধান্ত দেয় সে অনুযায়ী কাজ করা হবে বলেও জানান তিনি। 

শ্যামনগর উপজেলা সার্ভেয়ার (জরিপকারী) রাজু আহমেদ বলেন, আগামীকাল আমরা ঘটনাস্থলে যাব, সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এলজিইডির শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, অতিরিক্ত সিমেন্ট ব্যবহারের কারণে এমন ফাটল ধরেছে। ঠিকাদারের সঙ্গে কথা হয়েছে যেখানে ত্রুটি আছে সেটি মেরামত করে দেওয়া হবে।

সুলতান শাহাজান/মাহফুজ

 

হিলিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্যাংক লরি খাদে, নিহত ২

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
হিলিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্যাংক লরি খাদে, নিহত ২
ট্রাংক লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। ছবি: খবরের কাগজ

দিনাজপুরের হিলিতে একটি ট্রাংক লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে পড়ে ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার ও লরির হেলপারসহ দুইজন নিহত ও ট্রাক চালক আহত হয়েছে।

নিহত ম্যানেজার সাব্বির হোসেনের বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় এবং হেলপার রাসেল হোসেনের বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার মাথখুরড় গ্রামে।

এদিকে আহত ট্রাক চালক জাহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করে হাকিমপুর উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ জানায়, রবিবার (২৩ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চৌধুরী ফিলিং স্টেশন থেকে ম্যানেজার সাব্বির হোসেন একটি ট্যাংক লরি নিয়ে তেল নেওয়ার জন্য পার্বতীর ডিপোতে যাচ্ছিল। ট্যাংক লরিটি হিলি দিনাজপুর সড়কের লোহাচড়া নামক স্থানে পৌঁছালে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়।

এতে ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার সাব্বির হোসেন ও ট্র্রাকের হেলপার রাসেল হোসেন লরির নিচে চাপা পড়ে ঘটনা স্থলেই মারা যায়। স্থানীয়রা ছুটে এসে চালককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাকিমপুর উপজেলায় হাসপাতালে পাঠায়।

হাকিমপুর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম ও হিলি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী ইনচার্জ আবুল কাশেম জানান, ট্রাকের নিয়ে চাপাপড়া মরদেহগুলো এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 

কুদ্দুস আলী খান/মাহফুজ