
সুনামগঞ্জে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে ছাত্র-জনতা।
গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে পৌর শহরের চারটি প্রতিষ্ঠানে এসব ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও জনতা পৌর শহরের ঐতিহ্যবাহী জাদুঘর প্রাঙ্গণে আসেন। পরে বড় হাতুড়ি দিয়ে সেখানে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করেন।
এ সময় তারা ‘দিল্লি না ঢাকা?’ স্লোগান দেন। তারা সংখ্যায় ২০-২৫ জন ছিলেন। এর মধ্যে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাই বেশি ছিলেন। এরপর তারা পাশের পৌর ভবন চত্বরে প্রবেশ করেন। সেখানে থাকা আরেকটি ম্যুরালে একইভাবে ভাঙচুর চালান। পরে জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও জেলা পরিষদ চত্বরে বুলডোজার দিয়ে আরও দুটি ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর গভীর রাতে পৌর শহরের ডংকাশাহের মাজার ভেঙে দেন তারা।
জেলার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমন দোজা জানান, ঢাকার কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙার। এরই অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জে ম্যুরাল ভাঙা হয়। শেখ হাসিনা ভারতে বসে ছাত্র-জনতার উদ্দেশে তামাশা করে বক্তব্য দিয়েছেন। তাকে বাংলার মানুষ কতটা ঘৃণা করে, সেটা দেশের ছাত্রসমাজ দেখাতে চায়। স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন এ দেশে রাখা হবে না। তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা ত্বোহা হোসাইন বলেন, ‘ইসলাম মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে। এ কারণে স্বৈরশাসক চলে যাওয়ার পরও শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল কালো কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়। স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন আর রাখা হবে না। আর মূর্তি রাখার তো প্রশ্নই ওঠে না। তাই বুলডোজার দিয়ে সব গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালে আঁকা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিগুলো কালো ও সাদা রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়। পরে সেগুলো কালোকাপড়ে ঢেকে রাখা হয়। বুধবার রাতে ছাত্র-জনতা বুলডোজার দিয়ে শহরের ৪টি ম্যুরালে ভাঙচুর চালায়।